id
int64 1
200
| event
stringlengths 14
51
| news_headline
stringlengths 18
178
| news_body
stringlengths 165
20.2k
| source_link
stringlengths 36
542
| date
stringlengths 8
10
| news_corpora_name
stringlengths 2
24
| label
stringclasses 3
values |
|---|---|---|---|---|---|---|---|
101
|
গার্মেন্টস খোলা ও শ্রমিক মজুরি
|
কথা ও কাজে মিল নেই গার্মেন্টস মালিকদের
মূল্যহীন গার্মেন্টস শ্রমিকের জীবন
|
মে দিবসটি সারা বিশে^র শ্রমজীবী মানুষের জন্য। অধিকার আদায়ে পহেলা মে জীবন দিতে হয়েছে শ্রমিককে। বছর ঘুরে আবার এসেছে মে দিবস। কিন্তু এবারের মে দিবস এসেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। করোনাভাইরাসের মহামারীতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষ। এর মধ্যে দেশের গার্মেন্টস শ্রমিকরা এখন সবচেয়ে নিষ্পেষিত-অবহেলিত। গার্মেন্টস মালিকদের কাছে ৪৫ লাখ শ্রমিকের জীবনের কোনো মূল্যই যেন নাই। কেননা গার্মেন্টস মালিকরা এই করোনার মহামারীতে শ্রমিকের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন। একবার তাদের ডেকে আনছেন কাজে যোগদানের কথা বলে, আবার
যখন দেশের মানুষের সমালোচনার মুখে পড়ছেন তখন ফিরে যেতে বলছেন। আবার কারখানা খোলার কথা বলে পুনরায় আসতে বলা হচ্ছে। এভাবে শ্রমিকদের জীবন নিয়ে খেলার কোনো অধিকার শিল্প মালিকদের নেই বলে মনে করছেন শ্রমিক নেতারা।
এ বিষয়ে শ্রমিক নেতা তৌহিদুর রহমান সময়ের আলোকে বলেন, গার্মেন্টস মালিকদের কাছে শ্রমিকের জীবনের যেন কোনো মূল্যই নেই। তা না হলে এই মহামারীতে কীভাবে শ্রমিকদের সঙ্গে কারখানা খোলা-বন্ধ, খোলা-বন্ধ খেলা করতে পারে মালিকরা। তা ছাড়া গার্মেন্টস মালিকরা তাদের কথা ও কাজে কোনো মিল রাখছে না। তারা একদিকে বলছে, ঢাকার আশপাশের শ্রমিকদের দিয়ে কারখানার কাজ চালাবে, দূরের শ্রমিকদের আসা লাগবে না, অন্যদিকে দূরের শ্রমিকদের ফোন করা বলা হচ্ছে আজ-কালের মধ্যে কাজে যোগদান না করলে চাকরি চলে যাবে এবং বেতনও মিলবে না। কেন শিল্প মালিকরা এই দ্বিমুখী আচরণ করছে শ্রমিকদের সঙ্গে। গার্মেন্টস মালিকদের এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমি।
অবশ্য বিজিএমইএ সহসভাপতি আরশাদ জামাল দ্বিপু সময়ের আলোকে বলেন, শ্রমিকদের ফোন করা হচ্ছে সুপারভাইজর লেভেল থেকে। এশটি প্রোডাকশন লাইনে তিনজন সুপারভাইজর থাকেÑ শ্রমিকদের তারা নিয়ন্ত্রণ করে বেশিরভাগ সময়। এই লেভেল থেকেই এই কাজ করা হচ্ছে। তবে আমি মনে করি কারখানা মালিকের নির্দেশ ছাড়া একজন সুপারভাইজর শ্রমিক ডেকে আনবে না। এভাবে দলে দলে শ্রমিক ডেকে আনায় করোনা ঝুঁকি যে বাড়ছে সেটিও তিনি স্বীকার করেন। তিনি আরও বলেন, এই সময় বেশি কার্যাদেশ নেই, বেশি কাজ না থাকলে বেশি শ্রমিক তো থাকার দরকার নেই। ৪২ শতাংশ উপস্থিত ছিল বৃহস্পতিবার। আবার অনেক শ্রমিক নিজ উদ্যোগে চলে আসছে। আমরা এ ব্যাপারে বেশ কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে কথা দিয়েছিলাম জোনভিত্তিক খোলার বিষয়ে। কিন্তু নানা কারণে সেটি আমরা করতে পারিনি। তবে বিষয়টি নিয়ে আমরা কঠোরভাবে মনিটরিং করছি।
আসলে কথা ও কাজে কোনো মিল নেই গার্মেন্টস মালিক ও বিজিএমইএ নেতাদের। বিজিএমইএ নেতা এবং গার্মেন্টস মালিকরা ঢাকার বাইরে থেকে শ্রমিক না আসার কথা বললেও বাস্তব চিত্র কিন্তু ভিন্ন। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার গার্মেন্টস শ্রমিক কাজে যোগদানের জন্য ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় আসছেন। বৃহস্পতিবারও দেখা গেছে, পাটুরিয়া ঘাট, মাওয়া ঘাট দিয়ে এবং উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে অসংখ্য শ্রমিক ঢাকায় আসছে। ফেরি ঘাটে বৃহস্পতিবার হাজার হাজার শ্রমিক ফেরি পার হয়েছে।
শ্রমিকরা জানিয়েছে, তাদের মোবাইলে কারখানা কর্তৃপক্ষ ফোন করে বলছে, আগামীকালের (আজ) মধ্যে কাজে যোগদান না করলে বেতন দেওয়া হবে না, চাকরি চলে যাবে। তাই বাধ্য হয়ে পেটের দায়ে অনেক কষ্ট করে তারা ঢাকায় ফিরছে।
এদিকে যেসব পোশাক শ্রমিক ঢাকার বাইরে অবস্থান করছেন তাদের ঢাকায় আসার প্রয়োজন নেই, তাদের বেতন পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। বৃহস্পতিবার বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে সরকারি নির্দেশনাক্রমে বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে পোশাক কারখানার আশপাশে অবস্থানরত শ্রমিকদের নিয়ে কারখানা খোলার অনুমতি দেওয়া হয়। এতে ঢাকার বাইরে থেকে কোনো পোশাক শ্রমিককে ঢাকায় না আসার জন্য বলা হয়। শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, গার্মেন্টস মালিকদের কথা ও কাজে কোনো মিল নেই। তারা মিডিয়ায় বলছে, ঢাকার বাইরের শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে হবে না, আবার ফোন করে বলছে কাজে যোগ দিতে, না হলে চাকরি থাকবে না।
এরপর দেখা যায় বেতন না পাওয়ার শঙ্কা নিয়ে অনেক শ্রমিক গ্রাম থেকে ঢাকায় আসতে শুরু করেন। এর প্রেক্ষিতে বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে ঢাকার বাইরে থাকা শ্রমিকদের ঢাকায় না আসার অনুরোধ জানানো হয় এবং বলা হয় তাদের বেতন পৌঁছে দেওয়া হবে।
এদিকে শনিবার রাতে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক কারখানা খোলার বিষয়টি অবহিত করে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। ওই চিঠিতে বলা হয়, বিশ^ব্যাপী বিভিন্ন দেশ ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালু করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনের সদস্যভুক্ত কারখানাগুলো পর্যায়ক্রমে খোলা হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়।
চিঠিতে স্বল্পপরিসরে কারখানা খোলার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, শুরুতে রোববার ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের কিছু কারখানা, ২৮-৩০ এপ্রিল আশুলিয়া, সাভার, ধামরাই ও মানিকগঞ্জের কারখানা, ৩০ এপ্রিল রূপগঞ্জ, নরসিংদী, কাঁচপুর এলাকা, ২ ও ৩ মে গাজীপুর ও ময়মনসিংহ এলাকার কারখানা চালু করা হবে। কারখানা খোলার ক্ষেত্রে শুরুতে উৎপাদন ক্ষমতার ৩০ শতাংশ চালু করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা বাড়ানো হবে।
এই চিঠি পাওয়ার পর শ্রম মন্ত্রণালয়ও তাৎক্ষণিক একটি চিটি ইস্যু করে। এতে সময় সব ধরনের স্বাস্থ্য বিধি মেনে কারখানা চালু করার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।এর আগে পোশাক কারখানা খুলতে ১৭ পৃষ্ঠার একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। ১৭ পৃষ্ঠার নির্দেশনায় বিজিএমইএ প্রাথমিকভাবে কারখানার কাছাকাছি বসবাসকারী শ্রমিকদের কাজে নিয়োগের জন্য মালিকদের প্রতি আহŸান জানায়। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই শেষ না হওয়া পর্যন্ত সম্প্রতি গ্রাম থেকে ফিরে আসা শ্রমিকদের কারখানায় প্রবেশের অনুমতি না দেওয়ারও পরামর্শ দেয় সংগঠনটি। এর আগে সরকার ২৩ এপ্রিল সাধারণ ছুটি ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেয় এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে সীমিত আকারে কারখানা পরিচালনা করার ক্ষেত্রে মালিকদের অনুমতি প্রদান করে।
|
https://www.shomoyeralo.com/news/95626
|
5/1/2023
|
Somoyer Alo
|
Govt critique
|
102
|
গার্মেন্টস খোলা ও শ্রমিক মজুরি
|
শ্রম ভবনে ত্রিপক্ষীয় সভা
পোশাক শ্রমিকরা এপ্রিলে বেতন পাবে ৬০ ভাগ
|
করোনাভাইরাসের প্রভাবে এপ্রিল মাসে পোশাক খাতের লে-অফ বা বন্ধ থাকা কারখানার শ্রমিকরা মোট বেতনের ৬০ ভাগ পাবেন। আর যে সব কারখানায় কিছুদিন কাজ হয়েছে, সে সব কারখানার শ্রমিকরা ওই কর্মদিবসগুলোর পুরো অর্থ পাবেন। একই সঙ্গে ঈদের আগে নতুন করে কোনো শ্রমিক নেয়া কিংবা ছাঁটাই করা হবে না।
মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর বিজয়নগরস্থ শ্রম ভবনে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে ত্রিপক্ষীয় সভায় মালিকদের পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
বৈঠকে পোশাক শিল্পের মালিকদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ও সাবেক এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সংসদ সদস্য ও সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সংসদ সদস্য ও বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান ও জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক, বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি আনোয়ার উল আলম পারভেজ।
অন্যদিকে শ্রমিকদের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুল আহসান,জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, শ্রমিক নেতা ডা. ওয়াজেদ প্রমুখ।
সূত্র জানায়, বৈঠকে মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সব শ্রমিকই আগে-পরে বেতন পাবেন। এপ্রিল মাসে লে-অফ ও বন্ধ থাকা কারখানার শ্রমিকদের মোট বেতন ৬০ ভাগ দেয়া হবে। আর এপ্রিল মাসে যে সব কারখানা যে কয়েকদিন চালু ছিল সে ক’দিনের শতভাগ বেতন তারা পাবেন। মাসের অবশিষ্ট দিনগুলোর ৬০ ভাগ বেতনও তাদের দেয়া হবে।
এ সময় শ্রমিক নেতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, অন্যায়-অযাচিতভাবে কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই করা হচ্ছে। এটি বন্ধ করতে হবে। এর প্রেক্ষিতে ঈদের আগ পর্যন্ত আর ছাঁটাই হবে না বলে মালিক প্রতিনিধিরা অঙ্গীকার করেন।
সূত্র আরও জানায়, দ্রুততার সঙ্গে এপ্রিল মাসের বেতন শ্রমিকদের দেয়া হবে বলে সভা থেকে নিশ্চিত করা হয়। এছাড়া আগামী মে মাসের বেতন পরিশোধ পদ্ধতি নিয়ে মাসের শুরুতে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতি বিবেচনা করে ওই সভায় প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বুধবার (আজ) শ্রম প্রতিমন্ত্রী এ সেক্টরের অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এ বিষয়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায় যুগান্তরকে বলেন, বৈঠকে মালিকদের পক্ষ থেকে এপ্রিল মাসে বেতন দেয়ার ক্ষেত্রে দুটি প্রস্তাব এসেছে। প্রথমত, সাধারণ ছুটিতে যেসব শ্রমিক গ্রামে আছে এবং যেসব কারখানা বন্ধ বা লে-অফ করা হয়েছে সেসব কারখানা শ্রমিকদের ৬০ ভাগ বেতন দেবে। দ্বিতীয়ত, এপ্রিলে যে ক’দিন কাজ হয়েছে তার পূর্ণ বেতন দেবে। তবে এসব প্রস্তাব নিয়ে পাকাপোক্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বুধবার অন্য শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের নিয়ে বৈঠকের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়া হবে।
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিজিএমইএ-বিকেএমইএ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, শুধু ঢাকায় অবস্থানরত শ্রমিকদের নিয়েই পোশাক কারখানা চালু করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ঢাকার বাইরে থেকে কোনো শ্রমিক আসতে পারবেন না। বৈঠকে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক। এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, তারা (পোশাক কারখানার মালিকরা) প্রধানমন্ত্রীর কাছে ওয়াদা করেছেন যে, জনস্বার্থে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কারখানা চালু করবেন। করোনাভাইরাসে যেন আরও অনেকে আক্রান্ত না হন, তাই (ঢাকার) বাইরে থেকে কোনো শ্রমিক আনবেন না। ঢাকায় যেসব শ্রমিক অবস্থান করছেন তাদের দিয়েই তারা কারখানা চালু করবেন। সেভাবেই তারা কারখানা খুলছেন। কারখানা মালিকরা বলেছেন, তাদের ওপর সরকারি যে বিধিনিষেধ রয়েছে, সে হিসেবে গত মার্চ মাসের বেতন পুরোটাই তারা দিয়ে দেবেন। তারা প্রায় ৯৭ শতাংশ বা এর বেশি বেতন দিয়ে দিয়েছেন বলেও আমাদের জানিয়েছেন। এপ্রিল মাসের বেতন সরকার যেভাবে নির্ধারণ করে দিয়েছে এবং তাদের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে, সে অনুযায়ী দেবেন। তারা এটি আমাকে নিশ্চিত করে গেছেন, যোগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকরা কীভাবে (কারখানায়) আসবেন, কীভাবে যাবেন, কীভাবে থাকবেন- সেগুলো নিয়ে আমাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তারা যে পরীক্ষাগার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেগুলো ত্বরান্বিত করতে বলেছি আমরা। শ্রমিকরা যদি এ ভাইরাসে আক্রান্ত হন, তাহলে তাদের সুরক্ষার জন্য তারা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, সেটাও আমরা শুনেছি। বিদেশের অর্ডার রয়েছে বলে কিছু কারখানা খোলা দরকার মনে করছেন মালিকরা। তারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাক্রমে কারখানা চালু করেছেন বলেও সাংবাদিকদের জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
|
https://www.jugantor.com/economics/302551
|
4/28/2023
|
Jugantor
|
Govt leaning
|
103
|
গার্মেন্টস খোলা ও শ্রমিক মজুরি
|
কারখানা খোলার বিষয়ে কোস্ট টু কোস্ট গ্রুপের ব্যাখ্যা
|
বন্ধের মধ্যে গত ৮ এপ্রিল কারখানা চালু রাখা নিয়ে কোস্ট টু কোস্ট গ্রুপ বলেছে, তাদের কোস্ট টু কোস্ট নামের পোশাক কারখানাটির উৎপাদন গত ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে। গত ৮ এপ্রিল কেবলমাত্র কিছু সংখ্যক শ্রমিকের মজুরি দেওয়ার জন্য কারখানা খোলা ছিল। ওই দিন কারখানায় কোনো প্রকার উৎপাদন হয়নি।
গত ৯ এপ্রিল প্রথম আলো অনলাইনে ‘বন্ধের মধ্যে চলছে ৬৭টি পোশাক ও বস্ত্র কারখানা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটিতে কোস্ট টু কোস্টসহ কয়েকটি কারখানার নাম উল্লেখ করে বলা হয়, কারখানাগুলো ৮ এপ্রিল উৎপাদনে ছিল। তবে কোস্ট টু কোস্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ উজ জামান প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে গতকাল শুক্রবার লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানান।
কোস্ট টু কোস্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ উজ জামান বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ২৬ মার্চ কারখানা বন্ধ করা হয়। ৫ এপ্রিল পুনরায় কারখানা চালু হলে শ্রমিকের মজুরি পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেওয়া ছিল। তবে তার আগেই ছুটি ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। শ্রমিকদের মধ্যে যাদের ব্যাংক হিসাব রয়েছে তাদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে মজুরির অর্থ প্রেরণ করা হয়। কিছু সংখ্যক শ্রমিকের ব্যাংক হিসাব না থাকায় কারখানা না খুলে মজুরি দেওয়া সম্ভব ছিল না। অন্যদিকে সরকার ও বিজিএমইএ থেকে শ্রমিকদের মজুরি যত দ্রুত সম্ভব দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে জন্য সময় ক্ষেপণ না করে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে গত ৮ এপ্রিল কারখানা খুলে শ্রমিকের মার্চ মাসের মজুরি পরিশোধ করা হয়। তবে সেদিন কোনো ধরনের উৎপাদন কাজ করা হয়নি কারখানায়।
এদিকে গাজীপুরের ফ্যাশন স্টেপ নামের পোশাক কারখানাও দাবি করেছে, গত ৮ এপ্রিল তারাও উৎপাদনে ছিল না। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান আজ শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকের মজুরি দিয়ে গত ২৫ মার্চ তাদের কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তারপর থেকে আর উৎপাদন কাজ চালানো হয়নি। তবে ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কারখানার পাশে তাদের অফিস খোলা রয়েছে। বিজ্ঞপ্তি
|
https://www.prothomalo.com/business/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%96%E0%A7%8B%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B7%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F-%E0%A6%9F%E0%A7%81-%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F-%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%B0
|
4/12/2020
|
Prothom Alo
|
Neutral
|
104
|
গার্মেন্টস খোলা ও শ্রমিক মজুরি
|
৪০ ভাগ পোশাক কারখানায় লে-অফের নোটিশ
|
নির্ধারিত সময়ে সব শ্রমিককে বেতন না দিয়ে এখন পোশাক কারখানা লে-অফের পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরইমধ্যে ৪০ ভাগ পোশাক কারখানায় লে-অফের নোটিশ দেয়া হয়েছে বলে গার্মেন্টস বিজিএমইএ'র সভাপতি রুবানা হক নির্ধারিত সময় ১৬ এপ্রিলের মধ্যে ৮৭ ভাগ শ্রমিককে বেতন দেয়ার দাবি করলেও শ্রমিক নেতারা এটাকে ‘মিথ্যাচার' বলছেন। তারা বলেছেন, অন্তত দুই হাজার কারখানার শ্রমিকরা বেতন পাননি। আর শতকরা হিসেবে ৩০ ভাগ কারখানায় বেতন হয়নি। তাদের বেতন কবে দেয়া হবে তারা কোনো প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়নি। এসব পোশাক কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা। তারা আরো বলেন, অনেক কারখানায় পাঁচ দিনের বেতন কেটে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার পাঁচ দিনের সাধারণ ছুটি দিয়েছিল।
বিজিএমইএ'র দাবি ও কারখানা লে-অফ
বিজিইএমএ দাবি করেছে, তাদের সদস্যভুক্ত দুই হাজার ২৭৪টি কারখানার মধ্যে এক হাজার ৬৬৫টি কারখানার শ্রমিকের বেতন দেয়া হয়েছে। সদস্যভুক্ত কাখানাগুলোতে ২৪ লাখ ৭২ হাজার ৪১৭ জন শ্রমিক আছেন। তাদের মধ্যে ২১ লাখ ৫৯ হাজার ১০০ শ্রমিক বেতন পেয়েছেন। সেই হিসেবে ৮৭ ভাগ শ্রমিক বেতন পেয়েছেন। আর কারখানা হিসেবে ৭৩ ভাগ কারাখানা বেতন দিয়েছে।
বাস্তবে বিজিএমইএ'র সদস্য চার হাজার ৬২১টি কারখানা। রুবানা হক কিন্তু জাতীয় গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন , ‘বাস্তবে পোশাক কারখানা পাঁচ হাজারের বেশি। আর শ্রমিকের সংখ্যা কমপেক্ষ ৫০ লাখ। আসলে তারা যখন সুবিধা আদায় করতে চায়, তখন পোশাক কারখানা আর শ্রমিকের সংখ্যা বেশি দেখায়। আর যখন তাদের নিজেদের দিতে হয়, তখন সংখ্যাটা কমিয়ে ফেলে। যেসব কারখানা রপ্তানিকারকদের হয়ে সাব কন্ট্রাক্টে কাজ করে, তাদের দায়িত্ব নেয়া হয় না।
তিনি বলেন,‘ এখন পর্যন্ত ৩০ ভাগ পোশাক কারখানায় বেতন দেয়া হয়নি। বেতন না দিয়ে অনেক মালিক গা ঢাকা দিয়েছেন। এই সব মালিকের বিরুদ্ধে সরকার ফৌজদারী মামলা করুক। কারণ, সরকারও কোনোভাবে দায় এড়াতে পারে না।'
তিনি বলেন, ‘‘যেসব কারখানায় বেতন দেয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশই শ্রমিকদের পাঁচ দিনের বেতন কেটে রেখেছে, যা অন্যায়। আর ৪০ ভাগেরও বেশি কারখানা বেতন দিয়ে লে-অফের নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছে, যা সরকারের নির্দেশনার বিরুদ্ধে যায়।'' লে-অফের মাধ্যমে তারা শ্রমিকদের অর্ধেক বেতন দেয়ার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
কী করবেন পোশাক শ্রমিকরা?
এদিকে পোশাক কর্মীরা বেতন না পেয়ে চরম অনিশ্চয়তার মুখে আছেন। শুক্রবার ছুটির দিনেও উত্তরা এবং গাজীপুর এলাকায় শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকার এমএসসি গার্মেন্টস-এর কর্মীরা বেতন পাননি। তারা বেতনের দাবিতে শুক্রবারও কারখানার সামনে বিক্ষোভ করেন। ওই কারখানার অপারেটর রূপা আক্তার বলেন, ‘‘দুই সন্তান ও স্বামী নিয়ে আমার সংসার। মেয়েটি নবম শ্রেণি ও ছেলেটি মাদ্রাসায় পড়ে। মাদ্রাসা থেকে কিছু ত্রাণের চাল পেয়েছি, তা দিয়ে কয়েকদিন চলেছে। সামনে যে কীভাবে চলবে জানি না। আমার মতো এই কারখানার সাড়ে আটশ' শ্রমিকের সবার একই অবস্থা। মালিক বলেছেন, ২২ তারিখ বেতন দেবেন। না দিলে না খেয়ে মরতে হবে। বাসা থেকে নামিয়ে দেবে বাড়ি মালিক।''অবশ্য দাবি করেছেন, যেসব পোশাক কারখানা সরাসরি রপ্তানি করে, তাদেরই সদস্য বলা হচ্ছে। বেতন দিয়ে আবার ছাঁটাইও করা হয়েছে অনেক কারখানায়। আবার কোনো কোনো কারখানায় অর্ধেক বেতন দেয়া হয়েছে। গাজীপুরের ড্যানিশ নিট ওয়্যারের শ্রমিক আব্দুল হাকিম জানান, তাদের বেশ বিছু শ্রমিককে বেতন দিয়ে ছাঁটাই করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এখন আমরা চোখে অন্ধকার দেখছি।''
জানা গেছে, এরমধ্যে মালিকরা আবার ২৬ এপ্রিল থেকে কারখানা খোলার চিন্তা করছেন। রুবানা হক অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে কোনো কারখানা খোলা হবে না।''
এবার ২২ তারিখ!
রুবানা হক বলেন, ‘‘যেসব পোশাক কারখানা বেতন দিতে পারেনি তারা ছোট ও মাঝারি। তারা সরাসরি রপ্তানি করে না। এই পরিস্থিতিতে তাদের নগদ টাকার সংকট তৈরি হয়েছে। আমরা ব্যাংককে বলছি। আশা করছি, তাদের কেউ কেউ লোন পেয়ে যাবেন। আমরা আশা করছি, আগামী ২০ থেকে ২২ তারিখের মধ্যে বাকি শ্রমিকরা বেতন পেয়ে যাবেন।''
এর জবাবে বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, ‘মালিকরা শ্রমিকদের সাথে প্রতারণা করেছে। তারপরও বিজিএমইএ যখন ২২ তারিখ পর্যন্ত সময় দিয়েছে, আমরা সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করব। এরপর আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবো।''
তবে তিনি বলেন, যেসব কারখানায় বেতন দেয়া হয়েছে সেখানেও একটা বড় ফাঁকি আছে। কারণ, অনেক শ্রমিক তাদের গ্রামের বাড়িতে আছেন। তারা বেতন না পেলেও হিসেবে ধরা হচ্ছে।''
|
https://www.dw.com/bn/%E0%A7%AA%E0%A7%A6-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%97-%E0%A6%AA%E0%A7%8B%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%95-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%85%E0%A6%AB%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A7%8B%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%B6/a-53163998
|
4/17/2020
|
DW
|
Govt critique
|
105
|
ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন ও মৃত্যুদণ্ড আইন
|
এখন থেকে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, অধ্যাদেশ জারি
|
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের যে খসড়া মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে, তা আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদের অধিবেশন না থাকায় তা আজ অধ্যাদেশের মাধ্যমে কার্যকর করা হলো।
এর আগে গতকাল সোমবার ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০০০’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রাখার পাশাপাশি আরও দুটি সংশোধনী আনা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি হলো যৌতুকের ঘটনায় মারধরের ক্ষেত্রে (ধারা ১১-এর গ) সাধারণ জখম হলে তা আপসযোগ্য হবে। এ ছাড়া এই আইনের চিলড্রেন অ্যাক্ট-১৯৭৪-এর (ধারা ২০-এর ৭) পরিবর্তে শিশু আইন ২০১৩ প্রতিস্থাপিত হবে।
সম্প্রতি নোয়াখালীতে এক নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে রাজধানীসহ দেশজুড়ে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের ঝড় উঠে। মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চলছে গত ৮ দিন ধরে।
এসব কর্মসূচি থেকে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ‘মৃত্যুদণ্ডের’ দাবি উঠে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার আইন পরিবর্তনের পদক্ষেপ নেয়।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ধর্ষণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবি এসেছে, তাই সরকার তা বিবেচনায় নিয়েছে।
|
https://www.jugantor.com/national/354506
|
10/13/2020
|
Jugantor
|
Govt leaning
|
106
|
ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন ও মৃত্যুদণ্ড আইন
|
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে অধ্যাদেশ জারি
|
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান যুক্ত করে অধ্যাদেশ জারি করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
আজ মঙ্গলবার আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি গেজেট প্রকাশ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২০ জারির বিষয়টি জানিয়েছে।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, আইনের ধারা ৯ (১) এ উল্লিখিত ‘যাবজ্জীবন কারাদণ্ড’র পরিবর্তে ‘মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড’ করা হয়েছে। এর মানে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
এর আগে, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে দেশব্যাপী বিক্ষোভের মধ্যে গত ১২ অক্টোবর মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ ধর্ষণের অপরাধে শাস্তির বিধান সংশোধন করে এই আইন সংশোধন করার প্রস্তাব অনুমোদন করে।
গতকাল সোমবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যেহেতু বর্তমানে সংসদ অধিবেশন চলছে না, তাই সরকার দ্রুত আইন প্রয়োগের লক্ষ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ সংশোধন সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশ জারির প্রস্তুতি নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আগে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছিল। মৃত্যুদণ্ড নিয়ে কিছু বিতর্ক থাকলেও, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান বিচারপতিকে একটি নির্দেশনা জারির জন্য অনুরোধ করা হবে, যেন সারাদেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পুরাতন ধর্ষণ মামলার শুনানি ও নিষ্পত্তি করতে পারে এবং নতুনগুলোর দ্রুত বিচার করতে পারে।’
একইসঙ্গে আইন মন্ত্রণালয় বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটরদের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করে, দ্রুত বিচার কার্যকরের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
এ ছাড়াও, আইন মন্ত্রণালয় ধর্ষণ মামলায় সাক্ষীদের ডিজিটাল পদ্ধতিতে মেসেজের মাধ্যমে সাক্ষ্য দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করেছে, যাতে তারা সময়সূচী অনুযায়ী আদালতে হাজির হতে পারে।
আনিসুল হক আশা প্রকাশ করেন যে, সংশোধিত আইন কার্যকর হলেই ধর্ষণ মামলার সংখ্যা কমে আসবে।
|
https://bangla.thedailystar.net/node/179129
|
10/13/2020
|
The Daily Star
|
Govt leaning
|
107
|
ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন ও মৃত্যুদণ্ড আইন
|
ধর্ষণ: বাংলাদেশে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত, মঙ্গলবার অধ্যাদেশ জারী
|
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে এ সংক্রান্ত আইনটির একটি সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন করেছে বাংলাদেশের সরকার।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন যে, যেহেতু সংসদ অধিবেশন বসছে না, তাই আগামীকালই (মঙ্গলবার) রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারীর মাধ্যমে এটি কার্যকর করা হবে।
আইনের ৯/১ ধারায় ধর্ষণের জন্য সাজা ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, এটি সংশোধন করে মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাব আজ মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী।
এখন থেকে ধর্ষণের শাস্তি হবে হয় মৃত্যুদণ্ড না হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
সেইসঙ্গে ৯/৪ ধারাতেও সংশোধন আনা হয়েছে। কিছুদিন আগে হাইকোর্ট বিভাগের দ্বৈত বেঞ্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১/গ ধারায় সাধারণ জখম আপোষযোগ্য করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করেছিল।
|
https://www.bbc.com/bengali/news-54504707
|
10/13/2020
|
BBC Bangla
|
Govt leaning
|
108
|
ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন ও মৃত্যুদণ্ড আইন
|
মৃত্যুদণ্ডের বিধান নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন
সচিবালয়ের সামনে গণসংহতির বিক্ষোভ * আইনমন্ত্রীকে যৌন নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থী জোটের স্মারকলিপি
|
ধর্ষণ, নিপীড়ন ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে রাজধানীসহ সারা দেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। রোববার সপ্তম দিনেও ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। আন্দোলনকারীরা বলছেন, ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা ধর্ষণের প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচির অংশ হিসেবে সচিবালয়ের সামনে দুপুরে বিক্ষোভ করেছেন। অন্যদিকে ধর্ষণ-নিপীড়ন বন্ধে আইনমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়েছে যৌন নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থী জোট। এতে ৬ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে।
সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে সমমনা বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে আন্দোলন করে গণসংহতি আন্দোলন। জাতীয় প্রেস ক্লাবসংলগ্ন সচিবালয় গেটের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন- নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর প্রমুখ। তবে বৃষ্টির কারণে কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করায় বক্তব্য রাখতে পারেননি জোনায়েদ সাকি।
এ সময় মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, নোয়াখালীর ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার এক মাস আগের ঘটনা। এর আগে পুলিশ কিছুই জানত না। এ এক মাস পুলিশ তাহলে কি করল? তারা শুধু যাদের ভিন্নমত তাদের দমন করতে পারে। সবাইকে বলছি না, কিন্তু পুলিশের অনেকেই এমন। ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, বর্তমানে দেশে ধর্ষণের মহোৎসব চলছে। এ দেশে যুবলীগের ক্যাসিনোকাণ্ড, ওসি প্রদীপের ঘটনা, ছাত্রলীগ নেতাদের এমসি কলেজে গৃহবধূকে ধর্ষণ- বর্তমান সরকার তো টিকেই আছে এ ছাত্রলীগ, ক্যাসিনো যুবলীগ, ওসি প্রদীপের মতো লোকদের দিয়ে। তাই বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির যদি পরিবর্তন করা না যায়, এ অবৈধ সরকারের যদি পতন ঘটানো না যায়, তবে ধর্ষণ-নির্যাতন থেকে দেশের মা-বোনেরা মুক্ত হতে পারবেন না। পৃথিবীতে কোন স্বৈরাশাসক টিকতে পারেনি। আপনারাও পারবেন না। চ্যালেঞ্জ করলাম, দু’দিন আগে-পরে আপনাদেরও চলে যেতে হবে। সরকারের উদ্দেশে ভিপি নূর বলেন, আপনারা যদি স্বেচ্ছায় না যান তাহলে নির্মম-নিষ্ঠুর পরিণতির মধ্য দিয়ে বিদায় নিতে হবে। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে গণসংহতির নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য আকবর খান বক্তব্য রাখেন।
আইনমন্ত্রীকে স্মারকলিপি : ধর্ষণ ও নিপীড়ন বন্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ সংশোধনের ৬ দফা দাবি নিয়ে আইনমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়েছে যৌন নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থী জোট। শাহবাগ থেকে এ জোটের পাঁচ সদস্য আইন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেন। স্মারকলিপিতে ৬ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান করা; টু ফিঙ্গার টেস্ট বাতিলে হাইকোর্টের রায় কার্যকর করা; ভিকটিম ও সাক্ষীর আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করা; সাক্ষ্য আইনের ১৫৫(৪) ধারা সংশোধন করা; নারীর সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য প্রত্যেক থানায় নারী সেল গঠন করা এবং ধর্ষণ মামলায় ১৫ দিনে পুলিশ প্রতিবেদন এবং ৬০ দিনের মধ্যে রায় দেয়ার জন্য দাবি উত্থাপন করা হয়।
স্মারকলিপি প্রদান শেষে যৌন নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থী জোটের আহ্বায়ক শিবলী হাসান বক্তৃতা করেন। ২০১৯ সালের ২৬ জানুয়ারি বিচারপতি ইমান আলী ও বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রায়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে দেশের প্রতিটি থানায় আলাদা সেল গঠনের নির্দেশ দেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করা হয়। তিনি বলেন, আইনের দুর্বলতা, অস্পষ্টতা এবং যুগোপযোগী পূর্ণাঙ্গ আইন না থাকায় ধর্ষণের বিচারের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে।
মতিঝিলে বিক্ষোভ : ধর্ষণ-নির্যাতনের প্রতিবাদে মতিঝিলে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। দুপুরে তারা সড়ক অবরোধ করে ধর্ষকদের বিচার দাবিতে নানা স্লোগান দেন। সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করায় ওই এলাকায় সৃষ্টি হয় যানজট। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। মতিঝিল থানার ওসি ইয়াসির আরাফাত বলেন, শাপলা চত্বর এলাকায় শিক্ষার্থীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। তবে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে এজন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রাসেল বলেন, ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, মা-বোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই আমরা রাস্তায় নেমেছি। শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে রাখায় আশপাশে যানজটের সৃষ্টি হয়।
যুগান্তর ব্যুরো, স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম নগরীর চেরাগি পাহাড় মোড় এলাকায় ছাত্র ইউনিয়ন কোতোয়ালি থানা শাখা ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এর আগে সকালে চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে কলেজ শাখা ছাত্রলীগ।
বরিশাল : বরিশালে সমাবেশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। বেলা ১১টায় নগরীর সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে সংগঠনের বরিশাল শাখার উদ্যোগে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
যশোর : মানববন্ধন করেছে যশোর স্টুডেন্টস কমিউনিটি ঢাকা ও আমরা যশোরের সম্মিলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী নামে দুটি সংগঠন। যশোর প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে কয়েকটি মহিলা সংগঠনের উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
দিনাজপুর : দিনাজপুরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সংগঠন। এ সময় তারা ধর্ষকের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি ‘মৃত্যুদণ্ড’ করার দাবি জানান। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর এলাকার নিমতলা মোড়ে মানববন্ধন করে সচেতন নাগরিক সমাজ (সনাস) ফুলবাড়ী শাখা।
গাইবান্ধা : সিপিবি নারী শাখা, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) : হাজীগঞ্জ বাজারে মানববন্ধন করেছে হাজীগঞ্জ সাহিত্য সাংস্কৃতিক পরিষদ ও মানবাধিকার কমিশন। কিউসি টাওয়ারের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
জামালপুর : জামালপুরে মানববন্ধন করেছে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম জামালপুর জেলা ইউনিট। জজকোর্ট প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
রাজবাড়ী : জাতীয় ছাত্র সমাজ রাজবাড়ী জেলা শাখার আয়োজনে রাজবাড়ী প্রেস ক্লাবের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জয়পুরহাট : জয়পুরহাটে গণঅবস্থান, প্রতিবাদ সমাবেশ ও স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। সম্মিলিত সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও অনলাইন ঐক্যের যৌথ উদ্যোগে শহরের জয়পুরহাট শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দানের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ পাদদেশে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
সেনবাগ (নোয়াখালী) : নোয়াখালীর সেনবাগে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার বীজবাগ ইউনিয়নের জয়নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে বীজবাগ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ ও নামার বাজার যুব সমাজের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) : জাসদ সভাপতি ও কুষ্টিয়া ২ (ভেড়ামারা- মিরপুর) আসনের সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু বলেছেন, দেশ করোনা, ধর্ষণ, দুর্নীতি ও লুটপাটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রোববার সকালে ভেড়ামারা বাহাদুরপুর ও জুনিয়াদহ সড়কের কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
নবাবগঞ্জ (ঢাকা) : বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ঢাকা জেলা দক্ষিণ শাখা ‘নারী ও শিশুদের প্রতি নৃশংসতা, ধর্ষণ, নির্যাতনের প্রতিবাদে’ ঢাকার দোহার উপজেলার রতন চত্বরে মানববন্ধন করেছে। পরে উপজেলার জয়পাড়া এলাকায় অবস্থিত সংগঠনের কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা জেলা দক্ষিণ মানবাধিকার কমিশনের সাধারণ সম্পাদক হাজী নাছির উদ্দিন পল্লবের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন আবদুল হামিদ ইন্তাজি, সামাদ মাদবর, মহিউদ্দিন মাদবর, আবদুল মালেক দোহারি, জন গোমেজ, মোক্তার বয়াতি, মো. মিলন, আরিফ হোসেন, রাশেদ খন্দকার, রনি, মুক্তিযোদ্ধা শাহ আল ফারুক প্রমুখ।
এছাড়া মৌলভীবাজার, ময়মনসিংহের গৌরীপুর, সিলেটের গোলাপগঞ্জ, মানিকগঞ্জের সিংগাইর, রাজশাহীর বাঘা, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ, নেত্রকোনার কেন্দুয়া, পাবনার চাটমোহর, পটুয়াখালীর দশমিনা, কুড়িগ্রামের উলিপুর, কুমিল্লার দাউদকান্দি, কুমিল্লার দেবিদ্বার, রাজশাহীর বাঘা, যুগান্তর রিপোর্ট, সোনারগাঁ, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর ও কুড়িগ্রামের চিলমারী প্রতিনিধি বিক্ষোভ এবং মানববন্ধনের প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন।
|
https://www.bbc.com/bengali/news-54534727
|
10/12/2020
|
Jugantor
|
Neutral
|
109
|
ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন ও মৃত্যুদণ্ড আইন
|
ধর্ষণ : বিশ্বব্যাপী সামাজিক ব্যাধি
|
বাংলাদেশে পর পর কয়েকটা ধর্ষণের ঘটনা ঘটে গেল। যা কিনা সমাজের অস্থির নগ্ন দশার বহিঃপ্রকাশ মাত্র। বিগত কয়েক মাসে ধর্ষণের সবগুলোই সংগঠিত হয়েছে সংঘবদ্ধ অপরাধীদের দ্বারা। প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় একটি দুটি নয়, পাতার পর পাতা দৃষ্টি আকর্ষণ করে চলেছে ধর্ষণের খবর। নারী, শিশু, কিশোরী ও কিশোর সব এই নির্যাতনের তালিকায়। বিচার না পেয়ে ধর্ষিতা, নির্যাতিতার বাবার সন্তানসহ ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা! এমন সব হৃদয়বিদারক সংবাদ আমাদের পাঠের তালিকাভুক্ত! যদিও এ নতুন কোনো ঘটনা নয়!
ধর্ষণের এই আধিক্য শংকিত করে তোলে দেশের সচেতন নাগরিকদের। এই পর্যায়ে দেশের যুব নারী ও পুরুষ দুটো সমাজ সোচ্চার হয়ে বেরিয়ে আসে রাজপথে। মিছিলে মিছিলে কেঁপে ওঠে বাংলাদেশের রাজপথ। আর সমন্বিত কণ্ঠের চিৎকার ওঠে ধর্ষণের বিচার চাই। ক্ষ্যাপা কণ্ঠে সবাই চাই ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
ধর্ষণ অপরাধ বৃদ্ধির আজকের যে অবস্থা সেটা বাংলাদেশের রাষ্ট্রযন্ত্রের দুর্বল দিকের প্রমাণ বটে। তবে ধর্ষণ অপরাধ শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বের প্রতিটা দেশে নারীরা এই অপরাধ-মহামারির শিকার! সমগ্র বিশ্বের জন্য ধর্ষণ নতুন কোনো অপরাধ নয়। পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন অপরাধের একটি হচ্ছে ধর্ষণ।
হয়ত এতদিন এই সংবাদ আড়ালে থেকে যেত। অথবা প্রকাশ পেত অতি সামান্য। কদাচিৎ পত্রিকায় এলে গুটি দৃষ্টি আকর্ষণ করতো কিছু পাঠকের। কিন্তু বর্তমান সোস্যাল মিডিয়ার কারণে সেটা দ্রুত চলে আসছে মানুষের নজরে। প্রচার পাচ্ছে ব্যাপক হারে, শুধু দেশের সীমানার মধ্যে নয়, বরং সারা বিশ্বে একযোগে!
লেখক বন্ধু শিহবন জেমিসনের অপরিসীম আগ্রহ বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের সাহিত্য নিয়ে। কারণ এই ভাষার কবি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। আমার সাথে বন্ধুত্বের কারণে হয়ত ওর সেই আগ্রহ হয়েছে আরও প্রবল। ওর সাথে বন্ধুত্বের শুরু ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টোর ক্রিয়েটিভ রাইটিং-এ পড়ার সময়।
ফেসবুকে বাংলাদেশের ধর্ষণ নিয়ে অন্যান্য মিডিয়ার সাথে ইংরেজি মিডিয়াতে তোলপাড় দেখে আমার কাছে জানতে চাইলো কী ঘটেছে? সত্য আড়াল করার কোনো উপায় নাই! ইচ্ছা হয় না নিজের দেশ মা, নিজের মাতৃভূমির লজ্জা প্রকাশ করতে। কিন্তু ডিজিটাল যুগে আমি কেমন করে লুকাবো আমার লজ্জা। তাছাড়া ওর বয়ফ্রেন্ড আলেসান্দ্রো পেশায় একজন সাংবাদিক। সুতরাং ওর কাছে গোপন করার একেবারেই কোনো উপায় নাই, যেমন গোপন করার উপায় নাই আজ সারা পৃথিবীর কাছে। বাংলাদেশে সংঘটিত দলবদ্ধ ধর্ষণ বা সিরিয়াল রেপ নামের নগ্নতা আজ সারা বিশ্বের কাছে প্রকাশ পেয়ে গেছে!
শিহবনের প্রশ্নে বাধ্য হলাম দেশের বর্তমান ধর্ষণ পরিস্থিতি বর্ণনা ও ব্যাখ্যা দিতে।
প্রশ্ন হলো ধর্ষণ কেন মহামারি আকারে বেড়ে চলেছে?
৬ মাসের শিশু থেকে ৯০ বছরের বৃদ্ধা পর্যন্ত রেহাই পাচ্ছে না ধর্ষকের বিকৃত মানসিকতা থেকে। বাংলাদেশের ধর্ষণ পরিস্থিতির অবনতিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এবং ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার মামলা দ্রুত নিস্পত্তির জন্য বর্তমান আইন সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে। [বিডিনিউজ ২৪, অক্টোবর ২০২০]
বিবিসি বাংলার নিউজে প্রকাশ পেয়েছে, ২০১১ জুন থেকে ২০১৮ এই সময়ে ছয়টি জেলায় ৪৩৭২টি ধর্ষণের মামলায় সাজা হয়েছে মাত্র ৫ জনের। এপ্রিল থেকে আগস্ট ২০২০, এই সময়ের মধ্যে অর্থাৎ ১৫৩ দিনে ৬৩২টি নারী ধর্ষিত হয়েছে। ধর্ষনের প্রচেষ্টায় আহত হয়েছে ১৪২ জন। ধর্ষণ লজ্জা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য আত্মহত্যা করেছে ৫ জন। [সূত্র: আইন ও সালিশ কেন্দ্র।]
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী আনুমানিক এক হাজারের অধিক যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এসেছে জানুয়ারি ২০২০ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২০ পর্যন্ত। এই কেন্দ্রের তথ্য সূত্র অনুযায়ী বিগত দুই বছরে হঠাৎ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে ধর্ষণ ও নির্যাতনের পরিমাণ।
সামাজিকভাবে অধিকাংশ মানুষ মনে করেছে ধর্ষণের এই মহামারি শুধু ক্ষমতার ছত্রচ্ছায়ায় এবং বিচারহীনতার কারণেই বেড়েছে। একটি রাজনৈতিক অপশক্তির হীন পরিকল্পনা পরিকল্পিত অপরাধ ঘটিয়ে চলেছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। এই শক্তির উদ্দেশ্য নারী শিক্ষা, সচেতনতা সার্বিক উন্নয়নে বাঁধা দেওয়া।
যে কারণেই অপরাধ বৃদ্ধি পেয়ে থাকুক না কেন, ধর্ষণ অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে এটাই সত্য। পরপর কয়েকটি দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশের যুব সমাজ। উল্লেখযোগ্য হারে সোচ্চার হয়ে ওঠে যুবনারী সমাজ। এই আন্দোলনকে বলা হয় ধর্ষণ প্রতিরোধ আন্দোলন বা রেপ ক্রাইসিস মুভমেন্ট। এই প্রথম ব্যাপক আকারে শুরু হলো বাংলাদেশে। মধ্যরাতে ঢাকা শহরের নারীরা মশাল মিছিল নিয়ে ধর্ষণ বিরোধী স্লোগানে স্লোগানে মুখর করে তোলে ঢাকার রাজপথ। বাংলাদেশের আন্দোলন চত্বর নামে পরিচিত শাহবাগে শুরু হলেও ছড়িয়ে পড়ে সারা বাংলাদেশের প্রতিটা শহরে, এমনকি গ্রামে পর্যন্ত।
শেষ পর্যন্ত আন্দোলনের তীব্রতায়, এবং দেশের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সরকার ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড আইন প্রণয়ণ করে। ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হওয়ায় অনেকটা যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো এই দাবি ও আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা। শান্ত হলো আন্দোলনে ক্ষিপ্ত রাজপথ।
কিন্তু ইতিহাস কী বলছে? মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত হলেই ধর্ষণের মতো অপরাধ কমে আসবে? যে সব দেশ সমূহে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড সে সব দেশের অভিজ্ঞতা এই সাক্ষ্য দিতে পারেনি—মৃত্যুদণ্ড ধর্ষণ রোধ করতে সক্ষম হয়েছে অথবা কমিয়ে আনতে পেরেছে! বরং ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড আইন যে সব দেশে প্রণীত হয়েছে সে সব দেশে পরবর্তীতে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিটি হত্যা ও খুনের শিকার হয়েছে। ধর্ষকের চাইতে নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুর হত্যার হার বেড়েছে ধর্ষণের পর।
মানবাধিকার কণ্ঠের সোচ্চার প্রশ্ন বিরাট আকারে আওয়াজ তুলেছে—মৃত্যুদণ্ড কি পেরেছে নারীর প্রতি সহিংস আচরণ বন্ধ করতে?
ইতিহাস এবং প্রমাণাদি বলছে যে সব দেশে ধর্ষণ অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডাদেশ শাস্তি বিধান করেছে সেসব দেশে ধর্ষণের মাত্রা হ্রাস পায়নি অথবা বন্ধ হয়নি। দশটির বেশি দেশে বর্তমানে ধর্ষণ অপরাধের পরিমাপ ভেদে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। ধর্ষণ অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড সাজা প্রদান কি খুনের বদলে খুন এর মতো প্রতিশোধ নাটক নয়? কারণ একজন ধর্ষণ নির্যাতনের শিকার নারীকে যেভাবে সমাজ অবহেলা ও ঘৃণার চোখে দেখে সেটা তার জন্য হত্যার সমান। সমাজ মূলত ধর্ষণের শিকার নারীকে মূলত হত্যাই করে থাকে। সে বেঁচে থাকে জিন্দা লাশের মতো।
বাংলাদেশ ও ভারতে ধর্ষণের অপরাধে অপরাধীদের শাস্তি পাওয়ার সত্যতা কম। আইনের শাসন প্রতিনিয়ত ফাঁকি দিচ্ছে অপরাধ চক্র। এবং অপরাধের শিকার, ভুক্তভোগীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে বিচারহীনতায়। অপরদিকে ধর্ষণের মতো সামাজিক লজ্জা ও ধিক্কার জড়িয়ে থাকে ধর্ষকের শরীরে নয়, ভুক্তভোগীর শরীরে, নির্যাতিতার শরীরে ও পরিবারে। সুতরাং সামাজিক লজ্জা অপবাদ থেকে মুক্ত থাকার জন্য ধর্ষণের শিকার নারীটি পালিয়ে বেড়ায়। নিজেকে আড়াল করে রাখে অথবা নীরবে গোপন রাখে এই অপরাধ!
মৃত্যুদণ্ডের মতো শাস্তির বিধান মগজ ধোঁয়ার মতো মিথ্যে প্রক্রিয়া মাত্র। ভারতে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু দেখা গেল ২০১৯ সালে যৌন অপরাধের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৩%।এবং সেখানে মৃত্যুদণ্ড-প্রাপ্ত আসামির সংখ্যা মাত্র ৪ (চারজন) জন। নারীর প্রতি যৌন নির্যাতন প্রতি বছর ভীতিজনক হারে বেড়ে চলেছে ভারতে। ধর্ষণের শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে চীন পৃথিবীর কঠিনতম শাস্তির দেশ হিসেবে পরিচিত। ধর্ষণের নিষ্ঠুরতার ওপর নির্ভর করে শাস্তির পরিমাণ। যেমন ধর্ষকের লিঙ্গ কর্তন থেকে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত। কিন্তু তদুপরি ধর্ষণমুক্ত সমাজ তৈরি হয়নি। কারণ একই ধর্ষিতার জন্য সামাজিক লজ্জা ও দায়! চীনের পরেই শাস্তির কঠিনতম অবস্থানে আছে আফগানিস্তান।এই দেশে ধর্ষকের শাস্তির সর্বোচ্চ অথবা সর্বনিম্ন কোনো স্তর-বিন্যাস নাই। একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এবং এই মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয় অত্যন্ত নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে। চার দিনের ভেতর অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এবং এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় মাথায় গুলি ছুড়ে। এবং গুলি ছোড়ার দায়িত্ব পালন করে ধর্ষিতা। তবে ধর্ষিতা গুলি ছুড়তে রাজি না হলে ফাঁসি দিয়েও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। অনুমান করা হয় শাস্তির নির্মমতার কারণে আফগানিস্তানে ধর্ষণের পরিমাণ কম। কিন্তু এটা বলা যাবে না একেবারেই ধর্ষণ অপরাধ মুক্ত দেশ! ইরানেও ফাঁসির সাজা মৃত্যুদণ্ড। ফাঁসি অথবা গুলি ছুড়ে প্রকাশ্য জনসম্মুখে কার্যকর করা হয় মৃত্যুদণ্ড। সৌদি আরবের ফাঁসির শাস্তিও ইরানের অনুরূপ কঠিন মৃত্যুদণ্ড। শরিয়া আইন অনুযায়ী এই মৃত্যুদণ্ড জনসম্মুখে দেয়া হয়। দেহ থেকে মস্তক বিচ্ছিন্ন করা হয়, অতঃপর বিচ্ছিন্ন মস্তককে দেহের সাথে জোড়া দেওয়া হয়। অপরাধের ক্ষেত্র বিশেষে পাথর ছুড়ে মারা হয় যতক্ষণ না পর্যন্ত মৃত্যু ঘটে। এই শাস্তি নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু এত এত মৃত্যুদণ্ডের সাজা ধর্ষণ নামক হীন অপরাধটির অস্তিত্ব সমাজ থেকে চিরতরে নির্মূল করতে পারেনি।
আমেরিকার ২২টি প্রদেশে মৃত্যুদণ্ড শাস্তির বিধান আছে। জানুয়ারি ২০২০-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২৬২০ (দুই হাজার ছয়শত কুড়ি জন) মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আছে। এই সব আসামিরা সকলেই অপেক্ষায় আছে, এদের ভেতর অনেক আসামি আছে যারা মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষায় আছে ১৫ বছরের বেশি সময় যাবৎ। ১৯৭৬ সাল থেকে এই সময় পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ১৫১২ জন আসামিকে।
ফ্রান্সে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার আইন নেই, কিন্তু অপরাধীদের দীর্ঘ সময় কারা ভোগ করতে হয়। পনের থেকে ত্রিশ বছর পর্যন্ত এই কারাদণ্ডের মেয়াদ।
নেদারল্যান্ডে ধর্ষণের শাস্তি চার বছর থেকে পনের বছর পর্যন্ত। যদি অপরাধীর মৃত্যুও ঘটে তদুপরি তার শাস্তি পনের বছর নির্ধারিত থাকবে।
মৃত্যুদণ্ডের ভয় অপরাধ হ্রাস করে না। আজ পর্যন্ত পৃথিবীর কোন দেশে মৃত্যুদণ্ডের ভয়ে ধর্ষণ অপরাধ হ্রাস পেয়েছে বলে প্রমাণিত হয়নি। মৃত্যুদণ্ডের চাইতে বরং দীর্ঘমেয়াদী মৃত্যুদণ্ড আইন অধিক কার্যকরী। ১৯৭৬ সালে কানাডা মৃত্যুদণ্ড আইন বিলোপ করে। এবং লক্ষ করা যায় মৃত্যুদণ্ড নিষেধ আইন প্রণয়নের পর কানাডা হত্যা, খুন এসবের মতো অপরাধ হ্রাস পেয়েছে। তবে এদেশও ধর্ষণ অপরাধ মুক্ত নয়।
আমাদের দেশে এখনও যৌন নির্যাতন বলতে শুধু ধর্ষণকেই বোঝায়! কিন্তু উন্নত বিশ্বে ধর্ষণ ছাড়াও শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন প্রকারভেদে যৌন নিপীড়ন ও হয়রানি সংজ্ঞার আওতাভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে যৌন নিপীড়ন, যৌন অপদস্ততা অথবা হেনস্তা, শিশুদের প্রতি যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতন, অস্ত্র অথবা ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে যৌন নিপীড়ন, অশ্লীল মন্তব্য, অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব (বাংলাদেশে ইভটিজিং হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে), অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিত ও অনুরূপ উদ্দেশ্যে অনুসরণ। এবং অতি সাম্প্রতিক সাইবার অথবা অনলাইন হেনস্তা ও অপদস্ত করাও যৌন নির্যাতনে সমন্বিত হয়েছে। এছাড়া আছে যৌনকর্মী বানানোর উদ্দেশ্যে অপহরণ ও যৌনকর্মী ব্যবসায়ে বিনিয়োগ অথবা ব্যবহার করা। আছে যৌন বিনোদনের উদ্দেশ্যে সংগোপনে নগ্ন চিত্র ধারণ, অবলোকন ও ব্যবহার। এসমস্ত অপরাধ যৌন নিপীড়নের আওতাভুক্ত।
যৌন নিপীড়নের কোন বয়স অথবা বয়সের সীমানা নেই। একজন যৌন নির্যাতক অথবা নিপীড়ক সে যে কোনো বয়সেরই হতে পারে। হতে পারে যে কোন ধর্ম, জাতি ও সম্প্রদায়-ভুক্ত। যৌন নিপীড়নের অপরাধ ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে সমাজের সুস্থ মানুষের জীবনযাত্রা। একজন ধর্ষক অথবা নিপীড়ক শুধু একজন ব্যক্তি বিশেষকে সামাজিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে না। একক ব্যক্তি এবং দলবদ্ধ অপরাধীরা সমষ্টিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে নির্যাতন ভোগকারীসহ তার পরিবার ও সমাজকে।
খুব কাছের উদাহরণ হিসাবে আমরা দেখাতে পারি সম্প্রতিকালের বাংলাদেশের অবস্থা। আজকে সারা বাংলাদেশের সামাজিক শাস্তি ও শৃঙ্খলা বিঘ্নিত ও ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডের এই আন্দোলনের কথা ছড়িয়ে পড়েছে ডিজিটাল সময়ে সারা বিশ্বে। বাংলাদেশের ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সারা বিশ্বের সভ্য সমাজের।
ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন সদ্য শুরু হয়েছে বাংলাদেশের রাজপথে। কিন্তু পৃথিবী জুড়ে এই আন্দোলনের ইতিহাস দীর্ঘ সময়ের।ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন মূলত শুরু হয় আফ্রিকান আমেরিকান নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ প্রতিরোধ আন্দোলনের মাধ্যমে। যখন দাস প্রথার প্রচলিত ছিল তখন দাসত্বের অমানবিক শৃংঙ্খলে আবদ্ধ নারীদের ওপর সাদা চামড়ার পুরুষরা নির্যাতন চালাতো। তখন ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন ছিল অতি সাধারণ ঘটনা। এবং সমাজে অপরাধ বলে গণ্য হতো না। দাস প্রথার বিলোপ ঘটলেও নির্যাতনের ইতিহাস দীর্ঘ হতে থাকে। এই নির্যাতন ও অত্যাচার বাড়িয়ে দেয়ার হীন উদ্দেশ্য ছিল সামাজিকভাবে কালো রঙের মানুষেরা যেন শক্তি বৃদ্ধি করতে না পারে এবং তারা যেন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কোথাও স্থান লাভ করতে না পারে। সময়টা ছিল ১৮৬৬। এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠস্বর ক্রমশ সফল আন্দোলনের রূপ লাভ করে।
অনুন্নত, উন্নয়নশীল এসব যত সংজ্ঞাতেই পৃথিবীর দেশগুলোকে চিহ্নিত করা হউক না কেন পৃথিবীর অতি সভ্য অথবা উন্নত দেশের দাবিদার কোন দেশই আজ পর্যন্ত এই দাবি করতে পারে না তাদের দেশ ধর্ষণের মতো অপরাধ মুক্ত।
রেপ ক্রাইসিস মুভমেন্ট (Rape Crisis Movement) গড়ে ওঠে আমেরিকাতে এবং ব্যাপক সংগঠিত হয়। ১৯৭০ সালে। অগণিত নারীর কঠিন শ্রমের ফসল রেপ ক্রাইসিস মুভমেন্ট। রেপ ক্রাইসিস এই আন্দোলনে সোচ্চারিত দাবির সর্বপ্রধান দাবি ছিল ধর্ষণের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনা বৃদ্ধি। এবং এই লক্ষ্যে সরকার সমূহের ফলপ্রসূ কর্মসূচি গ্রহণ। এই আন্দোলনের সর্বপ্রধান সফলতা ছিল ধর্ষণের জন্য ঘৃণিত বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে নারীদের কথা বলার সাহসিকতা। রেপ ক্রাইসিস সেন্টারগুলো স্থাপিত হয় সর্বপ্রথম ১৯৭২ সালে। প্রথম দিকে এই সেন্টারগুলোর ভেতরও বৈষম্য ছিল। কালো চামড়ার নারীদের তখন সংশ্লিষ্ট করা হয়নি। ফলে শুরু হয় বিরোধিতা। দ্বিগুণ হতে থাকে কালো চামড়ার নারীদের উপস্থিতি আন্দোলনসমূহে। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮০ এই সময়ের ভেতর প্রবল হতে থাকে বর্ণ বৈষম্য আন্দোলন। পরবর্তীতে যে কোনো রকমের সাহায্য সহযোগিতার নিশ্চিন্ত আশ্রয় হয়ে ওঠে রেপ ক্রাইসিস সেন্টারগুলো।
১৯৭০ সালে গড়ে ওঠা আন্দোলনের সাথে ১৯৯০ সালের আন্দোলনের পর্যায় আলোচনা করলে আমরা দেখতে পাই শুরুতে এই আন্দোলন সামান্য কিছু সফলতা অর্জন করছে। ফলে নারীবাদী আন্দোলনের নেতারা ক্রমেই আরও কঠিন আন্দোলন গড়ে তোলে। তাদের আন্দোলন ক্রমেই বিস্তার লাভ করে বিশ্বব্যাপী। ফলে উন্নত বিশ্বে ধর্ষকের শাস্তি প্রতিষ্টা পায় এবং প্রকাশ পেতে থাকে ধর্ষণের সঠিক চিত্র। সম্মানজনক ভাষা ব্যবহারের আইন প্রণীত হয় ধর্ষণের শিকার নারীদের প্রতি ব্যবহারের জন্য। এবং এটাও ছিল নারী আন্দোলনের ফলাফল। শুধু তাই নয়, শিশুদের প্রতি যৌন নির্যাতনের বিষয়টিও এই আন্দোলনের মাধ্যমে উন্মোচিত হয়।এবং সমাজের জন্য কতটা ক্ষতিকর সেটা নির্ণীত হয় এই আন্দোলনের মাধ্যমেই। নতুন আইন প্রণীত হয় ধর্ষিতার ন্যায্য বিচার ও সামাজিক মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্টার। পুলিশ বিভাগের জন্য নির্ধারিত হলো বিশেষ ট্রেনিং প্রদান। তাদেরও শেখানো হলো ধর্ষণ বিচার কার্য পরিচালনার জন্য নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির সাথে কোন ভাষা ও আচরণ প্রয়োগ করে অভিযোগ গ্রহণ করতে হবে।
তবে বিশ্বব্যাপী আন্দোলন যতটা সংগঠিত হওয়ার কথা ছিল ততটা সফলভাবে এগিয়ে যায়নি বা যেতে পারেনি। এর অন্যতম কারণ হলো রাষ্ট্রসমূহের সরকারের নিকট থেকে আশানুরূপ তহবিল বা ফান্ড পাওয়া যায়নি। আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের মতামত অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে বিবেচ্য হওয়া দরকার ছিল কিন্তু সেটাও হয়নি বাস্তবে।
যে সব দেশে ধর্ষণের শাস্তির সর্বোচ্চ কঠিনতর স্তরে রয়েছে সে সব দেশেও ধর্ষণের শিকার নারীরা ধর্ষণের যন্ত্রণা নীরবে সহ্য করে। কারণ অতি সহজে অনুমেয়! সমাজে ধর্ষণ নির্যাতনের শিকার নারীর অবস্থান। একজন ধর্ষিতা নারী সমাজে অবহেলিত ও পরিত্যাক্ত। সমাজ তাদের ঘৃণা, অবমাননা ও অবহেলার চোখে দেখে। কখনোই গ্রহণ করে না সম্মানের সাথে। একই ভাবে রাষ্ট্রে ধর্ষকের বিরুদ্ধে আইন থাকলেও সামজের ভেতর সৃষ্ট ব্যবস্থা ধর্ষকের পক্ষেই দাঁড়ায়। সমাজের তৈরি নানা ফাঁকফোকড় দিয়ে ধর্ষক বের হয়ে আসে শাস্তির হাত থেকে। বাহ্যত সমাজের গুণী জনেরা অথবা সমাজের মুখপাত্র যারা তারা নীতি মূল্যবোধের কথা বললেও মূলত সমাজ আজও স্তব্ধ হয়ে আছে সচেতনা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে।
মৃত্যুদণ্ড আইন ঘোষিত বিভিন্ন দেশের অপরাধ পরিসংখ্যন গবেষণা ও পর্যালোচনা করে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে মৃত্যুদণ্ড কোনো অপরাধ দমনে বা হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে না। এক্ষেত্রে গবেষণা মিশ্র ফলাফল প্রমাণ করেছে। রাষ্ট্র কৃর্তক দ্রুত মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা হচ্ছে অন্দোলনকারীদের আন্দোলন দমন করার একটা পন্থা মাত্র। বরং মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার মাধ্যমে রাষ্ট্র অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। যে সব ক্ষতিকর অপরাধ দমনের জন্য জরুরি সে সব অপরাধ সমাজে স্থায়ীভাবে আসন নিয়ে নেয়।
ভারত বাংলাদেশ সহ বহু দেশের আইনের প্রয়োগ ব্যবস্থায় পরিবর্তন ও উন্নয়ন সাধন একান্ত জরুরি। বহু ক্ষেত্রেই আইন আছে কাগজে কলমে কিন্তু এর যথাযথ প্রয়োগ নাই। এই সব দেশ সমূহে সত্যিকারের অপরাধীদের সাজা পাওয়ার সত্যতা কম। এই সব দেশে আইনের শাসন প্রতিনিয়ত দুর্নীতির মাধ্যেমে ফাঁকি দিচ্ছে অপরাধ চক্র। মৃত্যুদণ্ডের মতো শাস্তির বিধান মগজ ধোয়ার মতো মিথ্যে প্রক্রিয়া মাত্র। অপর দিকে ভীতিকর চিত্র হচ্ছে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থ ও বিত্তের বিনিময়ে সহজেই অপরাধী পালিয়ে যায় ও কোনো এক নিরপরাধীকে শাস্তির খাতায় তুলে দেয়। এই গবেষণায় দেখা যায় বেশিরভাগই দেশেই ধর্ষণ নির্যাতনের শিকার নারীদের মানসিক ও সামাজিক কোনো রকম সহযোগিতা করা হয় না। ধর্ষণের শিকার নারীর জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিষয়টিও যেন সচেতন ভাবে এগিয়ে গেছে রাষ্ট্র সমূহ।
নারীদের মতোই বাংলাদেশ ও ভারতের মতো অসংখ্য দেশে হিজড়া সম্প্রদায় অথবা ট্রান্স জেন্ডাররা সর্বাধিক অবহেলিত ও নিগৃত গোষ্ঠী। সমাজের কোন অধিকারই তারা ভোগ করে না। ফলত তাদের প্রতি ধর্ষণ নির্যাতনের বিষয়টি থাকে একেবারেই দৃষ্টির আড়ালে। তারা শিকার হয় অধিক ধর্ষণ নির্যাতনের। তাদের জন্য আইনের কোথাও কোনো সহযোগিতার কথা নাই। আইনগত সাহায্য সহযোগিতা কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে নাই বলাই সঠিক। একই চিত্র বাংলাদেশ ও ভারতের শিশু কিশোরদের। বিশেষ করে এতিম, দরিদ্র শিশু ও কিশোরদের। এই সব অসহায় অবহেলিত হিজড়া অথবা ট্রান্সজেন্ডার ও শিশু কিশোরদের জন্য সরকারের প্রয়োজন বিশেষ কার্যক্রম হাতে নেয়া।
ধর্ষণ বিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকারের অধিক কার্যক্রম গ্রহণ করা। গ্রহণ করা সারা দেশে ধর্ষণ সমস্যা সমাধান প্রকল্প। উন্নত বিশ্বের দেশ সমূহের মতো রেপ ক্রাইসিস সেন্টার স্থাপন করে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। আজকে আমরা যতটুকু ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলন প্রত্যক্ষ করছি তার সবটুকুই অগণিত সমান অধিকার সচেতন নারীদের কঠোর আন্দোলনের ফসল। শুধু ধর্ষণ বিরোধী মিছিল শুধু নয়। দাবি আরও জোরদার হওয়ার চাইতে প্রয়োজন সরকার সমূহের কঠিন নীতিমালা। ধর্ষণের মূল কারণ ও অপরাধ উৎপাটনে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন। কয়েক শতাব্দী পার হয়েছে নারী অধিকার আদায়ের আন্দোলন। সময়ের গতিতে আন্দোলন এগিয়ে চলেছে। পৃথিবীর নারী সমাজ আজ অর্জন করেছে অনেক অধিকার কিন্তু পরিসংখ্যনে দেখা যায় সেই অর্জন আজও খুবই সামান্য।
আজকের বাংলাদেশে যে আন্দোলন সে আন্দোলন পৃথিবীর নারী আন্দোলনেরই ধারা। এবং এ আন্দোলন অবশ্যই এগিয়ে চলবে ধর্ষণ-মুক্ত শোষণ নির্যাতন মুক্ত পৃথিবীর পথে। ধর্ষণের শিকার নারীকে অন্য সব দুর্ঘটনার শিকার মানুষদের মতো মর্যাদা দিতে হবে। এটা নারী আন্দোলনের একক কোনো দায়িত্ব নয়! রাষ্ট্র ও সমাজের সকলের সম্মিলিত দায়িত্ব। ধর্ষণ মুক্ত পৃথিবীর জন্য নারী ও পুরুষ একে অপরের হবে পরিপূরক, সহায়ক—বন্ধু।
Google News Logo
|
https://www.banglatribune.com/literature/articles/650667/%E0%A6%A7%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%A3-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%80-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A6%BF
|
11/2/2020
|
Bangla Tribune
|
Govt critique
|
110
|
মোদির বাংলাদেশ সফর বিরোধিতা
|
নরেন্দ্র মোদী: ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে হামলা চালালো কারা?
|
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের প্রতিবাদে করা বিক্ষোভ মিছিলে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আহত হয়েছে ২০-২৫ জন।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, সরকারি দলের সহযোগী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ এই হামলা চালিয়েছে। ছাত্রলীগ অবশ্য বলছে, তারা এ ঘটনা সম্পর্কে জানে না।
২৩শে মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে মোদীর সফরের প্রতিবাদে প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতৃত্ত্বে বিক্ষোভ করে বেশ কয়েকটি বাম দলের ছাত্র সংগঠন।
|
https://www.bbc.com/bengali/news-56506080
|
3/24/2021
|
BBC Bangla
|
Govt critique
|
111
|
মোদির বাংলাদেশ সফর বিরোধিতা
|
মোদির সফরের প্রতিবাদে মিছিল, পুলিশের বাধা, আটক ৭
|
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে সিলেটের বাম গণতান্ত্রিক জোটের কালো পতাকা প্রদর্শন ও বিক্ষোভ মিছিল পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সিলেট নগরের চৌহাট্টা এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুই নারীসহ সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনের বিরোধিতা করে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মতো ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যাঘাতের চেষ্টার অভিযোগে সাতজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) বি এম আশরাফ উল্যাহ। তিনি জানান, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও দুজন নারী রয়েছেন। তাঁদের সিলেট কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে সিলেটের বাম গণতান্ত্রিক জোটের কালো পতাকা প্রদর্শন ও বিক্ষোভ মিছিল পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন বাসদ মার্ক্সবাদী সিলেট জেলার আহ্বায়ক উজ্জ্বল রায়, ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ফাহিম আহমদ চৌধুরী, ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট মহানগরের সভাপতি সঞ্জয় কান্ত দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদিয়া নওশিন, সাবেক সভাপতি রেজাউর রহমান, ছাত্র ইউনিয়ন নগর শাখার যুগ্ম সম্পাদক মনিষা ওয়াহিদ ও ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য নিজু আহমেদ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় সমবেত হতে শুরু করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা-কর্মীরা। এ সময় নেতা-কর্মীরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির আগমন ঠেকাতে প্রতিবাদ জানান। কর্মসূচির একপর্যায়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা-কর্মীরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে কালো পতাকা নিয়ে বন্দরবাজারের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় নেতা-কর্মীরা সামনের দিকে যেতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ মারমুখী আচরণ করে। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা নেতা-কর্মীদের ওপর লাঠিপেটা শুরু করে ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যান।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য প্রণব জ্যোতি পাল বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদির মতো একজন সাম্প্রদায়িক মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ জন্য আমার প্রতিবাদ জানিয়ে কর্মসূচি দিয়েছিলাম। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শেষ করে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কোর্ট পয়েন্টের দিকে রওনা দেওয়ার সময় পুলিশ হামলা চালায়। এ হামলায় বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। হামলায় পুলিশের পুরুষ সদস্যরা নারী কর্মীদের ওপর হামলা করেছেন, যা গণতান্ত্রিক দেশে অগণতান্ত্রিক আচরণ।’
প্রণব জ্যোতি পাল বলেন, আজ রাতের মধ্যেই আচক ব্যক্তিদের মুক্তি দেওয়া না হলে সিলেটের সব প্রগতিশীল ও সাংস্কৃতিক দল নিয়ে কাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করা হবে।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমন বলেন, ‘কর্মসূচির শুরুতেই পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কর্মসূচি পালন না করতে নানাভাবে বলা হয়। পরবর্তী সময়ে বলা হয় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করতে। একপর্যায়ে বলা হয়, সড়কে যান চলাচলে যাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়। এরপর আমরা তাদের কথায় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করি। পরে আমরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে কালো পতাকা নিয়ে বন্দরবাজার কোর্ট পয়েন্টের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া নারী সদস্যদের সঙ্গে পুলিশ শালীন আচরণ করেনি। এতে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিপেটা করে আক্রমণ করে।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের অবদান অস্বীকার করার মতো নয় জানিয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভারতের অবদান রয়েছে, সেটি আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। কিন্তু ব্যক্তি নরেন্দ্র মোদির প্রতি আমাদের আপত্তি রয়েছে। তিনি ভারতের ক্ষমতায় আসার পর থেকে সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি হয়েছে। নানাভাবে সাম্প্রদায়িকতার বন্ধন ক্ষুণ্ন করেছেন। আমরা ব্যক্তি নরেন্দ্র মোদির আচরণ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে তাঁর আগমন মেনে নিতে পারিনি। তাঁর আগমনের প্রতিবাদেই এ কর্মসূচি পালন করেছিলাম।’
|
https://www.prothomalo.com/bangladesh/district/%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%9F%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%9C%E0%A7%8B%E0%A6%9F%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A7%8B%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%A7%E0%A7%80-%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%9B%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A6%BE-%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%B8%E0%A6%B9-%E0%A6%86%E0%A6%9F%E0%A6%95-%E0%A7%AD
|
3/24/2021
|
Prothom Alo
|
Govt critique
|
112
|
মোদির বাংলাদেশ সফর বিরোধিতা
|
নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি?
|
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশে আসছেন ২৬ মার্চ৷ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশ নিতেই তার সফর৷ কিন্তু কিছু ইসলামি ও বাম রাজনৈতিক সংগঠন তার এই সফরের বিরোধিতা করছে৷ এমনকি তারা ২৬ মার্চ ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি দেয়ারও চেষ্টা করছে৷
শাসক দল আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ‘‘ওদের ২৬ মার্চ খুঁজে পাওয়া যাবে না৷ কিছু সংবাদমাধ্যম অহেতুক ইস্যু সৃষ্টির চেষ্টা করছে তাদের টিআরপি বাড়াতে৷'' বিরোধিতা করছেন যারা:
হেফাজতে ইসলাম সোমবার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে মোদীকে বাংলাদেশে না আনার আহ্বান জানিয়েছে৷ হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মুখপাত্র মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী জানান, ‘‘আমরা সরকারকে আহ্বান জানিয়েছি তারা যাতে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদীকে না আনেন৷ সরকার আমাদের আহ্বানে সাড়া না দিলে আমরা আলেমদের সাথে কথা বলে কঠোর কর্মসূচি দেব৷''
তার মতে, ‘‘মোদী মুসলমানদের ঈমানের শত্রু, বাংলাদেশের জনগণের শত্রু৷'' তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘ভারত তার স্বার্থে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছে৷ তা না হলে সীমান্তে প্রতিদিন পাখির মত গুলি করে বাংলাদেশের মানুষকে হত্যা করত না৷ তারা বাংলাদেশকে ভারতীয় পণ্যের বাজার করেছে৷'' সাতটি ছোট ইসলামি দলও এক হয়েছে মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরুদ্ধে৷ শুক্রবার জুমার নামাজের পর তার বায়তুল মেকাররম মসজিদের উত্তর গেট থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে৷ সমমনা ইসলামি দলগুলোর সমন্বয়ক মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফি বলেন, ‘‘আমরা মত বিনিময় করছি৷ মত বিনিময় শেষে নতুন কর্মসূচি দেব৷''
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর চাইছেন সবাইকে নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি দিতে৷ সেজন্য আলোচনা চলছে বলে তিনি জানান৷ গণসংহতি আন্দোলনসহ আরো কয়েকটি সংগঠন নিয়ে তারা নতুন একটি জোট করে আগেই কিছু কর্মসূচি দিয়েছে৷ নুর বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি সবাই মিলে একটি কর্মসূচি দিতে৷ তবে সেটা ২৬ মার্চ না তার আগে হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না৷''
‘‘বাংলাদেশের মানুষ নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানাচ্ছে না’’: জোনায়েদ সাকি
02:04
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘‘আমাদের অবস্থান পরিষ্কার৷ বাংলাদেশের মানুষ নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানাচ্ছে না৷ ভারতের প্রধানমন্ত্রী এই দেশের ভোটারবিহীন সরকারকে প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছেন বলে বাংলাদেশের মানুষ মনে করে৷ নরেন্দ্র মোদী এবং তার দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা চালানো হচ্ছে৷ সাম্প্রদায়িক সংঘাত ও বিভাজনের রাজনীতি নরেন্দ্র মোদী সরকার গ্রহণ করেছে এনআরসি এবং সিএএর মাধ্যমে৷ এটার মাধ্যমে শুধু ভারত নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় একটি সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প তৈরির চেষ্টা হচ্ছে৷ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরে এই রকম সাম্প্রদায়িক ও বিভাজন সৃষ্টিকারীকে আমন্ত্রণ মানুষ গ্রহণ করছে না৷ আর বাংলাদেশের সাথে তো অনেক অমীমাংসিত বিষয় রয়ে গেছে৷''
গণসংহতি আন্দোলন ২৪ মার্চ মোদীর এই সফরের প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করবে৷
বিশ্লেষকেরা যা ভাবছেন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, মোদীর ঢাকাসফরের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ স্বাভাবিক৷ এরকম হওয়াই উচিত৷ না হলে সেটা ছিলো আশ্চর্যের৷ তিনি বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধু যে আদর্শের, মোদী তার বিপরীত৷ তাই বঙ্গন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মোদীকে আমন্ত্রণ ঠিক মানায় না৷''
তার মতে, মোদী তার নিজের দেশেই একজন বিতর্কিত ব্যক্তি৷ সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট, এনআরসি, তিস্তা, গুজরাট দাঙ্গা, মানবাধিকার লঙ্ঘন এই সব মিলিয়ে বাংলাদেশে তার প্রতিক্রিয়া হচ্ছে৷ মোদী বাংলাদেশ সফরকে তার রাজনৈতিক কারণেও ব্যবহার করছেন৷ তিনি ভোটের জন্যই ঢাকায় এসে মতুয়া সম্প্রদায়ের সাথে দেখা করতে যাবেন৷ তিনি মনে করেন, ‘‘সরকার এই প্রতিবাদকে গুরুত্ব দিতে না চাইলেও তারা তো বিব্রত হচ্ছে৷ কারণ বঙ্গবন্ধুর উল্টা চরিত্রের লোককে তার জন্মশতবার্ষিকীতে আনা হচ্ছে৷''
ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার বলেন, ‘‘এই সফর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর হলে আমার কোনো কথা নেই৷ কিন্তু বিজেপির নরেন্দ্র মোদীর হলে আমার কথা আছে৷ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে ওয়েলকাম করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প দেখি না৷'' তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী না হয়ে ইমরান খান হলে আমরা কী করতাম?''
|
https://www.dw.com/bn/%E0%A6%A8%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A7%8B%E0%A6%A6%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%A2%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE-%E0%A6%B8%E0%A6%AB%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%87-%E0%A6%90%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%B8%E0%A7%82%E0%A6%9A%E0%A6%BF/a-56950506
|
3/22/2021
|
DW
|
Govt critique
|
113
|
মোদির বাংলাদেশ সফর বিরোধিতা
|
সরকারি হিসাবে নিহত ১৭ জন, বেশির ভাগই সাধারণ মানুষ
|
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ, সংঘাত ও সহিংসতায় সরকারি হিসাবে মোট ১৭ জন মারা গেছেন। যাঁদের বড় অংশই সাধারণ মানুষ। এঁদের মধ্যে ১৩ জন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবং ৪ জন চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে নিহত হন। সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী, এঁরা ২৬ থেকে ২৮ মার্চ ‘হেফাজতের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের’ সময় সংঘর্ষে মারা গেছেন।
অপরদিকে হেফাজত দাবি করছে, এই সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৫ জন মারা গেছেন। তাঁরা সবাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে মারা গেছেন। হেফাজত ১৫ জনের নামের তালিকা দিয়ে বলেছে, এঁদের বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ।
ঢাকার বায়তুল মোকাররম এলাকায় ২৬ মার্চ জুমার নামাজের পর মোদির সফরবিরোধী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের জেরে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মাদ্রাসার ছাত্ররা মিছিল বের করে। তারা থানায় হামলা চালালে সংঘর্ষ বাধে। সেখানে গুলিতে চারজনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তার জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ করে মাদ্রাসার ছাত্ররা। তারা রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এরপর টানা তিন দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসতা হয়।
সরকারি হিসাবে, এসব সহিংসতায় প্রায় ৭৭ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যার মধ্যে ৭২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। তবে প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে স্থানীয় পুলিশ স্পষ্ট করে কিছু বলছে না। বিশেষ করে কাদের গুলিতে কারা নিহত হলো, এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য গণমাধ্যমকে দেয়নি। এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আনিসুর রহমান গত রোববার প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘মৃত্যুর সংখ্যাটি এখন বলতে চাইছি না। আপনারা খোঁজ নিন।’
তবে রোববার জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, এই তিন দিনে সহিংসতায় মোট ১৭ জন মারা গেছেন।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামের জেলা পুলিশ ও জেলা বিশেষ শাখা (ডিএসবি) থেকে যে তথ্য এসেছে, তা ধরেই এই তালিকা করা হয়েছে। এঁদের সবারই মৃত্যু হয়েছে সংঘর্ষে।
এর আগে গত ৩০ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে এবং ২ এপ্রিল বিক্ষোভ সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দারুল আরকান ইসলামিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সাজিদুর রহমান বলেছেন, তিন দিনে সেখানে পুলিশ ও বিজিবির গুলিতে ১৫ জন মারা গেছেন। তাঁদের নাম-ঠিকানাসহ তালিকা প্রকাশ করে তিনি বলেন, যাঁরা মারা গেছেন, বেশির ভাগই সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষও তাঁদের কর্মসূচির সঙ্গে একাত্ম আছেন, এটা তার প্রমাণ বলে তিনি দাবি করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ‘ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে লিপ্ত হেফাজতের মৃত্যুবরণকারীদের নামের তালিকা’ অনুযায়ী হাটহাজারীতে ৪ জন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৩ জন মারা গেছেন।
এর মধ্যে ২৬ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে নিহত হন মো. আশিক (২০), যিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। ২৭ মার্চ নিহত হন ৭ জন। তাঁরা হলেন প্লাস্টিক কারখানার শ্রমিক বাদল (২৮), কাঁচামালের ব্যবসায়ী কাউছার (৩০), শ্রমিক নুরুল আমিন (২২), সিএনজিচালক মো. আলম (৪০) ও সুজন (২০) এবং হাফেজ মো. জোবায়ের (১৪) ও জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার ছাত্র মোহাম্মদ হোসাইন (২২)। এঁদের মধ্যে মোহাম্মদ হোসাইন কালীবাড়ি মোড়ে, বাকি ৬ জন কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের নন্দনপুরে নিহত হন।
২৮ মার্চ নিহত হন পাঁচজন। তাঁদের মধ্যে চারজন বিশ্বরোড মোড়ে এবং একজন কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে নন্দনপুরে মারা যান। নিহত ব্যক্তিরা হলেন সরাইল পাঠানপাড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রাক্তন ছাত্র মো. আলামিন (১৯), রিকশাচালক লিটন (৩০), শ্রমিক কামালউদ্দীন (৩২), তাবলিগ জামাতের কালন মিয়া (৪০) ও কাপড়ের দোকানের কর্মচারী রাতিম (২২)।
অন্যদিকে হাটহাজারীতে চারজন নিহত হয়েছেন ২৬ মার্চ। তাঁরা হলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার নাসির উল্লাহ (২২), রবিউল ইসলাম (২২) ও কাজী মিরাজুল ইসলাম (২২) এবং দরজি দোকানি ওয়াহিদুল ইসলাম (১৮)।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘২৬ থেকে ২৮ মার্চ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ও হামলার ঘটনায় প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। সব প্রতিবেদন আমাদের হাতে এসেছে। আমরা কাউকে ছাড়ব না। প্রত্যেক অন্যায়ের বিচার হবে।’
|
https://www.prothomalo.com/bangladesh/%E0%A6%B8%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF-%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B9%E0%A6%A4-%E0%A7%A7%E0%A7%AD-%E0%A6%9C%E0%A6%A8-%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A6%87-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A3-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%81%E0%A6%B7
|
4/5/2021
|
Prothom Alo
|
Govt critique
|
114
|
লেখক মুশতাক আহমেদ কারাগারে মৃত্যু
|
লেখক মুশতাক আহমেদ কারাগারে মৃত্যু
|
মুশতাকের লালমাটিয়ার বাসায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে বাড়ির নিচে নেমে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথা বলেন তার চাচাতো ভাই ডা. নাফিসুর রহমান।
তিনি জানান, মুশতাকের মা ৮৩ বছর বয়সী জেবুন্নেসা রাজ্জাক এবং স্ত্রী লিপা আক্তার বাসাতেই আছেন। তবে তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী নন।
“তারা এখন কারো কাছে আর মুশতাকের মৃত্যুর বিচারও দাবি করতে চান না।” দিদারুল বলেন, “মুশতাকের জামিন ছয়বার নাকচ হয়েছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি শেষ শুনানিতে, তিনি জামিনের বিষয়ে খুব আশাবাদী ছিলেন। সেটি নাকচ হয়ে গেলে তিনি ভেঙে পড়েন।
“ওই দিন সন্ধ্যায় তিনি বুকে ব্যাথা অনুভব করছিলেন বলে জেলের হাসপাতালে যান। কিন্তু কোনো চিকিৎসা পাননি। মুশতাকের চিকিৎসায় অবহেলা তো ছিলই। আমি এটার প্রমাণও দিতে পারব।”
মুশতাকের মৃত্যুর বিষয়ে সরকারি কর্তৃপক্ষের তদন্ত ‘প্রত্যাখ্যান’ করছেন জানিয়ে দিদারুল বলেন, “এই যে তদন্ত কমিটিগুলো হয় এগুলো তো একপাক্ষিক। যাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ তারাই তদন্ত করছে। এই তদন্তের প্রতিবেদন কখনোই গ্রহণ করি না। কমিটিতে মুশতাকের কোনো স্বজন বা বন্ধু তো ছিল না।”
মুশতাকের মৃত্যুকে ‘হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে বর্ণনা করে দিদারুল বলেন, “এর জন্য রাষ্ট্রই দায়ী। আর এ অভিযোগের বিষয়ে তারা যদি আমাকে ভুল প্রমাণ করতে চায়, তাহলে তদন্ত কমিটিতে অবশ্যই আমাদের প্রতিনিধি লাগবে।
“মুশতাক আসলে মারা গেছে কেন, লুটপাটতন্ত্রের বিরুদ্ধে ভয়েস রেইজ করে। আসলে রাষ্ট্রর তো তাকে পুরষ্কৃত করা উচিৎ ছিল, তিনি রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটের বিরুদ্ধে কথা বলছিলেন। কিন্তু সে পেল ৯ মাসের কারাভোগ এবং মৃত্যু।”
ডা. নাফিস বলেন, “একটা মানুষ একটা কার্টুন শেয়ার করল। সেটার জন্য ৯ মাস জেলে থাকল, ৬ বার জামিন আবেদন নাকচ হল। কার কাছে কী বিচার চাইবেন আপনি। কে বিচার করবে?”
কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে ২০২০ সালের ৬ মে ঢাকার লালমাটিয়ার বাসা থেকে মুশতাককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বন্দি অবস্থায় গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুরের হাই সিকিউরিটি কারাগারে মৃত্যু হয় ৫৩ বছর বয়সী মুশতাকের।
কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তা সংগঠনের দিদারুল আলম ভূইয়া এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নানকেও সে সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ‘সরকারবিরোধী প্রচার ও গুজব ছড়ানোর’ অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে।
মৃত্যুর আগে নয় মাসে ৬ বার মুশতাকের জামিন আবেদন নাকচ হয় আদালতে। কারাগারে তার মৃত্যু ক্ষোভের জন্ম দেয়, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোও ওই ঘটনায় সরব হয়।
সমালোচনার মুখে মুশতাকের মৃত্যুর তদন্তে সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. তরুণ কান্তি শিকদারকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত বছর ৪ মার্চ কমিটি মন্ত্রণালয়ে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়ে জানায়, ‘মুশতাকের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে’।
গর্ব বোধ করতেন মুশতাকের বাবা
লেখক ও ব্যবসায়ী মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ৩৯ দিনের মাথায় মারা যান তার বাবা আব্দুর রাজ্জাক (৮৯)। ছেলের মৃত্যুশোক সইতে পারেননি তিনি।
ডা. নাফিসুর বলেন, “মুশতাকের বাবা প্রায়ই বলতেন, আমার ছেলে জেলে আছে, কিন্তু আমি প্রাউড ফিল করি যে আমার ছেলে একটা প্রতিবাদ করতে গিয়ে সত্যি কথা বলতে গিয়ে জেলে গেছে।
“কিন্তু ছেলের মৃত্যুর পর বিচারের কোনো আশা না পেয়ে তিনি খুবই আঘাত পেয়েছেন। এটা তিনি সহ্য করতে পারেননি।”
নাফিসুর বলেন, “ছেলে মারা যাওয়ার পরে মুশতাকের বাবা সারাক্ষণ ফেইসবুকে কে প্রটেস্ট করছে, কী প্রটেস্ট হচ্ছে, শায়ান গান গাচ্ছে, কেউ কবিতা লিখছে… এগুলো নিয়েই উনি সময় কাটাতেন। কারো সঙ্গে এগুলো নিয়ে কোনো আলোচনা করতেন না। ছোট মেয়ে দেশের বাইরে থেকে এলো, তিনি তার সঙ্গেও এসব নিয়ে একটি কথা বললেন না। আসলে তিনি এই সিস্টেমের ওপর পুরোপুরি বিশ্বাস হারিয়েছিলেন।”
‘হাল ছেড়ে দিয়েছে’ পরিবার
ছেলের বিচার নিয়ে মুশতাকের মা কিছু বলেন কী না জানতে চাইলে নাফিসুর বলেন, “এগুলো নিয়ে তিনি কিছুই বলেন না।
“মুশতাকের বাবাও বলতেন, তার মাও একই জিনিসই বলছেন… এই দেশে আর বিচার হবে না। বিচার চেয়ে কোনো লাভ নেই, প্রটেস্ট করেও কোনো লাভ নেই। কিছুই হবে না।”
প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য আছে কি না জানতে চাইলে মুশতাকের চাচাতো ভাই বলেন, “আমরা ধরেই নিয়েছি এসব করে কোনো লাভ নেই। এই দেশে যা হওয়ার তা হবে। কারো কিছু করার নেই।
“তবে যদি আপনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন আমি আমার ভাইয়ের মৃত্যুর বিচার চাই কি না না, ওর মা কী চায় কি না, ওর স্ত্রী কী চায় কি না?… অবশ্যই চায়। কিন্তু সবাই এত ফ্রাস্টেটেড যে সবাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন।”
মুশতাকের সঙ্গে একই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে সাড়ে তিন মাস কারাগারের একই সেলে ছিলেন রাষ্ট্রচিন্তার দিদারুল আলম। তিনি এখন জামিনে কারামুক্ত। মামলা চলছে
২০২০ সালের ৬ মে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর এবং ব্যবসায়ী ও লেখক মুশতাক আহমেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরদিন ওই দুজনসহ ১১ জনকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রমনা থানায় মামলা করেন র্যাব-৩ এর ডিএডি আবু বকর সিদ্দিক।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ‘রাষ্ট্রচিন্তা’র সদস্য দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান, নেত্র নিউজের সম্পাদক সুইডেন প্রবাসী তাসনিম খলিল, জার্মানিতে থাকা ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক শাহেদ আলম, হাঙ্গেরি প্রবাসী জুলকারনাইন সায়ের খান, আশিক ইমরান, স্বপন ওয়াহিদ ও ফিলিপ শুমাখার।
ওই মামলায় পরে গ্রেপ্তার হন মিনহাজ মান্নান ও দিদারুল ইসলাম। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ফেইসবুক ব্যবহার করে জাতির পিতা, মুক্তিযুদ্ধ, করোনাভাইরাস মহামারী সম্পর্কে গুজব, রাষ্ট্র/সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিপ্রায়ে অপপ্রচার বা বিভ্রান্তি ছড়ানো, অস্থিরতা-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারার অভিযোগ আনা হয়।
ফেইসবুকে ‘I am Bangladeshi’ পেইজে সম্পৃক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয় কিশোর, মুশতাক, দিদারুলকে, যে পেইজ থেকে রাষ্ট্রের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে বিভিন্ন পোস্ট দেওয়া হচ্ছিল বলে তখন অভিযোগ করে র্যাব।
হোয়াটস অ্যাপ ও ফেইসবুক মেসেঞ্জারে কিশোর ও মুশতাকের সঙ্গে তাসনিম খলিল, জুলকারনাইন সায়ের খান, শাহেদ আলম, আসিফ মহিউদ্দিনের ‘ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ’ পাওয়ার কথাও র্যাব বলে।
দিদারুল ও মিনহাজ ফেইসবুকে মুশতাকের ‘ফ্রেন্ড’ উল্লেখ করে মামলায় বলা হয়, “তাদের সঙ্গে হোয়াটস অ্যাপ ও ফেইসবুক মেসেঞ্জারে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে।”
তদন্ত শেষে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কার্টুনিস্ট কিশোর, লেখক মুশতাক ও ‘রাষ্ট্রচিন্তা’র দিদারুলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বাকি আট আসামিকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আটক অবস্থায় মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে প্রতিবাদ হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে।
চার মাস পরে গত জুনে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওই মামলায় ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেয়।
আদালত ১২ সেপ্টেম্বর কার্টুনিস্ট কিশোর, স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান, সাংবাদিক তাসনীম খলিল, হাঙ্গেরিভিত্তিক আল জাজিরার তদন্তকারী ইউনিটের গবেষক জুলকারনাইন, রাষ্ট্রচিন্তার দিদারুল ও অন্য দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।
তাদের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম জানিয়েছেন, ট্রাইব্যুনাল এখনও অভিযোগ গঠন করতে পারেনি। মামলার পরের শুনানি ২৭ ফেব্রুয়ারি।
এ মামলায় কিশোর, মিনহাজ ও দিদারুল জামিনে রয়েছেন। অন্য চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আাদালত।
মুশতাকের মৃত্যুর পর জামিন পান কার্টুনিস্ট কিশোর। পরে তিনি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেন।
মামলার আর্জিতে বলা হয়, ৫ মে রমনা থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলায় কিশোরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। কিন্তু তারও তিন দিন আগে ২ মে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে সাধারণ পোশাকের ১৬-১৭ জন লোক কাকরাইলের বাসা থেকে তাকে ‘জোর করে হাতকড়া ও মুখে মুখোশ পরিয়ে অজ্ঞাত এক নির্জন জায়গায়’ নিয়ে যায়।
তাকে রাখা হয় একটি পুরানো ও স্যাঁতস্যাঁতে বাড়ির একটি কক্ষে। সেখান থেকে তিনি বাইরে গাড়ির হর্নের শব্দ পাচ্ছিলেন। ওই ঘরে প্রজেক্টরের মাধ্যমে কিশোরের নিজের আঁকা বিভিন্ন কার্টুন একের পর এক দেখিয়ে সেগুলোর মমার্থ জানতে চাওয়া হয়। করোনাভাইরাস নিয়ে আঁকা কিছু কার্টুন দেখিয়ে জানতে চাওয়া হয়, তিনি সেগুলো কেন এঁকেছেন, কার্টুনের চরিত্রগুলো কারা।
কিশোর বলেছেন, এক পর্যায়ে ‘প্রচণ্ড জোরে থাপ্পর মারা হয়’ তার কানে। তাতে কিছু সময়ের জন্য বোধশক্তিহীন হয়ে পড়েন। তবে তিনি বুঝতে পারছিলেন যে কান দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। পরে ‘স্টিলের পাত বসানো লাঠি দিয়ে’ তাকে ‘পেটানো’ হয়। যন্ত্রণা ও ব্যথায় তিনি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন।
কিশোরের মামলার আবেদন পেয়ে ঢাকার একটি আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অভিযোগটি তদন্ত করতে বলে। নভেম্বরে পিবিআই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে জানায় যে, কিশোরকে নির্যাতনের কোনো প্রমাণ তারা ‘পায়নি’।
|
https://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article2020814.bdnews
|
2/25/2022
|
Bdnews24
|
Govt critique
|
115
|
লেখক মুশতাক আহমেদ কারাগারে মৃত্যু
|
কারাগারে মৃত্যু হলো বন্দি লেখক মুশতাকের
|
বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুরের কাশিমপুরের হাই সিকিউরিটি কারাগারে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন সেখানকার জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মো. গিয়াস উদ্দিন৷ ৫৩ বছর বয়সি মুশতাকের মৃত্যুর কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারেনি ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকম৷
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে কারা কর্মকর্তা গিয়াস বলেন, ‘‘রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে হঠাৎ তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন৷ দ্রুত তাকে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেলে নেয়া হলে ডাক্তার মৃত বলে জানান৷''
মুশতাক আহমেদ অনলাইনে লেখালেখি করতেন৷ সম্প্রতি এসব লেখার কারণে তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় পড়েন৷ গেল বছর ৬ মে র্যাব তাকে ও কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে গ্রেপ্তার করে৷
পরদিন ‘সরকারবিরোধী প্রচার ও গুজব ছড়ানোর’ অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করা হয়৷
পুলিশের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়, কার্টুনিস্ট কিশোর তার ‘আমি কিশোর’ নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনামূলক কার্টুন-পোস্টার পোস্ট করতেন৷ আর মুশতাক তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কিশোরের সেসব পোস্টের কয়েকটি শেয়ার করেন৷
র্যাব-৩-এর ডিএডি আবু বকর সিদ্দিকের করা এই মামলায় রাষ্ট্রচিন্তার সংগঠন দিদারুল ভূইয়া এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নানকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল৷ পরে এ দুজন জামিনে মুক্তি পান৷
তবে মুশতাক ও কিশোরের পক্ষে বেশ কয়েকবার জামিনের আবেদন করা হলেও তা আদালতে নামঞ্জুর হয়৷
মুশতাককে গ্রেপ্তারের পর পাঠানো হয়েছিল ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে; সেখানে থেকে ওই বছরের ২৪ আগস্ট তাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়৷ সেখানেই তার মৃত্যু হলো৷
|
https://www.dw.com/bn/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%AE%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%81-%E0%A6%B9%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%BE-%E0%A6%A1%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B2-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE-%E0%A6%86%E0%A6%87%E0%A6%A8%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A6%BF-%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%B6%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B0/a-56707424
|
5/5/2021
|
DW
|
Govt critique
|
116
|
লেখক মুশতাক আহমেদ কারাগারে মৃত্যু
|
মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করে ১৩টি দেশের রাষ্ট্রদূতের বিবৃতি
|
কারাগারে থাকা অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় শোক ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ও ই সি ডি ভুক্ত ১৩টি দেশের ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূতরা।
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে গত বছর মে মাসে আটক হওয়া লেখক মুশতাক আহমেদ কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন। বৃহস্পতিবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ার পর হাসপাতালে নেয়া হলে তিনি মারা যান।
এক যৌথ বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৩ দেশের রাষ্ট্রদূতরা কী পরিস্থিতিতে মুশতাক আহমেদের মৃত্যু ঘটেছে - তার দ্রুত, স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশের সরকার বলছে, মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর কারণ যাই হোক - তা তদন্ত করে দেখা হবে।
রাষ্ট্রদূতরা বিবৃতিতে আরো বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্টের ধারাসমূহ এবং তার বাস্তবায়ন, ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনসমূহের সাথে এর সঙ্গতিবিধান নিয়ে তাদের যে বৃহত্তর উদ্বেগগুলো রয়েছে - তা নিয়ে তারা বাংলাদেশের সরকারের সাথে কাজ করে যাবেন।
এছাড়া আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচও এক বিবৃতিতে মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর বিক্ষোভ
এর আগে শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক বামপন্থী ছাত্র সংগঠন মৃত্যুর প্রতিবাদ জানাতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি বিদ্রূপাত্মক কার্টুনের ক্যাপশন দেয়া এবং সরকারের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গত বছরের মে মাসে লেখক মুশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
এ নিয়ে তিনি ছয়বার জামিন আবেদন করলেও তা নাকচ হয়ে যায়।
সামনের সপ্তাহে তার হাইকোর্টে তার জামিন শুনানির কথা ছিল।
তার আগেই কারাগারে কিভাবে মুশতাক আহমেদের মৃত্যু হলো - তার সঠিক কারণ বের করতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের পাশাপাশি এই আইনের আওতায় সব বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে তারা স্লোগান দেন।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতা মনীষা চক্রবর্তীর মতে, এটি কোন স্বাভাবিক মৃত্যু নয় বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
ওই মামলায় গ্রেফতারের পর গত নয় মাস ধরে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে বন্দী ছিলেন তিনি।
এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইৎজারল্যান্ড ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতবৃন্দ, এবং যুক্তরাজ্য ও ক্যানাডার হাইকমিশনাররা।
মুশতাক আহমেদের বিরৃদ্ধে ফেসবুকে একটি বিদ্রূপাত্মক কার্টুনের ক্যাপশন দেয়া এবং সরকারের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে মামলা করা হয়েছিল।
|
https://www.bbc.com/bengali/news-56211985
|
2/26/2021
|
BBC Bangla
|
Govt critique
|
117
|
লেখক মুশতাক আহমেদ কারাগারে মৃত্যু
|
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার লেখক মুশতাকের মৃত্যু কারাগারে, কিশোরও অসুস্থ
|
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদ (৫৩) রাতে মারা গেছেন। তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে ছিলেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুশতাক আহমেদ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কারাগারের ভেতর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে প্রথমে কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করেন।
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোহাম্মদ শরীফ জানান, কাশিমপুর কারাগার থেকে ওই বন্দীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা সম্ভব হবে।
পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে মুশতাক আহমেদের মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানানো হয়েছে। মুশতাকের স্ত্রী লিপা আক্তার সম্প্রতি মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে পরিবারের একজন সদস্য জানিয়েছেন।
মুশতাক আহমেদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার ছোট বালাপুর এলাকায়। লালমাটিয়ায় স্ত্রী ও বৃদ্ধ মা–বাবার সঙ্গে থাকতেন। তিনি মা–বাবার একমাত্র পুত্রসন্তান। তিনি দেশে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে কুমির চাষের উদ্যোক্তা।
মুশতাকের বাবা আবদুর রাজ্জাক রাতে প্রথম আলোকে বলেন, রাত ৯টার দিকে টেলিফোনে মুশতাকের মৃত্যুর খবর পরিবারকে জানানো হয়। তিনি বলেন, ‘মুশতাককে ২৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির করা হয়েছিল। সেদিন আমার ভাতিজা তার (মুশতাক) সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সে সুস্থ ছিল।’
গত বছরের মে মাসে লেখক মুশতাক আহমেদ, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নানকে র্যাব গ্রেপ্তার করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে এঁরাসহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে র্যাব। সেই মামলায় দুজন জামিনে মুক্তি পেলেও মুশতাক ও কিশোরের জামিন আবেদন ছয়বার নাকচ হয়।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, ২০২০ সালের আগস্ট মাস থেকে মুশতাক ওই কারাগারে বন্দী ছিলেন। কারাগারে থাকা কার্টুনিস্ট কিশোরও অসুস্থ বলে জানালেন তাঁর ভাই আহসান কবির। তিনি গতরাতে প্রথম আলোকে বলেন, ২৩ ফেব্রুয়ারি কিশোর ও মুশতাকদের ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়েছিল। কিশোরকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখেন। তাঁকে কিশোর বলেছেন, গ্রেপ্তারের পর নির্যাতন করা হয়েছে, যার কারণে তাঁর পায়ে সংক্রমণ হয়েছে। কানে পুঁজ হচ্ছে। তাঁর ডায়াবেটিস অনেক বেড়ে গেছে। চোখেও কম দেখছেন। তাঁর দ্রুত চিকিৎসা দরকার।
লেখক ও সাংবাদিক আহসান কবির বলেন, মুশতাকের মৃত্যু রাষ্ট্রীয় অনাচারের দৃষ্টান্ত। বিচারের নামে একজন মুশতাককে প্রাণ দিতে হয়েছে। আরেকজনকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
|
https://www.prothomalo.com/bangladesh/%E0%A6%A1%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B2-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE-%E0%A6%86%E0%A6%87%E0%A6%A8%E0%A7%87-%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%96%E0%A6%95-%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%B8%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%81-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87
|
2/25/2021
|
Prothom Alo
|
Govt critique
|
118
|
লেখক মুশতাক আহমেদ কারাগারে মৃত্যু
|
কাশিমপুর কারাগারে মারা গেছেন লেখক মুশতাক
জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি গাজীপুর
প্রকাশিত: ১২:৩৮ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১
|
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় বন্দি লেখক মুশতাক আহমেদ মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সোয়া ৮টার দিকে হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সন্ধ্যায় কারাগারের ভেতর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন মুশতাক আহমেদ। এ সময় তাকে কারা হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মুশতাক আহমেদকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, তার বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ১১/২৫(১)(খ)/৩১/৩৫ মামলা রুজু ছিল। ২০২০ সালের আগস্ট মাস থেকে তিনি এ কারাগারে বন্দি ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ মে কার্টুনিস্ট কিশোরকে কাকরাইল ও লেখক মুশতাক আহমেদকে লালমাটিয়ার বাসা থেকে আটক করে র্যাবের একটি দল। এরপর তাদের রমনা থানায় হস্তান্তর করা হয়। ফেসবুকে সরকারবিরোধী পোস্ট দেয়ার অভিযোগে রমনা থানায় তাদের দুই জনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছিল, কার্টুনিস্ট কিশোর তার ‘আমি কিশোর’ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনামূলক কার্টুন-পোস্টার পোস্ট করতেন। আর মুশতাক তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কিশোরের সেসব পোস্টের কয়েকটি শেয়ার করেছিলেন।
|
https://www.jagonews24.com/country/news/646530
|
2/26/2021
|
Jago News
|
Govt critique
|
119
|
পদ্মা সেতু সংযোগ সম্পন্ন
|
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ: অর্থ সংকটের অভিযোগ ঠিকাদারের, সরকার যা বলছে
|
বাংলাদেশ সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর একটি পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি বড় ধরণের তহবিল সংকটে পড়েছে বলে দাবি করে ঠিকাদারি প্রতিঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড বলছে অর্থ সংকটের কারণে প্রায় ৪০,০০০ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ সময়মত শেষ করাটাই বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
তবে বাংলাদেশের রেল মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলছেন, প্রকল্পে কোনো তহবিল সংকটের সুযোগ নেই। কারণ এটি চীন সরকারের ঋণের টাকায় করা হচ্ছে।
চীনের অর্থায়নে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড।
প্রকল্পের লক্ষ্য পদ্মা সেতু যেদিন যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে সেদিন থেকেই যেন সেতুর ওপর দিয়ে রেলও চলাচল করতে পারে।
কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দাবি করেছে যে তহবিল সংকটের কারণে প্রকল্পটি সময়মত শেষ করাই এখন বিপর্যয়ের মুখে।
|
https://www.bbc.com/bengali/news-56199266
|
2/25/2021
|
BBC Bangla
|
Govt critique
|
120
|
পদ্মা সেতু সংযোগ সম্পন্ন
|
পদ্মা রেল লিংক প্রকল্পের ব্যয় ও সময়সীমা আরও বাড়তে পারে
|
বাংলাদেশ রেলওয়ের বৃহত্তম প্রকল্প পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্পটি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে এবং এতে করে প্রকল্পের ব্যয় ও সময়সীমার ওপর প্রভাব পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন রেল কর্মকর্তারা।
তারা জানান, সেতুর দুপাশে রেলওয়ের জন্য নির্মানাধীন ভায়াডাক্টের নকশায় পরিবর্তন, কোভিড-১৯ মহামারি, বিভিন্ন সরকারি সিদ্ধান্ত ও জনপ্রতিনিধিদের চাহিদার প্রেক্ষিতে প্রকল্পের কার্যপরিধি পরিবর্তনই বড় চ্যালেঞ্জ।
গতকাল মঙ্গলবার রেল ভবনে আয়োজিত এক সভায় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা হয়। রেল মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলমান চারটি বড় প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে সভাটি আহ্বান করা হয়।
সভার সভাপতি এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা প্রকল্পগুলোর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে শোনেন এবং এর থেকে উত্তরণের জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান সভায় অংশগ্রহণকারীরা।
নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ১৬৯ কিলোমিটার রেল লাইনের মাধ্যমে রাজধানীর সঙ্গে যশোরের রেল সংযোগ তৈরি করতে এই প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ২০১৬ সালের মার্চে। প্রাথমিকভাবে এর ব্যয় ধরা হয় ৩৪ কোটি ৯৮৯ কোটি টাকা।
তবে প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের জুলাই মাসে। মূলত, চীনা এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ঋণ চুক্তি সম্পন্ন হতে দেরি হওয়ার কারণেই কাজ শুরু করতে দেরি হয়।
এরই মধ্যে, প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ কোটি ২৪৬ কোটি টাকায়। বাড়ানো হয় কাজ শেষ করার সময়সীমাও। দুই বছর বাড়িয়ে এই সময়সীমা নির্ধারণ করা হয় ২০২৪ সাল পর্যন্ত।
সেতুর দুপাশে ভায়াডাক্টের নকশায় সমস্যার কারণে শুরুতেই রেলপথটি নির্মাণে সমস্যায় পরেন প্রকল্প কর্তৃপক্ষ এবং কাজে লাগাতে না পারায় গত দুই অর্থবছরে বরাদ্দকৃত বিশাল পরিমাণ অর্থ ফেরত দেওয়া হয় রাষ্ট্রীয় কোষাগারে।
অন্যান্য সব প্রকল্পের মতো এই প্রকল্পটিও কোভিড-১৯ মহামারির কারণে গত বছরের শুরুর দিকে বাধার মুখে পড়ে।
গতকালের সভায় উপস্থাপিত প্রকল্পের একটি এক নথি থেকে জানা যায়, কোভিড সংকটের সময় কাজ বন্ধ না থাকলেও কাজের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। কাজেই, পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
এখানেই সমস্যার শেষ নয়।
গত বছরের জুলাইয়ে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প কর্তৃপক্ষ সেতুর দুপাশে রেলপথের ভায়াডাক্টগুলোর দুটি পয়েন্টে উচ্চতা ও প্রস্থ বিষয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
প্রকল্প কর্তৃপক্ষ সভায় জানায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের জিওমেট্রিক ডিজাইন স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ওয়ান ওয়ে টু লেন সড়কের জন্য নুন্যতম ১০ দশমিক এক মিটার প্রয়োজন হলেও পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষের চাহিদানুযায়ী ১৫ দশমিক পাঁচ মিটার হরাইজন্টাল ক্লিয়ারেন্স রাখার জন্য জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তে রেল-রোড ক্রসিং পয়েন্টে ভায়াডাক্টের নকশা পরিবর্তন করতে হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে মাওয়া-ভাংগা অংশে রেলওয়ে ভায়াডাক্ট নির্মাণ কাজের মেয়াদ বিলম্বিত ও ব্যয় বৃদ্ধি হবে বলে প্রতীয়মান হয়।
এসব সমস্যার কারণে কাজ শেষ করতে আরও কতটা সময় প্রয়োজন হবে এবং খরচ কতটা বাড়তে পারে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ঠিকাদার এর পরিমাণ নির্ধারণে কাজ করছে। কাজেই এখনই এটা বলা সম্ভব না।’
তিনি অবশ্য জানান, নকশাকেন্দ্রিক যে জটিলতা ছিল তার সমাধান করা হয়েছে।
আগামী বছরের জুনে পদ্মা সেতু জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা রযেছে। একই সঙ্গে রেল প্রকল্পটির মাওয়া থেকে ভাংগা অংশও খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।
এই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব কিনা জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘আমরা আশাবাদী। সামগ্রিক প্রকল্পে দেরি হতে পারে, তবে আমরা (ভাঙ্গা-মাওয়া) সেকশনের যে দেরি সেটি পুষিয়ে নিতে পারব।’
প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৩৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ হলেও এই অংশের অগ্রগতি হয়েছে ৬৪ শতাংশ।
প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার পরিবর্তিত কার্যপরিধি অনুযায়ী চলমান ও ভবিষ্যতের প্রকল্পগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে বিভিন্ন কাঠামোর নকশার পরিবর্তনকে দেখছে আরও একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে। এছাড়া, বিভিন্ন সরকারি সিদ্ধান্ত ও জনপ্রতিনিধিদের চাহিদার প্রেক্ষিতে প্রকল্পের কার্যপরিধি পরিবর্তিত হচ্ছে, যা প্রকল্প ব্যয় ও নির্মানকালকে প্রভাবিত করবে বলে মনে করে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।
অন্যান্য প্রকল্পের সমস্যা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা আগামী অর্থবছরের জন্য এক হাজার ২৯১ কোটি টাকা চেয়েছে। তবে রেলওয়ের পরিকল্পনা সেল ৫৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করেছে।
তবে পুরো টাকাই প্রয়োজন বলে জানান তারা। অন্যথায় ঠিকাদারদের পাওনা এবং আমদানি করা পণ্য ছাড় করা সম্ভব হবে না বলে জানানো হয়। এসব সমস্যার সম্মুখীন হলে প্রকল্পের ব্যয় এবং সময়সীমা বেড়ে যেতে পারে বলেও আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে।
যমুনা নদীর ওপর চার দশমিক আট কিলোমিটার রেলসেতু নির্মাণের জন্য গত বছরের আগস্ট মাসে ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকার এই প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ের কাজ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির অগ্রগতি হয়েছে ২০ শতাংশ এবং ২০২৪ সালের মধ্যে এর কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে নতুন রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই রুটে থাকা বিদ্যুতের খুঁটিগুলো পুরোপুরি স্থানান্তরিত না হওয়ায় তাদের কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
তারা আরও জানান, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া পুরোপুরি শেষ করতে না পারায় বিভিন্ন এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা প্রকল্পের কাজে বাধা দিচ্ছেন।
১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকার এই প্রকল্পটির এখন পর্যন্ত ৪৯ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে আখাউড়া এবং লাকসামের মধ্যে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্পটিও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে বলে জানায় প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। ছয় হাজার ৫০৪ কোটি টাকার এই প্রকল্পটিতে এখন পর্যন্ত অগ্রগতি হয়েছে ৭২ শতাংশ।
|
https://bangla.thedailystar.net/node/204433
|
8/30/2021
|
The Daily Star
|
Govt critique
|
121
|
পদ্মা সেতু সংযোগ সম্পন্ন
|
পদ্মা সেতু - August 30, 2025
|
সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্থাপনা পদ্মা সেতু। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার। দ্বিতল এই সেতুর এক অংশ পদ্মা নদীর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত এবং অপর অংশ নদীর শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে যুক্ত। একই সঙ্গে ট্রেন ও গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা রয়েছে এ সেতুতে। চার লেন বিশিষ্ট ৭২ ফুট প্রস্থের এ সেতুর নিচতলায় রয়েছে রেল লাইন। এর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মূল সেতুর পাইলিং ও নদীশাসনের কাজ উদ্বোধন করেন। এরপর একে একে সব ধাপ পেরিয়ে পদ্মার বুকে ৪২টি পিলারের ওপর দৃশ্যমান হয়ে ওঠে স্বপ্নের সেতু। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সেতুর মাধ্যমে বাংলাদেশের জিডিপি বছরে ১.২ থেকে ১.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫ জুন ২০২২ বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন।
|
https://www.dhakapost.com/topic/%E0%A6%AA%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%BE-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A7%81
|
8/30/2021
|
Dhaka Post
|
Govt leaning
|
122
|
পদ্মা সেতু সংযোগ সম্পন্ন
|
পদ্মা সেতুর কাজ মাত্র ৫ শতাংশ বাকি
|
পদ্মা সেতুর ৯৫ ভাগ কাজ শেষ, বাকি আছে আর মাত্র ৫ শতাংশ। নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে সেতুর কাজ শেষের পথে। ২০২২ সালের জুনে সেতুতে যান চলাচলের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ।
৮৯ শতাংশ কাজ নভেম্বর পর্যন্ত হয়েছে। মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি ৯৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। অর্থাৎ মূল সেতুর কাজের আর বাকি মাত্র ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আবদুল কাদের।
এদিকে সেতু প্রকল্পের আওতায় নদী শাসনের কাজের অগ্রগতি হয়েছে সাড়ে ৮৬ শতাংশ। নদী শাসন কাজের চুক্তিমূল্য আট হাজার ৯৭২ কোটি ৩৮ লাখ টাকার মধ্যে ব্যয় হয়েছে সাত হাজার ৩১ কোটি ৭১ লাখ টাকা। পদ্মা সেতু প্রকল্পের সর্বমোট বাজেট ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
যার মধ্যে গত নভেম্বর মাস পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৬ হাজার ৪৭৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বা মোট বাজেটের ৮৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। মূল সেতুর কাজের চুক্তিমূল্য প্রায় ১২ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা; যার মধ্যে চলতি বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে প্রায় ১১ হাজার ৫১২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
মূল সেতুর মধ্যে দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্লাব, ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্লাব ও পাঁচ হাজার ৮৩৪টি শেয়ার পকেট বসানো হয়েছে। মাওয়া ও জাজিরার ভায়াডাক্টে ৪৩৮টি সুপারটি গার্ডারের মধ্যে ৪৩৮টি ওবং ৮৪টি রেলওয়ে আই গার্ডারের মধ্যে ৮৪টিই স্থাপন করা হয়েছে।
১২ হাজার ৩৯০টি প্যারপেট ওয়ালের মধ্যে ১২ হাজার ২৫৪টি স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। সেতুর সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়ার কাজ ইতোমধ্যেই শতভাগ শেষ হয়েছে। এছাড়া ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ খাতে বরাদ্দ চার হাজার ৩৪২ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
অন্যান্য (পরামর্শক, সেনা নিরাপত্তা, ভ্যাট ও আয়কর, যানবাহন, বেতন ও ভাতাদি এবং অন্যান্য) খাতে বরাদ্দ দুই হাজার ৮৮৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। সেতুর অবশিষ্ট কাজের মধ্যে ওয়াটার প্রুফিং মেমব্রিনের কাজ ১৩ ভাগ, কার্পেটিং-২ দশমিক ৫ ভাগ, মুভমেন্ট জয়েন্ট ৫৯ ভাগ, ল্যাম্পপোস্ট ৯ দশমিক ১৯ ভাগ কাজ এগিয়েছে।
এছাড়া গ্যাস পাইপলাইন ৪৯ দশমিক ৩৫ ভাগ এবং ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ লাইনের কাজ ৬২ ভাগ এগিয়েছে। মূল সেতুর মোট ৪১টি ট্রাস রয়েছে, যার সবই ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে; যার দৈর্ঘ্য ছয় হাজার ১৫০ মিটার বা ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার।
|
https://www.jugantor.com/country-news/497351
|
12/12/2021
|
Jugantor
|
Govt leaning
|
123
|
পদ্মা সেতু সংযোগ সম্পন্ন
|
পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ শুরু হয় কবে?
|
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ - পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর - পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে এর ইতিহাসের একটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প। দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ। পদ্মা - ব্রহ্মপুত্র - মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্পান ইতিমধ্যে বসানো সম্পন্ন হয়েছে, ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় সেতু।পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানিয়েছে, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে।
|
https://sattacademy.com/job-solution/mcq/%E0%A6%AA%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A7%81%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%96%E0%A7%80-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A7%81-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A3-%E0%A6%B6%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%81-%E0%A6%B9%E0%A6%AF%E0%A6%BC-%E0%A6%95%E0%A6%AC%E0%A7%87
|
1/1/2021
|
SattAcademy
|
Govt leaning
|
124
|
সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম মামলা
|
রোজিনা ইসলাম: প্রথম আলোর সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা, তাকে আদালতে নেয়া হয়েছে
|
বাংলাদেশের দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আজ সকাল আটটার দিকে আদালতে নেয়া হয়েছে। তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। মধ্যরাতের দিকে মামলাটি সম্পর্কে প্রথম আলো কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে পুলিশ।
এরআগে গতকাল স্বাস্থ্য সচিবের পিএস-এর কক্ষে তাকে পাঁচ ঘন্টারও বেশি সময় আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মিজ ইসলামকে আটকে রাখার পর রাত আটটার দিকে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
শাহবাগ থানার পুলিশের কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানিয়েছেন, ঐ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সরানো এবং অনুমতি ছাড়া মোবাইল দিয়ে ছবি তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব কিছু অসৎ উদ্দেশ্যে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে প্রথম আলো পত্রিকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে পত্রিকার ব্যবস্থানা সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ বলেছেন, "আক্রোশ থেকে" রোজিনা ইসলামকে আটক করা হয়েছে।
"সম্প্রতি রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন নিয়োগ, টিকা নিয়ে অব্যবস্থাপনা এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে, যে প্রতিবেদনগুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। সেই আক্রোশ থেকে তাকে সচিবালয়ে ৫ ঘন্টার বেশি আটকে রেখে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে," মন্তব্য করেন সাজ্জাদ শরীফ।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ তাকে পাঁচ দিনের রিমাণ্ডে নেয়ার জন্য আবেদন করেছে। । তবে আদালতে শুনানির সময় এখনও জানা যায়নি।
রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে ঢাকার শাহবাগ থানায় ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধিতে চুরির অভিযোগে এবং ১৯২৩ সালের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে রাষ্ট্রীয় গোপন নথি সরানো ও অনুমতি না নিয়ে ছবি তোলার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে গত রাতে।
এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে নেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ এনে মামলা করা হয়।
Skip
|
https://www.bbc.com/bengali/news-57144227
|
5/18/2021
|
BBC Bangla
|
Govt critique
|
125
|
সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম মামলা
|
রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা, প্রতিবেদন ১৫ জুলাই
|
প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আগামী ১৫ জুলাই দিন ঠিক করেছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম এই আদেশ দেন।
এর আগে আজ মঙ্গলবার সকালে রোজিনা ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনও নাকচ করেন আদালত। সরকারি গোপন তথ্য চুরির অভিযোগে দণ্ডবিধি ও অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের মামলায় রোজিনা ইসলামকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে শাহবাগ থানা-পুলিশ। অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনের বিরোধিতা করে তাঁকে জামিন দেওয়ার আবেদন জানান।
আদালত রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে রোজিনা ইসলামকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আর রোজিনা ইসলামের জামিনের আবেদনের ওপর আগামী বৃহস্পতিবার অধিকতর শুনানি গ্রহণ করবেন বলে আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
শুনানিতে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী আদালতকে বলেন, রোজিনা ইসলাম একজন নারী। তাঁর সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হয়েছে। একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে তাঁর সঙ্গে অগণতান্ত্রিক আচরণ করা হয়েছে।
অবশ্য রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু আদালতকে বলেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম সরকারি গোপন তথ্য চুরি করে অপরাধ করেছেন।
সোমবার রাতভর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানায় আটক রাখার পর সকাল আটার দিকে তাঁকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় আনে পুলিশ।
হাজতখানায় তিন ঘণ্টা রাখার পর বেলা ১১টার দিকে তাঁকে কড়া পুলিশ প্রহরায় আদালতের এজলাসকক্ষে তোলা হয়। এজলাসকক্ষে দুই পক্ষের আইনজীবীরা থাকলেও অধিকাংশ গণমাধ্যমকর্মীকে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রোজিনা ইসলাম বলেন, ‘আমার সঙ্গে অন্যায় আচরণ হচ্ছে।’
পরে বেলা ১টার দিকে রোজিনা ইসলামকে প্রিজন ভ্যানে করে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের একান্ত সচিবের কক্ষ থেকে সরকারি গোপন তথ্য চুরি এবং মুঠোফোনে ছবি ধারণ করার অভিযোগে রোজিনা ইসলামকে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রাখা হয়। রাত আটটার দিকে তাঁকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে শাহবাগ থানায় রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৭৯, ৪১১ এবং অফিশিয়াল সিক্রেক্টস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারার অপরাধের অভিযোগে মামলা করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী।
|
https://www.prothomalo.com/bangladesh/%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%87-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%B2%E0%A6%BE-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%A6%E0%A6%A8-%E0%A7%A7%E0%A7%AB-%E0%A6%9C%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%87
|
5/18/2021
|
Prothom Alo
|
Govt leaning
|
126
|
সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম মামলা
|
রোজিনার বিরুদ্ধে মামলা : ‘আইনের অপপ্রয়োগ’ বললেন আইনজ্ঞরা
|
তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হেনস্তা, পরে মামলার শিকার হয়ে কারাগারে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম। তার বিরুদ্ধে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া ১৯২৩ সালের ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’-এর ৩ ও ৫ ধারায় ‘গুপ্তচরবৃত্তি ও রাষ্ট্রীয় গোপন নথি নিজের দখলে রাখার’ অভিযোগও আনা হয়েছে।
এ ঘটনার কঠোর সমালোচনা করেছেন দেশের বিশিষ্ট আইনজীবীরা। তারা বলছেন, এটা ‘আইনের অপপ্রয়োগ’ এবং ‘সংবিধান পরিপন্থী’।
দেশের প্রখ্যাত ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক বিচারপতি মনসুরুল হক চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের সঙ্গে যা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন আচরণ সমীচীন হয়নি। অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের যে ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে, দেখতে হবে সেই অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না। আসলে এটা তো প্রিম্যাচিউর (অকালপক্ক) আইডিয়া। আমি মনে করি, তার (রোজিনা ইসলাম) বিরুদ্ধে তো সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নাই। কোনো তথ্য তো সে ফাঁস করেনি। তথ্য আহরণের চেষ্টা করেছে মাত্র।’ ‘এ ধরনের আইন দ্বারা রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়াটা সঠিক হয়নি। যে অপরাধটা সংঘটিত হয়নি সেই অপরাধে তাকে আসামি করা সঙ্গত বলে আমি মনে করি না। সে হয়ত তথ্য আহরণের চেষ্টা করেছে। এটা সাংবাদিকরা করতেই পারে। তথ্য আহরণ সাংবাদিকদের অধিকার। অফিসিয়াল সিক্রেসি মেইনটেইন (সরকারি গোপনীয়তা রক্ষণাবেক্ষণ) করবেন তো কর্মকর্তারা।’
ব্রিটিশ আমলের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ধারায় রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, “ব্রিটিশরা তাদের উপনিবেশ টিকিয়ে রাখার জন্য ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’-এর মতো অনেক আইন করেছিল। কারণ, তাদের গোপনীয়তা রক্ষার বিষয় ছিল। হঠাৎ করে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ আইনের ব্যবহার, আমি বলব এটা আইনের অপপ্রয়োগ মাত্র। আইনগতভাবে এ আইন প্রয়োগের কোনো সুযোগ নাই।” মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘সংবিধানে মৌলিক অধিকার হিসেবে যে বিষয়গুলো নিশ্চিত করা হয়েছে তার মধ্যে মত প্রকাশ বা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতাও রয়েছে। কিন্তু সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলেও কিছু কিছু আইন রয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সঙ্গে জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের বিষয়টিও জড়িত। বিশেষ করে, দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য তথ্য বের করা এখন রাষ্ট্রের জন্য, জনগণের জন্য খুবই প্রয়োজন। এ অবস্থায় এসব আইন দিয়ে সাংবাদিক, সংবাদ মাধ্যমকে কোণঠাসার যে চেষ্টা, তা আমাদের সংবিধানের পরিপন্থী। বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক ভার্চুয়ালি এক আলোচনায় বলেন, অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ব্যবহার খুবই ন্যক্কারজনক। যেখানে গণতন্ত্র নাই বা থাকে না সেসব জায়গায় ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা দিয়ে মানুষকে শায়েস্তা করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ঢাকা পোস্টকে বলেন, সংবিধান ও দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সাংবাদিক রোজিনা Investigative Journalism (অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা) এর উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। তথ্য পাচার বা Spying (গুপ্তচরবৃত্তি) করা এক বিষয় আর Investigative Journalism করা ভিন্ন বিষয়। এ দুটোকে গুলিয়ে ফেললে মারাত্মক ভুল হবে। ফৌজদারি এ আইন বিশেষজ্ঞ বলেন, “সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৯ অনুযায়ী, ‘চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক স্বাধীনতা’ নিশ্চিত করা (Guaranteed) হয়েছে। অনুচ্ছেদটি দুই ভাগে বিভক্ত। উপ-অনুচ্ছেদ ১-এ বলা আছে, ‘চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তাদান করা হইল।’ উপ-অনুচ্ছেদ- ২ অনুযায়ী কিছু বাধা-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। যথা : রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশী রাষ্ট্রসমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা বা নৈতিকতা, আদালত-অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ সংঘটনের প্ররোচনা। অর্থাৎ, সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতা (Wide Term) মৌলিক অধিকার। প্রশ্ন হলো, Investigative Journalism বন্ধ হলে বা কার্যকর না থাকলে সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ কি জীবিত থাকবে? উত্তর হলো, ‘না’। সেজন্য Investigative Journalism-ই অনুচ্ছেদ ৩৯ কে লাইভ (বাঁচিয়ে) রাখে। মৌলিক অধিকার জীবন্ত রাখতে হলে Investigative Journalism বাঁচিয়ে রাখতেই হবে। এতে যদি কারো অসুবিধা হয় তা একান্তই ওই ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা দলের; সংবিধানের কোনো সমস্যা নেই। আইনের কোনো সমস্যা নেই।”
সুপ্রিম কোর্টের অপর আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম বলেন, জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) আইন- ২০১১ এর সঙ্গে ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ সরাসরি সাংঘর্ষিক। কারণ, জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ আইনের ৪, ৫ ও ১৪ ধারায় তথ্য প্রকাশকারীর সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। এমনকি তথ্য প্রকাশকারীকে পুরস্কৃত করার কথাও বলা হয়েছে। ‘এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এরকম সাংঘর্ষিক বিদ্যমান দুটি আইনের মাঝে কোনটা প্রাধান্য পাবে। সে হিসেবে আমি বলব, সাংঘর্ষিক দুটি আইনের মধ্যে যে আইনটি নতুন অর্থাৎ তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) আইন- ২০১১ প্রাধান্য পাবে’— বলেন এ আইনজ্ঞ। ৩ (২) ধারায় রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও স্বার্থের পরিপন্থীমূলক কাজ এবং ৩ (৩) (ক) ধারায় অপরাধটি বিদেশি শক্তির স্বার্থে বা প্রয়োজনে করা হয়েছে বলে ধারণা করা গেলে বা প্রমাণিত হলে মৃত্যুদণ্ড বা ১৪ বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। অন্যান্য ক্ষেত্রে তিন অনধিক তিন বছর কারাদণ্ডের বিধান আছে।
আইনের ৫ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো নিষিদ্ধ এলাকা ও সরকার ঘোষিত কোনো এলাকা সম্পর্কীয় কোনো গোপনীয় অফিসিয়াল কোড বা পাসওয়ার্ড বা কোনো স্কেচ, প্ল্যান, মডেল, আর্টিকেল, নোট, দলিলপত্র অথবা তথ্য কোনো ব্যক্তি আইনসঙ্গত দখলে বা নিয়ন্ত্রণে রেখেও যদি যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন না করে, যদি অন্য কোনো ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর করে, তার নিয়ন্ত্রণাধীন তথ্যাদি অন্য কোনো বিদেশি রাষ্ট্র ব্যবহার করে, তাতে সেই ব্যক্তি অপরাধী হবে।
৫ (ক) উপধারা অনুযায়ী, কোনো প্রতিরক্ষা নির্মাণকাজ, অস্ত্রাগার, নৌ, স্থল বা বিমান বাহিনীর স্থাপনা বা স্টেশন বা খনি, মাইনক্ষেত্র, কারখানা, ডকইয়ার্ড, ক্যাম্প বা বিমান বা গোপনীয় অফিসিয়াল কোড সংক্রান্ত অপরাধে শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা ১৪ বছর কারাদণ্ড। অন্যান্য অপরাধের ক্ষেত্রে দুই বছর কারাদণ্ড।
|
https://www.dhakapost.com/exclusive/32326
|
5/19/2021
|
Dhaka Post
|
Govt critique
|
127
|
সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম মামলা
|
প্রথম আলোর সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সরকারি নথি চুরির মামলা
|
দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া মোবাইল ফোনে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ নথির ছবি তোলা এবং আরও কিছু নথি লুকিয়ে রাখার অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক উপসচিব।
সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশিদ ঢাকা টাইমসকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, রাত ৮টা ২০ দিকে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলা নং ১৬। এজাহারে আরও বলা হয়, বর্তমানে বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশের ভ্যাকসিন ক্রয় ও সংগ্রহসংক্রান্ত নেগোসিয়েশন চলমান রয়েছে এবং খসড়া সমঝোতা স্মারক ও নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট প্রণয়ন কাজ চলমান রয়েছে। সমঝোতা স্মারক নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে প্রতিনিয়ত পত্র এবং ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ হচ্ছে। যেখানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সন্নিবেশিত রয়েছে। উক্ত নারী যেসকল নথিপত্রের ছবি তুলছিলেন। তার মধ্যে উল্লিখিত গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও ছিল। এসকল তথ্য জনসমক্ষে প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট দেশসমূহের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ার অশঙ্কা রয়েছে। উল্লিখিত কাগজপত্রসমূহ গুরুত্বপূর্ণ বিধায় মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত আছে, যা পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রদর্শন করা হবে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে অভিযোগ দায়ের করতে বিলম্বিত হলো। অতএব, এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
এর আগে রাত সাড়ে আটটার দিকে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। তাকে পাঁচ ঘণ্টা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আটকে রাখার অভিযোগ করেছেন তার সহকর্মীরা।
শাহবাগ থানার সামনে সাংবাদিকদের বিক্ষোভ
এদিকে রোজিনা ইসলামকে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা এবং থানায় মামলা দায়েরের ঘটনায় শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক ও সংগঠনের নেতারা।
সোমবার সাড়ে রাত নয়টা থেকে শাহবাগ থানার সামনে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। রাত সাড়ে ১২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল।
এদিকে এ ঘটনায় বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও নারীবাদী সংগঠন এবং সাংবাদিক নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা রোজিনা ইসলামকে ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানান। সাংবাদিকেরা এ ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী–সচিবের পদত্যাগও দাবি করেন।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (একাংশ), কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে), জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও আইন ও সালিশ কেন্দ্র এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে।
রাত ১০টার দিকে শাহবাগ থানার ওসির কক্ষ থেকে বেরিয়ে রোজিনার বোন সাবিনা পারভীন সুমী বলেন, ‘ও অসুস্থ। ওর শরীর ভালো না। গায়ে জ্বর। সকালে টিকা নিয়েছে। ওর শারীরিক অবস্থা নিয়ে আমরা শঙ্কিত।’
ওসি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী মামলাটি দায়ের করেন। মামলা হয়েছে পেনাল কোডের ৩৭৯ ও ৪১১ ধারা আর অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্টের ৩/৫ ধারায়।
ওসি জানান, মামলার পরপরই রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তার রিমান্ড চাওয়া হবে কি না এবং তাকে কখন আদালতে তোলা হবে, এ ব্যাপারে ঊধ্র্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
ডিএমপির রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুনুর রশিদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বাদীর আবেদনের ভিত্তিতে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলার একমাত্র আসামি রোজিনা ইসলাম।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ নথির ছবি তুলেছেন। যেসব নথির ছবি তোলার নিয়ম নেই। আবার কিছু কাগজপত্র তিনি তার ব্যাগে নিচ্ছিলেন। ঘটনাটি ঘটেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের সহকারীর কক্ষে। এটা কারো স্বার্থ না, এটা রাষ্ট্রের স্বার্থ।’
এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এমনিতেই ভ্যাকসিন নিয়ে অনেক রাজনীতি হচ্ছে বিশ্বে। কিছু বিষয় যদি আগে পাবলিশ হয়ে যায় তাহলে অন্য দেশ আমাদের বিশ্বাস করবে না। কিছু দিন আগে রাশিয়ার একটি নিউজ করেছিলেন। যা নিয়ে অনেক ঝামেলা হয়েছে।’
যা বলা হয়েছে এজাহারে
থানায় দেয়া লিখিত অভিযোগে শিব্বির আহমেদ ওসমানী বলেন, সোমবার বিকাল ২টা ৫৫ দিকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ সচিবের একান্ত সচিব এর দপ্তরে রোজিনা ইসলাম নামের একজন নারী প্রবেশ করেন। এ সময় একান্ত সচিব দাপ্তরিক কাজে সচিবের কক্ষে অবস্থান করছিলেন। এ সুযোগে ওই নারী দাপ্তরিক গুরুত্বপূর্ণ কাগজ-পত্র শরীরের বিভিন্ন স্থানে লুকান এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছবি তোলেন। এ সময় সচিবের দপ্তরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য মো. মিজানুর রহমান খান দেখতে পান এবং তাকে বাধা প্রদান করেন। তিনি নির্ধারিত কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে কক্ষে কী করছেন জানতে চান। এ সময় ওই নারী নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেন। পরবর্তীতে অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম, উপসচিব জাকিয়া পারভীন, সিনিয়র সহকারী সচিব শারমীন সুলতানা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের একান্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞা, সিনিয়র সহকারী সচিব মোসাদ্দেক মেহদী ইমাম, অফিস সহায়ক মো. মাহফুজুল ইসলাম, সোহরাব হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও স্টাফরা ঘটনাস্থলে আসেন। এবং অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম তল্লাশি করে তার কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এবং ডকুমেন্টসের ছবি সম্বলিত মোবাইল উদ্ধার করেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, ডকুমেন্টসগুলো তিনি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় সচিবালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে শাহবাগ থানার মহিলা পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে তাকে জিম্মায় নেন।
|
https://www.dhakatimes24.com/2021/05/18/214455
|
5/19/2021
|
Dhaka Times
|
Govt critique
|
128
|
সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম মামলা
|
সাংবাদিক রোজিনার জামিননামা-পাসপোর্ট দাখিল
|
অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনে করা মামলায় দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের জামিননামা দাখিল করা হয়েছে। এ সময় রোজিনার পার্সপোটও দাখিল করা হয়।
আজ রোববার (২৩ মে) ঢাকা মহানগর হাকিম বাকি বিল্লাহর ভার্চুয়াল আদালত রোজিনার জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর রোজিনার আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার ও সুমন কুমার রায় আদালতে তার জামিননামা ও পাসপোর্ট দাখিল করেন। এদিন জামিনের আদেশে বিচারক বলেন, ‘পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় তার অন্তবর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করা হলো। এছাড়া তাকে পাসপোর্ট জমা দিতে হবে। গণমাধ্যম ও বিচার বিভাগ একে অপরের পরিপূরক। প্রত্যেকের অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ও সহনশীল আচরণ করবেন এমন প্রত্যাশা করছি।’
এর আগে বৃহস্পতিবার (২০ মে) ঢাকা মহানগর হাকিম বাকি বিল্লাহর ভার্চুয়াল আদালতে সাংবাদিক রোজিনার জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন রোজিনার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজি, আমিনুল গনি টিটু, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, প্রশান্ত কুমার কর্মকার ও আশরাফুল আলম। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন হেমায়েত উদ্দিন হিরোন।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
আদালত শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন ও জামিন বিষয়ে আদেশের জন্য রোববার (২৩ মে) দিন ধার্য করেন।
গত মঙ্গলবার (১৮ মে) রোজিনা ইসলামকে আদালতে হাজির করে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। অন্যদিকে তার আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে তার জামিন শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার (২০ মে) দিন ধার্য করেন।
এরপর রোজিনার আইনজীবীরা তার চিকিৎসার জন্য আবেদন করেন। আদালত কারাবিধি অনুযায়ী তার চিকিৎসার জন্য নির্দেশ দেন। এরপর প্রিজনভ্যানে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই রয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে সোমবার (১৭ মে) রাতে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটি করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ উসমানী।
জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন
Jagonews24 Google News Channel
সচিবালয়ে দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখার পর সোমবার (১৭ মে) রাত ৯টার দিকে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানায় আনা হয়। তার বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া মোবাইল ফোনে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ নথির ছবি তোলা এবং আরও কিছু নথি লুকিয়ে রাখার অভিযোগ এনেছে মন্ত্রণালয়।
|
https://www.jagonews24.com/law-courts/news/669445
|
5/23/2021
|
Jago News
|
Neutral
|
129
|
জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধি
|
জ্বালানি : ডিজেল-কেরোসিনের দাম বৃদ্ধিতে যেসব খাতে প্রভাব পড়তে পারে
|
বাংলাদেশ সরকারের জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণার প্রতিবাদে আজ দ্বিতীয় দিনের মত গণপরিবহন এবং পণ্য পরিবহন ধর্মঘট চলছে সারাদেশে।
পরিবহন মালিক সমিতি বলছে তেলের দাম বাড়ালে পরিবহন ভাড়াও বাড়াতে হবে।
আগামীকাল রবিবার সরকারের সঙ্গে এই নিয়ে তাদের বৈঠক রয়েছে।
এদিকে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষক থেকে শুরু করে নাগরিক মধ্যবিত্তরা ভোগান্তির শিকার হবেন বেশি।
তেমনি একজন মনসুরা সোনিয়া, ঢাকার উত্তরায় থাকেন। পেশায় শিক্ষক এই নারী, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখন সংসারের খরচ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। মনসুরা সোনিয়া আশঙ্কা করছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়বে।
সুতরাং সংসারের মৌলিক চাহিদা মেটানো তার জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।
"আমরা যারা সাধারণ মধ্যবিত্ত তাদের সমস্যা কিন্তু প্রকট। আমরা আমাদের সমস্যাগুলো মুখ ফুটে বলতে পারি না। আমাদের যেটা বেসিক নিড বা অতি জরুরী পণ্য সেটা কেনাও অনেক কমিয়ে আনতে হবে। আমাদের আয় তো বাড়েনি। ক্ষেত্র বিশেষে কমেছে"।
"প্রতি মাসে আমার একটা হিসেব আছে। আমি চাল কিনছি আরো অন্যান্য জিনিস কিনছি। কিন্তু এখন বেসিক জিনিস কিনতে হবে বাচ্চাদের জন্য মূল্যবান আইটেম যা কিনতাম - সেসব বাদ দিতে হবে" বলেন তিনি।
|
https://www.bbc.com/bengali/news-59190107
|
11/6/2021
|
BBC Bangla
|
Neutral
|
130
|
জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধি
|
ডিজেলের দাম বৃদ্ধি, যে ব্যাখ্যা দিল মন্ত্রণালয়
|
এ বিষয়ে শুক্রবার (৫ নভেম্বর) জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ব্যাখায় বলা হয়, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি পেতে থাকায় সর্বাধিক ব্যবহৃত ডিজেলের ক্ষেত্রে বিপিসি লোকসানের সম্মুখীন হয়।
চলতি বছরের জুনে ডিজেলে লিটারপ্রতি ২ টাকা ৯৭ পয়সা, জুলাইয়ে ৩ টাকা ৭০ পয়সা, অগাস্টে ১ টাকা ৫৮ পয়সা, সেপ্টেম্বরে ৫ টাকা ৬২ পয়সা এবং অক্টোবরে ১৩ টাকা ০১ পয়সা লোকসান দিয়েছে বিপিসি।
এ হিসাবে গত সাড়ে পাঁচ মাসে ডিজেলের ক্ষেত্রে বিপিসির মোট লোকসানের পরিমাণ প্রায় ১১৪৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা; যা সরকারি ভর্তুকি দিয়ে সমন্বয় করতে হবে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।
ব্যাখ্যায় বলা হয়, সার্বিক প্রেক্ষাপটে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে সরকার ৪ নভেম্বর থেকে দেশে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য পুনর্নির্ধারণ করেছে, যদিও আশপাশের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য এখনো কম।
ব্যাখায় সর্বশেষ দাম বাড়ানো ও কমানোর তথ্যও তুলে ধরা হয়। বলা হয়, সরকার ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে দেশে ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ৬৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল। পরে ২০১৬ সালের এপ্রিলে তা ৩ টাকা কমিয়ে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে।
মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়, বর্তমান ক্রয়মূল্য বিবেচনা করে বিপিসি ডিজেলে লিটার প্রতি ১৩.০১ এবং ফার্নেস অয়েলে লিটার প্রতি ৬.২১ টাকা কমে বিক্রয় করায় প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে। অক্টোবরে বিভিন্ন গ্রেডের পেট্টোলিয়াম পণ্যে মোট ৭২৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।
এর আগে গত ৩ নভেম্বর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য অফিসার মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল-কেরোসিনের দাম বাড়ানোর কথা জানানো হয়।
আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়তে থাকায় ‘লোকসান কমাতে’ দেশের বাজারেও এই জ্বালানির তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে জানায় মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য ক্রমবর্ধমান। বিশ্ববাজারে ঊর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়মিত সমন্বয় করছে। গত ১ নভেম্বর ভারতে ডিজেলের বাজার মূল্য প্রতি লিটার ১২৪.৪১ টাকা বা ১০১.৫৬ রুপি ছিল। অথচ বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৬৫ টাকা অর্থাৎ লিটার প্রতি ৫৯.৪১ টাকা কম।
আরও পড়ুন: নিত্যপণ্যের বাজারে দাম বৃদ্ধির মিছিল
এতে বলা হয়, বর্তমান ক্রয়মূল্য বিবেচনা করে বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম করপোরেশন ডিজেলে লিটারপ্রতি ১৩.০১ এবং ফার্নেস অয়েলে লিটারপ্রতি ৬.২১ টাকা কমে বিক্রয় করায় প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে। অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম করপোরেশন বিভিন্ন গ্রেডের পেট্টোলিয়াম পণ্য বর্তমান মূল্যে সরবরাহ করায় মোট ৭২৬.৭১ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার শুধু ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য প্রতি লিটার ভোক্তাপর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা পুনর্নির্ধারণ করেছে। নতুন এই মূল্যবৃদ্ধি বুধবার দিবাগত রাত ১২টা থেকেই কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ২০০৮ সালের ২২ ডিসেম্বর জারিকৃত প্রজ্ঞাপন এবং এতদসংক্রান্ত সময় সময় জারিকৃত সংশোধনীসহ অন্যান্য সব বিষয় অপরিবর্তিত থাকবে। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পেট্রোলিয়াম পণ্যের মূল্য হ্রাস করে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছিল।
এদিকে, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি। বেড়েছে এলপিজির দামও। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় খাদ্যপণ্য, বিশেষ করে কাঁচা শাকসবজির দাম বাড়বে। জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া বৈধ হয়নি।
প্রায় পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে অপরিবর্তিত ছিল জ্বালানি পণ্য কেরোসিন ও ডিজেলের দাম। ২০১৬ সালে জ্বালানি পণ্য দুটির দাম কমিয়ে লিটার প্রতি ৬৫ টাকা করে নির্ধারণ করেছিল সরকার।
তবে বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার ছাড়িয়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। এতে প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে সরকারকে। হিসাব বলছে, গত অক্টোবরে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন- বিপিসির লোকসান হয়েছে প্রায় ৭২৭ কোটি টাকা। এরই প্রেক্ষিতে বুধবার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার।
হঠাৎ করেই জ্বালানি তেলের বাড়তি দাম কার্যকর হওয়ায় পাম্পে এসে বিপাকে পড়েন অনেকেই। দাম বাড়ানোকে অবৈধ বলছে ক্যাব। তেলের বাড়তি দাম প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস-ট্রাক বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে এই খাতের মালিক ও শ্রমিকরা।
এদিকে, তেলের দাম নিয়ে সাধারণ মানুষের অসন্তোষের মধ্যেই বাড়ল এলপি গ্যাসের দাম। ১২ লিটারের সিলিন্ডার ৫৪ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার ৩১৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
|
https://www.somoynews.tv/news/2021-11-06/%E0%A6%A1%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%AC%E0%A7%83%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A6%BF-%E0%A6%AF%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%96%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE-%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%B2-%E0%A6%AE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A3%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%9F
|
11/6/2021
|
Somoy news
|
Neutral
|
131
|
জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধি
|
বাড়ল জ্বালানির দাম
দুঃসময়ে জীবনযাত্রায় আরও চাপ
|
ডিজেলের দাম বাড়ানোর পরই বাসভাড়া বাড়িয়ে দিলেন ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের বাসমালিকেরা। এ রুটে সাধারণ বাসের ভাড়া ছিল জনপ্রতি ৩৬ টাকা, যা ১৪ টাকা বাড়িয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার ৫০ টাকা করা হয়েছে।
সরকার গত বুধবার দিবাগত রাতে ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে দেয়। বৃদ্ধির হার ২৩ শতাংশ। ওদিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের বাসমালিকেরা ভাড়া বাড়িয়েছেন ৩৯ শতাংশ।
যাত্রীরা গতকাল সকালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের বাস কাউন্টারে গিয়ে ভাড়া নিয়ে বিতণ্ডায় জড়ান। তবে কাউন্টারের কর্মীরা বলছিলেন, ভাড়া না বাড়িয়ে তাঁদের কিছু করার নেই। সব বাস কোম্পানিই যেহেতু ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে, সেহেতু যাত্রীদেরও কিছু করার ছিল না।
অসহায় যাত্রীদের একজন বেসরকারি চাকরিজীবী লোকমান আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে, কিন্তু বাসভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। তাহলে পরিবহনমালিকেরা কীভাবে ইচ্ছেমতো জনপ্রতি ১৪ টাকা বাড়তি ভাড়া আদায় করেন?
এদিকে সরকারিভাবে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে আজ শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সারা দেশে গণপরিবহন ও পণ্যবাহী যানবাহন বন্ধ থাকবে বলে এ খাতের মালিক-শ্রমিকেরা জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে ঘোষণা দেওয়া হয়নি। জেলা পর্যায় থেকে জানানো হয়েছে। মালিকেরা বলছেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিদ্যমান ভাড়ায় যানবাহন চালিয়ে পোষানো যাচ্ছে না।
বিশ্ববাজারে দর যখন কম ছিল, তখন জ্বালানির দাম কমানো হয়নি। তাহলে এখন বাড়ানো হলো কেন?
এম শামসুল আলম, জ্বালানি উপদেষ্টা, ক্যাব
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, জ্বালানি তেল হলো একটি ‘কৌশলগত পণ্য’। তেলের দাম বাড়লে তা সরাসরি মানুষের যাতায়াত খরচ বাড়িয়ে দেয়। পরোক্ষভাবে কৃষিপণ্যের উৎপাদন ও সব পণ্যের পরিবহন ব্যয় বাড়ে। যার প্রভাব পড়ে পণ্যের দামে। ফলে আগামী দিনগুলোতে সব ধরনের পণ্যের দাম কিছু কিছু বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শুধু ডিজেল নয়, গত বুধবার মধ্যরাতে বাড়ানো হয়েছে কেরোসিনের দামও, প্রতি লিটারে ১৫ টাকা।
গতকাল বাড়ানো হয় ফার্নেস অয়েলের দাম, লিটারে ৩ টাকা। ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলের দাম বাড়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় বেড়ে যাবে। সরকার ভর্তুকি না দিলে বাড়বে বিদ্যুতের দামও। এদিকে বেসরকারি খাতের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দামও গতকাল বেড়েছে। ১২ কেজির সিলিন্ডারে বেড়েছে ৫৪ টাকা।
জ্বালানির দাম এমন সময় বাড়ল, যখন বাজারে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, মুরগির মাংস, সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম অনেক বেশি। করোনাকালে মানুষের আয় কমেছে। গতকালই বেসরকারি সংস্থা পিপিআরসি ও বিআইজিডি জরিপের তথ্য তুলে ধরে জানায়, দেশে করোনাকালে নতুন দরিদ্র হয়েছে ৩ কোটি ২৪ লাখ মানুষ।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জ্বালানির দাম বাড়লে মূল্যস্তরে প্রভাব পড়ে। এর কারণে স্থির আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ও জীবনযাত্রার মান কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তিনি বলেন, সমস্যা হলো, দেশে জ্বালানি তেলের কারণে যতটুকু খরচ বাড়ে, তার চেয়ে ভাড়া অনেক বেশি বেড়ে যায়।
জ্বালানি তেলের ওপর যে শুল্ক আছে, সেখানে ছাড় দিয়ে দাম আরেকটু কম হারে বাড়ানো যেত বলে মনে করেন মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, অন্য নিত্যপণ্যে শুল্ক ছাড় দিয়ে এবং কৃষকের জন্য ভর্তুকি বাড়িয়ে নেতিবাচক প্রভাব সীমিত রাখা যেতে পারে।
দাম বাড়ানোর একদিন
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্র বলছে, বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৬৫ লাখ টন। এর মধ্যে ডিজেলের চাহিদা ৫০ লাখ টন, যার ৪০ লাখ টন আমদানি করা হয়। ডিজেলের মোট চাহিদার ৬৩ শতাংশ ব্যবহৃত হয় পরিবহন খাতে। আর সেচকাজে ব্যবহৃত হয় ১৬ শতাংশ। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ২৬ শতাংশ ফার্নেস অয়েল ও ৬ শতাংশ ডিজেলচালিত কেন্দ্র। গ্যাসের সংকট থাকায় এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রে নিয়মিত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
জ্বালানি মন্ত্রণালয় ডিজেল ও কেরোসিনের দাম যে লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়েছে, তা কার্যকর হয় গতকাল (বুধবার দিবাগত রাত ১২টার পর)। বিকেলে আসে ফার্নেস অয়েলের দাম লিটারপ্রতি ৩ টাকা বাড়ানোর খবর। বিপিসি নতুন দর নির্ধারণ করেছে প্রতি লিটার ৬২ টাকা।
বিপিসির পরিচালক (অপারেশনস ও পরিকল্পনা) সৈয়দ মেহদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববাজারে দাম বেড়েছে। বিপিসি পাঁচ মাস ধরে লোকসান দিচ্ছে। তাই দাম বাড়ানো হয়েছে।
বেসরকারি খাতে ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজির দাম মূল্য সংযোজন করসহ (মূসক/ভ্যাট) ১ হাজার ২৫৯ থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৩১৩ টাকা করা হয়েছে। গতকালই নতুন দর কার্যকর হয়েছে। সঙ্গে বেড়েছে গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজির (অটো গ্যাস) দাম। নতুন দর প্রতি লিটার ৬১ টাকা ১৮ পয়সা, যা আগে ছিল ৫৮ টাকা ৬৮ পয়সা।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি, সিপিবিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকদের বলেন, একদিকে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সে সময় আবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলো।
অঘোষিত ধর্মঘট
পরিবহন সূত্রগুলো বলছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর পরিবহন খাতের বিভিন্ন সংগঠন নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে। এসব বৈঠক থেকে ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার আগপর্যন্ত পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঢাকায়ও বাস চলবে না বলে মালিকেরা বলছেন।
বাসমালিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, ডিজেলের দাম বাড়ানোয় বাস চালিয়ে লোকসান গুনতে হবে। এ জন্য বিভিন্ন জেলার পরিবহনমালিকেরা বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পণ্যবাহী যানবাহন মালিকদের সংগঠন ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, ট্যাংকলরি, প্রাইম মুভার মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক রুস্তম আলী খান প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পণ্য পরিবহনে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার জ্বালানি তেল খরচ হয়। ডিজেলের দাম বাড়ায় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকার জ্বালানি খরচ বেড়ে যাবে।
পরিবহন খাতের সূত্র বলছে, ভাড়া সমন্বয়ের আশ্বাস পেলে ধর্মঘট তুলে নেওয়া হবে। দুই–একদিনের মধ্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক হতে পারে বলে পরিবহন মালিক-শ্রমিকনেতারা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি গতকাল বিআরটিএর চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে পরিবহন ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানায়। চিঠি পেয়ে বিআরটিএ রোববার বেলা ১১টায় বৈঠক ডেকেছে। সংস্থাটির চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, বাস ভাড়ার বিষয়ে রোববারের বৈঠকে আলোচনা হবে। এর মধ্যে ধর্মঘট অব্যাহত রাখার কোনো মানে হয় না।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি, গ্রিন ক্লাব অব বাংলাদেশ ও উন্নয়ন ধারা ট্রাস্ট ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। সংগঠনগুলো বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপ্রার্থী ও সরকারি চাকরিপ্রত্যাশীসহ সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে হঠকারী এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।
সাত বছরে ৪০ হাজার কোটি টাকা মুনাফা
জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, এর আগে সর্বশেষ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয় ২০১৩ সালে। মাঝে ২০১৬ সালে দাম কিছুটা কমিয়েছিল জ্বালানি বিভাগ।
অবশ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিশ্ববাজারে দাম কম থাকায়, বিপরীতে দেশে ততটা না কমিয়ে সর্বশেষ সাত বছরে বিপিসি প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে। পাঁচ মাস লোকসান দিয়ে ডিজেল-কেরোসিনের দাম এক লাফে প্রতি লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়।
এ বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববাজারে দর যখন কম ছিল, তখন জ্বালানির দাম কমানো হয়নি। তাহলে এখন বাড়ানো হলো কেন?
|
https://www.prothomalo.com/bangladesh/%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%83%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%9C%E0%A7%80%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A6%93-%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%AA
|
11/5/2021
|
Prothom Alo
|
Govt critique
|
132
|
জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধি
|
বিশ্ববাজারে কমছে জ্বালানি তেলের দাম, দেশে কমবে কি?
|
আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যারেলপ্রতি ৭৩ ডলারে নেমে এসেছে জ্বালানি তেলের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে জ্বালানি তেলের দরপতন বিশ্ব অর্থনীতির সবচেয়ে ইতিবাচক খবর। ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ) জ্বালানি তেলের দরের যে পূর্বাভাস দিচ্ছে তাতে দেখা যায়, আগামী বছর তেলের দাম থাকবে গড়ে ব্যারেলপ্রতি ৬৬ ডলার। এই দর ধরে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) লাভ লোকসান হিসাব করলে দেখা যায়, ভালো অবস্থানেই থাকবে প্রতিষ্ঠানটি। এতে জ্বালানি তেলের বর্ধিত দর প্রত্যাহারেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
গত ৪ নভেম্বর মধ্যরাত থেকে কার্যকর হয় ডিজেল ও কেরোসিনের নতুন দাম। লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৬৫ থেকে ৮০ টাকা করা হয়। সে সময় মন্ত্রণালয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে জালানি তেলের মূল্য ক্রমবর্ধমান। বিশ্ববাজারে ঊর্ধ্বগতির কারণে প্রতিবেশী দেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়মিত সমন্বয় করছে। গত ১ নভেম্বর ভারতে ডিজেলের বাজার মূল্য ছিল প্রতি লিটার ১২৪.৪১ টাকা বা ১০১.৫৬ রূপি, অথচ বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৬৫ টাকা অর্থাৎ লিটারপ্রতি ৫৯.৪১ টাকা কম। বর্তমান ক্রয়মূল্য বিবেচনা করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ডিজেলে লিটারপ্রতি ১৩.০১ এবং ফার্নেস অয়েলে লিটার প্রতি ৬.২১ টাকা কমে বিক্রি করায় প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে। অক্টোবরে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বিভিন্ন গ্রেডের পেট্রোলিয়াম পণ্য বর্তমান মূল্যে সরবরাহ করায় মোট ৭২৬.৭১ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার শুধু ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য প্রতি লিটার ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা পুনর্নির্ধারণ করেছে।
জ্বালানি তেলের দর বৃদ্ধির পরপরই ৬ নভেম্বর গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলন চলাকালে সেখান থেকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বাজারে মূল্য সমন্বয় করা হবে। তিনি অনলাইনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে তার প্রতিফলন ঘটবে। ২০১৬ সালেও জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস করা হয়েছিল। জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক মূল্য বৃদ্ধি ও পাচার রোধে মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে।’
এখন সেই দর নিম্নগামী। এখন সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটিই দেখার বিষয় বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষণ বলছে, কোভিড পূর্ববর্তী বছরে ২০১৯ সালে বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম ছিল গড়ে ৫৬ দশমিক ৯৯ ডলার। তবে ওই বছর কোনও একটি সময়ে সর্বোচ্চ ৬৬ ডলারে জ্বালানি তেল বিক্রি হয়েছে। আবার ২০১৮ সালে গড় দাম ছিল ৬৫ দশমিক ২৩ ডলার। ওই বছর সর্বোচ্চ দাম ছিল ৭৭ দশমিক ৪১ ডলার। একইভাবে ২০১৭ সালে গড় দাম ছিল ৫০ দশমিক ৮০ ডলার। ওই বছর সর্বোচ্চ ৬০ দশমিক ৪৬ ডলারেও তেল বিক্রি হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফলে বছরের কোনও একটি নির্দিষ্ট মাসে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে বা কমতেই পারে। এর ওপর ভিত্তি করে পুরো বছরের গড় দামের হিসাব করে না কোনও দেশ। গড়ে কত করে দাম থাকলে লোকসানের কারণ হতে পারে সেটি বিশ্লেষণ করেই দেশগুলো জ্বালানি তেলের দর নির্ধারণ করে। এছাড়া লিটারপ্রতি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ভ্যাট-ট্যাক্স হিসেবে আদায় করা হয়। জ্বালানি তেলে লোকসান করলে আমদানিকারককে ভর্তুকি দিতে হয়। ফলে সরকারকে ওই দিকটিও বিবেচনায় রাখতে হয়। অত্যধিক জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে স্বস্তির জন্য ভারত ও পাকিস্তান কর ছাড় দিয়েছে।
দেশে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর বাস ভাড়াসহ পণ্য পরিবহন খরচ বেড়েছে। এতে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় জনজীবনে চাপ বেড়েছে। হাফ পাস বাস ভাড়ার দাবিতে আন্দোলনে রাস্তায় নেমেছেন ছাত্ররা।
সরকারের যে হিসাব তাতে দেখা গেছে, ডিজেলে চলতি বছরের জুনে লিটারপ্রতি ২.৯৭ টাকা, জুলাইয়ে ৩.৭০ টাকা, আগস্টে ১.৫৮ টাকা, সেপ্টেম্বরে ৫.৬২ টাকা এবং অক্টোবরে ১৩.০১ টাকা বিপিসি’র লোকসান হয়। কিন্তু এরমধ্যে ডিজেলে সরকারকে ৯ টাকা ৭১ পয়সা কর দিতে হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি সচিব আনিছুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এখনই দাম কমলে তার প্রভাবে আমরা পাই না। দাম বাড়ানোর আগে আমরা ছয় মাস পর্যবেক্ষণ করেছি। এবার ছয় মাস না হলেও কিছু দিন তো পর্যবেক্ষণ করতেই হবে।’ তিনি বলেন, ‘কোভিড পরবর্তী অবস্থা ভালো হলেও আবার নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে বিশ্ব পরিস্থিতি কোনদিকে যাবে তা এখনই বলা সম্ভব না। অনেক দেশ এরই মধ্যে লকডাউন দিয়ে দিয়েছে। ফলে আবার যদি আগের মতো সব স্থবির হয়ে পড়ে তাহলে তো অবস্থা অন্যরকম হয়ে যাবে। তাই জ্বালানি তেলের দাম কমানোর বিষয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। আমরা আরও কিছু দিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবো।
|
https://www.banglatribune.com/national/715395/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A6%AE%E0%A6%9B%E0%A7%87-%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF-%E0%A6%A4%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A6%AE%E0%A6%AC%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A6%BF
|
11/29/2021
|
Bangla Tribune
|
Neutral
|
133
|
জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধি
|
আবারও বাড়ছে জ্বালানি তেলের দাম
|
তেল উৎপাদনকারক এবং রপ্তানিকারকদের সংগঠন ওপেকের ব্যর্থতায় জ্বালানি তেলের দাম আরেক দফা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত অক্টোবর মাসে ওপেকের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় তেল ঘাটতি দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরই মধ্যে চীন তাদের ডিজেল সরবাহ বন্ধ রাখায় তেলের ওপর সৃষ্টি হচ্ছে বাড়তি চাপ। এতে করে বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে আরও একবার। সোমবার (১ নভেম্বর) অপরিশোধিত তেলের আগাম লেনদেনের দাম শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৮৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ হয়েছে। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের দাম বেড়েছে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ, ব্যারেল প্রতি হয়েছে ৮৪ দশমিক ২৪ ডলার।
করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিগত বছর এপ্রিলে প্রতি ব্যারেল তেলের দাম শূন্য ডলারেরও নিচে নেমে যায়। বৈশ্বিক অবস্থা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ায় তেলের দাম এখন চড়া। শিল্প-কারখানা খুলে দেওয়ায় জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণে। চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে দাম, তৈরি হচ্ছে সংকট। প্রায় দেড় বছর কম দামে বিক্রির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তেল উত্তোলনকারী দেশগুলো দাম বাড়ানোর কৌশল হিসেবে দৈনিক তেল উত্তোলনের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। চাহিদা বাড়লেও চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত মাসিক চার লাখ ব্যারেল হারে তেল উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়ে অনড় রয়েছে ওপেক প্লাস।
সম্প্রতি রয়টার্সের এক জরিপে দেখা গেছে, গত অক্টোবরে তেল উৎপাদন বৃদ্ধি এবং মিত্র দেশগুলোর সাথে চুক্তি ঠিকভাবে কার্যকর না হওয়ায় আশানুরূপ জ্বালানি তেল উৎপাদন হয়নি।
|
https://www.somoynews.tv/news/2021-11-02/%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%93-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A7%9C%E0%A6%9B%E0%A7%87-%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF-%E0%A6%A4%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%AE
|
11/2/2021
|
Somoy news
|
Neutral
|
134
|
রামপাল ইউনিট-১ চালু
|
রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু, প্রভাব নিয়ে শঙ্কিত পরিবেশবাদীরা
|
বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করেছে বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এখানে উৎপাদিত ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ইতোমধ্যেই জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হতে শুরু করেছে। পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে বহুল আলোচিত-সমালোচিত বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ মালিকানাধীন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র। পরিবেশ-প্রতিবেশে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে শঙ্কা অনুভব করছেন পরিবেশবাদীরা।
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত থেকে কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। ২০২৩ সালের জুনে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে আরও ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। দুই দেশের মধ্যে নির্মাণ চুক্তির এক যুগ পর, জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যুক্ত হলো এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে।
এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিবেশগত নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে শঙ্কিত পরিবেশবাদী সক্রীয় কর্মীরা।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাঈদ একরাম উল্লাহ বলেন, “আমরা বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছি। পরিবেশগত দিক বিবেচনা করে, সব ধরনের কারিগরি কাজ করা হয়েছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র দুই দেশের বন্ধুত্ব আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি, বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।”
২০১০ সালে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসি লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) নামে কোম্পানি গঠিত হয়।
এই কোম্পানির অধীন, ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) নামে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গর্দ্দাশকাঠি মৌজায় এক হাজার ৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ শেষে, ১৬ হাজার কোটি টাকার রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়।
এ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল হিসেবে আমদানি করা কয়লা পরিবহন করা হবে সুন্দরবনের পশুর নদ দিয়ে। এই পরিবহন, পরিবেশবাদীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিবেশগত নেতিবাচক প্রভাব নিয়েও শঙ্কিত পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সদস্য এমএ সবুর রানা বলেন, “পরিবেশ দূষণ ও সুন্দরবন ধ্বংস করে আমরা বিদ্যুৎ চাই না। রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিকল্প রয়েছে। সুন্দরবনের বিকল্প নেই।” বিষয়টি সবাইকে বিবেচনা করার দাবি জানান এই পরিবেশকর্মী।
রামপাল উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের সুফল রামপাল ও বাগেরহাটবাসী পেতে শুরু করেছে। এই কেন্দ্রের ফলে এলাকার মানুষ নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ পাবে।” এই প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি হচ্ছে এবং বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান হবে বলে দাবি করেন তিনি।
রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উপব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন, “প্রথম ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে ৪০০ মেগাওয়াট গোপালগঞ্জের আমিন বাজার হয়ে ঢাকার জাতীয় গ্রীডে এবং ২৬০ মেগাওয়াট খুলনা-বাগেরহাটে সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া, দ্বিতীয় ইউনিটের ৭৯ দশমিক ৩৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।”
রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা রবীন্দ্র কুমার বলেন, “ধীরে ধীরে মেশিনের কার্যক্ষমতা বাড়াচ্ছি, আমাদের দ্বিতীয় ইউনিট চালু হলে,স্থানীয় বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি জাতীয় বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে এই কেন্দ্র।”
|
https://www.voabangla.com/a/6882312.html
|
12/19/2022
|
voabangla
|
Govt leaning
|
135
|
রামপাল ইউনিট-১ চালু
|
বারবার বন্ধ হচ্ছে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পরিচালনা কি চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে?
|
কয়লা সংকটের কারণে গত ৩০শে জুলাই রবিবার ভোর থেকে পুনরায় বন্ধ হয়ে যায় রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন। কারিগরি ত্রুটি কাটিয়ে উৎপাদনে আসার ১০ দিনের মাথায় ফের বন্ধ হল এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।
এনিয়ে গত সাতমাসে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সাতবার বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে চারবার বন্ধ হয়েছে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে, তিনবার কয়লার অভাবে। চলতি জুলাই মাসে প্রায় অর্ধেক সময় বন্ধ ছিল এর বিদ্যুৎ উৎপাদন।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) বলছে, এবারে ডলার সংকটের কারণে কয়লা আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খুলতে দেরি হয়েছে।
এর মধ্যে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে একটি জাহাজ রামপালের উদ্দেশে ইন্দোনেশিয়া ছেড়েছে। সেই সাথে আরও দুটি জাহাজ আরও কয়েকদিনের মধ্যে রওনা দিবে বলে জানানো হয়।
আগামী ৮ই অগাস্টের মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুনরায় উৎপাদনে ফিরবে বলে তারা আশা করছেন।
|
https://www.bbc.com/bengali/articles/cne0v1gdlr7o
|
8/4/2023
|
BBC Bangla
|
Govt critique
|
136
|
রামপাল ইউনিট-১ চালু
|
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র দুই সপ্তাহ ধরে বন্ধ, শঙ্কায় পায়রাও
|
দেশের কয়লাভিত্তিক বড় দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন নিয়ে আবারও টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। সময়মতো ডলার না পাওয়ায় কয়লা আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। কয়লার অভাবে দুই সপ্তাহ ধরে বন্ধ হয়ে আছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন। ডলার না পেলে উৎপাদন বন্ধ হতে পারে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রায়ও। আর এতে বাড়তে পারে লোডশেডিং।
গত ডিসেম্বরে একটি ইউনিট উৎপাদনে আসার পর এ পর্যন্ত কয়েক দফায় বন্ধ হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ মালিকানায় নির্মিত বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। গত ১৫ এপ্রিল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর চার দিন পর এটি আবার চালু হয়। কিন্তু কয়লার অভাবে ২৪ এপ্রিল থেকে এটি আবার বন্ধ হয়ে যায়। নতুন করে আমদানি করা কয়লার জাহাজ আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রামে পৌঁছার কথা রয়েছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া পার্টনারশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাঈদ একরাম উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ডলার-সংকটের কারণে কয়লা আমদানি নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। কয়লার জাহাজ চলে আসবে মঙ্গলবার। এরপর দুই দিনের মধ্যে উৎপাদন শুরু হবে।
মজুত কয়লা দিয়ে এ মাস হয়তো কোনোরকমে চালানো যাবে। এর মধ্যে ডলার না পেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে।
শাহ্ আব্দুল মওলা কেন্দ্র ব্যবস্থাপক, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র
চুক্তির প্রায় ১০ বছর পর গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে কেন্দ্রটি। কিন্তু কয়লার অভাবে ১৪ জানুয়ারি থেকে বন্ধ হয়ে যায় উৎপাদন। মূলত ডলার-সংকটে ঋণপত্র খুলতে না পারায় কয়লা আমদানি নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। এক মাস পর আবার উৎপাদনে ফেরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির একটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে দিনে ৫ হাজার টন কয়লা প্রয়োজন। এক জাহাজ কয়লা এনে এক সপ্তাহের মতো বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন সচল রাখা যায়।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্র বলছে, দেশে তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো কম চালানো হচ্ছে। আবার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও পুরোদমে চালানো যাচ্ছে না। এর মধ্যে হঠাৎ রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়। এখন দেশের অনেক এলাকায় প্রতিদিন গড়ে এক ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
যেকোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর আগে পিডিবিকে জানাতে হয়। এরপর বিদ্যুৎ উৎপাদন সূচির সঙ্গে তা সমন্বয় করে পিডিবি। পিডিবির সদস্য (উৎপাদন) এস এম ওয়াজেদ আলী সরদার প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিনের মধ্যের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হবে। তবে কবে থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে, তা এখনো চূড়ান্ত নয়।
ডলার-সংকটের কারণে কয়লা আমদানি নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। কয়লার জাহাজ চলে আসবে মঙ্গলবার। এরপর দুই দিনের মধ্যে উৎপাদন শুরু হবে
সাঈদ একরাম উল্লাহ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিআইএফপিসিএল
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে। দ্বিতীয় ইউনিট আগামী জুনে চালুর কথা রয়েছে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র বলছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট চালু হলে দিনে ১০ হাজার টন কয়লা প্রয়োজন হবে। বর্তমানে তাদের ৬ লাখ টন কয়লার ক্রয়াদেশ দেওয়া আছে। নতুন করে ডাকা দরপত্রে অংশ নিয়ে আরও ৬০ লাখ টন কয়লার ক্রয়াদেশ পেয়েছে দেশের একটি শীর্ষ ব্যবসায়ী গ্রুপ। শুরু থেকে তারাই কয়লা সরবরাহ করছে এই কেন্দ্রে। ৬০ লাখ টন কয়লা দিয়ে আগামী তিন বছর রামপাল কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা হচ্ছে এসব কয়লা।
২০১০ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় নেওয়া হয় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প। ২০১২ সালে গঠিত হয় বিআইএফপিসিএল। ২০১৩ সালে পিডিবির সঙ্গে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি হয় ওই কোম্পানির। ২০১৬ সালের মধ্যে নির্মাণকাজ শুরুর কথা থাকলেও সেটি হয় ২০১৭ সালে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যাওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রটির। কিন্তু বারবার শুধু সময় পিছিয়েছে। সুন্দরবনের কাছে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছেন পরিবেশবাদীরা।
উৎপাদন বন্ধের শঙ্কায় পায়রা
১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে পটুয়াখালীর কয়লাভিত্তিক পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। দিনে গড়ে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করে কেন্দ্রটি। বিদ্যুৎ সরবরাহের দিক থেকে এটি দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র। বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ-চীন পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসি) এটি নির্মাণ করে। ডলার-সংকটের কারণে কয়লা আমদানি নিয়ে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো একই সমস্যায় পড়েছে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। বিসিপিসি সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ধরে কয়লার টাকা বকেয়া রেখে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালিয়ে আসছে তারা। গত জানুয়ারিতে কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দেয় সরবরাহকারী বিদেশি কোম্পানি। এরপর মজুতকৃত কয়লা দিয়ে উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রটি। এমন পরিস্থিতিতে গত ফেব্রুয়ারিতে কিছু ডলারের ব্যবস্থা করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে কেন্দ্রটির উৎপাদন সচল থাকে। এখন নতুন করে বকেয়া বিলের চাপে পড়েছে কেন্দ্রটি।
পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি। আর দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদন শুরু করে একই বছরের ২৬ আগস্ট। পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনতে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে চুক্তি করে পিডিবি। সঞ্চালন লাইনের জটিলতায় দেড় বছর ধরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির একটি ইউনিট বন্ধ রাখতে হয়। এরপর বিকল্প উপায়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এখন অবশ্য ঢাকাতেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে কেন্দ্রটি। গত তিন বছরে এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি বলে জানান পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকা (কেন্দ্র ব্যবস্থাপক) শাহ্ আবদুল মওলা। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, টাকা পরিশোধ করে কয়লা কিনতে হয়। এরপরও ডলারের সংকট থাকায় ৬ মাস পর পরিশোধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তা-ও এখন বিল দেওয়া যাচ্ছে না। মজুত কয়লা দিয়ে এ মাস হয়তো কোনোরকমে চালানো যাবে। এর মধ্যে ডলার না পেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে।
|
https://www.prothomalo.com/bangladesh/nspwvpz96t
|
5/9/2023
|
Prothom Alo
|
Govt critique
|
137
|
রামপাল ইউনিট-১ চালু
|
ডিসেম্বরে চালু হতে পারে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, পরিবেশ বিপর্যয়ের ঝুঁকি থাকছেই
|
বাংলাদেশে পরিবেশ ইস্যুতে বহুল আলোচিত-সমালোচিত রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সঞ্চালন করতে পারে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা আভাস দিয়েছেন।
আপাতত প্রকল্পের মোট দুটি ইউনিটের মধ্যে একটি ইউনিট এর সর্বোচ্চ সক্ষমতায় ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে কিনা, সে বিষয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরীক্ষামূলক ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সঞ্চালন লাইনে দেয়া হয়।
সেখানে কিছু সমস্যা ধরা পড়ায় সেগুলো সমাধানে কাজ চলছে বলে জানাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেইন জানান, সব ঠিকঠাক থাকলে ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টারের (এনএলডিসি) সনদ পাওয়া যাবে।
|
https://www.bbc.com/bengali/articles/cw0jjyk697xo
|
11/27/2022
|
BBC Bangla
|
Neutral
|
138
|
রামপাল ইউনিট-১ চালু
|
বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করল রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
|
শনিবার ( ১৭ ডিসেম্বর) রাত থেকে কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। ২০২৩ সালের জুনে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে আরও ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দুই দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ চুক্তির এক যুগ পর হলেও, জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যুক্ত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয়রা। তবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিবেশগত নীতিবাচক প্রভাব নিয়ে শঙ্কিত পরিবেশকর্মী ও সচেতন মহল।
রামপাল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সুফল রামপাল ও বাগেরহাটবাসী পেতে শুরু করেছেন। এই কেন্দ্রের ফলে এলাকার মানুষ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবেন। পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সৃষ্টি ও বিপুল পরিমাণ বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান হবে।
আরও পড়ুন: পায়রা থেকে জাতীয় গ্রিডে যাচ্ছে ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ
রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপ মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন, প্রথম ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে ৪৬০ মেগাওয়াট গোপালগঞ্জের আমিন বাজার হয়ে ঢাকার জাতীয় গ্রিডে এবং ২০০ মেগাওয়াট খুলনা-বাগেরহাটে সরবরাহ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিটের ৭৯ দশমিক ৩৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দ্বিতীয় ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াটের কাজ সম্পন্ন হবে। ২০২৩ সালের জুনে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা রবীন্দ্র কুমার বলেন, ‘ধীরে ধীরে মেশিনের কার্যক্রম বাড়াচ্ছি। দ্বিতীয় ইউনিট চালু হলে স্থানীয় বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এটি জাতীয় বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে।’
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাঈদ একরাম উল্লাহ বলেন, ‘আমরা বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছি। পরিবেশগত দিক বিবেচনা করে সব ধরনের কারিগরি কাজ করা হয়েছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুই দেশের বন্ধুত্বকে আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।’
আরও পড়ুন: নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবেন ডিপিডিসির গ্রাহকরা
২০১০ সালে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসি লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) নামে কোম্পানি গঠিত হয়। এই কোম্পানির অধীন ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) নামে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গর্দ্দাশকাঠি মৌজায় ১ হাজার ৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ শেষে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়।
২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই শুরু হয় জমি ভরাট ও সড়ক নির্মাণের কাজ। প্রায় নয় বছর বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে গেল প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে এ বছরের ১১ জুলাই বয়লার স্টিম ব্লোয়িং স্থাপন করা হয়। এক মাস পর ১৪ আগস্ট টারবাইন-এ স্টিম ডাম্পিং এবং এক দিন পর ১৫ আগস্ট জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ (ট্রান্সমিশন) শুরু করা হয়।
|
https://www.somoynews.tv/news/2022-12-18/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A3%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%89%E0%A7%8E%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%A8-%E0%A6%B6%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%81-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%B2-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B2-%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%81%E0%A7%8E-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0
|
12/18/2022
|
Somoy news
|
Govt leaning
|
139
|
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র্যাব বিতর্ক
|
র্যাবের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার নেপথ্যে
|
৩ মার্চ ২০২১, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র ৪২ দিনের মাথায় অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলপত্র প্রকাশ করেন জো বাইডেন। ১৯৮৬ সালের গোল্ডম্যান-নিকোলস আইন অনুযায়ী, দেশটির প্রত্যেক প্রেসিডেন্টকেই নিজস্ব নিরাপত্তা কৌশলপত্র প্রকাশ করতে হয়। বাইডেনও তার ব্যতিক্রম নন। ২৮ পৃষ্ঠার এই কৌশলপত্রের বেশিরভাগই মার্কিন পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা নীতির চর্বিত চর্বণ হলেও একটি বিশেষ নীতির ক্ষেত্রে পূর্বসূরি তিনজন প্রেসিডেন্টের থেকে উল্টো পথে হেঁটেছেন বাইডেন।
২০০১ সালের ৯/১১ ঘটনার পর থেকে জর্জ ডব্লিউ বুশ, বারাক ওবামা এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি এবং নিরাপত্তা ভাবনার প্রায় সিংহভাগ জুড়ে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধের ছায়া থাকলেও বাইডেনের নিরাপত্তা কৌশলপত্রের কোথাও এর ছিটেফোঁটা উল্লেখও ছিল না।
নিজ প্রশাসনের নিরাপত্তা অগ্রাধিকারের তালিকায় বাইডেন যা যা এনেছেন, তা মোটাদাগে এই, ক) চীনের সঙ্গে সামনের স্নায়ুযুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলা করা, খ) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শক্তির উৎসমুখ, যেমন- গণতন্ত্র, অর্থনীতি ইত্যাদি আরও শক্তিশালী করে তোলা, গ) উদার ও নিয়মতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থা গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের মতো মূল্যবোধজনিত ইস্যুগুলোতে দেশটির নেতৃত্ব স্থানীয় অবস্থান পুনরুদ্ধার।
সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই ভোলবদলের কারণ খুঁজতে খুব বেশি বেগ পেতে হয় না। ২০১৭ সালের পর থেকে ইসলামিক স্টেট বা আইএসের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সামরিক জয় পেয়েছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট। সিরিয়া এবং ইরাক জুড়ে যে কথিত খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিল সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি, তাও ভেঙে পড়েছে তাসের ঘরের মতো।
সামরিক অভিযান, দুর্বল নেতৃত্ব, অন্তর্কোন্দল ও অন্যান্য সংকটে আল-কায়েদাও রয়েছে ভগ্নদশায়। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ক্রমশই আগ্রাসী হয়ে উঠছে চীন। বিশেষ করে সদ্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় থেকেই দুই দেশের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চরমে পৌঁছেছে।
অর্থনৈতিক, সামরিক এবং প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টায় চীনা প্রতাপের মুখে নিজের বিশ্ব মোড়লের আসনটি টিকিয়ে রাখতে বেগ পেতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকে। প্রতিরক্ষা, অর্থনীতি এবং কূটনীতি – এই তিন শিবিরে মার্কিন সামর্থ্যের পুরোটাই বাইডেন চীনকে ঠেকাতে বিনিয়োগ করবেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বাইডেনের অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলপত্র প্রকাশের প্রায় ছয় মাসের মাথায় দুই দশক ধরে আফগানিস্তানে চালানো অর্থহীন যুদ্ধের ইতি টানে হোয়াইট হাউস। ৩০ আগস্ট ২০২১ তারিখ সর্বশেষ মার্কিন সেনাটি প্রত্যাহারের আরও দুই সপ্তাহ আগেই তালেবানের হাতে কাবুলের পতন হয়।
তালেবান নিয়ন্ত্রণাধীন আফগানিস্তান আবার নতুন করে সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হতে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। তবে আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে শত তোলপাড় সত্ত্বেও নিজ নীতিতে অটল বাইডেন। অথচ দেশটিতে আইএস খোরাসান (আইএস-কে) জঙ্গিগোষ্ঠীর ক্রমবর্ধমান তৎপরতা এরই মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই বলা যায়, ভূ-রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষই সন্ত্রাসবাদ ইস্যুকে যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকারের তালিকা থেকে সরিয়ে দিয়েছে। আর সম্প্রতি বাংলাদেশের সন্ত্রাস বিরোধী এলিট প্যারামিলিটারি বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-এর ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তা পুরোপুরি বুঝে উঠতে দেশটির এই নতুন অবস্থান বিবেচনায় না নিয়ে উপায় নেই।
সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার মতো একটি ইস্যু বাদ দিয়ে নিরাপত্তা কৌশলপত্র প্রকাশ করার মাস কয়েকের মাথায় র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসাটা কি নেহাতই কাকতালীয় ঘটনা?
চলতি শতাব্দীর একদম সূচনালগ্নেই একের পর এক জঙ্গি অপতৎপরতার সাক্ষী হতে থাকে দেশ। এমন নৃশংস উন্মাদনার সঙ্গে এর আগে চাক্ষুষ পরিচয় হয়নি বাংলাদেশের। ২০০১ সালের রমনা বটমূলে নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠানে হামলা, ২০০২ সালের ময়মনসিংহে সিনেমা হলে হামলা, ২০০৩ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলায় হামলার মতো ঘটনার প্রেক্ষাপটেই ২০০৪ সালের ১৪ এপ্রিল যাত্রা শুরু করে র্যাব। এরপর থেকে র্যাবের পরিসর যতটা বেড়েছে, বাংলাদেশের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী সক্ষমতাও ততটাই বেড়েছে এবং সাথে সাথে র্যাবকে কেন্দ্র করে বিতর্কও বেড়েছে সমানতালে। তবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন সময়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও দেশে ক্রমশ অবনতির দিকে যেতে থাকা নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় জনসমর্থনের ঘাটতি হয়নি কখনো এই বাহিনীর।
২০১০ সালে ইউকেভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সেফারওয়ার্ল্ড এক জনউপলব্ধি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, ৯৮ শতাংশ উত্তরদাতা বলেন, র্যাব সৃষ্টির ফলে অপরাধ ও সন্ত্রাস দমনে যথেষ্ট সহায়ক হয়েছে। শতকরা ৯৩ ভাগ উত্তরদাতা বাহিনীর প্রতি আস্থা রয়েছে বলে জানান। এমনকি উইকিলিকসের ফাঁস করা মার্কিন গোপন কূটনৈতিক নথিতেও দেখা যায়, বিতর্ক সত্ত্বেও র্যাবের জনপ্রিয়তাকে স্বীকার করে নিচ্ছে ওয়াশিংটন—
‘স্থানীয় সুশীল সমাজ ও এনজিও সূত্র থেকে জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে সফল হওয়ায় দেশটির জনগণের শ্রদ্ধা ও প্রশংসার পাত্রে পরিণত হয়েছে র্যাব।’
র্যাবকে ঘিরে শত অভিযোগ সত্ত্বেও এই বাহিনীর সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠভাবেই কাজ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত মাত্র চার বছরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি, ফরেনসিক, মাদক শনাক্তকরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য র্যাবের কাছে অন্তত ১১টি অত্যাধুনিক যন্ত্র বিক্রি করেছে আমেরিকা।
এই সময়ে অন্তত ২২জন র্যাব সদস্য প্রশিক্ষণ নেওয়ার উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছে। র্যাবের এয়ার উইং-এর যাত্রাও শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা দুটি বেল-৪০৭ মডেলের হেলিকপ্টার দিয়ে। কেবল যুক্তরাষ্ট্রই নয়, ওয়াশিংটনের মিত্র যুক্তরাজ্যও বেশ কয়েকদফায় র্যাব সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
সিআইএ এবং আমেরিকার ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসএ)-এর সহায়তায় নিউজিল্যান্ডের একটি সংস্থার সঙ্গে বছরের পর বছর গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানও হয়েছে র্যাবের। ২০১২ সালে আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের উদ্যোগে র্যাবের অভ্যন্তরীণ তদন্ত সেল (আইইসি) যাত্রা শুরু করে।
তবে কি সন্ত্রাসবাদ ইস্যুর গুরুত্ব ফুরাতেই ওয়াশিংটনের কাছে প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে র্যাব? আবার সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধের একসময়কার নির্ভরযোগ্য সঙ্গী র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েই কি ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার’-এর ধ্বজা ওড়াতে চায় বাইডেন প্রশাসন?
ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের হিসাব-নিকাশ আমেরিকার কাছে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী তৎপরতার গুরুত্ব কমিয়ে দিতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর কাছে সন্ত্রাসবাদের হুমকি এখনো জীবন্ত।
২০২০ সালের বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে তাই এই অঞ্চলকে সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে গুরুতর ঝুঁকিতে থাকা অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বলা বাহুল্য, র্যাবের সদা তৎপর অভিযান এবং অতন্দ্র প্রহরার কারণে এই সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার বাকি দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।
তবে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা যে র্যাবের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করবে, তা অস্বস্তিকর হলেও সত্য। আর গত দুই দশকের অভিজ্ঞতা থেকে ওয়াশিংটন জানে, সন্ত্রাসের প্রেত সীমানা মানে না। তাই দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তার চিন্তা মাথায় রেখে সন্ত্রাসবাদ ঠেকাতে নিষেধাজ্ঞা নয় বরং দ্বিপাক্ষিক সংলাপের মধ্য দিয়ে র্যাবের সংস্কারের ওপর জোর দিবে ওয়াশিংটন, এটাই কাম্য
|
https://www.dhakapost.com/opinion/92949
|
1/23/2023
|
Dhaka Post
|
Govt critique
|
140
|
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র্যাব বিতর্ক
|
নতুন বছরের কূটনীতি, ভারসাম্য রক্ষা করাই কঠিন
|
ভারসাম্য রক্ষা করাই বাংলাদেশে নতুন বছরের কূটনীতিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বিদায়ি বছরের শেষদিকে বড় শক্তিগুলোর বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা বাংলাদেশের ওপর ভর করে।
কৌশলগত বিতর্কে লিপ্ত হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। এ ঘটনার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত একটি রুশ জাহাজ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম নিয়ে বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ জাহাজটিকে এদেশের জলসীমায় ঢুকতে দেয়নি।
এ নিয়ে কূটনীতিতে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশে মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে এই পালটাপালটি অবস্থান নতুন বছরে শেষ হয় কি না, সেটিই দেখার বিষয়। কারণ, বাংলাদেশে সংসদীয় নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের পক্ষে সোচ্চার। মানবাধিকারের প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় তৎপরতা রয়েছে।
সরকার এসব বিষয়কে কূটনীতিসংক্রান্ত ভিয়েনা কনভেনশনের লঙ্ঘন বিবেচনায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে মনে করে। সরকারের সঙ্গে সুর মিলিয়ে রাশিয়া বলছে, মানবাধিকারকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র।
নির্বাচন নিয়ে ভারত ও চীন প্রকাশ্যে কিছু বলেনি। তবে তারাও রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতি নজর রাখছে। ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অপরিবর্তিত আছে। চীনের সঙ্গেও বাংলাদেশের সম্পর্কের তেমন হেরফের হয়নি। বাংলাদেশ কখনোই ভারত ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা চায় না। তাই চীন ও ভারতের সঙ্গে ভারসাম্যমূলক সম্পর্ক বজায় রেখে চলে বাংলাদেশ।
ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতার কারণে নতুন বছরে স্পর্শকাতরতা বাড়তে পারে। রোহিঙ্গা সংকটের পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও এই সংকট সমাধানের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ফলে নতুন বছরেও রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে দুশ্চিন্তা অব্যাহত থাকতে পারে। মহামারি পরবর্তী পরিস্থিতি এবং ইউক্রেনে রুশ অভিযানের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে রপ্তানি বাড়ানোও চ্যালেঞ্জ। কারণ, রপ্তানি বৃদ্ধি না পেলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে বিদেশে অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদার করার কোনো বিকল্প নেই। বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের আরেক খাত জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি করার লক্ষ্যেও মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা জরুরি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে রুশ জাহাজ স্পার্টা-৩ বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করতে না পেরে এখন কলকাতা বন্দরে নোঙর করবে। সেখান থেকে অন্য জাহাজে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম বাংলাদেশে আসবে। রুশ জাহাজ স্পার্টা-৩ মূলত বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে প্রথমে ভারতে যায়। ওই জাহাজে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কিছু সরঞ্জাম দিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
ভারতে তাদের পণ্য খালাসের পর জাহাজটি রূপপুরের সরঞ্জাম নিয়ে বাংলাদেশ অভিমুখে রওয়ানা করে। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের তরফে বাংলাদেশকে সতর্ক করা হয় যে, স্পার্টা-৩ জাহাজের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
জাহাজটি আন্তর্জাতিক জলসীমায় অপেক্ষার সময়ে বাংলাদেশ জানিয়ে দেয়, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে স্পার্টা-৩ এদেশে নোঙর করতে পারবে না।
বিষয়টি নিয়ে রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মন্তেৎস্কির সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্সবিষয়ক বিভাগের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) খুরশেদ আলমের সঙ্গে বৈঠক হয়। উল্লেখ করা প্রয়োজন, রুশ জাহাজ স্পার্টা-৩-এর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও জাতিসংঘ কিংবা আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থার নিষেধাজ্ঞা নেই। ভারত যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা আমলে নেয়নি। তাই তারা মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা রুশ জাহাজকে তাদের দেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকখানি নির্ভরশীল থাকায় শক্তিধর দেশটির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে না। তার ওপর বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। ফলে নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞার চাপ সহ্য করা বাংলাদেশের পক্ষে কঠিন।
বিষয়গুলো বোঝানোর পর রাশিয়া বাস্তবতা মেনে নিয়েছে। তারা ভারতে জাহাজ নোঙর করে অন্য জাহাজে রূপপুরের সরঞ্জাম বাংলাদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সূত্রটি আরও জানায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল সরঞ্জাম আগে চলে এসেছে। স্পার্টা-৩ জাহাজে ছোটখাটো যন্ত্রপাতি এলেও এসব চার্টার বিমানেও আনা সম্ভব। আগে এসব ছোটখাটো যন্ত্রপাতি ভাড়া করা বিমানেই এসেছে। এবার খরচ কমানোর লক্ষ্যে সমুদ্রপথে জাহাজে আনা হচ্ছিল।
তবে জাহাজটির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কথা আগে থেকে বাংলাদেশের জানা ছিল না। জাহাজ কলকাতায় নোঙর করে সরঞ্জাম খালাসের পর অন্য জাহাজে বাংলাদেশে আনার কারণে সময় ও ব্যয় কিছুটা বাড়বে।
তবে কর্মকর্তারা বলছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ পেতে বিলম্বের কারণ সরঞ্জমাদি পৌঁছাতে দেরি হওয়া নয়; বরং বিদ্যুৎ গ্রিডের সঞ্চালন লাইন আপডেট না থাকায় কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ পেতে সময় লাগতে পারে।
রাশিয়ার সহযোগিতায় বাংলাদেশের পাবনা জেলায় অবস্থিত রূপপুরে পারমণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৩ বিলিয়ন ডলার। ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান পরিচালনা করার পর থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত রাশিয়া ও ইউক্রেনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশে টাকা পাঠাতে সমস্যায় পড়েছিলেন। বাংলাদেশ সরকার এখন তাদের পাওনা বেতন রাশিয়ায় পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নিলে সংকটের সুরাহা হয়। তবে বিষয়টি এখনো বাংলাদেশের কূটনীতিতে আলোচনার মধ্যে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ১৪ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকার শাহীনবাগে গুম হওয়া বিএনপি নেতা সুমনের বাসায় গেলে বাইরে জিয়াউর রহমানের আমলে ফাঁসিপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের স্বজনরা সেখানে ভিড় করেন। এ ঘটনায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের তরফে বিষয়টি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে অবহিত করা হয়। ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের কাছে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগের কথা জানায়।
তবে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এমন পরিস্থিতি তার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অনিবার্য পরিণতি। নির্বাচনের আগের বছরে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের খবরদারি বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের তৎপরতা মোকাবিলা করাও বাংলাদেশের বড় চ্যালেঞ্জ।
চীন ও ভারতে নতুন করে কোভিড পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বাংলাদেশে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা খুব প্রয়োজন হতে পারে। বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের ওপর বিভিন্ন ধরনের প্রভাব মোকাবিলা করা কঠিন এক চ্যালেঞ্জ।
|
https://www.jugantor.com/tp-firstpage/630390
|
1/1/2023
|
Jugantor
|
Govt critique
|
141
|
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র্যাব বিতর্ক
|
র্যাবের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার নেপথ্যে
|
৩ মার্চ ২০২১, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র ৪২ দিনের মাথায় অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলপত্র প্রকাশ করেন জো বাইডেন। ১৯৮৬ সালের গোল্ডম্যান-নিকোলস আইন অনুযায়ী, দেশটির প্রত্যেক প্রেসিডেন্টকেই নিজস্ব নিরাপত্তা কৌশলপত্র প্রকাশ করতে হয়। বাইডেনও তার ব্যতিক্রম নন। ২৮ পৃষ্ঠার এই কৌশলপত্রের বেশিরভাগই মার্কিন পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা নীতির চর্বিত চর্বণ হলেও একটি বিশেষ নীতির ক্ষেত্রে পূর্বসূরি তিনজন প্রেসিডেন্টের থেকে উল্টো পথে হেঁটেছেন বাইডেন।
২০০১ সালের ৯/১১ ঘটনার পর থেকে জর্জ ডব্লিউ বুশ, বারাক ওবামা এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি এবং নিরাপত্তা ভাবনার প্রায় সিংহভাগ জুড়ে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধের ছায়া থাকলেও বাইডেনের নিরাপত্তা কৌশলপত্রের কোথাও এর ছিটেফোঁটা উল্লেখও ছিল না।
নিজ প্রশাসনের নিরাপত্তা অগ্রাধিকারের তালিকায় বাইডেন যা যা এনেছেন, তা মোটাদাগে এই, ক) চীনের সঙ্গে সামনের স্নায়ুযুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলা করা, খ) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শক্তির উৎসমুখ, যেমন- গণতন্ত্র, অর্থনীতি ইত্যাদি আরও শক্তিশালী করে তোলা, গ) উদার ও নিয়মতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থা গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের মতো মূল্যবোধজনিত ইস্যুগুলোতে দেশটির নেতৃত্ব স্থানীয় অবস্থান পুনরুদ্ধার।
সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই ভোলবদলের কারণ খুঁজতে খুব বেশি বেগ পেতে হয় না। ২০১৭ সালের পর থেকে ইসলামিক স্টেট বা আইএসের বিরুদ্ধে বড় ধরনের সামরিক জয় পেয়েছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট। সিরিয়া এবং ইরাক জুড়ে যে কথিত খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিল সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি, তাও ভেঙে পড়েছে তাসের ঘরের মতো।
সামরিক অভিযান, দুর্বল নেতৃত্ব, অন্তর্কোন্দল ও অন্যান্য সংকটে আল-কায়েদাও রয়েছে ভগ্নদশায়। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ক্রমশই আগ্রাসী হয়ে উঠছে চীন। বিশেষ করে সদ্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় থেকেই দুই দেশের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চরমে পৌঁছেছে।
অর্থনৈতিক, সামরিক এবং প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টায় চীনা প্রতাপের মুখে নিজের বিশ্ব মোড়লের আসনটি টিকিয়ে রাখতে বেগ পেতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকে। প্রতিরক্ষা, অর্থনীতি এবং কূটনীতি – এই তিন শিবিরে মার্কিন সামর্থ্যের পুরোটাই বাইডেন চীনকে ঠেকাতে বিনিয়োগ করবেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বাইডেনের অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলপত্র প্রকাশের প্রায় ছয় মাসের মাথায় দুই দশক ধরে আফগানিস্তানে চালানো অর্থহীন যুদ্ধের ইতি টানে হোয়াইট হাউস। ৩০ আগস্ট ২০২১ তারিখ সর্বশেষ মার্কিন সেনাটি প্রত্যাহারের আরও দুই সপ্তাহ আগেই তালেবানের হাতে কাবুলের পতন হয়।
তালেবান নিয়ন্ত্রণাধীন আফগানিস্তান আবার নতুন করে সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হতে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। তবে আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে শত তোলপাড় সত্ত্বেও নিজ নীতিতে অটল বাইডেন। অথচ দেশটিতে আইএস খোরাসান (আইএস-কে) জঙ্গিগোষ্ঠীর ক্রমবর্ধমান তৎপরতা এরই মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই বলা যায়, ভূ-রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষই সন্ত্রাসবাদ ইস্যুকে যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকারের তালিকা থেকে সরিয়ে দিয়েছে। আর সম্প্রতি বাংলাদেশের সন্ত্রাস বিরোধী এলিট প্যারামিলিটারি বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-এর ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তা পুরোপুরি বুঝে উঠতে দেশটির এই নতুন অবস্থান বিবেচনায় না নিয়ে উপায় নেই।
সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার মতো একটি ইস্যু বাদ দিয়ে নিরাপত্তা কৌশলপত্র প্রকাশ করার মাস কয়েকের মাথায় র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসাটা কি নেহাতই কাকতালীয় ঘটনা?
চলতি শতাব্দীর একদম সূচনালগ্নেই একের পর এক জঙ্গি অপতৎপরতার সাক্ষী হতে থাকে দেশ। এমন নৃশংস উন্মাদনার সঙ্গে এর আগে চাক্ষুষ পরিচয় হয়নি বাংলাদেশের। ২০০১ সালের রমনা বটমূলে নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠানে হামলা, ২০০২ সালের ময়মনসিংহে সিনেমা হলে হামলা, ২০০৩ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলায় হামলার মতো ঘটনার প্রেক্ষাপটেই ২০০৪ সালের ১৪ এপ্রিল যাত্রা শুরু করে র্যাব। এরপর থেকে র্যাবের পরিসর যতটা বেড়েছে, বাংলাদেশের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী সক্ষমতাও ততটাই বেড়েছে এবং সাথে সাথে র্যাবকে কেন্দ্র করে বিতর্কও বেড়েছে সমানতালে। তবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন সময়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও দেশে ক্রমশ অবনতির দিকে যেতে থাকা নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় জনসমর্থনের ঘাটতি হয়নি কখনো এই বাহিনীর।
২০১০ সালে ইউকেভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সেফারওয়ার্ল্ড এক জনউপলব্ধি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, ৯৮ শতাংশ উত্তরদাতা বলেন, র্যাব সৃষ্টির ফলে অপরাধ ও সন্ত্রাস দমনে যথেষ্ট সহায়ক হয়েছে। শতকরা ৯৩ ভাগ উত্তরদাতা বাহিনীর প্রতি আস্থা রয়েছে বলে জানান। এমনকি উইকিলিকসের ফাঁস করা মার্কিন গোপন কূটনৈতিক নথিতেও দেখা যায়, বিতর্ক সত্ত্বেও র্যাবের জনপ্রিয়তাকে স্বীকার করে নিচ্ছে ওয়াশিংটন—
‘স্থানীয় সুশীল সমাজ ও এনজিও সূত্র থেকে জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে সফল হওয়ায় দেশটির জনগণের শ্রদ্ধা ও প্রশংসার পাত্রে পরিণত হয়েছে র্যাব।’
র্যাবকে ঘিরে শত অভিযোগ সত্ত্বেও এই বাহিনীর সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠভাবেই কাজ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত মাত্র চার বছরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি, ফরেনসিক, মাদক শনাক্তকরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য র্যাবের কাছে অন্তত ১১টি অত্যাধুনিক যন্ত্র বিক্রি করেছে আমেরিকা।
এই সময়ে অন্তত ২২জন র্যাব সদস্য প্রশিক্ষণ নেওয়ার উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছে। র্যাবের এয়ার উইং-এর যাত্রাও শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা দুটি বেল-৪০৭ মডেলের হেলিকপ্টার দিয়ে। কেবল যুক্তরাষ্ট্রই নয়, ওয়াশিংটনের মিত্র যুক্তরাজ্যও বেশ কয়েকদফায় র্যাব সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
সিআইএ এবং আমেরিকার ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসএ)-এর সহায়তায় নিউজিল্যান্ডের একটি সংস্থার সঙ্গে বছরের পর বছর গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানও হয়েছে র্যাবের। ২০১২ সালে আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের উদ্যোগে র্যাবের অভ্যন্তরীণ তদন্ত সেল (আইইসি) যাত্রা শুরু করে।
তবে কি সন্ত্রাসবাদ ইস্যুর গুরুত্ব ফুরাতেই ওয়াশিংটনের কাছে প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে র্যাব? আবার সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধের একসময়কার নির্ভরযোগ্য সঙ্গী র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েই কি ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার’-এর ধ্বজা ওড়াতে চায় বাইডেন প্রশাসন?
ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের হিসাব-নিকাশ আমেরিকার কাছে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী তৎপরতার গুরুত্ব কমিয়ে দিতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর কাছে সন্ত্রাসবাদের হুমকি এখনো জীবন্ত।
২০২০ সালের বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে তাই এই অঞ্চলকে সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে গুরুতর ঝুঁকিতে থাকা অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বলা বাহুল্য, র্যাবের সদা তৎপর অভিযান এবং অতন্দ্র প্রহরার কারণে এই সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার বাকি দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।
তবে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা যে র্যাবের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করবে, তা অস্বস্তিকর হলেও সত্য। আর গত দুই দশকের অভিজ্ঞতা থেকে ওয়াশিংটন জানে, সন্ত্রাসের প্রেত সীমানা মানে না। তাই দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তার চিন্তা মাথায় রেখে সন্ত্রাসবাদ ঠেকাতে নিষেধাজ্ঞা নয় বরং দ্বিপাক্ষিক সংলাপের মধ্য দিয়ে র্যাবের সংস্কারের ওপর জোর দিবে ওয়াশিংটন, এটাই কাম্য।
|
https://www.dhakapost.com/opinion/92949
|
1/23/2022
|
Dhaka Post
|
Govt critique
|
142
|
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র্যাব বিতর্ক
|
ড. রেজা কিবরিয়া: র্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় আমেরিকার প্রতি 'প্লিজড' গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক
|
বাংলাদেশে পুলিশের বিশেষ বাহনী র্যাব এবং এর কয়েকজন কর্মকর্তাকে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দেবার পর গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়াকে বিভিন্ন সভা সমাবেশে ‘উৎফুল্ল’ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
বিবিসি বাংলাকে ড. কিবরিয়া বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় তিনি ‘আমেরিকার উপর একটু কৃতজ্ঞ’।
তার বক্তব্য, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে সাধারণ মানুষের উপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর 'নির্যাতন প্রায় থেমে গেছে'।
এমনকি তিনি বিভিন্ন জায়গায় এও বলছেন যে সামনে বাংলাদেশের আরও ব্যক্তির উপর নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে আমেরিকা। এসব খবর তিনি কি ধারণা থেকে বলছেন, নাকি দায়িত্বশীল কোন সূত্র থেকে খবর পেয়েছেন?
সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভেদ তৈরির উদ্দেশ্যে নানারকম বক্তব্য দিচ্ছেন ড. কিবরিয়া, এমন অভিযোগও করেন কেউ কেউ।
রেজা কিবরিয়া বাংলাদেশের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার একমাত্র ছেলে। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারে শাহ কিবরিয়া মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০০৫ সালে এক গ্রেনেড হামলায় তাঁর মৃত্যু হয়।
পিতা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে থাকলেও রেজা কিবরিয়া গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও পরে সাধারণ সম্পাদক হন।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে হবিগঞ্জের একটি আসন থেকে জাতীয় ঐক্যজোটের প্রার্থী হয়েছিলেন, যেখানে তিনি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
পরে অবশ্য গণফোরাম থেকে বেরিয়ে আসেন ড. কিবরিয়া।
গত বছর ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরের সাথে গণঅধিকার পরিষদ নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন ড. কিবরিয়া, যেখানে তিনি আহ্বায়ক হন।
পিতা আওয়ামী লীগের মন্ত্রী হলেও তার নিজের ক্ষোভ আছে দলটির প্রতি সেকথা খোলাখুলিই বলেছেন বিবিসি বাংলার সঙ্গে দীর্ঘ এই সাক্ষাৎকারে।
এই ক্ষোভের কারণ কী?
বিবিসির আকবর হোসেনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব নানা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন ড. রেজা কিবরিয়া।
|
https://www.bbc.com/bengali/news-60225563
|
1/2/2022
|
BBC Bangla
|
Govt critique
|
143
|
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র্যাব বিতর্ক
|
র্যাবের ২৩৬ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা
|
নানান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৪ বছরে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাবের ২৩৬ জন সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কাউকে করা হয়েছে চাকরি থেকে বরখাস্ত, আবার কাউকে দেওয়া হয়েছে বাধ্যতামূলক অবসর। এছাড়াও নানান ধরনের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলছেন, অপরাধ দমন করতে গিয়ে অপরাধে জড়িয়ে পড়া সদস্যদের বিরুদ্ধে র্যাব সবসময় সজাগ রয়েছে। যখনই কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে, গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে বাহিনীর মধ্যে স্বচ্ছতার পাশাপাশি জনগণের আস্থা অর্জন করেছে র্যাব।
সাবেক পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, যারা ভালো কাজ করবে তাদের যেমন পুরস্কারের ব্যবস্থা থাকা জরুরি। যারা নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়বে তাদেরও বিভিন্ন শাস্তির আওতায় আনা জরুরি। এতে যেকোনও বাহিনীর ভাবমূর্তি সমুন্নত থাকে।
২০০৪ সালের ২৬ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এলিট ফোর্স হিসেবে গঠন করা হয় র্যাব। আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে ২০০৪ সালের ১৪ এপ্রিল, অর্থাৎ পহেলা বৈশাখ থেকে। এ বাহিনীতে সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, আনসার, কোস্টগার্ড থেকে বিভিন্ন পদমর্যাদার সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই অপরাধ দমনে, বিশেষ করে জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রে বিশেষ সাফল্য অর্জন করে আসছে র্যাব। তবে, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলো র্যাবের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে সমালোচনা করে আসছে। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া র্যাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে। যা অনেকটা ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সংশ্লিষ্টদের। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে আলোচনা করছে। যদিও র্যাব দাবি করে আসছে, বিচারবহির্ভূত কিংবা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো কোনও ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় বাহিনীটি।
র্যাব বলছে, ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে ২৩৬ র্যাব সদস্যকে গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত চার বছরে ৩৭ সদস্যকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে বাধ্যতামূলক অবসর। এছাড়া অন্যান্য গুরুদণ্ড শাস্তির আওতায় নেওয়া হয়েছে ১৯৯ জনকে। কাউকে তুলে নিয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, আর্থিক লেনদেন, ক্ষমতার অপব্যবহার, ডিসিপ্লিন ভঙ্গ, মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়াসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে অভিযোগ এলে তদন্ত সাপেক্ষে বিভিন্ন ধরনের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হয় র্যাবে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের।
র্যাবের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, নানান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে ২০২১ সালে চাকরি থেকে বরখাস্ত এবং বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে ১১ জনকে, এছাড়া গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে ৪১ জনকে। ২০২০ সালে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় পাঁচ জনকে, গুরুদণ্ড দেওয়া হয় ৫৪ জনকে। ২০১৯ সালে গুরুদণ্ড দেওয়া হয় ৬১ জনকে। চাকরি থেকে বরখাস্ত করে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় ১৭ জনকে। ২০১৮ সালে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় চার জনকে, গুরুদণ্ড দেওয়া হয় ৪৩ জনকে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘র্যাব-এ কর্মরত অবস্থায় সব কর্মকর্তার কার্যক্রম মনিটরিং করা হয়। কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ এলে সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হয়ে থাকে। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে কোনও ধরনের ছাড় দেওয়া হয় না। নানান ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে বাহিনী থেকে এখন পর্যন্ত গত চার বছরে দুইশ’র বেশি র্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জনগণের আস্থা অর্জন করে র্যাব জনগণের নিরাপত্তায় কাজ করে যাচ্ছে। যারাই জনগণের নিরাপত্তার বিপরীতে গিয়ে কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণে কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতায় আনা যেকোনও বাহিনীর জন্যই রুটিন কাজ উল্লেখ করে পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেসুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যারা ত্রুটি-বিচ্যুতি করবেন, কর্তব্যে অবহেলা করবেন আইন ভঙ্গ করবেন; তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। বিভিন্ন ধরনের অপরাধ বিবেচনায় শাস্তি দেওয়া হয়ে থাকে অভিযুক্তদের। যারা আইনবহির্ভূত কাজ করবে, সেই সঙ্গে যারা আইন মোতাবেক কাজ করে যাবে; এসব বিষয় বিবেচনা করে ব্যবস্থা নিতে হবে। ভালো কাজের জন্য থাকতে হবে পুরস্কার, সেইসঙ্গে নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার জন্য থাকতে হবে শাস্তির ব্যবস্থা। আর সেটার কার্যকারিতা থাকতে হবে।’
|
https://www.banglatribune.com/others/738608/%E0%A6%85%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A7%87-%E0%A6%9C%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A6%BE-%E0%A6%B8%E0%A6%A6%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%87-%E0%A6%AF%E0%A7%87%E0%A6%B8%E0%A6%AC
|
4/14/2022
|
Bangla Tribune
|
Govt critique
|
144
|
বিএনপি ঢাকা মহাসমাবেশ ও গ্রেপ্তার
|
ঢাকায় সমাবেশের আগে জঙ্গি ধরার নামে গ্রেপ্তার-হয়রানির অভিযোগ বিএনপির
|
ঢাকায় ১০ই ডিসেম্বর বিএনপির বিভাগীয় গণ-সমাবেশকে সামনে রেখে গত ৩০শে ডিসেম্বর থেকে চৌঠা ডিসেম্বর দুপুর পর্যন্ত চারদিনে ১০৩১ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করছে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ঢাকা জেলা আদালতে জঙ্গি ছিনতাইয়ের এক ঘটনাকে যুক্তি হিসাবে তুলে ধরে পুলিশ মেস, আবাসিক হোটেল ও বাসাবাড়িতে ব্লক রেইড চালাচ্ছে।
জঙ্গি ধরার অভিযানের নামে বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার, হয়রানি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
পুলিশ কী বলছে?
গ্রেফতার প্রসঙ্গে পুলিশ বলছে, এর সাথে বিএনপির ঢাকা সমাবেশের কোন সংযোগ নেই। বিএনপির এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলছেন তারা।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ পহেলা ডিসেম্বর থেকে ১৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশেষ অভিযানে নেমেছে। বিএনপি’র সমাবেশের ঠিক আগ মুহূর্তে এই অভিযান নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও এ ব্যাপারে ডিএমপির মুখপাত্র মোহাম্মদ ফারুক হোসেন বলেন, আসন্ন ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস উপলক্ষে যেন কোন নাশকতার অবতারণা না হয় সেজন্য ডিএমপি হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে এই অভিযান চলছে।
তিনি বলেন, এই বিশেষ অভিযান ডিএমপির নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ এবং এর আওতায় ঝুলে থাকা মামলায় অভিযুক্ত আসামীদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালায়।
ফারুক হোসের বলেন, “এই বিশেষ অভিযানে লক্ষ্য থাকে যারা পেশাদার অপরাধী, অবৈধ অস্ত্র রাখে, মাদক ব্যবসা করে তাদের গ্রেফতার করা। যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, ওয়ারেন্ট আছে তাদেরকেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। এর বাইরে কাউকে নয়।”
“মহান বিজয় দিবসকে সামনে রেখে সারাদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হবে। কোথাও যেন কোন নাশকতা না হয় সেজন্যই এই অভিযান।”
|
https://www.bbc.com/bengali/articles/cx7qev1d391o
|
12/4/2022
|
BBC Bangla
|
Govt critique
|
145
|
বিএনপি ঢাকা মহাসমাবেশ ও গ্রেপ্তার
|
সমাবেশের আগেই সংঘাত-প্রাণহানি, কী হবে ১০ ডিসেম্বর?
|
সমাবেশের আগেই সংঘাত-প্রাণহানি, কী হবে ১০ ডিসেম্বর?
বিএনপির ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের আগেই পরিস্থিতি সংঘাতময় হয়ে উঠছে৷ বুধবার বিকেলে নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশর সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ চলাকালে একজন নিহত হয়েছেন৷ আহত হয়েছেন ৩০-৩৫ জন৷
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভুইয়াসহ শতাধিক নেতা-কর্মীকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ও ভিতর থেকে পুলিশ আটক করেছে৷ কার্যালয়ের ভিতরে ঢুকে অভিযান চালায় পুলিশ৷
বুধবার সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেয়৷ তারা দুইটি ট্রাকে মাইক লাগিয়ে বক্তৃতা ও শ্লোগান দিচ্ছিলেন৷ ধীরে ধীরে লোকজন বাড়তে থাকায় বিএনপি কার্যালয়ের দিকের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়৷ আগে থেকেই পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়৷ বিকেল তিনটার দিকে পুলিশ সদস্যরা গিয়ে তাদের রাস্তা ছেড়ে দিতে বললে তারা সমাবেশ চালিয়ে যেতে অনঢ় থাকে৷ পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিলে সংঘর্ষ হয়৷ পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছোড়ে৷ পুলিশকে লক্ষ্য করেও পাল্টা ইট পাটকেল ছোড়া হয়৷ আধা ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে বিএনপি অফিসের কলাপসিবল গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে অভিযান চালায় পুলিশ৷ অভিযানের সময় পুলিশ সেখানে মারপিট ও আটক করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ আর পুলিশ দাবি করেছে, তাদের ওপর হামলা চালানোর পর তারা ‘অ্যাকশন' এ যায়৷ পরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কার্যালয়ের সামনে গেলেও তাকে ভিতরে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ৷ তিনি সেখানেই রাস্তার উপরে অবস্থান নেন৷ পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক দাবি করেছেন, ‘‘বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিএনপি অফিসে ককটেল, লাটিসোটা ও চাল ডাল নিয়ে অবস্থান নেয়৷ তাই কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়েছে৷''
আর যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার দাবি করেছেন, ‘‘বিএনপির কার্যালয়ে বোমা পাওয়া গেছে৷ তারা আগে পুলিশে ওপর হামলা চালায়৷'' মন পীড়নের সকল মাত্রা ছাড়িয়েছে সরকার
বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চলাকালে সেখানে গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘সরকার দমন পীড়নের সকল মাত্রা ছাড়িয়েছে৷ এর চেয়ে নির্যাতন, দমন আর কিছু হতে পারে না৷ এটা সংবিধানের লঙ্ঘন, মানবাধিকারের লঙ্ঘন, গণতান্ত্রিক অধিকারের লঙ্ঘন৷ এর চেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে না৷''
তিনি বলেন, ‘‘আমরা ধারণা করছি ১০ তারিখের সমাবেশক পন্ড করার জন্য এটা করা হচ্ছে৷ এটা একটা চক্রান্ত৷ আমি কার্যালয়ের সামনে থেকে পুলিশ তুলে নেয়ার অনুরোধ করছি৷ শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশে আমাদের সহযোগিতার অনুরোধ করছি৷'' আগেই রাজপথ গরম করতে চায় বিএনপি
এদিকে ঘটনার পর কক্সবাজারে এক সমাবেশে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘১০ তারিখের সমাবেশের আগেই মাঠ গরম করতে চায় বিএনপি৷ তারা অফিসে লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নিয়েছে৷ তারা সেখান থেকেই লাঠি নিয়ে মাঠে নামবে৷ ১০ তারিখ আসার আগেই তাই নয়া পল্টনে তাদের অফিসের সামনে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে৷''
অভিযান চলছে
বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে পুলিশের বিশেষ অভিযান অব্যাহত আছে৷ এপর্যন্ত সারাদেশে ছয় হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বিএনপি জানিয়েছে, তবে পুলিশের হিসেবে গ্রেপ্তার তিন হাজার৷ ঢাকায় এক হাজার ২২ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ৷ বুধবার ঢাকার কমলাপুর, গাবতলি বাসস্ট্যান্ডসহ ঢাকার প্রবেশপথ যাত্রাবাড়ি, সায়েদাবাদ ও উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ৷ ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ দাবি করেছেন, ‘‘যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা মামলার আসামি৷'' তবে বিএনপি নেতা মীর্জা আব্বাস বলেছেন,‘‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারানোর আতঙ্কে রয়েছে৷ তাই আমাদের গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে করে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে, গ্রেপ্তার করছে৷
সমাবেশ কোথায় হবে?
বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের জায়গা এখনো অনিশ্চিত৷ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের( ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বিকেলে এক প্রেস ব্রিফিং-এ বলেছেন, ‘‘বিএনপিকে নয়া পল্টন বা কোনো সড়কে কোনোভাবেই সমাবেশ করতে দেয়া হবে না৷ তারা সোহরাওয়ার্দি উদ্যান বা অন্য কোনো খোলা মাঠে সমাবেশ করতে হবে৷ তারা নয়া পল্টনে সমাবেশ করার কোনো উদ্যোগ নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে৷''
তিনি বলেন, ‘‘পল্টন বা তার আশপাশের রাস্তায় বিএনপিকে কোনো সমাবেশ করতে দেয়া হবেনা৷ পল্টনে ১০ লাখ লোক নিয়ে সমাবেশ করার জায়গা নেই৷ আমার প্রস্তাব তারা চাইলে মিরপুর কালশি মাঠে, টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ বা পূর্বাচলে বণিজ্য মেলা মাঠে যেতে পারেন৷''
এদিকে বিএনপি এখনো নয়া পল্টনে সমাবেশ করার ব্যাপারে অনঢ় রয়েছে৷ অবশ্য বিকল্প হিসেবে তারা আরামবাগে সমাবেশের প্রস্তাব দিয়েছে৷ দুপুর দুইটার দিকে নয়া পল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক বৈঠকের পর ব্রিফিং-এ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর্জা আব্বাস জানান, ‘‘আমরা বিকল্প হিসেবে আরামবাগ চেয়েছি৷ সেটা দেয়া না হলে আমরা নয়া পল্টনেই সমাবেশ করব৷''
তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ পুলিশের কাজ করবে, আমরা আমাদের কাজ করব৷ নয়া পল্টনে সমাবেশ করব৷ তবে আমরা চাই, পুলিশ যেন দলীয় ভূমিকা পালন না করে৷''
রাজধানী থমথমে
বিএনপি অফিসের সামনের ঘটনার পর ঢাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে৷ নগরীতে অতিরিক্ত পুলিশ টহল দিচ্ছে৷ তবে এরমধ্যেই সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকার বাইরে থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করেছেন৷
|
https://www.dw.com/bn/%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%86%E0%A6%97%E0%A7%87%E0%A6%87-%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%98%E0%A6%BE%E0%A6%A4-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A3%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF-%E0%A6%95%E0%A7%80-%E0%A6%B9%E0%A6%AC%E0%A7%87-%E0%A7%A7%E0%A7%A6-%E0%A6%A1%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%B0/a-64018464
|
12/7/2022
|
DW
|
Neutral
|
146
|
বিএনপি ঢাকা মহাসমাবেশ ও গ্রেপ্তার
|
১০ ডিসেম্বর কী হবে?
|
ঢাকায় একটি কাজ ছিল নোয়াখালীর আরিফুল ইসলামের। আগে ভেবেছিলেন, ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষা শেষে ১০ ডিসেম্বরের দিকে আসবেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন। আরও আগে এসে গেছেন ঢাকায়, কাজ সেরে ১০ কী বলছে বিএনপি?
১০ ডিসেম্বর কী হবে, তা নিয়ে বিএনপির বিভিন্ন নেতার কাছ থেকে বিভিন্ন রকম বক্তব্য দিলেও শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলছেন, সেদিন ঢাকায় কেবল সমাবেশই হবে।
বিএনপি এখন বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ করছে। অন্য সব বিভাগে সমাবেশের পর ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করবে ঢাকায়।
বিভাগীয় সমাবেশে লোকসমাগমে চাঙা বিএনপিকর্মীরা এবার আশায় বুক বাঁধছেন। মহিলা দলের কর্মী রুবিনা আখতার বলেন, “এতদিন আমরা জনগণের দুর্ভোগের বিষয়গুলো নিয়ে সভা-সমাবেশ করেছি, আন্দোলন করেছি। এবার সরকারের পতনের আন্দোলন শুরু হবে।”
“১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ থেকে আমাদের নেতারা সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের প্রথম ধাপের কর্মসূচির ঘোষণা করবেন, এমনটাই আমরা আশা করছি,” বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইতোপূর্বে বলেছেন,এক যুগ ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগকে হটাতে তারা ১০ ডিসেম্বর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
১০ ডিসেম্বর নিয়ে উত্তেজনা ছড়ানোর জন্য তিনি বরং সরকারকে দায়ী করেন। তার ভাষায়, ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার এমন আবহাওয়া তৈরি করেছে, যেন ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় একটা যুদ্ধ হবে।
বিএনপি নেতারা এখন বলছেন, বিভাগীয় সমাবেশ দুই মাস আগের ঘোষিত কর্মসূচি। অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশের মতো ঢাকারটিও সাধারণ একটি সমাবেশ।
ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির সমন্বয়ক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, “ঢাকার সমাবেশ কোনো জাতীয় সমাবেশ না। এটা একটি বিভাগীয় সমাবেশ। এরকম সমাবেশ অন্যান্য বিভাগেও হয়েছে।
“এনিয়ে সরকার যেভাবে আওয়াজ করছে, তাতে মনে হচ্ছে তারা নিজেরা ভয়-আতঙ্কে আছে। তারা নিজেরা ভয় পেলে আমাদের কী করার আছে?”
সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির উপদেষ্টা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসও ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচিকে একটি সমাবেশের বাইরে কিছু বলে মনে করছেন না। সমাবেশ সফল করার উপরই মনোযোগ তার।
মির্জা আব্বাস বলেন, “ঢাকার মানুষের কাছে, ঢাকা বিভাগের কাছে এটা (১০ ডিসেম্বর) একটা চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ যে, ১০ তারিখের সমাবেশকে আমাদের সফল করতে হবে।”
ডিসেম্বরের আগেই নোয়াখালীতে ফিরে যেতে চান তিনি।
ঢাকায় থাকা আশফাকুল হকের স্কুল পড়ুয়া মেয়ের পরীক্ষা চলছে। ১০ ডিসেম্বরও পরীক্ষা রয়েছে। সেদিন ঢাকার পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, তা নিয়ে উৎকণ্ঠা রয়েছে তার।
গত কিছু দিন ধরেই সাধারণ মানুষের আলোচনায় রয়েছে ১০ ডিসেম্বর। সে দিন কী হবে, তা নিয়ে কৌতূহল যেমন রয়েছে, তা ছাপিয়ে উঠছে উদ্বেগ।
ঢাকার শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসমত আরা জলি বললেন, “বাসে উঠবেন কিংবা অফিসে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে চায়ের টেবিলে কথা বলবেন, দেখবেন আলোচনায় উঠে আসে- ১০ ডিসেম্বর কী হবে?”
আর সবার অন্যদের মতো উদ্বেগ ফুটে উঠল এই শিক্ষার্থীর কথায়ও।
“বিএনপি নেতা কিংবা সরকারের মন্ত্রীদের কথা-বার্তা যা মিডিয়াতে প্রতিদিন দেখছি, তাতে বোঝা যাচ্ছে যে, ৯/১০ তারিখ ঝামেলা হবে। এমনিতে এখন রাতের বেলা দেখবেন বিভিন্ন পাড়ায় পুলিশ ও সাদা পোশাকে সদস্যদের আনাগোনা বেড়েছে। এটা তো স্বাভাবিক নয়।”
রাজনৈতিক নেতাদের কথামালায় আগামী ১০ ডিসেম্বর এখন হয়ে উঠেছে দেশে আলোচনা কেন্দ্রবিন্দু, যা অনেকটাই ফিরিয়ে আনছে দুই দশক আগের আব্দুল জলিলের ‘ট্রাম্প কার্ডের’ স্মৃতি।
২০০৪ সালে আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে, তখন দলটির সাধারণ সম্পাদক জলিল ওই বছরের এপ্রিল মাসের শুরুতে আকস্মিক ঘোষণা দিয়েছিলেন, ৩০ এপ্রিল ‘ট্রাম্প কার্ড’ ছাড়বেন তিনি, সেদিন ঘটবে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পতন।
তার সেই কথা রাজনৈতিক অঙ্গন ছাপিয়ে সারাদেশেই তুলেছিল তুমুল আলোচনা। তবে ৩০ এপ্রিল পেরিয়ে গেলেও তেমন কিছু ঘটেনি।
এবার ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিভাগীয় সমাবেশ ডেকে বিএনপি নেতাদের কয়েকজন সম্প্রতি বলেন, সেদিনের পর বাংলাদেশ চলবে খালেদা জিয়ার কথায়।
তারেক রহমান যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরবেন, এমন কথাও বলছেন তাদের কেউ কেউ। কেউ আবার বলছেন, সরকারের নির্বাহী আদেশে কারামুক্ত হয়ে ঘরে থাকা খালেদা জিয়াও ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে উপস্থিত হবেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ৯০ এর গণআন্দোলনের সময়ে ডাকসুর ভিপি আমানউল্লাহ আমান গত ৮ অক্টোবর প্রথমে ১০ ডিসেম্বর সরকার পতনের কথা বলেন। এরপর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ আরও কয়েকজন নেতাও একই কথা বলেন।
বাংলাদেশে বরাবরই শীতকালে অর্থাৎ নভেম্বর থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজনীতির মাঠ গরম থাকতে দেখা যায়। তবে গত কয়েক বছর ছিল তার ব্যতিক্রম।
২০১৮ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি আওয়ামী লীগ সরকারকে চাপে ফেলার মতো কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। এরমধ্যে কোভিড মহামারী স্বাভাবিক রাজনৈতিক তৎপরতায়ও ছেদ ঘটায়।
তবে দীর্ঘদিনের ব্যর্থতা ঝেড়ে পরবর্তী নির্বাচনের এক বছর আগে বড় ধরনের আন্দোলনে নামতে চাইছে বিএনপি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে চাপে থাকা আওয়ামী লীগ সরকারকে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে বাধ্য করতে এবার ‘হয় এসপার, নয় ওসপার’ করা তাদের লক্ষ্য।
আর তাতেই সাধারণের চোখে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ১০ ডিসেম্বর। আওয়ামী লীগের শঙ্কা কোথায়?
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, ১০ ডিসেম্বর বিএনপি সমাবেশের নামে বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন ঢাকায় এনে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলে তারা খবর পেয়েছেন।
গত শুক্রবার ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ১০ ডিসেম্বর দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “১০ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে তারা (বিএনপি) জানান দিল, তারা সন্ত্রাস করবে, আবারও আগুন সন্ত্রাস ফিরে আসছে। খেলা হবে।”
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাকও সম্প্রতি বলেন, “১০ ডিসেম্বর সমাবেশকে ঘিরে বিএনপি রাজধানীতে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়।”
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছেড়ে বিএনপির নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চাওয়ার ক্ষেত্রেও ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। সমাবেশ ঘিরে বিএনপির জঙ্গি-যোগের শঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি।
১০ ডিসেম্বর দলীয় কর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের সম্মেলনে বলেন, “প্রত্যেক ওয়ার্ডে সতর্ক পাহারা দেবে নেতা-কর্মীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল ক্যাম্পাসে, সারা বাংলাদেশে, জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন-ওয়ার্ড সব জায়গায় সতর্ক পাহারা থাকবে।”
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলছেন, বিএনপি সরকারের নির্দেশ অমান্য করে নয়া পল্টনে বেআইনিভাবে সমাবেশ করে শান্তি ভঙ্গ করলে প্রশাসনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সমুচিৎ জবাব দেবে।
|
https://bangla.bdnews24.com/politics/337c89yiin
|
12/5/2022
|
Bdnews24
|
Govt critique
|
147
|
বিএনপি ঢাকা মহাসমাবেশ ও গ্রেপ্তার
|
১০ ডিসেম্বর: একটি রাজনৈতিক সমাবেশ নিয়ে কেন এত তর্ক-বিতর্ক
|
বিএনপি আগামী ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ রাজধানীর নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে করতে চাইলেও পুলিশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার অনুমতি দিয়েছে। বলা হয়েছে, ২৬ শর্তে তারা সেখানে সমাবেশ করতে পারবে। সরকারের পক্ষ থেকেও বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে এখনো পল্টনেই সমাবেশ করার বিষয়ে অনড় বিএনপি।
বিএনপির এই সমাবেশের অনুমোদন নিয়ে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটছে? পল্টনে সমাবেশ করলে অসুবিধা কী? সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করলে সুবিধা কী? পুলিশ যে ২৬ শর্ত দিয়েছে, সেগুলো মেনেই কি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করা সম্ভব? ক্ষমতাসীন দল সমাবেশ করলেও কি তাদের এমন শর্ত দেওয়া হতো?
বিষয়গুলো নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার কথা বলেছে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল এবং আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদের সঙ্গে।
শহীদুল হক ও সেলিম মাহমুদের মতে, বিএনপির সমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানই উপযুক্ত জায়গা। অযথাই তারা বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে। তবে, আসিফ নজরুলের মতে, বিষয়টি নিয়ে সরকারই বিএনপিকে 'ফাঁদে' ফেলতে চাচ্ছে।
ঢাকায় সমাবেশের অনুমতি নিয়ে বিএনপি 'বাড়াবাড়ি করছে' বলে মন্তব্য করেন শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'বিএনপি রাস্তায় সমাবেশ করতে চাইছে। কিন্তু, রাস্তা তো সমাবেশ কিংবা মিটিং করার জন্য নয়, যানবাহন ও মানুষের চলাচলের জন্য। বিএনপি বলেছে তাদের সমাবেশে ১০ লাখ লোকের সমাগম হবে। পল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে ১০ লাখ লোকের সংকুলান করা সম্ভব না। অন্যদিকে, পুলিশ যে অনুমতি দেয়, তার আগে গোয়েন্দা সংস্থা হুমকি বিশ্লেষণ করে থাকে। সেটা করে তারা জানালে তারপর পুলিশ অনুমতি দেয়। এখন গোয়েন্দা সংস্থা যদি বলে যে, পল্টনে করলে জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে, মানুষের ভোগান্তি হবে, দুর্ঘটনা ঘটবে, তখন পুলিশের কিছু করার থাকে না।'
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান 'ভালো জায়গা' উল্লেখ তিনি আরও বলেন, 'সরকারি অনেক অনুষ্ঠান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হয়। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অনুষ্ঠান সেখানে হয়। সেটা বিরাট জায়গা। সেখানে তারা সমাবেশ করবে, পুলিশ নিরাপত্তা দেবে। এখানে বাড়াবাড়ি করার তো কিছু নেই। বিএনপি গোঁ ধরে আছে কেন? তাদের গোঁ ধরা তো বেআইনি। তারা যদি পল্টনে মিটিং করতে চায়, সেটা তো বেআইনি হবে। পুলিশ সেটা করতে দেবে না। অনুমতি না পেয়েও যদি তারা সেখানে সমাবেশ করে, তাহলে সেখানে সংঘাতের সম্ভাবনা আছে। সেটার দায়িত্ব তো বিএনপিকে নিতে হবে। তারা দেশের আইন মানবে না, সরকার মানবে না, এটা তো কোনো কথা হলো না। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে তাদের কী সমস্যা? সবাই তো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই সমাবেশ-মিটিং করে। সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা আছে। বিএনপি এ বিষয় নিয়ে পায়ে পড়ে ঝগড়া করতে চায়।'
পুলিশের দেওয়া ২৬ শর্তের বিষয়ে সাবেক এই আইজিপি বলেন, '২৬টি শর্ত কী দিয়েছে, আমি জানি না। তবে, এত শর্ত দেওয়ার দরকার নেই। আমি মনে করি, এখানে শর্ত দেবে যাতে নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় রাখা হয়। ২৬টি শর্ত কেন দিয়েছে, জানি না। যদি অপ্রয়োজনীয় শর্ত থাকে, সেগুলো দরকার নেই বলেই আমি মনে করি। জনস্বার্থে, জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য যেগুলো প্রয়োজনীয় শর্ত, সেগুলো তো মানতে হবে।'
ঢাকায় সমাবেশের অনুমতি ঘিরে সরকার বিএনপিকে 'ফাঁদে' ফেলতে চাচ্ছে বলে মনে করেন অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, 'প্রথমত, পুলিশ সাধারণত শেষ মুহূর্তে অনুমতি দেয়। এবার ১১ দিন আগে নিজ থেকে অনুমতি দিলো। তারপর আবার সরকারের পক্ষ থেকে ছাত্রলীগের সম্মেলন ২ দিন এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। আবার সরকারের নেতারাও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার পরামর্শ দিচ্ছে। আর পুলিশও ২৬টি শর্ত দিয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে মনে হয় সরকার বিএনপিকে একটা ফাঁদে ফেলতে চাচ্ছে। বিএনপি যদি বিশ্বাস করে যে সরকার তাদের ফাঁদে ফেলার জন্য এগুলো করছে, তাহলে এখানে দোষের কিছু নেই। কারণ, প্রত্যেকটি ঘটনাই অস্বাভাবিক।'
শর্ত বিষয়ে আসিফ নজরুল বলেন, 'শর্তে বলা হয়েছে, কোনো রকম গণ্ডগোল হলে বিএনপিকে দায়-দায়িত্ব বহন করতে হবে, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা থাকতে হবে, আর্চওয়ে থাকতে হবে, সিসিটিভি থাকতে হবে— সবকিছু মিলিয়ে মনে হয় এটা বিএনপিকে ফাঁদে ফেলার একটা ষড়যন্ত্র। ২৬টি শর্ত আমি ভালো করে পড়ে দেখেছি। বিএনপি যদি ২৬টি শর্ত মানতে চায়, তাহলে তাদেরকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৫ থেকে ২০ জনের একটা গোলটেবিল বৈঠক ডাকতে হবে। গোলটেবিল বৈঠক করা ছাড়া এ শর্ত মেনে সমাবেশ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এ শর্ত দেওয়ার মানে হলো বিএনপি যাতে সমাবেশ না করে। আর সমাবেশ করলে যেন ফাঁদে পড়ে, সেরকম একটা সুযোগ রাখা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিএনপি এটার প্রতিবাদ করছে।'
সরকার সৎ উদ্দেশ্যে এগুলো করছে বলে মনে করেন না ঢাবির এই অধ্যাপক। তিনি বলেন, 'সরকার একদিকে বিদেশিসহ সবাইকে দেখাতে চাচ্ছে যে, তারা সভা-সমাবেশে বাধা দিচ্ছে না, করতে দিচ্ছে। আরেক দিকে শর্ত আরোপ করে বিএনপিকে সমাবেশ থেকে নিরুৎসাহিত করার কিংবা ফাঁদে পড়ার আশঙ্কার মধ্যে রাখতে চাচ্ছে। সরকারি দল যেসব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে নির্বিঘ্নে সমাবেশ করে, সেই পরিমাণ সুবিধাসহ নির্বিঘ্নে যখন বিরোধী দলকেও সমাবেশ করতে দেওয়া হবে, তখন আমি মনে করব দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে।'
সরকার ও পুলিশ বলছে, বিএনপির সমাবেশ পল্টনে হলে জনগণের ভোগান্তি হবে, যানজটের সৃষ্টি হবে। এ বিষয়ে আসিফ নজরুল বলেন, 'জনসাধারণের ভোগান্তি আর যানজটের কথা যদি পুলিশ বলে, তাহলে তাদের কাছে সবিনয়ে জিজ্ঞাসা করতে চাই যে, কিছুদিন পরপর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, মহিলা লীগ ও ছাত্রলীগ যে রাস্তা দখল করে সভা-সমাবেশ করে, গত ১০ বছরে যে শখানেক সভা-সমাবেশ করেছে, তখন তাদের এটা মনে ছিল না? তখন বাধা দেওয়া হয়েছিল? আমরা সবাই তো এগুলোর ভুক্তভোগী হয়েছি। মনোনয়নপত্র দাখিল করার জন্যও রাস্তা দিয়ে মিছিল নিয়ে গেছে, আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে ছিলাম। এরপরেও যখন তারা এ ধরনের কথা বলে, মনে হয় তারা জনগণের সঙ্গে তামাশা করছে। তারা সারাক্ষণ যানজট সৃষ্টি করবে, জনগণের চলাচলে বাধা দেবে, আর অন্যরা সমাবেশ করতে চাইলে বলবে, দেওয়া যাবে না, এগুলো তো হাস্যকর। নিজেরা আগে যদি এগুলো পালন করে দেখাত, তাহলে তাদের কথা বিশ্বাসযোগ্য হতো। তাদের এ ধরনের কথাবার্তা জনগণের বিচার-বিবেচনা বোধের প্রতি নিষ্ঠুর পরিহাস।'
সরকার-নির্ধারিত জায়গাতেই সভা-সমাবেশ করতে হয় উল্লেখ করে ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, 'রাজনৈতিক দল হিসেবে যেকোনো সভা-সমাবেশ করতে হলে রাষ্ট্রের অনুমোদন লাগে। আওয়ামী লীগও যেহেতু রাজনৈতিক দল, আমরাও যখন কোনো সভা-সমাবেশ করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেই। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ না। ডিএমপির পক্ষ থেকে বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কথা বলা হয়েছে। সেখানে না করে যদি তারা পল্টনের মতো পাবলিক প্লেসে করতে চায়, তাহলে তো জনভোগান্তি তৈরি হবে। এই কারণেই যেকোনো সভা-সমাবেশ সরকার-নির্ধারিত জায়গাতেই হয়। সেটা তো বিএনপি মানতে বাধ্য। যদি না মানে, তাহলে সেটা খুবই দুঃখজনক হবে। যদি বিএনপি মনে করে তারা আইন নিজের হাতে তুলে নেবে, তাহলে তখন তো জনস্বার্থে, মানুষের জান-মালের নিরাপত্তায় রাষ্ট্র ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।'
বিএনপি সূত্র বলছে, অঘটনের আশঙ্কায় তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে অনিরাপদ ভাবছে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক বলেন, 'কিসের অঘটন ঘটবে? কেন ঘটবে? আমরাও তো সেখানে সভা-সমাবেশ করছি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানই তো নিরাপদ জায়গা। বরং তারা যে পল্টনে রাস্তায় সমাবেশ করতে চাইছে, সেটা অত্যন্ত অরক্ষিত জায়গা। সেখানে তো যেকোনো সমস্যা হতে পারে এবং তারাই সেটা করতে পারে। ২১ আগস্টে আওয়ামী লীগকে একটা উন্মুক্ত জায়গায় তারা সভা করতে বলল, সেখানে পুলিশ থাকল না, উল্টো গ্রেনেড হামলা করল। এই ইতিহাস তো তাদের আছে। আমাদের নেই। অঘটন ঘটানোর চিন্তা-ভাবনা তাদেরই আছে। উন্মুক্ত জায়গায় সমাবেশ করলে তারাই নাশকতা করার চেষ্টা করতে পারে। তাদের অতীত রেকর্ড ভালো না।'
জনস্বার্থেই পুলিশ ২৬ শর্ত দিয়েছে উল্লেখ করে সেলিম মাহমুদ বলেন, 'শর্তগুলো নিয়মের কারণে দেওয়া হয়েছে। এগুলো নির্দিষ্ট করা থাকে। সবার জন্যই এগুলো থাকে, এটা আলাদা কিছু না। আমরা করলে আমাদের জন্যও এগুলো প্রযোজ্য হবে। রাষ্ট্র-জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এ শর্তগুলো দেওয়া হয়েছে। এগুলো সবগুলোই মানা সম্ভব। রাষ্ট্রে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সবাইকেই আইন মেনে চলতে হবে। বিএনপি যেখানে সমাবেশ করতে চাইছে, সেটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আমি মনে করি পুলিশ যেখানে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে, সেখানে করাটাই তাদের জন্যও ভালো হবে।'
|
https://bangla.thedailystar.net/news/bangladesh/politics/news-423956
|
12/2/2022
|
The Daily Star
|
Neutral
|
148
|
বিএনপি ঢাকা মহাসমাবেশ ও গ্রেপ্তার
|
১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ ঘিরে সংঘাতের আশঙ্কা বাড়ছে
|
আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সংঘাতের আশঙ্কা বাড়ছে। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সর্বোচ্চ ছাড়ের পরও সমাবেশের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে উত্তাপ। বিএনপির সমাবেশের স্থান নির্ধারণ নিয়েই যতসব জটিলতা। শর্তসাপেক্ষে দলটিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু দলটির নেতারা সেটি মানতে নারাজ।
তাদের দাবি বিএনপির কার্যালয়ের সামনেই সমাবেশ করবে দলটি। জনগণের ভোগান্তি কমানো ও যানজট এড়াতে সরকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেয় বিএনপিকে। তাদের সমাবেশকে নির্বিঘ্ন করতে ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখও দুদিন এগিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা অতীতে আর দেখা যায়নি। তবুও বিএনপি সমাবেশের স্থান নিয়ে নিজেদের অনড় রেখেছে। দলটির একতরফা দাবিই সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
অনুমোদনের পরও স্থান নিয়ে বিএনপির টালবাহানা আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, স্থান নির্বাচনের মতো ছোট একটি ইস্যুকে সামনে রেখে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বিএনপি। জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনে কঠোর হওয়ার বার্তাও দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গত কয়েক বছরে আন্দোলন কর্মসূচিতে না থাকলেও দু’মাসে বিএনপি সারাদেশে সমাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে। বড় কোনো সংঘর্ষ ও কোন্দল ছাড়াই এসব কর্মসূচি পালিত হয়েছে। অবশ্য সারাদেশের সমাবেশের সঙ্গে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে মেলানো কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছাড়াও ১০ ডিসেম্বর নিয়ে সংশয়, সংঘাত এবং পাল্টাপাল্টি আলোচনা চলছে সাধারণ মানুষের মাঝেও।
জনগণ ছাড়াও কূটনীতিক মহলেও ১০ ডিসেম্বর উত্তাপ ছড়িয়েছে। ১০ ডিসেম্বরের পর দেশ আর আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে চলবে না এমন হুমকিও শোনা গিয়েছিল বিএনপির নেতাদের মুখ থেকে। যদিও আস্তে আস্তে নিজেদের বক্তব্য থেকে সরে এসেছেন তারা, তবুও সমাবেশকে ঘিরে বড় ধরনের শোডাউন দেখাতে চায় দলটি। কর্মীদের উদ্দীপ্ত করতে এর চেয়ে আর কোনো বড় সুযোগ নেই বলে মনে করছেন বিএনপির নেতারা।
আর সরকারি দল বলছে, বিএনপি যদি সমাবেশ ঘিরে সহিংসতা করে তবে, তাদের সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও চাইছে বিএনপির সমাবেশ শান্তিপূর্ণ হোক আর আওয়ামী লীগও চাইছে রাজপথ নিজেদের দখলে রাখতে। তবে কোনোভাবেই রাজধানী অশান্ত হোক সেটি এই মুহূর্তে চাইছে না সরকার। সরকারের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্তরা ইতোমধ্যেই নানা বক্তব্য রেখেছেন।
১০ ডিসেম্বর নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি সমাবেশ ঘিরে আন্দোলনের নামে যদি সহিংসতা করে তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ তার সমুচিত জবাব দেবে। বিএনপি কেন তাদের সমাবেশের জন্য ১০ ডিসেম্বর বেছে নিয়েছে, এমন প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, বিএনপি কি জানে না বাংলাদেশের ইতিহাস? ১৯৭১ সালে ১০ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার নীল-নক্সা বাস্তবায়নে প্রক্রিয়া শুরু হয়।
১০ ডিসেম্বর সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেন এবং সাংবাদিক সৈয়দ নাজমুল হককে পাক হানাদার বাহিনী ও আলবদর বাহিনী উঠিয়ে নিয়ে যায়। ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর সময়ের মধ্যে বুদ্ধিজীবী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা বাংলাদেশে সংঘটিত হয়। কাজেই সমাবেশের জন্য বিএনপি কেন ওই দিনটাই বেছে নিল এটাই এখন প্রশ্ন।
তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঐতিহাসিক স্থান, সেখানেই পাক হানাদার বাহিনী মুক্তি বাহিনী মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। বিশাল জায়গা সেটা। আওয়ামী লীগের সব সমাবেশ ও জাতীয় সম্মেলন এখানেই হয়। তাহলে বিএনপি কেন তাদের পার্টি অফিসের সামনে ছোট জায়গা বেছে নিল? পার্টি অফিসে সমাবেশ করার জন্য বিএনপির এত দৃঢ়তা কেন? এখানে তাদের কী কোনো বদ উদ্দেশ্য আছে? কোন মতলবে তারা এটা চায়?
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেছেন, ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ উপলক্ষে বিএনপি দুটি জায়গা চেয়েছিল।
আমরা তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছি। এখন তারা বলছে, নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি চায়। সমাবেশকে ঘিরে অরাজকতা করার চেষ্টা করলে বিএনপি ভুল করবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সুন্দর পরিবেশের জন্যই তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বিএনপি দুটি জায়গার কথা বলেছে, সোহরাওয়ার্দী ও মানিক মিয়া এভিনিউয়ে। তাদের দাবির প্রতি লক্ষ রেখেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর মানিক মিয়া এভিনিউতে রাজনৈতিক কর্মসূচির সুযোগ নেই। কারণ সেখানে জাতীয় সংসদ রয়েছে।
বিএনপির আপত্তি উপেক্ষা করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়ে সরকার কি ১০ তারিখ অরাজক পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে-এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই অরাজক পরিস্থিতি যাতে না হয়, সেই ব্যবস্থা করতে। ডিএমপি কমিশনারের কাছে তারা (বিএনপি) গিয়েছিলেন। তারা দুটি জায়গা চেয়েছিল। তারা অনেক মানুষের সমাগম করবে, তাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও মানিক মিয়া এভিনিউ চেয়েছে। সব দল ও বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হয়।
তিনি বলেন, বিএনপির কর্মসূচির কারণে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মসূচি এগিয়ে এনে তাদের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা সব সময় বলেছি, যে কোনো কার্যক্রম আপনারা করবেন। কারণ এটা আপনাদের রাজনৈতিক অধিকার। তবে কোনোক্রমেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেওয়া যাবে না।
বিএনপি চাইছে না সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে। এক্ষেত্রে সরকারের বক্তব্য কি- জানতে চাইতে তিনি বলেন, তারাই এই স্থানগুলো চেয়েছে। আর নয়াপল্টন অনেক ব্যস্ততম সড়ক। ওই রাস্তায় যদি তারা সমাবেশ করে-যেহেতু তারা বলেছে লাখ লাখ লোকের সমাগম ঘটবে, তাহলে কী হবে অবস্থাটা? এখন আমি স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, তারা যদি আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করে, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করে তাহলে তারা ভুল করবে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশের মাধ্যমে গ-গোল বাধাতে চায়। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকার সৎ উদ্দেশ্যেই তাদের (বিএনপি) সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলেছে। যাতে তারা নির্বিঘ্নে সমাবেশ করতে পারে সেজন্য ৮ ডিসেম্বরের ছাত্রলীগের সম্মেলন এগিয়ে এনে ৬ ডিসেম্বর করা হয়েছে।
কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য তো একটি গ-গোল বাধানো। তিনি বলেন, সরকার তো গ-গোল বাধানোর জন্য, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য সারাদেশ থেকে অগ্নিসন্ত্রাসীদের জড়ো করে ঢাকা শহরে, রাজধানীতে একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য অনুমতি দিতে পারে না।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার স্বার্থে, শান্তি-স্থিতি বজায় রাখার স্বার্থে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হয়। এক্ষেত্রেও তারা যদি চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার জন্য তাদের অবস্থান ব্যক্ত করে, সে ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান সরকার ব্যক্ত করবে এবং একই সঙ্গে আওয়ামী লীগও।
এরই মধ্যে ১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম, ২২ অক্টোবর খুলনা, ২৯ অক্টোবর রংপুর, ৫ নভেম্বর বরিশাল, ১২ নভেম্বর ফরিদপুর, ১৯ নভেম্বর সিলেট ও ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় গণসমাবেশ করেছে বিএনপি। আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে গণসমাবেশের পর ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে দেড় যুগ ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি। ঢাকায় সমাবেশের পর ১৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে সমাবেশ করতে চায় দলটি।
১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ করতে গত মঙ্গলবার বিএনপিকে দেওয়া পুলিশের ২৬টি শর্তের মধ্যে প্রথম শর্তেই বলা আছে এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। আর পুলিশের শেষ বা ২৬ নম্বর শর্তে বলা হয়েছে- জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।
ডিএমপি থেকে চিঠি পাওয়ার পর বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দলটি নয়াপল্টনেই ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশ করবে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ঢাকার গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে বিভিন্ন নেতাকর্মীর বাসায় পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। তবে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ মূলত জনস্বার্থের সমাবেশ। এটি হারানো গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার সমাবেশ। নয়াপল্টনেই বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে বলে জানান বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা বলেন, আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার। আমরা নয়াপল্টনেই গণসমাবেশ করব। নয়াপল্টনে আগেও সমাবেশ হয়েছে এখনো হবে। এমনকি ভবিষ্যতেও নয়াপল্টনে বিএনপি সমাবেশ করবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, বিএনপি অনুমতি চেয়েছে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যদি তারা না মানতে চায় সেটা তাদের ব্যাপার।
|
https://www.dailyjanakantha.com/politics/news/670666
|
12/1/2022
|
Daily Janakantho
|
Neutral
|
149
|
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সংঘর্ষ
|
রাজশাহীতে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বুলেট গ্রেপ্তার
|
বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় রাজশাহী জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব আব্দুস সবুর বুলেটকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে দুর্গাপুর উপজেলার হোজা গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত বুলেট দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা এবং জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করার পরিকল্পনা করে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
পরে দুপুরে তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জানতে চাইলে দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও ঝালুকা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আয়নাল হক বলেন, ‘২৮ তারিখে ঢাকায় বিএনপি মহাসমাবেশ রয়েছে। সেখানে যাতে বিএনপির নেতা কর্মী না যেতে পারে এ কারণে আমাদের দলীয় নেতা কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমি অসুস্থ। শুনেছি গতরাতে উপজেলায় একাধিক নেতা কর্মীর বাড়ি পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে।’
|
https://www.ajkerpatrika.com/bangladesh/rajshahi/ajpnoenirlkyi
|
10/26/2023
|
Ajker Potrika
|
Govt critique
|
150
|
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সংঘর্ষ
|
নেতৃত্বেই গোলমেলে রাজশাহী ছাত্রদল
|
শাহরিয়ার আলম বিপুল রাজশাহী জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। তিনি যে শুধু ছাত্রদল সামলাচ্ছেন তা নয়, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিবের দায়িত্বও তাঁর কাঁধে। ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আরফিন কনকেরও আছে অতিরিক্ত দায়িত্ব। জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পদেও তিনি। একই সঙ্গে দুই ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন চালাতে গিয়ে হয়রান এ দুই নেতা। ছাত্রদলের নেতৃত্বে থাকলেও শীর্ষ দুই নেতার কেউই এখন ‘ছাত্র’ নন। ছাত্রত্বের পাট চুকিয়েছেন তাও সাত-আট বছর।
এতে গতি হারিয়েছে রাজশাহী জেলা ছাত্রদল। অনেকটা গোলমেলে পরিস্থিতি বিএনপির এই ছাত্র সংগঠনে। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সাংগঠনিক কার্যক্রমে ঠিকমতো সময় দিতে না পারায় আগামী কমিটিতে পদপ্রত্যাশী নেতাদের হাতে জেলা ছাত্রদলের নাটাই। বিষয়টি নিজেরাও স্বীকার করছেন ওই দুই নেতা। তারা বলছেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলকে বিষয়টি অনেক আগেই জানানো হয়েছে। সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে বিএনপি, ছাত্রদলসহ জাতীয়তাবাদী ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো লাগাতার কর্মসূচি পালন করছে। এ জন্য রাজশাহী জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি দিতে দেরি হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলা ছাত্রদলের সবশেষ কমিটি হয় ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর।
এতে রেজাউল করিম টুটুলকে সভাপতি ও শরিফুল ইসলাম জনিকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ২০২১ সালের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে রাজশাহী জেলা ও মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। যুবদলের জেলা কমিটিতে সদস্য সচিবের পদ পান ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম রাজু। আর সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম জনি মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হন। একই বছরের ১৬ নভেম্বর জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি বিপুলকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং যুগ্ম সম্পাদক কনককে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়। বিপুল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০০৩-০৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। কনক বিবিএ পাস করেছেন ২০১৬ সালে। সে হিসাবে দু’জনেরই ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে অনেক আগেই। জানা যায়, গত ৯ অক্টোবর রাজশাহী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি গঠন করা হয়। স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতে সদস্য সচিব করা হয় জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিপুলকে। ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কনক ওই কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়কের পদ পান। এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার আমিন বিপুল বলেন, ‘আমি ছাত্রদলের পদে আছি। পরে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব হয়েছি। ছাত্রদল করার বয়স শেষ, সে জন্য স্বেচ্ছাসেবক দল নিয়েই বেশি ভাবছি। এখানে বেশি সময়ও দিচ্ছি। ছাত্রদলের তরুণ নেতাকর্মীকে তাদের মতো কর্মসূচি পালনের পরামর্শ দিচ্ছি। দুটি সংগঠনে একসঙ্গে নেতৃত্ব দেওয়া একটু কঠিনই। রাজশাহী জেলা ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব দিতে কেন্দ্রে জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ জেলে রয়েছেন। এটিও নতুন কমিটি না হওয়ার বড় কারণ। জেলা ছাত্রদলের পদ থেকে অব্যাহতি না দেওয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল দুই সংগঠনেরই দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। রাজশাহী জেলা ছাত্রদলের আওতায় রয়েছে ২৩টি ইউনিট কমিটি। এর মধ্যে ১৪টি পৌর ইউনিট ও ৯টি উপজেলা ইউনিট। এ ছাড়া রাজনীতির অনুমোদন রয়েছে– মহানগরের বাইরের এমন সরকারি কলেজগুলো জেলা ছাত্রদলের ইউনিটভুক্ত। সাবেক সভাপতি টুটুল ও সম্পাদক জনির সময় ২৩ ইউনিটে দুই বছর মেয়াদি কমিটি দেওয়া হয়। সেসব কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই শেষ।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আরফিন কনক বলেন, আমি স্বেচ্ছাসেবক দলের সাইনিং পাওয়ারে নেই। ছাত্রদলে সময় দিচ্ছি বেশি। পাশাপাশি তরুণদের গড়ে তুলছি। আগামীতে যারা দলের দায়িত্ব পেতে পারে– এমন নেতাদের দিয়ে নানা কর্মসূচি করাচ্ছি। এতে তাদের মধ্যে নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে।
আহ্বায়ক কমিটিতেই রাবি ছাত্রদলের দুই বছর পার
২০২১ সালের ১৬ জুন ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের সুলতান আহমেদ রাহীকে আহ্বায়ক ও ফাইন্যান্স বিভাগের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের শামসুদ্দীন চৌধুরী সানিনকে সদস্য সচিব করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। ৩১ সদস্যের এই কমিটি এখনও বহাল রয়েছে। তবে দুই বছরের বেশি সময় পার হলেও আহ্বায়ক কমিটি হল, বিভাগ কিংবা অনুষদ কমিটি দিতে পারেনি।
অভ্যন্তরীণ কোন্দলও রয়েছে দলটিতে। যদিও শাখা ছাত্রদলের দায়িত্বপ্রাপ্তরা বলছেন, সংগঠনে এখন কোন্দল নেই। সবাই কাঁধে কাঁধ রেখে সরকার পতনের আন্দোলন করছেন। গত বছরের ১৩ আগস্ট শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সানিনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ দেন কমিটির এক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাত যুগ্ম আহ্বায়কসহ ১৭ জন। সানিন স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ করা হয়। যদিও অভিযোগের ‘সত্যতা’ না পাওয়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল পরে অভিযোগ থেকে সানিনকে অব্যাহতি দেয়। গত ২৯ ডিসেম্বর মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে রাবি শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সামসুদ্দীন চৌধুরীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটে। লাঞ্ছনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসান, আহসান হাবীবসহ আরও বেশ কয়েকজন সম্পৃক্ত ছিলেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১৮ মার্চ মেহেদী ও হাবীবকে শাখা ছাত্রদল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পরে গত ২৪ জুলাই আবার এ দুই নেতার বহিষ্কারাদেশ তুলে নেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
এ ব্যাপারে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ‘সাংগঠনিক কার্যক্রম ভালোই চলছে। সরকার পতনের আন্দোলনসহ কেন্দ্র ঘোষিত সব কর্মসূচি আমরা পালন করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কার্যক্রমেও অংশ নিচ্ছে শাখা ছাত্রদল।’ তিনি বলেন, আমাদের কমিটি যখন দেয়, তখন কোনো সময় উল্লেখ ছিল না। বলা হয়েছিল, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে। সরকার পতনের আন্দোলন, সরকারের হামলা-মামলার কারণে কেন্দ্রীয় নেতারা সময় বের করতে পারেননি। আমরাও প্রতিনিয়ত আন্দোলনের মধ্যে থাকায় কমিটি বর্ধিত করা সম্ভব হয়নি। রাবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুদ্দীন চৌধুরী সানিন বলেন, প্রতিকূল পরিবেশেও সাংগঠনিক কার্যক্রম ভালোই চলছে। যাকে-তাকে পদ দিলেই তো সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরালো হয় না। সে জন্য পরীক্ষিত ও যোগ্য নেতৃত্বের খোঁজে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিট কমিটি এখনও দিইনি। সংগঠনের অন্তর্কোন্দলের বিষয়ে শামসুদ্দীন চৌধুরী সানিন বলেন, সংগঠনে কোনো কোন্দল নেই। কয়েকজন আমার নামে কেন্দ্রে অভিযোগ দিয়েছিল। সেসবের কোনো প্রমাণ মেলেনি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি জবাব দেননি। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এক দফা আন্দোলনে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল লাগাতার কর্মসূচি পালন করছে। কোথায় কোথায় কমিটি নিয়ে সমস্যা আছে, সেগুলো কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক অবগত আছেন। রাজশাহীতে কবে নাগাদ নতুন কমিটি হচ্ছে, সেটি সভাপতি-সম্পাদকই বলতে পারবেন।
|
https://samakal.com/whole-country/article/191726/%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%87-%E0%A6%97%E0%A7%8B%E0%A6%B2%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A7%80-%E0%A6%9B%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A6%E0%A6%B2
|
8/23/2023
|
Samakal
|
Neutral
|
151
|
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সংঘর্ষ
|
রাবি ছাত্রদলের দুই নেতাকে বহিষ্কার
|
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব সামসুদ্দীন চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনায় ওই শাখার দুই নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। শনিবার (১৮ মার্চ) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক শাহরিয়ার হক মজুমদার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃত দুই নেতা হলেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মেহেদী হাসান ও আহসান হাবীব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ‘গত ২৯ ডিসেম্বর শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুদ্দিন চৌধুরী সানিনকে বহিষ্কৃতরা মারধর করেন। ঘটনাটি আমরা কেন্দ্রকে জানাই। পরে কেন্দ্র থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
উল্লেখ্য, ছাত্রদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গত ২৯ ডিসেম্বর মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভা করছিল ছাত্রদল। সভার একপর্যায়ে ২০-২৫ জন রাবির শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব সামসুদ্দীনের ওপর হামলা করা হয়। এই ঘটনায় শনিবার রাবি শাখার ওই দুই নেতাকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
Google News Logo
|
https://www.banglatribune.com/others/790500/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF-%E0%A6%9B%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A6%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%87-%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0
|
3/19/2023
|
Bangla Tribune
|
Neutral
|
152
|
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সংঘর্ষ
|
রাবিতে ক্যান্টিনে বসাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগে দুই পক্ষের সংঘর্ষ
|
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) হলের ক্যান্টিনে দুপুরের খাবার খেতে বসাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক কর্যনির্বাহী সদস্য সাকিবুল হাসান বাকিকে মারধর করে ক্যাম্পাস ছাড়া করেছে শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। সংঘর্ষে জড়িত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা, আশিকুর রহমান অপু, সাংগঠনিক সম্পাদক কাব্বিরুজ্জামান রুহুল, জাহিদ হাসান সোহাগ, হল ছাত্রলীগের নেতা আকাশ, ডালিম মির্জা, লাবিব, মারুফ, টম, আজমি, রাফি, ইসমাইল প্রমুখ। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিবের অনুসারী।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাত ঘটে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলের ক্যান্টিনে বসাকে কেন্দ্র করে। শুক্রবার দুপুরে মতিহার হলের ক্যান্টিনে খাওয়ার জন্য একটি সিটে বসেন জাহিদ হাসান নামে এক শিক্ষার্থী। কিছুক্ষণ পর শান্ত নামে এক ছেলে এসে জাহিদকে উঠতে বলেন এবং তিনি আগে ওই সিটে আগে বসেছিলেন বলে দাবি করেন। জাহিদ তাকে অন্য সিটে বসতে বললে তর্কাতর্কি শুরু হয়। পরে জাহিদ তার বন্ধু রিফাতের কক্ষে অবস্থান নিলে শান্ত কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীকে নিয়ে এসে কক্ষের দরজায় লাথি মারতে থাকে। বিষয়টি মীমাংসার কথা বলে আরও কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করে তাদের দুজনকে মারধর করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা ও তার অনুসারীরা।
মারধরের শিকার জাহিদ ও রিফাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সাকিবুল হাসান বাকির অনুসারী। অপরদিকে শান্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিবের অনুসারী।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পাশে ভাস্কর সাহাকে মারধর করেন সাকিবুল ইসলাম বাকির অনুসারীরা। মারধর করে ক্যাম্পাস ছাড়েন বাকির অনুসারীরা। পরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘটনাস্থলে আসেন এবং পরবর্তীতে বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীদের মতিহার হলে নিয়ে আলোচনায় বসেন। আলোচনা শেষে তারা হল ত্যাগ করেন। তবে মিটিংয়ে কি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন সে বিষয়ে সাংবাদিকদের কিছুই জানাননি সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক।
এই ঘটনা শোনার পর বিকেল ৫টার দিকে পরিবহণ মার্কেটে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাকিবুল হাসান বাকি। এর কিছুক্ষণ পরেই অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা পরিবহনে অবস্থান নেন এবং বাকিকে এলোপাথারি মারধর শুরু করেন। এতে আহত হয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা।
এ বিষয়ে মারধরের শিকার সাকিবুল হাসান বাকি বলেন, ‘হলে আমার অনুসারীদের মারধর করা হয়েছে এমন কথা শুনে আমি ক্যাম্পাসের পরিবহণ মার্কেটে আসি। এসময় আমার কয়েকজন অনুসারীও সঙ্গে ছিল। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমিসহ আমার ৮-১০জন কর্মী আহত হই।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিবকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘আমরা ছাত্রলীগের দুই পক্ষকেই ডেকে বিষয়টি শুনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় ক্যাম্পাসে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা টহল দিচ্ছে।
|
https://www.deshrupantor.com/469877/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%9B%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B2%E0%A7%80%E0%A6%97%E0%A7%87-%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%87
|
11/24/2023
|
Desh Rupantor
|
Neutral
|
153
|
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সংঘর্ষ
|
খুড়িয়ে চলছে রাবি ছাত্রদল, ক্যাম্পাসে নেই দৃশ্যমান কার্যক্রম!
|
বিএনপির রাজপথের শক্তির উৎস বলা হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে। বিভিন্ন সময় আন্দোলন-সংগ্রামে সেটা প্রমাণও করেছে সংগঠনটি। তবে গত কয়েক বছর ধরে ছাত্র সংগঠনটিকে সেই ভূমিকায় দেখা যায়নি। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাদের অবস্থান এখন তেমন নেই বললেই চলে। একসময়ের জাতীয়তাবাদী শক্তির দুর্গ হিসেবে খ্যাত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও গত কয়েক বছর দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম নেই সংগঠনটির।
এর কারণ হিসেবে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের মারমুখী আচরণ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ, সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং দলীয় অন্তঃকোন্দলকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। এমনকি গত ৭ বছরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি ছাত্রদল। দুই বছর ধরে আহ্বায়ক কমিটিতে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে তাদের দলীয় কার্যক্রম।
মাঝেমধ্যে কিছু দলীয় প্রোগ্রাম ক্যাম্পাস সংলগ্ন এবং এর আশেপাশে পালন করতে দেখা গেছে সংগঠনটিকে। তবে ক্যাম্পাসে দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি দীর্ঘদিন ধরে। সংগঠনটিন দায়িত্বশীলদের অভিযোগ নিরাপত্তাহীনতা ও ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের হামলার কারণে ক্যাম্পাসে প্রোগ্রাম করতে পারেন তারা।
আরো পড়ুন: ঢাবির কলা অনুষদে ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থীই ফেল
জানা যায়, মেয়াদোত্তীর্ণের দীর্ঘ ৫ বছর পর ২০২১ সালের ১৬ জুন রাবি শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। দুই বছর মেয়াদি রাবি ছাত্রদলের ওই কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সুলতান আহমেদ রাহী এবং সদস্য সচিব ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুদ্দিন চৌধুরী সানিন। সম্মেলন ছাড়াই কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট ওই কমিটি ঘোষণা করা হয়।
তবে এরপরও সক্রিয় হতে পারেনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদল। আহ্বায়ক কমিটির মধ্যেও তিনজন ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃত হয়েছেন দুইজন ও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে একজনকে। সে হিসেবে বর্তমান কমিটিতে ২৫ জন সদস্য আছে। এছাড়া জানা গেছে, দলীয় অন্তঃকোন্দলে জর্জরিত হয়ে পড়েছে ছাত্র সংগঠনটি। তবে বৃহৎ সংগঠন হওয়ায় এমন অন্তঃকোন্দল আছে বলে জানান দলটির এক সিনিয়র নেতা।
এদিকে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের দুই মাস না যেতেই ১৩ আগস্ট সদস্য সচিব সানিনের বিরুদ্ধে ‘স্বেচ্ছাচারিতামূলক' আচরণের অভিযোগ তুলে কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ দেন সংগঠনটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ আলীসহ ১৭ নেতাকর্মী। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ ছিল বহিরাগত মাদকসেবীদের ইন্ধন জোগানো, নিজ ইউনিটের নেতাকর্মীদের হেনস্তা, দলীয় ফোরামে মনগড়া তথ্য দেওয়া, ফোনে হুমকি-ধামকি ও দলীয় প্রটোকল ভেঙে বহিরাগতদের লালন ইত্যাদি।
এছাড়া, গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে রাবি শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব সামসুদ্দীন চৌধুরীর ওপর মারধরের অভিযোগ ওঠে একই দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মেহেদী হাসান ও আহসান হাবীবের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের সাময়িক বহিষ্কার করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
আরো পড়ুন: ঢাবির কলা ইউনিটের ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১১১৬৯
দলের একটি সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ২১ অক্টোবর রাতে ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা গোপনে ব্যানার লাগাতে এলে তাদের ধাওয়া দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এরপর প্রকাশ্যে মিছিল মিটিং করা কমে যায় তাদের। দু'একটি ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে আর কোনো কর্মসূচিই পালন করেনি তারা। গত বছরের ১ আগস্ট ক্যাম্পাসের বাইরে বিক্ষোভ সমাবেশ ছিল। এক কেন্দ্রীয় নেতার গ্রেফতারের প্রতিবাদে ২৮ আগস্ট কাজলা গেটের কাছে বিক্ষোভ মিছিল হয় দলটির পক্ষ থেকে। লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে ২ আগস্ট বিক্ষোভ করে দলটি। সেটাও ছিল ক্যাম্পাসের বাইরে। সবশেষ চলতি বছরের ২ মার্চে বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ-এর মুক্তির দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে সমাবেশ করেছিল রাবি শাখা ছাত্রদল। এরপর সাম্প্রতিক সময়ে বড় কোনো কর্মসূচি দিতে পারেনি সংগঠনটি।
সংগঠনটির সদস্য (দফতর) নাফিউল ইসলাম জীবন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, দীর্ঘদিন জাতীয়তাবাদী দল ক্ষমতায় না থাকায় ছাত্রদলের অবস্থা আগের মতো নেই। ফলে দীর্ঘ পাঁচ বছর মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি দলের যখন সংকটময় মুহূর্ত থাকে তখন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তাছাড়া সবাই তাদের ভবিষ্যৎ চাকরি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় অনেকে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। তবে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আমাদের সংগঠন ঠিকই আগের জায়গায় ফিরে যাবে। আমাদের কোনো কর্মী সংকট নেই। মূলত যে দল ক্ষমতায় থাকে সেই দলের ছাত্র সংগঠনগুলো সক্রিয় থাকে। এটাই স্বাভাবিক। এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলে ছাত্রলীগ সক্রিয় আছে।
ক্যাম্পাসের কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের কার্যক্রম ঠিকই আছে। তবে আগের মতো বেশি সক্রিয় না থাকার কারণ হলো ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সহাবস্থান নেই। রাজনৈতিক সহাবস্থান না থাকলে বিরোধী দলীয় ছাত্র সংগঠন হিসেবে কীভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করব? যেকোনো কার্যক্রমে ছাত্রলীগের মারকুটে রাজনীতি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অসহযোগিতাও আরেকটি কারণ। বর্তমান প্রশাসন আওয়ামী লীগের একটি অঙ্গসংগঠন হিসেবে কাজ করছে। শুধু ছাত্রলীগের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়ে বাকি সকল সংগঠনকে অসহযোগিতা করছে। নতুন কমিটির পক্ষ থেকে ভিসি স্যারের সাথে আমরা সাক্ষাৎ করতে চাইলে স্যার আমাদের সুযোগ দেননি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের পদধারী কোনো নেতা হলে থাকতে পারেন না। তবে কর্মীরা হলে আছে। আমাদের জীবনের নিরাপত্তা প্রশাসন দিতে পারে না। হলে থাকলে ছাত্রলীগ মারবে না এর কোনো নিশ্চয়তা নাই। নিরাপত্তাহীনভাবে আমরা ক্লাসে যাই। এত কিছুর পরেও আমরা ক্যাম্পাস ছাড়ি নাই।
আরো পড়ুন: বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির শর্ত শিথিল
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল একটি গতিশীল ছাত্র সংগঠন। ছাত্রদলের নিজস্ব স্বকীয়তা ও আদর্শকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে দলটি। বর্তমানে দেশে এক বিরূপ রাজনীতি বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে, বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ক্যাম্পাসগুলো সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মী দ্বারা জিম্মি করে রাখা হয়েছে। হলে হলে শিক্ষার্থী নির্যাতন চলছে৷ তবুও হল প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করছে। শিক্ষার্থীদের হলে থাকার জন্য ছাত্রলীগকে চাঁদা দিতে হয়৷ আবার অনেকে চাঁদা দিয়েও হলে সিট পাচ্ছে না৷ হলের সকল কর্তৃত্ব ছাত্রলীগের হাতে৷ প্রশাসনের নীরব ভূমিকা, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন। আমাদের নেতা-কর্মীদের উপর একাধিক মামলায় জর্জরিত। এজন্য আমরা হলে থাকতে পারি না।
ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে প্রোগ্রাম করতে না পারার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু ধারায় গণতান্ত্রিক উপায়ে সকল দল ও মতের শিক্ষার্থীরা অবস্থান করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেরকম পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন৷ ফলে আমরা ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে মিটিং মিছিল করা কিছুটা কমিয়ে দিয়েছি। তবে আমাদের কার্যক্রম ঠিকই চলমান রয়েছে।
দলীয় অন্তঃকোন্দল বিষয়ে তিনি বলেন, ছাত্রদল একটি বড় রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠন। বড় দল হওয়ায় এখানে যেমন অসংখ্য নেতাকর্মী রয়েছে, তেমনি নেতাকর্মীদের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতাও রয়েছে৷ আমি এখানে গ্রুপিং দেখি না। দেখি রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা।
|
https://thedailycampus.com/universities/117666/%E0%A6%96%E0%A7%81%E0%A7%9C%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%9A%E0%A6%B2%E0%A6%9B%E0%A7%87-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF-%E0%A6%9B%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A6%E0%A6%B2-%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%87-%E0%A6%A6%E0%A7%83%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AE-
|
6/7/2023
|
Daily Campus
|
Govt critique
|
154
|
বাজেটে ভ্যাট বাড়ানো
|
দাম বাড়বে যেসব পণ্যের
|
উন্নয়ন অগ্রযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ শিরোনামে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য আজ ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদে এই বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী। এটি স্বাধীন বাংলাদেশের ৫২তম বাজেট। আর আওয়ামী লীগ সরকারের ২৪তম বাজেট। অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের টানা পঞ্চম বাজেট। নতুন অর্থবছরের বাজেট দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক কর অথবা ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন। ফলে লেখার কলম, ফেসিয়াল টিস্যু, টয়লেট টিস্যু, সিমেন্ট, কাজু বাদাম, বাসমতি চাল, চশমা, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, এলপি গ্যাস সিলিন্ডার, প্লাস্টিকের পাত্র, অ্যালুমিনিয়ামের তৈজষপত্র, সিগারেট, জর্দা-গুল, খেজুর, বিদেশি টাইলস, মোবাইল ফোনসহ বেশকিছু নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম আগামীতে বাড়তে পারে। কলম উৎপাদনে বর্তমানে ভ্যাট অব্যাহতি ছিল, সেখানে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসানো হয়েছে। এতে শিক্ষা উপকরণ কলমের দাম বাড়তে পারে।
টিস্যু পেপার
কিচেন টাওয়াল, টয়লেট টিস্যু, ন্যাপকিন টিস্যু, ফেসিয়াল টিস্যু/পকেট টিস্যু ও পেপার টাওয়াল উৎপাদনে ৫ শতাংশ ভ্যাট আছে, এটি বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে টিস্যু পেপারের দাম বাড়তে পারে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিলাসবহুল গাড়ি
২০০০ সিসির ঊর্ধ্বের গাড়ি আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ব্যাপকহারে বাড়ানো হয়েছে। তাই উচ্চ সিসির গাড়ি কেনার খরচ বাড়বে।
বাসমতি চাল
বিজ্ঞাপন
নন ফর্টিফাইড বাসমতি চাল আমদানিতে ভ্যাট বসানো হয়েছে। এতে চালের দাম বাড়তে পারে।
মোবাইল ফোন
স্থানীয় উৎপাদন ও সংযোজন পর্যায়ে মোবাইল ফোনের ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। তাই মোবাইল ফোনের দাম বাড়তে পারে।
বিজ্ঞাপন
এলপি গ্যাস
উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সিলিন্ডার বানানোর কাজে ব্যবহৃত স্টিল ও ওয়েল্ডিং ওয়্যার আমদানিতে শুল্ক আরোপ হয়েছে। এ কারণে এলপি গ্যাসের দাম বাড়তে পারে।
চশমার ফ্রেম
বিজ্ঞাপন
চশমার ফ্রেম ও সানগ্লাস আমদানিতে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এছাড়াও উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হচ্ছে।
সাইকেল
সাইকেলের যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। তাই সাইকেলের দাম বাড়তে পারে।
বিজ্ঞাপন
তৈষজপত্র
বাসা-বাড়িতে ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈষজপত্র উৎপাদনে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। এতে তৈষজপত্রের দাম বাড়তে পারে।
মাইক্রোওয়েভ ওভেন
শুল্ক ফাঁকি রোধে মাইক্রোওয়েভ ওভেন আমদানির শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এতে বিদেশি ওভেনের দাম বাড়তে পারে।
খেজুর
শুল্ক ফাঁকি রোধে তাজা ও শুকনা খেজুর আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্কের পাশাপাশি ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এতে খেজুরের দাম বাড়ার সম্ভাবনা আছে।
কাজু বাদাম
স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন বাড়াতে কাজু বাদাম আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। বিধায় আমদানি করা কাজু বাদামের দাম বাড়তে পারে। এছাড়া ফল-বাদাম আমদানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
সিগারেট
এবারও সিগারেটের মূল্যস্তর বাড়ানো হয়েছে। বিধায় সব ধরনের সিগারেটের দাম বাড়তে পারে।
সিমেন্ট
সিমেন্টের প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানিতে বর্তমানে টনপ্রতি ৫০০ টাকা সুনির্দিষ্ট শুল্ক আছে। এটি বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা হয়েছে বিধায় সিমেন্টের দাম বাড়তে পারে।
জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন
Jagonews24 Google News Channel
এছাড়াও দাম বাড়তে পারে শিরিষ কাগজ, আঠা বা গ্লু, মাছের টুকরা, চিজ ও দই, চা-কফিমেট, গ্যাস লাইটারের।
|
https://www.jagonews24.com/economy/news/858756
|
6/1/2023
|
Jago News
|
Neutral
|
155
|
বাজেটে ভ্যাট বাড়ানো
|
করের বোঝা না চাপিয়ে বাজেটে যেভাবে আয়কর বাড়ানো যায়
|
এবারের বাজেট আমাদের দেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সামনে নির্বাচন, এদিকে আইএমএফের প্রস্তাবনা অনুসারে আমাদের আয়কর সংগ্রহ বাড়াতেই হবে। কর জিডিপি (মোট জাতীয় উৎপাদন) অনুপাতে বাংলাদেশ অনেক নিচের দিকের একটি দেশ। এ জন্য মানুষের মধ্যে একটা ভীতি কাজ করছে, আবার কী বোঝা এসে পড়ে? জিনিসপত্রের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত বোঝা ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হবে। এ দেশে যে কর দেয়, তার ওপরই দিন দিন বোঝা বাড়ে। আর অন্যরা সব সময় সুবিধাভোগী।
সাধারণ মানুষের চাওয়া এখন মূল্যস্ফীতির নিয়ন্ত্রণ ও জনবান্ধব একটা বাজেট। যে উচ্চ জিডিপি মধ্য-নিম্নআয়ের সুবিধা দিতে পারে না, সে জিডিপি কম থাকলেও আসলে আমাদের খুব বেশি ক্ষতি নেই, বরং করের বোঝা না বাড়িয়ে, খাত বাড়ানো, আর যারা কর ফাঁকি দেয় তাদের ধরাই বাঞ্ছনীয়।
সরকার যাতে তার আয়সীমা বাড়াতে পারে এবং জনগণের জন্যও বাড়তি বোঝা না হয়, তার জন্য কিছু প্রস্তাব রইল।
ব্যক্তি শ্রেণির আয়কর-সংক্রান্ত প্রস্তাব
ক. ব্যক্তি শ্রেণির আয়কর সীমা পুনর্নির্ধারণ করা এখন সময়ের দাবি এবং নিম্নসীমা অন্তত ৫ লাখ করতে হবে। এত কম নিম্নসীমা আমাদের আশপাশের কোনো দেশে নেই।
খ. বর্তমানে প্রদত্ত হার অনুসারে কার ও নেট সম্পদ নির্দিষ্ট সীমা ছড়িয়ে গেলে সারচার্জ দেওয়া লাগে, যা ট্যাক্স আইনের নীতির পরিপন্থী। একজন ট্যাক্স দিয়েই সম্পত্তি বানিয়েছে, যেখানে সারচার্জ ডাবল ট্যাক্সেশনের অনুরূপ এবং সঞ্চয়কে নিরুৎসাহী করে।
গ. ব্যক্তির নিম্ন কর হার যদি উৎসে কর্তন করা করের থেকে কম হয়, তাহলে সেই টাকা ফেরত দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া উচিত। যা আমাদের পাশের দেশ ভারতেও আছে।
ঘ. আয়কর বিধির ১৯৮৪ ৩৩ জি (১) (খ) অনুসারে অফিস ইচ্ছা করলেও কোনো কর্মচারীকে অবকাশযাপনের জন্য দুই বছরে একবারের বেশি বিদেশ যাওয়ার সুযোগ দিতে পারে না। এর ফলে কোম্পানি ইচ্ছা করলেও কর্মীদের জীবনযাত্রার উন্নয়নে সাহায্য করতে পারে না। তাই এ ধারা বাতিল করা হোক।
ঙ. কর্মীদের চিকিৎসা ব্যয়ের সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া আছে, যা বাতিল করে প্রকৃত ব্যয় করে দেওয়া উচিত। এর ফলে অনেক নিম্ন আয়ের কর্মীদের সুবিধা হবে।
চ. বর্তমান আইনের ষষ্ঠ তফসিলে প্যারা ২০ অনুসারে কর্মীদের রিটায়ারমেন্ট বেনিফিট একটা নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি হলে ট্যাক্স যোগ্য। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেনশন আয় করমুক্ত। বেসরকারি-কর্মচারীদেরও তাই অনুরূপ হওয়া উচিত। এক দেশে দুই রকম আইন উচিত নয়।
জ. আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ ধারা ৩০ (ই) এবং ২ (৪৫) এর মাধ্যমে বেতনের পারকুইজিট সীমা ১০ লাখ করে দেওয়া হয়েছে এবং পারকুইজিটের মধ্যে বাসাভাড়া, ছুটি অবসায়ন ভাতা, যাতায়াত ভাতা ইত্যাদি ভাতাকে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে দ্বৈত করারোপ করা হয়েছে। কারণ, ব্যক্তি খাতে কর দেওয়ার পরও কোম্পানিরও কর দেওয়া লাগে, যা আয়কর নীতির পরিপন্থী। এই ধারা বাতিল করে দেওয়া উচিত।
আইনে অসামঞ্জস্য
ক. আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ ধারা ৩০ (এইচ) এ রয়্যালটি, কারিগরি জ্ঞান বা অনুরূপ ব্যয়ের সীমা নেট মুনাফার ১০ %। কিন্তু বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিময় আইন এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্দেশিকাতে মোট টার্নওভারের ৬% আছে। বেশির ভাগ দেশেই এ রকম কোনো উচ্চসীমা নেই আর আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় আমাদের প্রতিনিয়ত বাইরের অভিজ্ঞদের সাহায্য দরকার। তাই এই অসামঞ্জস্য দূর করে টার্নওভারের ৬ শতাংশ করে দেওয়া উচিত।
খ. বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিসিপেশন ফান্ড, প্রভিডেন্ট ফান্ডে রক্ষিত টাকা ব্যবহারের বিভিন্ন পর্যায়ে টিডিএস দিতে হয় এবং এই ফান্ডে রক্ষিত টাকার সুদের ওপরও ট্যাক্স কাটা হয়। কিন্তু শ্রম আইন ২০০৬ অনুসারে এই আয় আয়করমুক্ত। তাই শ্রম আইন অনুসারে, এসব ধারার সমন্বয় করা হলে কর্মীদের উপকার হয়।
উৎসে ট্যাক্স কর্তনের (টিডিএস) নিয়ম সমন্বয়
ক. আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ ধারা ৮২ (সি) এবং ৫৬ (১) অনুসারে মোট প্রাপ্তির ওপর শতকরা ০.৬ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত টিডিএস কাটা হয়, যা আয়কর আইনের মূল নীতির বিপক্ষে। আয়কর কাটতে হবে মুনাফার ওপর, কিন্তু এখানে আয়ের ওপর কাটা হচ্ছে। তাই এই টিডিএস বাদ দিয়ে আইসিএবি প্রণীত ডিভিএস (ডকুমেন্টস ভ্যারিফিকেশন সিস্টেম) আয়-ব্যয় শনাক্ত করে যৌক্তিক টিডিএস কাটা উচিত।
খ. আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ ধারা ৮২ সি (৬) ধারা অনুসারে এক বছরের প্রদেয় ট্যাক্স পরের বছরে সমন্বয়ের সুযোগ নেই। কিন্তু অনেক কোম্পানি ব্যবসাতে লস খেতে পারে। তাই তার প্রদেয় ন্যূনতম ট্যাক্স বা টিডিএস থাকবে তা পরের বছর সমন্বয়ের সুযোগ থাকলে অনেকেই আয়কর দিতে উৎসাহী হবে। কর প্রদান সহজীকরণের টিডিএসকে ন্যূনতম কর হিসেবে বিবেচনা করার বিধান তুলে দেওয়া উচিত।
আধুনিকায়ন
১. ধারা ৫৩ এফ অনুসারে ব্যাংকের ইন্টারেস্ট কাটার পর আবার সার্টিফিকেট নেওয়া হয়, যা তুলে দিয়ে ব্যাংক স্টেটমেন্টকেই সার্টিফিকেট হিসেবে গ্রহণের অনুরোধ করা হচ্ছে। অতিরিক্ত সার্টিফিকেটের জন্য অতিরিক্ত অর্থ আর সময় ব্যয় হয়, যা কমলে সবার জন্যই উপকার হয়।
২. বর্তমানে আর্থিক খাতে সংরক্ষিত তথ্যাদি নিয়ন্ত্রণের কোনো আইন নেই। কিন্তু এখন সব ব্যাংকই যেহেতু অনলাইন হয়ে গেছে এবং তা কোম্পানির ই-টিন দিয়ে যুক্ত, তা সরকার দ্বারা মনিটর করলে করদাতার আয়ে স্বচ্ছতা আসে এবং কর ফাঁকি দেওয়াও কম হয়।
৩. বাংলাদেশের ট্যাক্স, ভ্যাট এবং কাস্টমস অথরিটির সঙ্গে সমন্বয় অতীব জরুরি। না হলে সরকার তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে যেতে পারবে না এবং অনেকের ওপর বাড়তি বোঝা হবে না।
৪. বাংলাদেশে একটা কোম্পানি এককালীন ৫ লাখ এবং বাৎসরিক ৩৬ লাখ টাকা নগদ লেনদেন করতে পারে। এটা আসলে যত কমিয়ে দেওয়া যায়, তা সবার জন্যই ভালো। কিন্তু বাংলাদেশের বিশালসংখ্যক ব্যবসা অপ্রতিষ্ঠানিক। তাদের যদি একটি কাঠামোর মধ্যে না নিয়ে আসা যায়, তাহলে নগদ লেনদেন কমানো সম্ভব নয়। তাই অপ্রতিষ্ঠানিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে কাঠামোর মধ্যে নিয়ে এসে পর্যায়ক্রমে কমিয়ে নিয়ে আসতে হবেই, না হলে সরকারকে অনেক ট্যাক্স-ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া সম্ভব। তার আগপর্যন্ত এই লিমিট আর একটু বাড়িয়ে দিলে ভালো হয়।
৫. অর্থ আইন অনুসারে কোনো সময়সীমা উল্লেখ না থাকলে মাঠপর্যায়ে যেকোনো পরিবর্তন রেট্রোস্পেকটিভলি বা গত বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হিসেবে ধরা হয়, যা বাতিল করা উচিত। কারণ, এজিএমে এসব হিসাব-নিকাশ করে ঘোষণা দিয়ে দেওয়া হয়, এবং সেই অনুযায়ী বছরের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। তাই সব পরিবর্তন দুরূহ। এ রকম আইন অন্য দেশে নজিরবিহীন। তাই ভবিষ্যতে যে পরিবর্তনই হোক, তা যেন পরবর্তী বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়।
৬. বর্তমানে যেকোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালে যেতে হলে একটা বড় ট্যাক্সের অংশ জমা দিতে হয়। এটা কমানো উচিত। আইনের সুবিধা পেতে বাধা প্রদান অনুচিত কাজ।
৭. সম্পত্তি নিবন্ধনে সরকারি হিসাব বাস্তবতার থেকে অনেক কম। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন ফি অনেক বেশি। এদিকে সরকারের নিবন্ধন হার কম হওয়াতে অনেক টাকা কালো হয়ে যায়। তাই সরকার যদি এই হার পুনর্নির্ধারণ করে, ফি কমিয়ে দেয়, রাজস্ব আয় আরও অনেক বাড়বে।
৮. যেসব প্রতিষ্ঠান নিয়ম মেনে কর প্রদান করে তাদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করলে অন্যরা ও উৎসাহী হতো।
৯. খাদ্য শিল্প কর অবকাশ সুবিধার বাইরে। কিন্তু এখনকার উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে তাদের কর অবকাশ দেওয়া হলে কিছু খাদ্যপণ্যের দাম অন্তত কমত।
১০. বাংলাদেশে উৎপাদনকারী ব্যতীত অন্য কারও সরবরাহকালে ট্যাক্সের সঙ্গে বিক্রয়কালীন ট্যাক্স সমন্বয়ের সুযোগ নেই, যা পাশের দেশ ভারতে আছে। যেমন একজন ব্যবসায়ী ১০০ টাকা দিয়ে একটি পণ্য কিনেছে এবং কেনার সময় ৫ টাকা ট্যাক্স দিয়েছে। ব্যবসায়ী যখন এই পণ্য ১৫০ টাকায় বিক্রি করবে, তখন তাকে ১৫০ টাকার ওপর উৎসে কর দিতে হবে। পণ্য কেনার সময় প্রদেয় কর পণ্য বিক্রির সময়ে প্রদেয় করের সঙ্গে সমন্বয়ের কোনো সুযোগ নেই। ফলে দ্বৈত কর হয়ে যায়। বাংলাদেশে উৎপাদনকারী হতে ট্রেডারের সংখ্যা বেশি এবং এই নিয়মের জন্য জিনিসপত্রের দাম বেশি পরে।
১১. ‘র’ ম্যাটেরিয়াল আমদানিকালে উচ্চ করের জন্য, পরে বিক্রয়কালে ভোক্তাপর্যায়ে দাম অনেক বেশি হয়ে যায়। ফলাফল ব্যবসাতে কাঙ্ক্ষিত বিক্রয় হয় না। সরকার ও কাঙ্ক্ষিত ট্যাক্স-ভ্যাট পেতে ব্যর্থ হয়। এই ব্যাপারের সমন্বয় জরুরি।
আয়কর আইন অনেক বড় ব্যাপার। বিভিন্ন চেম্বার থেকে ইতিমধ্যেই সরকারকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সামনে আরও হবে। সেই সবের আলোকেই আমি কিছু কিছু প্রস্তাব দিয়ে গেলাম, সরকার যদি বাস্তবায়ন করে, সরকারের আয় কমবে না, বরং বাড়বেই এবং মানুষের ওপরও বাড়তি বোঝা হবে না।
|
https://www.prothomalo.com/opinion/column/7jbfl3ejb4
|
4/26/2023
|
Prothom Alo
|
Neutral
|
156
|
বাজেটে ভ্যাট বাড়ানো
|
বাজেটে যেসব পণ্যের দাম বাড়ছে ও কমছে
|
প্রতি বছর নতুন বাজেট ঘোষণার পর দেখা যায় বেশ কিছু পণ্যের দামের পরিবর্তন ঘটে। কিছু পণ্যে শুল্ক ও কর প্রত্যাহার করে সরকার, ফলে সাধারণত সেসব পণ্যের দাম কমতে দেখা যায়। আবার কিছু পণ্যে সরকার নতুন করে কর আরোপ করে, ফলে অনেক পণ্যেরই দাম বেড়ে যায়।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট ঘিরেও সাধারণ মানুষের আগ্রহ হচ্ছে - কোন জিনিসের দাম বাড়তে বা কমতে পারে। এতে দেখা যায়, নতুন করে যতো পণ্যের দাম বাড়তে যাচ্ছে, সে তুলনায় দাম কমবে খুব অল্প পণ্যের।
দাম বাড়ছে যেসব পণ্যের
সিগারেট
প্রতিবছরই বাজেট ঘোষণার পর সবচেয়ে আলোচনা হয় সিগারেটের দাম বৃদ্ধি ঘিরে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে বিড়ির দাম গতবছরের ন্যায় অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া তামাকজাত পণ্যের মধ্যে জর্দা ও গুলের শুল্ক না বাড়লেও খুচরা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। মোবাইল ফোন
নতুন অর্থবছরে মোবাইল ফোনের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর বাড়ানো হয়েছে। যা এতদিন শূন্য শতাংশ ছিল সেখানে ২ শতাংশ, এরপর ৩ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ এবং ৫ শতাংশের পরিবর্তে ৭.৫ শতাংশ কর বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
এক্ষেত্রে সব ধরণের মোবাইল ফোনের দাম বেড়ে যেতে পারে।
এলপিজি সিলিন্ডার
গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম বাড়তে যাচ্ছে। অর্থমন্ত্রী বলেন স্থানীয়ভাবে সিলিন্ডার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে গত ১২ বছর ধরে শুল্ককর ছাড় সুবিধা ভোগ করে আসছে।
কিন্তু রাজস্ব আহরণের স্বার্থে সিলিন্ডার তৈরীর দুটি উপাদান স্টিল শিট এবং ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির উপর থেকে করছাড় সুবিধা তুলে নেয়া হয়েছে। একইসাথে এর উপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭.৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত সরকারের।
প্লাস্টিক পণ্য
প্লাস্টিকের তৈরী সকল ধরণের টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার, গৃহস্থালি সামগ্রীর মূসক হার ৫ শতাংশের পরিবর্তে ৭.৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী। তবে প্লাস্টিকের টিফিন বক্স ও পানির বোতলের কর অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
এছাড়া বাজেটে নতুন করে শুল্ককর যোগ হওয়ায় কলম, টিস্যু পেপার, বাসমতি চাল, খেজুর, ফেসওয়াশ, অ্যালুমিনিয়ামের তৈজসপত্র ও সেনিটারি সামগ্রীর দাম বাড়তে পারে।
দাম কমছে যেসব পণ্যের
বাজেট ঘোষণার পর দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমছে অল্প কিছু পণ্যের। সরকার যেসব পণ্যে শুল্ককর অব্যাহতির ঘোষণা দিয়েছে সেগুলোর উল্লেখযোগ্য কয়েকটিতে চোখ বুলানো যাক।
যেসব পণ্যের দাম কমছে
ছবির ক্যাপশান,যেসব পণ্যের দাম কমছে
কৃষিজ যন্ত্রপাতি
কৃষি কাজে ব্যবহৃত রাইস ট্রান্সপ্লান্টার, ড্রায়ার, পটেটো প্লান্টার ও সব রকম স্প্রেয়ার মেশিনে আগাম কর অব্যাহতির প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী।
ফলে এসব যন্ত্রপাতির দাম কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। একইসাথে সার, বীজ, কীটনাশক আমদানিতে শুল্কহার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
মিষ্টান্ন
কাঙ্খিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে মিষ্টান্ন সেবার মূসক হার অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে সরকার। এ খাতে ১৫শতাংশ ভ্যাট বরাদ্দ থাকলেও নতুন অর্থবছরে এটি ৭.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিভিন্ন ওষুধ
ম্যালেরিয়া ও যক্ষা নিরোধক ওষুধ এর উৎপাদন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি প্রদানের প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী। এছাড়া ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের ১০০টি কাঁচামাল ও ডায়াবেটিক ওষুধের ৩টি কাঁচামাল করছাড়ের আওতায় আনা হয়েছে।
হাতে তৈরি বিস্কুট ও কেক
হাতে তৈরি বিস্কুট ও কেকের ক্ষেত্রে কর অব্যাহতির সীমা বাড়ানো হয়েছে। ফলে এ দুটি পণ্যের দাম কমার আশা করা হচ্ছে।
অন্যান্য পণ্য
এছাড়া বাজেটে বিমানের ইঞ্জিন ও যন্ত্রাংশ, পশুখাদ্যের কাঁচামাল, অপটিক্যাল ফাইবার ও আমদানিকৃত কন্টেইনারে করছাড়ের প্রস্তাব করায় এসব পণ্যের দাম কমতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আর আগেই থেকেই করছাড়ের সুবিধা পেয়ে আসা কম্পিউটার, ল্যাপটপ, রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, স্যানিটারি ন্যাপকিন, ডায়াপার, ওয়াশিং মেশিন, ইত্যাদি পণ্যের শুল্ককর অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
যথারীতি বাজেট ঘোষণার কয়েক সপ্তাহ আগেই দাম বেড়ে যায় সিগারেটের। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার বাজেট বক্তৃতায় তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার কমানো এবং রাজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে বেশকিছু প্রস্তাব রাখেন।
সেক্ষেত্রে সিগারেটকে চারটি ভাগে ভাগ করে নিম্নস্তরের সিগারেটের প্যাকেটের সর্বনিম্ন মূল্য ৪৫ টাকা ও সম্পূরক শূল্ক ৫৮ শতাংশ ধার্যের প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া মধ্যম স্তর, উচ্চ স্তর ও অতি-উচ্চ স্তরের সিগারেটের উপর ৬৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসাথে দাম বেড়েছে ইলেকট্রনিক সিগারেটেরও।
|
https://www.bbc.com/bengali/articles/crgk5ngy49yo
|
6/1/2023
|
BBC Bangla
|
Neutral
|
157
|
বাজেটে ভ্যাট বাড়ানো
|
দাম বাড়বে ইট-সিমেন্টের
|
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ইটে ভ্যাট ও সিমেন্টে শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এতে দেশে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম বাড়বে। এতে দুটি পণ্যের দাম বাড়বে।
যন্ত্রের সাহায্য ছাড়া তৈরি সাধারণ ইটে ভ্যাট (নন-রিফ্লেকটরি বিল্ডিং ব্রিকস) প্রতি হাজারে ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ করা হয়েছে। তবে বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এটি ‘ফেসিংয়ে’ ব্যবহৃত ইটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
সিমেন্টের মূল কাঁচামাল ক্লিংকারের আমদানি শুল্ক প্রতি টনে ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০০ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের জন্য ক্লিংকারে শুল্ক একই হারে বেড়ে ৯৫০ টাকা হবে।
‘উন্নয়নের অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক বাজেটে এসব প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, বাজেট ঘোষণার দিনই সাধারণত আমদানি শুল্ক ও করসংক্রান্ত প্রস্তাব কার্যকর হয়।
|
https://www.jugantor.com/budget/681279
|
6/1/2023
|
Jugantor
|
Neutral
|
158
|
বাজেটে ভ্যাট বাড়ানো
|
২০২৩-২৪ বাজেট: চাপে পড়বে স্বল্প আয়ের মানুষ
|
আগামী দিনে কলম থেকে শুরু করে ফেসিয়াল টিস্যু, টয়লেট টিস্যু, সিমেন্ট, কাজু বাদাম, বাসমতি চাল, চশমা, মাইক্রোওয়েব ওভেন, এলপি গ্যাস সিলিন্ডার, প্লাস্টিকের পাত্র, অ্যালুমিনিয়ামের তৈজসপত্র, সিগারেট, জর্দা-গুল, খেজুর, বিদেশি টাইলস ও মোবাইল ফোনসহ বেশকিছু নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে।
শুধু নিত্যপণ্যই নয়, আগামীতে সংসার খরচের পাশাপাশি বাড়বে ভ্রমণ খরচও। কারণ, নতুন অর্থবছরের বাজেটে বিমানের টিকিটের ওপর ভ্রমণ কর বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আবার অধিক সংখ্যক মানুষকে করজালের আওতায় আনতে এবার শূন্য আয় (করযোগ্য সীমার নিচে বার্ষিক আয়) দেখিয়ে রিটার্ন জমার স্লিপ (প্রাপ্তি স্বীকারপত্র) নিতে ন্যূনতম দুই হাজার টাকা কর আরোপের পরিকল্পনা নিচ্ছে সরকার।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১ জুন নতুন অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার যে বাজেট দেবেন অর্থমন্ত্রী, সেখানে ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৬২ হাজার কোটি টাকা। এ ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আর সঞ্চয়পত্র থেকে নেওয়া হবে ২৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ৫১ হাজার কোটি টাকা। বাকি ১ লাখ ১০ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা বিদেশি ঋণ হিসেবে নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হতে পারে।
নতুন বছরের বাজেটে পাঁচ লাখ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে গিয়ে বেশকিছু নিত্যপণ্যের ওপর শুল্ককর বা ভ্যাট বাড়ানোর পথে হাঁটছে সরকার। যেমন- নতুন অর্থবছরে বাসমতি চাল আমদানিতে ভ্যাট বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়ছে। ফলে বিরিয়ানি-তেহারির অন্যতম প্রধান উপকরণ এ চালের দাম আরও বাড়তে পারে। এতে যারা শখ করে উৎসব-পার্বণে বিরিয়ানি বা তেহারি খেতে পছন্দ করেন, খরচ বাবদ তাদের গুনতে হবে বাড়তি টাকা।
বাড়তি অর্থ গুনতে হবে প্লাস্টিকের তৈরি সব ধরনের টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার, গৃহস্থালি সামগ্রীতেও। কারণ এসব পণ্যের উৎপাদনে ভ্যাট বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এসব পণ্যের উৎপাদনে ৫ শতাংশ ভ্যাট আছে।
একই হারে ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি গৃহস্থালি সামগ্রী ও তৈজসপত্রের (হাড়ি-পাতিল, থালা-বাসন) ক্ষেত্রেও। বর্তমানে কিচেন টাওয়াল, টয়লেট টিস্যু, ন্যাপকিন টিস্যু, ফেসিয়াল টিস্যু/পকেট টিস্যু ও পেপার টাওয়াল উৎপাদনে ৫ শতাংশ ভ্যাট আছে, এটি বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ফলে আগামীতে এসব পণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ফল ও বাদামের আমদানি শুল্কও বাড়ানো হতে পারে।
বর্তমানে সারাদেশে রান্নার কাজে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যাপক হারে ব্যবহার হয়। আগামী অর্থবছরের বাজেটে সিলিন্ডার উৎপাদনে ব্যবহৃত স্টিল ও ওয়েল্ডিং ওয়্যার আমদানিতে শুল্ক আরোপ এবং উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ফলে আগামীতে রান্নার চুলার জন্যও গুনতে হবে বাড়তি টাকা।
এবার আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) পরামর্শে মোবাইল ফোনকে বিলাসী পণ্য বিবেচনায় নিয়ে বাজেটে ভ্যাট আরোপের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে মোবাইল ফোন উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি আছে, সেখানে ২ শতাংশ ভ্যাট বসানো হচ্ছে। আর সংযোজন পর্যায়ে ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ এবং ৫ শতাংশ থেকে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হচ্ছে। এ কারণে খুচরা পর্যায়ে মোবাইল ফোনের দাম বাড়তে পারে।
কলম উৎপাদনে বর্তমানে ভ্যাট অব্যাহতি রয়েছে, সেখানে নতুন অর্থবছরে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে কলমের দাম বাড়তে পারে। চশমার ফ্রেম ও সানগ্লাস আমদানিতে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ এবং উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ফলে সামনে এসব পণ্যের দামও বাড়তে পারে।
নতুন অর্থবছরে সাইকেলের যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সিরিশ কাগজ আমদানিতেও শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। ভাঙা জিনিস জোড়া দেওয়ার আঠা বা সুপার গ্লু সংরক্ষণমূলক শুল্ক বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
বাড়ি নির্মাণের প্রধান উপকরণ সিমেন্টের কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানিতে বর্তমানে টনপ্রতি ৫০০ টাকা শুল্ক রয়েছে, নতুন অর্থবছরে এটি বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা হচ্ছে। এ কারণে সিমেন্টের দাম বাড়তে পারে। বাসা-বাড়িতে ব্যবহৃত বিদেশি টাইলস আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। ফলে বিদেশি টাইলসের দামও বাড়তে পারে।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে একাধিক গাড়ি রেজিস্ট্রেশন বা ফিটনেস নবায়নে ‘কার্বন সারচার্জ’ আরোপের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ১৫০০ সিসি বা ৭৫ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন গাড়ির জন্য ২৫ হাজার টাকা, ১৫০০ সিসি (৭৫ কিলোওয়াট) থেকে ২০০০ সিসির (১০০ কিলোওয়াট) গাড়ির জন্য ৫০ হাজার টাকা, ২০০০ সিসি (১০০ কিলোওয়াট) থেকে ২৫০০ সিসির (১২৫ কিলোওয়াট) গাড়ির জন্য ৭৫ হাজার টাকা, ২৫০০ সিসি (১২৫ কিলোওয়াট) থেকে ৩০০০ সিসির (১৫০ কিলোওয়াট) গাড়ির জন্য এক লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৩০০০ সিসি (১৫০ কিলোওয়াট) থেকে ৩৫০০ সিসির (১৭৫ কিলোওয়াট) গাড়ির জন্য দুই লাখ টাকা এবং ৩৫০০ সিসির (১৭৫ কিলোওয়াট) বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন গাড়ির জন্য সাড়ে তিন লাখ টাকা কার্বন সারচার্জ আরোপের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে একাধিক গাড়ি রেজিস্ট্রেশন বা ফিটনেস নবায়নে দ্বিতীয় গাড়ির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ বাড়তি অগ্রিম আয়কর দিতে হয়। আগামীতে এর সঙ্গে কার্বন সারচার্জ যুক্ত হলে একাধিক গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ব্যয় বাড়বে।
বর্তমানে বিমানে দেশের অভ্যন্তরে কোনো ভ্রমণ কর দিতে হয় না। তবে স্থলপথে বিদেশ যেতে ৫০০ টাকা ও নৌপথে ৮০০ টাকা কর দিতে হয়। নতুন অর্থবছরের বাজেটে এটি বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আকাশপথে সার্কভুক্ত দেশ ভ্রমণে এক হাজার ২০০ টাকা কর দিতে হয়, আগামী বাজটে এটি বাড়িয়ে দুই হাজার টাকা করা হতে পারে। এছাড়া অন্য দেশ ভ্রমণে তিন হাজার টাকা কর দিতে হয়, সেটি বাড়িয়ে চার হাজার টাকা করতে পারে সরকার।
শূন্য আয় (করযোগ্য সীমার নিচে বার্ষিক আয়) দেখিয়ে বিনা পয়সায় আগামীতে রিটার্ন জমা স্লিপ (প্রাপ্তি স্বীকারপত্র) পাওয়া যাবে না। করযোগ্য আয় না থাকলেও আগামীতে রিটার্ন জমা স্লিপ নিতে দুই হাজার টাকা কর দিতে হবে। আর রিটার্ন জমার স্লিপ না নিলে সরকারি-বেসরকারি ৪৪ ধরনের সেবা পাওয়া যাবে না। এরমধ্যে রয়েছে- ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ, সঞ্চয়পত্র কেনা, ব্যাংক ঋণ, গাড়ির ফিটনেস নবায়ন ও বাড়ির নকশা অনুমোদনের মতো সেবা।
আগামী অর্থবছরে অর্থমন্ত্রী দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষকে করজালে আটকালেও আয়করের ক্ষেত্রে কিছুটা সুখবর দিতে পারেন। নতুন অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা তিন লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা করা হতে পারে। একই সঙ্গে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতার ন্যূনতম কর পাঁচ হাজার টাকা করা হতে পারে। অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকার করদাতাদের চার হাজার টাকা এবং সিটি করপোরেশনের বাইরে অন্য এলাকার করদাতাদের ন্যূনতম তিন হাজার টাকা কর নির্ধারণ করা হতে পারে।
আগামীতে ব্যাংকে বেশি টাকা জমালে বেশি কর ছাড় পাওয়া যেতে পারে। কারণ, নতুন বাজেটে ব্যাংক ডিপিএসে (ডিপোজিট পেনশন স্কিম) কর রেয়াতের সীমা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে মাসিক ৫ হাজার টাকা বা ৬০ হাজার টাকার ডিপিএসে কর রেয়াত সুবিধা দেওয়া হয়। আগামীতে এটি বাড়িয়ে মাসিক ১০ হাজার টাকা বা এক লাখ ২০ হাজার করা হতে পারে।
বর্তমানে আট হাজার বর্গফুটের বেশি আয়তনের গৃহসম্পত্তি, একাধিক গাড়ি বা তিন কোটি টাকার বেশি সম্পদ থাকলে সারচার্জ অর্থাৎ সম্পদ কর দিতে হয়। নতুন অর্থবছরের বাজেটে এটি বাড়িয়ে চার কোটি টাকা করা হতে পারে। ফলে সম্পদশালীদের করের বোঝা কিছুটা হলেও কমবে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে অপ্রত্যাশিত বা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা মোকাবিলায় তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও এ অর্থ ব্যয়ের কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। ফলে অর্থ ছাড় করতে জটিলতা তৈরি হয়। তাই প্রথমবারের মতো আর্থিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার জন্য আগামী বাজেটে পৃথক বরাদ্দ রাখা হতে পারে। এক্ষেত্রে চার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার পরিকল্পনা করেছেন অর্থমন্ত্রী। এছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গবেষণা, উদ্ভাবন ও উন্নয়ন বাবদ ১০০ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হতে পারে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক সুরক্ষা খাতে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আগামী অর্থবছরের বাজেটে এ বরাদ্দ বাড়িয়ে ১ লাখ ২৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা করা হতে পারে। একই সঙ্গে কর্মসূচির আওতায় সুবিধাপ্রাপ্তদের ভাতার পরিমাণ কিছুটা বাড়বে। বর্তমানে ৫৭ লাখ ১ হাজার নারী-পুরুষ বয়স্ক ভাতা পান। নতুন অর্থবছরের বাজেটে এ সংখ্যা বাড়িয়ে ৫৮ লাখ করা হতে পারে। একই সঙ্গে বাড়ানো হতে পারে ভাতার পরিমাণও। বর্তমানে ৫০০ টাকা ভাতা দেওয়া হয়, এটি বাড়িয়ে ৬০০ টাকা করা হতে পারে।
এছাড়া যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ও চিকিৎসা ভাতা, শহীদ পরিবারের ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, হিজড়া ও বেদেসহ অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ভাতা, মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি এবং প্রতিবন্ধী ভাতা দিচ্ছেন সরকার। আগামীতে এসব ভাতা অব্যাহত থাকবে এবং ভাতার পরিমাণও বাড়তে পারে।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে সার, বিদ্যুৎ ও গ্যাস খাতে ভর্তুকি বাবদ বাড়তি বরাদ্দ রাখা হতে পারে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও নগদ ঋণ খাতে ৮২ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা রাখা হয়েছিল। পরবর্তীকালে সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ১ লাখ ২ হাজার কোটি টাকা করা হয়। নতুন অর্থবছরের বাজেটে এসব খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে ১ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকা রাখা হতে পারে। এরমধ্যে বিদ্যুৎ খাতে ৩৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হতে পারে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয় ১৭ হাজার কোটি টাকা। পরে সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ বাড়িয়ে ২৩ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
|
https://www.dhakatimes24.com/2023/05/31/311403
|
5/31/2023
|
Dhaka Times
|
Govt critique
|
159
|
রামপাল ইউনিট-২ সম্পন্ন
|
রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের উদ্বোধন আজ
|
বাগেরহাটের রামপালে অবস্থিত কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার (১ নভেম্বর) বেলা ১১টায় ভার্চুয়ালি এ দুই মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন, গত ২৪ অক্টোবর বিদ্যুৎ কেদ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছিল। এসময় ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বুধবার মোংলা-খুলনা নতুন নির্মিত রেলপথের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এসময় ভার্চুয়ালি রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের উদ্বোধন করা হবে। এরপর নিয়মিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুইটি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে।
বিআইএফপিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাঈদ আকরাম উল্লাহ বলেন, মৈত্রী প্রকল্প বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্ব ও দৃঢ় বন্ধনের প্রতীক। দেশ-বিদেশের কর্মরত সব কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিশেষজ্ঞদের প্রচেষ্টায় আমরা দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি। দ্বিতীয় ইউনিট আজ ভার্চুয়ালি উদ্বোধন।
এর আগে ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট উৎপাদনে যায়। এরপর কয়েক দফা বন্ধ হলেও বর্তমানে কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট চালু রয়েছে। দুই ইউনিট মিলে এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট।
|
https://www.dhakapost.com/country/234332
|
11/1/2023
|
Dhaka Post
|
Govt critique
|
160
|
রামপাল ইউনিট-২ সম্পন্ন
|
রামপালে হচ্ছে বড় সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র
|
উৎপাদন শুরুর পর থেকে ২০ বছর এ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনবে সরকার। গতকাল ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব অনুমোদন বাগেরহাটের রামপালে দেশের বৃহত্তম ৩০০ মেগাওয়াটের যে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে, তা থেকে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের ইউনিট ১১ টাকায় (১০ দশমিক ২০ সেন্ট) কিনবে সরকার। ২০ বছর এ বিদ্যুৎ কেনা হবে। এ জন্য সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ১০ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিদ্যুতের দর (ট্যারিফ) বিষয়ক এ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। বৈঠক শেষে তা সাংবাদিকদের জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।
‘বিদ্যুৎ নেই তো টাকাও নেই’ অর্থাৎ নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট—এমন শর্তে চার প্রতিষ্ঠানকে যৌথভাবে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রধান বিনিয়োগকারী সৌদি আরবের অ্যাকোয়া পাওয়ার কোম্পানি। সঙ্গে থাকছে দেশীয় বিনিয়োগকারী কমফিট কম্পোজিট নিট বাংলাদেশ ও ভিয়েলাটেক্স স্পিনিং লিমিটেড। আরও থাকছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো)।
সাঈদ মাহবুব খান জানান, এ সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরিতে ব্যয় হবে ৪৩ কোটি মার্কিন ডলার। সৌদি আরবের কোম্পানি এ বিনিয়োগের ৪৫ শতাংশের অংশীদার। আর জমির জোগানদাতা হিসেবে বিউবো এটির ২৫ শতাংশের মালিকানায় থাকবে। এ ছাড়া ১৫ শতাংশ কমফিট কম্পোজিট নিট এবং বাকি ১৫ শতাংশ ভিয়েলাটেক্স স্পিনিংয়ের মালিকানায় থাকবে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরুর কথা রয়েছে।
সূত্রগুলো জানায়, দেশের সবচেয়ে বড় এই সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫ লাখ পরিবারের (হাউসহোল্ড) কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছানো যাবে। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশগুলোতে ট্যারিফ হার ২ থেকে ৩ সেন্ট হলেও এ কোম্পানি থেকে সরকার ১০ দশমিক ২০ সেন্ট দরে বিদ্যুৎ কিনবে কেন—জানতে চাওয়া হয় এ প্রকল্পের অংশীদার ভিয়েলাটেক্সের চেয়ারম্যান ডেভিড হাসনাতের কাছে। গতকাল তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখানে জমির দাম বেশি, ব্যাংকের সুদের হার বেশি, রোদের প্রখরতা কম, পাইলিং করতে হয় বেশি। এসব কারণেই বিদ্যুতের ইউনিট মূল্য বেশি।
দেশে এত দিন সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের নাম ছিল তিস্তা সোলার লিমিটেড। এটির বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ২০০ মেগাওয়াট। উত্তরাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২ আগস্ট গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের অনাবাদি চরের ৬৫০ একর জমিতে তিস্তা সোলার আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। বেক্সিমকো গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেড এ সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে।
এর আগে ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সুতিয়াখালী সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ছিল একসময় দেশের বৃহৎ সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র। জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ২০২০ সালে এটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। দেশে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
|
https://www.prothomalo.com/business/economics/7p5t31msj0
|
8/31/2023
|
Prothom Alo
|
Govt leaning
|
161
|
রামপাল ইউনিট-২ সম্পন্ন
|
কয়লা সংকটে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ
|
কয়লাসংকটে বন্ধ হয়ে গেছে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন। শনিবার সকাল ৯টা থেকে কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়। উৎপাদন শুরুর ২৭ দিনের মাথায় এ ঘটনা ঘটল।
বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ বিনিয়োগে বাগেরহাটের রামপালে স্থাপিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দুটি ইউনিটের। এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষম এই কেন্দ্রের একটি ইউনিট গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছিল। এর উৎপাদনক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট। প্রতিদিন উৎপাদন করছিল ৫৬০ থেকে ৫৭০ মেগাওয়াট। আগামী ছয় মাসের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিটও বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যাওয়ার কথা।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, কয়লার সরবরাহ না থাকায় গতকাল সকালে কেন্দ্রটি বন্ধ করে দিতে হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ঢাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখতে রামপালের এই কেন্দ্রটি চালু করা হয়েছিল। কেন্দ্রটি থেকে ঢাকায় দৈনিক প্রায় ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। বাকি বিদ্যুৎ খুলনায় সরবরাহ করা হতো। গত সপ্তাহে কারিগরি ত্রুটির কারণে এক দিন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকায় ঢাকার কিছু এলাকায় লোড শেডিং করতে হয়েছিল। কিন্তু গতকাল কেন্দ্রটি বন্ধ হলেও গতরাত ৮টা পর্যন্ত কোনো লোড শেডিং করা হয়নি বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী কম্পানিগুলো। শীতের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় রামপাল কেন্দ্র বন্ধের কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানান কর্মকর্তারা।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক কয়লা আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলার অনুমোদন দিতে দেরি করছে। বিআইএফপিসিএল ঋণপত্র খুলতে না পারার বিষয়টি চিঠি দিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিপিডিবি) জানায়। গত ১০ ও ১১ জানুয়ারি বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেন। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। ফলে গতকাল মজুদ কয়লা শেষ হয়ে যায় এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়। কয়লা না পাওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রটি চালু করার সুযোগ নেই।
বিআইএফপিসিএলের উপমহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন ৫৬০ থেকে ৫৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করে আসছি। কয়লা না থাকায় (গতকাল) সকাল ৯টার দিকে কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।’ কয়লাসংকটের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কয়লা আমদানিতে ডলার প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার না দেওয়ায় কয়লা আমদানি করা যাচ্ছিল না। কেন্দ্রটির একটি ইউনিট পুরোপুরিভাবে চালু রাখতে প্রতিদিন পাঁচ হাজার মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হয়।
আনোয়ারুল আজিম জানান, রামপাল বিদ্যুেকন্দ্রের জন্য ইন্দোনেশিয়ায় কয়লাবোঝাই একটি জাহাজ প্রস্তুত হয়ে আছে। ঋণপত্র পাওয়া নিশ্চিত হলে জাহাজটি বাংলাদেশের পথে রওনা হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী রামপালের বিদ্যুৎ বিপিডিবিকে কিনতে হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ থাকলেও চুক্তি অনুযায়ী বিপিডিবিকে কেন্দ্রের সক্ষমতা ব্যয় বা ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র বলছে, বিপিডিবির কাছে বিআইএফপিসিএলের ১৭ মিলিয়ন ডলার পাওনা হয়েছে। কিন্তু অর্থ পরিশোধ করছে না। এর মধ্যে বিপিডিবি তাদের কেন্দ্রটি চালিয়ে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিল। যার কারণে জরুরি মজুদ কয়লা দিয়েই এত দিন কেন্দ্রটি চালু রাখা হয়।
জানতে চাইলে বিপিডিবির কোল পাওয়ার জেনারেশনের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. রুকন উদ্দিন বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হওয়ার পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই। ডলার সংকটের কারণে কয়লার পেমেন্ট করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন খুবই জরুরি পণ্য ছাড়া ঋণপত্র খুলতে দিচ্ছে না। তিনি বলেন, বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় রাপমাল কেন্দ্র বন্ধ থাকলেও সরবরাহে কোনো ঘাটতি হবে না। কারণ চাহিদার চেয়ে এখন উৎপাদন বেশি হচ্ছে।
বিপিডিবির কাছে বিআইএফপিসিএলের পাওনার বিষয়ে জানতে চাইলে মো. রুকন উদ্দিন বলেন, ‘ভর্তুকির টাকা না পাওয়ায় আমরা বিআইএফপিসিএলের পাওনা টাকা পরিশোধ করতে পারছি না। শুধু এই প্রতিষ্ঠান না, বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর পাঁচ মাসের বকেয়া আটকে আছে। তবে আশা করছি, শিগগিরই এই সংকট কেটে যাবে।’
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র জানায়, ১৫ আগস্ট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করে। প্রথম ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত পৌঁছালে ২৪ অক্টোবর বাংলাদেশে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। সে সময় সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়। ২৫ নভেম্বর থেকে টানা ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরীক্ষামূলক উৎপাদন করে কেন্দ্রটি। ঢাকার বিদ্যুত্সংকট কাটাতে গত ১৭ ডিসেম্বর রাত থেকে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ শুরু করা হয়।
|
https://khulnagazette.com/khulnanchal/bagerhat/230184/
|
1/15/2023
|
Khulna Gazet
|
Govt critique
|
162
|
রামপাল ইউনিট-২ সম্পন্ন
|
জুনে চালু হবে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট: প্রণয় ভার্মা
|
বাগেরহাট: বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, কয়লা সংকটে বন্ধ থাকা রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট আগামী সপ্তাহে পুনরায় চালু হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী জুনে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হবে, এ বিষয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া সব ধরনের পরিবেশগত বিষয় বিবেচনা করে প্লান্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। ফলে সুন্দরবনের কোন ক্ষতি হবে না।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ ভারতের যৌথ মালিকানাধীন রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময়, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানির (বিআইএফপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদ আকরাম উল্লাহ, প্রকল্প পরিচালক সুভাষ চন্দ্র পান্ডেসহ ভারতীয় হাইকমিশন ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল ১০ টায় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে আসেন। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিভিন্ন স্থাপন ঘুরে দেখেন। এসময় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা হাইকমিশনারকে কেন্দ্রের বিভিন্ন বিষয় অবহিত করেন। অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসি লি. এর মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লি. (বিআইএফপিসিএল) নামে কোম্পানি গঠিত হয়। এই কোম্পানির অধীনে ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) নামে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়।
রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গর্দ্দাশকাঠি মৌজায় ১ হাজার ৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ শেষে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই শুরু হয় জমি ভরাট ও সড়ক নির্মাণের কাজ। প্রায় ৯ বছর বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যায় প্রতিষ্ঠানটি।
এর আগে গত বছরের ১১ জুলাই বয়লার স্টিম ব্লোয়িং স্থাপন করা হয়। এক মাস পরে ১৪ আগস্ট টারবাইনে স্টিম ডাম্পিং এবং একদিন পরে ১৫ আগস্ট জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ (ট্রান্সমিশন) শুরু করা হয়। পরে ১৭ ডিসেম্বর থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায় এবং জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়। কিন্তু চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি কয়লা সংকটে বন্ধ হয়ে যায় এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উৎপাদন।
|
https://www.banglanews24.com/power-fuel/news/bd/1047217.details
|
2/4/2023
|
Bangla News24
|
Govt leaning
|
163
|
রামপাল ইউনিট-২ সম্পন্ন
|
রামপালে ৩০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিকল্পনা
|
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ও সৌদি আরবের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বাগেরহাটের রামপালে যৌথভাবে ৩০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছে।
বর্তমানে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় দেশের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।
বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেড এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৩০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে। গত ২ আগস্ট এর উদ্বোধন করা হয়।
রাজধানী ঢাকা থেকে ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে রামপালে ৯০০ একর জমির ওপর ৪৩ কোটি ডলার খরচে ৩০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে ভিয়েলাটেক্স গ্রুপ ও কমফিট কম্পোজিট নিট লিমিটেডের ১৫ শতাংশ এবং সৌদি আরবের এসিডব্লিউএ পাওয়ারের ৪৫ শতাংশ শেয়ার থাকবে। বিপিডিবি শুধু জমি দিয়ে ২৫ শতাংশের মালিক হবে।
এন্ড-টু-এন্ড অ্যাপারেল সলিউশন সরবরাহকারী হিসেবে পরিচিত ভিয়েলাটেক্স গ্রুপের বার্ষিক লেনদেন ৪০০ মিলিয়ন ডলার।
একই ধরনের সেবা প্রদানকারী কমফিট কম্পোজিট নিট লিমিটেড ইয়ুথ গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান। এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে—পেট্রোম্যাক্স রিফাইনারি লিমিটেড, শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, মিডল্যান্ড পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড ও মিডল্যান্ড ইস্ট পাওয়ার লিমিটেড।
ভিয়েলাটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কে এম রেজাউল হাসানাত টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রস্তাবিত এই কেন্দ্রে ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন, সরকার ২০ বছরের জন্য প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টার বিদ্যুৎ কিনবে ১০ দশমিক ২০ সেন্ট দিয়ে।
উৎপাদিত বিদ্যুৎ ৫ লাখ বাড়ি বা ৬০-৭০টি বৃহৎ কম্পোজিট মিলে সরবরাহ করা হতে পারে। এটি দেশের অর্থনীতিতে বছরে ৬ বিলিয়ন থেকে ৭ বিলিয়ন ডলার অবদান রাখবে।
এটি বছরে সাড়ে ৪ লাখ টন কার্বন কমাতে পারে। যদিও দেশের মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণ মাথাপিছু শূন্য দশমিক ৫২ মেট্রিক টন।
কে এম রেজাউল হাসানাত জানান, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে বিদ্যুতের দাম অনেক বেশি। সেখানে কিছু কারণে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের দাম পড়ে ২ থেকে ৩ সেন্ট।
তিনি আরও জানান, দেশে একটি ২০ বছরের প্রকল্পের খরচের প্রায় ৩০ শতাংশ জমি ইজারা বা অধিগ্রহণ ও উন্নয়নে খরচ হয়।
এ ছাড়াও, এখানে সূর্যের তাপের তীব্রতা ৪০ শতাংশ কম, ঋণের খরচ বেশি ও সোলার প্যানেল আমদানিতে ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ বেশি কর গুনতে হয়।
|
https://bangla.thedailystar.net/economy/news-510201
|
8/31/2023
|
The Daily Star
|
Govt leaning
|
164
|
ডিজিটাল আইন সংশোধনী বিল
|
ডিএসএ পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইনে যা থাকবে
কম ডেটা ব্যবহার করতে শুধু টেক্সট পড়ুন
|
বাংলাদেশের বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-ডিএসএ পরিবর্তন করে তার জায়গায় ভিন্ন একটি আইন আনার সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই নতুন আইনটির নামকরণ করা হয়েছে সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশ কয়েকটি ধারায় পরিবর্তন এনে এই আইনটি করা হচ্ছে।
নতুন আইনে মোট ধারা ৬০টি। এটি আগামী সেপ্টেম্বরে সংসদে বিল আকারে পাসের জন্য উত্থাপন করা হবে। সেখানে এটি অনুমোদিত হবে বলেও আশার কথা জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী।
নতুন এই আইনের বিষয়ে অনুমোদনের পর ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার রোধ করার জন্য এই আইনের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘’সাংবাদিকদের একটা কথা ছিল, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট থাকলে একটা মানসিক চাপের মধ্যে থাকতে হয়। সেটাকেও আমরা ধর্তব্যের মধ্যে নিয়েছি এবং সেই কারণে এই পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে।”
এর ফলে সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধ হবে কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি আশা করছি অবশ্যই হবে।
|
https://www.bbc.com/bengali/articles/cyjg9we48dno
|
8/7/2023
|
BBC Bangla
|
Govt leaning
|
165
|
ডিজিটাল আইন সংশোধনী বিল
|
বিরোধিতার মধ্যেই সাইবার নিরাপত্তা বিল পাশ
বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারের ক্ষমতা রইল * কোটি টাকা জরিমানা ও ১৪ বছর কারাদণ্ডের বিধান থাকছে * মিথ্যা মামলা অপরাধ বলে গণ্য হবে
|
বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার, সর্বোচ্চ শস্তি কোটি টাকা জরিমানা এবং ১৪ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রেখে বহুল আলোচিত সাইবার নিরাপত্তা বিল-২০২৩ জাতীয় সংসদে পাশ হয়েছে। বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতারে পুলিশের ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার কর্মকর্তার হাতে ক্ষমতা রেখেই পাশ এই বিলে কেউ মিথ্যা মামলা দায়ের করলে সেটা অপরাধ হিসাবে গণ্য করে সাজার বিধান রাখা হয়েছে। বুধবার জাতীয় সংসদে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বিলটি পাশের জন্য প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাশ হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে বিরোধী দলের বিরোধিতার মুখেই পাশ করা হয় নতুন আইনটি।
বিলের বিভিন্ন ধারার সমালোচনা করে বিরোধীদলীয় সদস্যরা বলেন, মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং স্বাধীন গণমাধ্যমের স্বীকৃতি সংবিধানেই দেওয়া হয়েছে। অথচ এই বিলের বিভিন্ন ধারায় সংবিধান স্বীকৃত এসব অধিকার খর্ব করার ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করা হয়েছে। বিরোধী দলের সদস্যরা এ সময় বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও তল্লাশির বিধান সংশোধনেরও দাবি জানান।
জবাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, চিন্তাা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংবিধান স্বীকৃত হলেও এটি অবারিত নয়। স্বাধীনতা মানে কিন্তু অন্যের অধিকার ক্ষুণ্ন করা নয়। আপনার স্বাধীনতা মানে যা ইচ্ছে তাই বলা বা করা নয়। অন্যকে অসম্মান করা নয়। নারীকে অশ্লীল কথা বলা নয়। এসব বিষয় নিশ্চিত করার জন্যই এই আইনের প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, আইনটির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বিরোধী সদস্যরা একমত পোষণ করছেন। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নিরাপদ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সাইবার নিরাপত্তা আইনের বিকল্প নেই।
দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রদ করে সরকার সাইবার নিরাপত্তা আইনের উদ্যোগ নেয়। গত ৫ সেপ্টেম্বর বিলটি জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। পরে কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে তাদের প্রতিবেদন সংসদে জমা দেয়।
আইনটির খসড়া প্রকাশের পর থেকেই মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন বলে আসছে, সাইবার নিরাপত্তা আইনেও কার্যত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মূল বিষয়বস্তু বহাল রাখা হচ্ছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের মতোই এই আইন। সরকার গত ৭ আগস্ট জানায়, তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে রূপান্তর এবং আধুনিকায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার নাম হবে সাইবার নিরাপত্তা আইন। যেখানে বিদ্যমান আইনের কিছু ধারা সংশোধন করা হবে। গত ২৮ আগস্ট মন্ত্রিসভা এই বিলের চূড়ান্ত খসড়া অনুমোদন করে।
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারা ২৫ (মিথ্যা বা আপত্তিকর তথ্য প্রকাশ), ধারা ২৯ (মানহানিকর তথ্য প্রকাশ) এবং ধারা ৩১ (আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর শাস্তি) সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়ায় অবিকৃত রয়েছে। ২৫ ধারায় ‘রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ন’সংক্রান্ত কোনো ব্যাখ্যা না থাকায় এর অপব্যবহারের শঙ্কা রয়েছে।
বিলটি পাশের আগে জনমত যাচাইয়ের জন্য দেওয়া প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় বিরোধী দলের সদস্যরা বিলটি বিভিন্ন ধারা নিয়ে আপত্তি তোলেন এবং বিরোধিতা করেন। তবে বিরোধী দলের সদস্যদের জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে গণফোরামের সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, বিতর্কিত জিডিটাল নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন ধারা এই আইনে যুক্ত করা হয়েছে। এটা অনেকটা নতুন বোতলে পুরোনো মদ রাখার মতোই অবস্থা। আইনটি নতুন করে হচ্ছে কিন্তু স্বস্তি ফিরে আসছে না। যেভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ছিল অনেকটা হুবহু সেভাবেই এই আইন করা হচ্ছে। জাতিসংঘ, সম্পাদক পরিষদসহ সাংবাদিকদের যেসব আপত্তি ছিল, উদ্বেগের বিষয় ছিল সেগুলো রয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, ৯টি ধারা স্বাধীন সাংবাদিকতায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে সংশোধনের দাবি জানিয়েছিল সম্পাদক পরিষদ। এখন প্রস্তাবিত সাইবার আইনে ৭টি ধারায় সাজা ও জামিনের বিষয়ে সংশোধনী আনা হয়েছে। কিন্তু অপরাধের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা হয়নি। আগের মতোই রয়ে গেছে। দুটি ধারায় কোনো পরিবর্তনই আনা হয়নি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর থেকে দুটি ধারা বাতিলের আহ্বান করেছিল। কিন্তু প্রস্তাবিত আইনে তা বাতিল না করে সাজা ও জামিনের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা হয়েছে। তিনি বলেন, আইনটি ভিন্নমত সমালোচনা ও মুক্তচিন্তা দমনের সবচেয়ে কার্যকর একটি হাতিয়ার হবে। গত সাড়ে ৪ বছরে কেবল সরকার কিংবা ক্ষমতাসীন দলের সমালোচনা ও মুক্তচিন্তা দমনে প্রয়োগ করা হয়েছে। আর সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সাংবাদিক কমিউনিটি।
জাতীয় পার্টির সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, আইনটিতে কিছু রদবদল করা হয়েছে। কিন্তু সাংবাদিকরা বলেছেন, তারা সন্তুষ্ট নন। বাক-স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কোনো আইন তৈরি হলে তা হবে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
একই দলের পীর ফজলুর রহমান বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিতর্কিত ছিল। কিছুটা পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হচ্ছে। এটিও স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। ৪২ ধারায় বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই আইনে সাংবাদিকদের বিষয়ে আলাদা সুরক্ষা রাখা প্রয়োজন ছিল।
প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের সুযোগ ছিল। আইনে মতপ্রকাশ ও চিন্তার স্বাধীনতা বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। জাতীয় পার্টির সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, কিছু কারিগরি বিষয়ে এই আইন দরকার। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যবহার হয়েছে খুব সামান্য। মূল মামলা হয়েছে চেতনা, অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে। তিনি বলেন, সংবিধানে চিন্তা ও বাক-স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এগুলো থাকা অবস্থায় এই ধরনের আইন সংবিধানবিরোধী। একই দলের সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ ৪২ ধারা নিয়ে আপত্তির কথা তুলে ধরে এটিসহ সব বেআইনি ধারা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সাংবাদিকরা কলম ধরেন দেশের স্বার্থে। তাদের বিষয়ে প্রেস কাউন্সিলকে যুক্ত করার সুযোগ ছিল। ৪২ ধারায় বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তাই এই আইনের অপপ্রয়োগের আশঙ্কা আছে। এ সময় তিনি ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সম্প্রতি থানায় নিয়ে নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন। পাশ হওয়া বিলে মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ দায়েরের অপরাধ ও দণ্ড নিয়ে নতুন একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে।
এই ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের অভিপ্রায়ে এই আইনের কোনো ধারায় মামলা বা অভিযোগ দায়ের করার জন্য ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ না জেনেও মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেন বা করান, তাহলে তা হবে একটি অপরাধ। এই অপরাধে মামলা বা অভিযোগ দায়েরকারী ব্যক্তি এবং যিনি অভিযোগ দায়ের করিয়েছেন ওই ব্যক্তি মূল অপরাধটির জন্য যে দণ্ড নির্ধারিত রয়েছে সে দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। যদি এই আইনের একাধিক ধারায় কোনো মামলা বা অভিযোগ করেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট ধারায় বর্ণিত অপরাধগুলোর মধ্যে মূল অপরাধের জন্য যেটায় দণ্ডের পরিমাণ বেশি হয় সেটাই নির্ধারণ করা যাবে।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ দায়েরের অপরাধে অভিযোগ গ্রহণ ও মামলার বিচার করতে পারবে। বিলের ৪২ ধারায় বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। এই ধারায় সাব-ইন্সপেক্টর পর্যায়ের কর্মকর্তার পরিবর্তন এনে পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) পর্যায়ের কর্মকর্তাকে বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতার করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই ধারাটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও ছিল।
বিলের ৮ ধারায় ডিজিটাল মাধ্যম থেকে তথ্য-উপাত্ত অপসারণ ও ব্লক করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে, যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ সাপেক্ষে, বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে, ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত কোনো তথ্য-উপাত্ত দেশের বা দেশের কোনো অংশের সংহতি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ বা জনশৃঙ্খলা ক্ষুণ্ন করে বা জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণার সঞ্চার করে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ওই তথ্য-উপাত্ত অপসারণ বা ব্লক করার জন্য মহাপরিচালকের মধ্যমে বিটিআরসিকে অনুরোধ করতে পারবে।
বিলের ২৭ ধারায় সাইবার সন্ত্রাসী কার্য সংঘটনের অপরাধ ও দণ্ড সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা, নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করা এবং জনগণ বা উহার কোনো অংশের মধ্যে ভয়ভীতি সঞ্চার করিবার অভিপ্রায়ে কোনো কম্পিউটার বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেট নেটওয়ার্কে বৈধ প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন বা বেআইনি প্রবেশ করেন বা করান; কোনো ডিজিটাল ডিভাইসে এইরূপ দূষণ সৃষ্টি করেন বা ম্যালওয়্যার প্রবেশ করান যাহার ফলে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে বা গুরুত্ব জখমপ্রাপ্ত হন বা হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয় বা জনসাধারণের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ ও সেবা ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংসসাধন করেন বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোর ওপর বিরূপ প্রভাব বিস্তার করেন।
ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক, সংরক্ষিত কোনো তথ্য-উপাত্ত বা কম্পিউটার ডাটাবেজে প্রবেশ বা অনুপ্রবেশ করেন বা এইরূপ কোনো সংরক্ষিত তথ্য-উপাত্ত বা কম্পিউটার ডাটাবেজে প্রবেশ করেন, যাহা বৈদেশিক কোনো রাষ্ট্রের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বা জনশৃঙ্খলাপরিপন্থি কোনো কাজে ব্যবহৃত হইতে পারে অথবা বৈদেশিক কোনো রাষ্ট্র বা কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সুবিধার্থে ব্যবহার করা হইতে পারে, তাহা হইলে ওই ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে সাইবার সন্ত্রাস অপরাধ। যদি কোনো ব্যক্তি এ অপরাধ সংঘটন করেন, তিনি অনধিক ১৪ বছরের কারাদণ্ডে বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’
বিলের ২৮ ধারায় বলা হয়েছে, ‘ওয়েবসাইট বা কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত করে এইরূপ কোনো তথ্য প্রকাশ, সম্প্রচার ইত্যাদি যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতভাবে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত করিবার বা উসকানি দেওয়ার অভিপ্রায়ে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এইরূপ কিছু প্রকাশ বা প্রচার করেন বা করান, যাহা ধর্মীয় অনুভূতি বা মূল্যবোধের ওপর আঘাত করে, তাহলে ওই ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হবে অপরাধ। যদি কোনো ব্যক্তি এ ধরনের অপরাধ সংঘটন করেন, তাহলে তিনি অনধিক দুই বছরের কারাদণ্ডে বা অনধিক ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’বিলের ৩২ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি হ্যাকিং করেন, তাহলে এটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১৪ বছরের কারাদণ্ডে বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’
বিলের ৪২ ধারায় পরোয়ানা ছাড়া তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেফতার প্রসঙ্গে বলা আছে, ‘যদি কোনো পুলিশ অফিসারের এইরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে, কোনো স্থানে এ আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হইয়াছে বা হইতেছে বা হইবার আশঙ্কা রহিয়াছে বা সাক্ষ্য-প্রমাণাদি হারানো, নষ্ট হওয়া, মুছিয়া ফেলা, পরিবর্তন বা অন্য কোনো উপায়ে দুষ্প্রাপ্য হইবার বা করিবার সম্ভাবনা রহিয়াছে, তাহা হইলে তিনি অনুরূপ বিশ্বাসের কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া, ওই স্থানে প্রবেশ করিয়া তল্লাশি এবং প্রবেশে বাধাপ্রাপ্ত হলে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, ওই স্থানে তল্লাশিকালে প্রাপ্ত অপরাধ সংঘটনে ব্যবহার্য কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, তথ্য-উপাত্ত বা অন্যান্য সরঞ্জামাদি এবং অপরাধ প্রমাণে সহায়ক কোনো দলিল জব্দকরণ; ওই স্থানে উপস্থিত যে কোনো ব্যক্তির দেহ তল্লাশি, স্থানে উপস্থিত কোনো ব্যক্তি এ আইনের অধীনে কোনো অপরাধ করিয়াছেন বা করিতেছেন বলিয়া সন্দেহ হইলে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার এবং এর অধীন তল্লাশি সম্পন্ন করিবার পর পুলিশ অফিসার তল্লাশি পরিচালনার রিপোর্ট ট্রাইব্যুনালের কাছে দাখিল করিবেন।’
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক যুগান্তরকে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম পরিবর্তন করে সাইবার সিকিউরিটি আইন করা হয়েছে। আইনটি আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম সেভাবে হয়নি। সেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতোই সব হলো। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আমরা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলাম, এই আইনে সেই সমস্যাগুলো থেকেই গেল। আমরা আইনমন্ত্রীকে প্রেস ক্লাবে এনে বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছিলাম। কিন্তু আইনটি চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে তার কোনো প্রতিফলন হয়নি। তারা অংশীজনদের সঙ্গে যে আলোচনার কথা বলেছেন, সেখানেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। যাদের সেখানে অংশীজন বানানো হয়েছে তারা প্রকৃতপক্ষে অংশীজন নন।
|
https://www.jugantor.com/tp-firstpage/717712
|
9/14/2023
|
Jugantor
|
Neutral
|
166
|
ডিজিটাল আইন সংশোধনী বিল
|
৪ ধারা অজামিনযোগ্য রেখে সাইবার নিরাপত্তা বিল
|
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তে সাইবার নিরাপত্তায় নতুন আইন করতে একটি বিল সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। সংঘটিত অপরাধের জন্য ১৪ বছরের জেল ও ১ কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে তাতে। অজামিনযোগ্য থাকছে ৪টি ধারা।
মঙ্গলবার ( ০৫ সেপ্টেম্বর) সংসদের এ সংক্রান্ত "সাইবার নিরাপত্তা বিল- ২০২৩" উত্থাপন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। পরে বিলটি পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য পাঁচ কর্মদিবসের সময় দিয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলটি উত্থাপনে জাতীয় পার্টির সদস্য ফখরুল ইমাম আপত্তি জানিয়ে বলেন, অংশীজনরা এই বিলের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের সঙ্গে প্রস্তাবিত আইনের মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনকে টিআইবি কালো আইন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মত প্রকাশ ও চিন্তার স্বাধীনতা।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বন্ধের উপাদান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ছিল, খসড়া আইনেও রাখা হয়েছে। অনেকেই এই খসড়া আইনকে নিবর্তনমূলক বলে মনে করছেন। এর পর তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল সেবা বৃদ্ধির পাশাপাশি সাইবার জগতে ঝুঁকিও বাড়ছে। সাইবার অপরাধগুলো এতো বেশি মারাত্মক ও জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ যে অর্থ ও উপাত্ত সুরক্ষার জন্য এটা প্রয়োজন। এর ফলে ২০১৮ সালে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করা হয়। বর্তমান প্রয়োজন, সময়ের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ও সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সাইবার সিকিউরিটি আইনটি উত্থাপন করা হয়েছ। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে যেগুলো অজামিনযোগ্য ছিল, সেখানে জামিন যোগ্য করা হয়েছে। চারটি ধারা শুধু অজামিন যোগ্য হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে।
এদিকে উত্থাপিত এই বিলের ৪২ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো পুলিশ কর্মকর্তা মনে করেন যে, কোনো স্থানে এই আইনের অধীনে কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বা হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাহলে সাক্ষ্য প্রমাণাদি হারানো, নষ্ট হওয়া, মুছে ফেলা, পরিবর্তন হওয়ার বা করার সম্ভাবনা রয়েছে তাহলে তার, কোনো পরোয়ানা ছাড়াই সেখানে তল্লাশি, সরঞ্জাম জব্দ, দেহ তল্লাশি এবং পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেপ্তারের এখতিয়ার আছে। এই ধারাটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও ছিল।
বিলের ২১ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রোপাগান্ডা ও প্রচারণা চালান বা তাতে মদদ দেন, তাহলে তা হবে অপরাধ। এর সাজা হবে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড। বিদ্যমান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এই অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড। একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে সাজা হবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা তিন কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড।
২৭ ধারার ২ উপ-ধারায় বলা হয়েছে সাইবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংগঠিত করলে অনধিক ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং এক কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
সাইবার নিরাপত্তা বিলের ২৮ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত করার বা উসকানি প্রদানের অভিপ্রায়ে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এরূপ কিছু প্রকাশ বা প্রচার করেন বা করান তাহলে তা হবে অপরাধ। এর সাজা সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড। বিদ্যমান আইনে এই অপরাধের সাজা সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড।
২৯ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে পেনাল কোডের ৪৯৯ ধারায় বর্ণিত মানহানিকর তথ্য প্রকাশ বা প্রচার করলে সে জন্য ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এই ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে সাংবাদিক নেতারা। তারা বলেছেন, ফৌজদারি কার্যবিধিতে প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও একই অপরাধের বিচার এই আইনের মধ্যে যুক্ত করার কারণে সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে হয়রানির সুযোগ সৃষ্টি হবে।
বিলের ৩১ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি বা ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইট বা ডিজিটাল বিন্যাসে এইরূপ কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন বা করান, যে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শ্রেণি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা বা বিদ্বেষ সৃষ্টি করে বা সাম্প্রদায়িক বল সম্প্রীতি বিনষ্ট করে যা অস্থিরতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে অথবা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটায় বা এনো ঘটিয়ার উপক্রম হয় তাহলে সেটি অপরাধ বলে গণ্য হবে। এর সাজা সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড।
৩২ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের আওতাভুক্ত কোনো অপরাধ কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সংঘটন করেন বা করতে সহায়তা করেন তাহলে তিনি সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অজামিনযোগ্য ১৪টি ধারার মধ্যে ১৮ (১) (খ), ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ ও ৪৬ ধারা জামিনযোগ্য করা হয়েছে। অজামিনযোগ্য চারটি ধারা হলো ১৭, ১৯, ২৭ ও ৩৩। নতুন করে জামিনযোগ্য করা ২১ ধারায় সাজা কমিয়ে সাত বছর করা হয়েছে। তবে অর্থদণ্ড সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা আগের মতোই রাখা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এই ধারায় সাজা ছিল সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড বা ১ কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড। এছাড়া ৩০ ধারায় আইনবহির্ভূতভাবে ‘ই-ট্রানজেকশন’ (ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে লেনদেন) সংক্রান্ত অপরাধ ও সাজার কথা বলা আছে।
প্রস্তাবিত আইনে অজামিনযোগ্য ধারা ছিল ছয়টি। তার মধ্যে এখন দুইটি ধারা নতুন করে জামিনযোগ্য করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ ধারায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনি প্রবেশসংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ডের কথা আছে। ১৯ ধারায় কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম ইত্যাদির ক্ষতিসাধন, ২৭ ধারায় সাইবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং ৩৩ ধারায় হ্যাকিং–সংক্রান্ত অপরাধের কথা বলা হয়েছে।
|
https://www.cvoice24.com/national/news/66001
|
9/6/2023
|
Cvoice24
|
Neutral
|
167
|
ডিজিটাল আইন সংশোধনী বিল
|
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, আসছে সাইবার নিরাপত্তা আইন
|
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বদলে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩' প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সোমবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিভিন্ন স্থানীয় গণমাধ্যমকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম পরিবর্তন, সংস্কার ও আধুনিকীকরণ করার কথা জানান৷
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা পরিবর্তন ও সংস্কার করে এর নতুন নাম রাখা হয়েছে সাইবার নিরাপত্তা আইন। এই সংস্কারের মূল পরিবর্তন মনে করা হচ্ছে শাস্তির পরিমাণ কমানোকে অর্থাৎ মানহানির ক্ষেত্রে ফৌজদারি শাস্তির বিধান বাতিল করা হয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, "আমরা এটা সংস্কার করেছি। বাতিল করেছি তা বলবো না।" এর আগে একাধিক সভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করার কথা বলেছিলেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি করে আসছিলো দেশের বিভিন্ন মহল। জাতিসংঘ থেকে এই আইনের দুটি ধারা সম্পূর্ণরুপে বাতিল এবং আটটি ধারাকে সংশোধন করার সুপারিশ করা হয়েছিলো। গত এপ্রিল মাসে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টার্ক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ স্থগিত ও এই আইনকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে সংশোধন করার আহ্বান জানান।
|
https://www.dw.com/bn/%E0%A6%A1%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B2-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE-%E0%A6%86%E0%A6%87%E0%A6%A8-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B2-%E0%A6%86%E0%A6%B8%E0%A6%9B%E0%A7%87-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE-%E0%A6%86%E0%A6%87%E0%A6%A8/a-66457448
|
8/7/2023
|
DW
|
Neutral
|
168
|
ডিজিটাল আইন সংশোধনী বিল
|
সাইবার নিরাপত্তা বিল সংসদে উত্থাপন, জাপার আপত্তি
|
‘সাইবার নিরাপত্তা বিল, ২০২৩’ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এরপর বিলটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঁচ দিন সময় বেঁধে দিয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রতিমন্ত্রী পলক বিলটি তোলেন।
বিলটি উত্থাপনের শুরুতে জাতীয় পার্টির সদস্য ফখরুল ইমাম আপত্তি জানিয়ে বলেন, অংশীজনরা এই বিলের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের সঙ্গে প্রস্তাবিত আইনের মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই। প্রস্তাবিত আইনকে টিআইবি কালো আইন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
তিনি আরও বলেন, মানুষের মৌলিক অধিকার—যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মত প্রকাশ ও চিন্তার স্বাধীনতা। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বন্ধের উপাদান ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ছিল, খসড়া আইনেও রাখা হয়েছে। অনেকেই এই খসড়া আইনকে নিবর্তনমূলক বলে মনে করছেন।
জবাবে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল সেবা বৃদ্ধির পাশাপাশি সাইবার জগতে ঝুঁকিও বাড়ছে। সাইবার অপরাধগুলো এত বেশি মারাত্মক, এত বেশি জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, তথ্য ও উপাত্ত সংরক্ষণের জন্য এটা বেশি প্রয়োজন। যার ফলে ২০১৮ সালে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করা হয়।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রয়োজন, সময়ের চাহিদার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টার পরামর্শে, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা, আইনমন্ত্রী সময়ে সময়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, জাতীয় পর্যায়ের সংবাদ মাধ্যম, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবাধিকার সংস্থা, সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সাইবার সিকিউরিটি আইনটি উত্থাপন করা হয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে যেগুলো অজামিনযোগ্য ছিল সেখানে জামিনযোগ্য করা হয়েছে। চারটি ধারা শুধু অজামিনযোগ্য হিসাবে প্রস্তাব করা হয়েছে।
আইনটিকে উদার ও ভবিষ্যতমুখী বলেও উল্লেখ করেন পলক।
এর আগে, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সরকার বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করেছিল। শুরু থেকে ওই আইন নিয়ে সাংবাদিকদের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলোও তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিল। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকেও এই আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়ে বেশ কয়েকবার আপত্তি তোলা হয়েছিল। দেশ–বিদেশে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনার মুখে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে সাইবার নিরাপত্তা আইন করতে যাচ্ছে। যদিও ডিজিটাল আইনের বেশির ভাগ ধারার বিষয়বস্তু অনেকটা অবিকৃতভাবে প্রস্তাবিত আইনে রেখে দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তন বলতে জামিনযোগ্য ধারা বেড়েছে এবং কিছু ক্ষেত্রে সাজা কমানো হয়েছে।
|
https://www.dhakapost.com/national/220711
|
9/5/2023
|
Dhaka Post
|
Govt leaning
|
169
|
বিএনপি ও আওয়ামী লীগ ‘গ্র্যান্ড র্যালি’
|
আবার ক্ষমতায় থাকতে দেশে-দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী : দুদু
|
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আরও একবার ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশে-দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রনেতা শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, শুধু তাই নয়, দলের অন্য নেতাদের দেশে-দেশে পাঠাচ্ছেন। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে লবিং করছেন। কিন্তু এবার কোনও লবিংয়ে কাজ হবে না।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে 'দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও' আন্দোলনের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে দুদু বলেন, একটি মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রীকে সাজা দেওয়া হয়েছে। ডাক্তার বলেছে- বাংলাদেশে তার আর চিকিৎসা নাই। তারপরও তাকে এই সরকার বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে দিচ্ছে না। কয়েকজন এমপি ও মন্ত্রী যারা দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত তারাও বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। কিন্তু দেশনেত্রীকে যেতে দিচ্ছে না এই সরকার।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ২০১৪ ও ১৮ সালের নির্বাচনের মতো বেহায়াপনা নির্বাচন আর এদেশের মানুষ হতে দেবে না। আগের দুইবারের মতো সাজানো-গোছানো নির্বাচন করে আপনি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। পশ্চিমা দেশগুলো আপনার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। অতি সম্প্রতি ভারত যেভাবে কথা বলছে তাতে মনে হচ্ছে ভারতও আপনার সঙ্গে নেই।
সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, দেশের জনগণ, পেশাজীবী, রাজনীতিবিদরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে- আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে। এটা যদি আপনি বুঝতে সক্ষম না হন তাহলে বিদায়টা খুব ভালোভাবে হবে, এটা এখন আমরা বলতে পারব না।
দল মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে দুদু বলেন, এই অপদার্থ সরকারকে পদত্যাগ করতে যে আন্দোলন চলছে সেটা আরও জোরদার করতে রাস্তায় নেমে আসতে হবে। দেশের এই অবস্থার একমাত্র মীমাংসা রাজপথে হতে পারে। যা আগে ১৯৯০ হয়েছে। ১৯৮৯ তে হয়েছে, আশা করি এবারও হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশে আর কোনও নির্বাচন হবে না। শেখ হাসিনা যে ওয়াদা করেছিলেন দশ টাকা কেজি চাল খাওয়াবেন। কৃষকের ঘরে-ঘরে সার পৌঁছে দেবেন সেটা দিতে পারেন নাই। ঘরে-ঘরে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিলেন কিন্তু শিক্ষিত বেকার যুবক চাকরি না পেয়ে অনেকে আত্মহত্যা করছে। একটা কঠিন সময় পার করছে দেশ।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির সহ তথ্য বিষয়ক সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি রাশেদুল হক প্রমুখ।
|
https://www.dhakapost.com/national/217782
|
8/24/2024
|
Dhaka Post
|
Govt critique
|
170
|
বিএনপি ও আওয়ামী লীগ ‘গ্র্যান্ড র্যালি’
|
প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন প্রচারে দেশের মাটিতে সৈয়দ ফারুক
|
বিলাসী জীবন ছেড়ে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলায় সরকারের উন্নয়ন প্রচারে তৃণমূলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সুনামগঞ্জ-৩ আসনে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক। এ আসনের (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) সর্বত্র রাতদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন প্রচার করে আসছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শেগড়া প্রচারবিমুখ এ সৈনিক।
হালের বিপরীতে পিছিয়ে পড়া এ আসনে স্বার্থের উর্ধ্বে থেকে সেখানে নতুন ইতিহাস গড়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে নেমেছেন বিলাসী জীবন ত্যাগী সাবেক এই ছাত্রনেতা। স্বচ্চ-আদর্শিক এ রাজনীতিক নৌকার বৈঠা হালে ধরলে ভোটের জোয়ারে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে এ আসন উপহার দিতে পারবেন এমন মন্তব্য তৃণমূলের জনমনে। নেতাকর্মী-সমর্থকরা বলছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাশীন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে দলের ভেতরে-বাইরে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ আসনের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন সরকারের উন্নয়ন বার্তা। এলাকায় দুর্ঘটনা-দুর্বিপাকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন নিরবে-নিভুতে। এদিকে, শোকাবহ আগষ্ট মাসে বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় এ আসনের প্রতিটি এলাকায় প্রতিদিন দোয়া মাহফিল করে আসছেন সৈয়দ ফারুক।
দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থাকা সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুকের সঙ্গে শুক্রবার (১১ আগস্ট) সকালে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, বিশ্ব মানবতার দূত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয় তাকে মনোনয়ন দান করলে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলায় সুনামগঞ্জ-৩ আসন হবে উন্নয়নের নয়া অধ্যায়। মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও দলের হয়ে আমৃত্যু কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এ রাজনীতিক।
|
https://dainiksylhet.com/details/339208
|
8/11/2024
|
Dainik Sylhet
|
Govt leaning
|
171
|
বিএনপি ও আওয়ামী লীগ ‘গ্র্যান্ড র্যালি’
|
মুখোমুখি আওয়ামী লীগ-বিএনপি, রণক্ষেত্র রাজধানীর পল্টন এলাকা
|
রাজধানীর পল্টনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ চলছে। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করছে। বিজয়নগর থেকে ধাওয়া দিচ্ছে বিএনপি, জবাবে পল্টন মোড় থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে ধাওয়া দিচ্ছে।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার পর পল্টন-বিজয়নগর এলাকায় দেখা যায় এমন চিত্র।
এর আগে, দুপুর ২টার দিকে পল্টনে মুখোমুখি অবস্থান নেয় পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিজয়নগর পানির ট্যাংকির কাছে টায়ারে আগুন লাগিয়ে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন বিএনপি কর্মীরা। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ।
এছাড়া, কাকরাইলে বিএনপি-পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বেশ কয়েকটি স্থানে আগুন দেওয়া হয়েছে। কাকরাইল অডিট ভবনের সামনে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে নেমেছে বিজিবিও।
|
https://dainikamaderbangla.com/news-view/4529/%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%96%E0%A7%8B%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%96%E0%A6%BF-%E0%A6%86%E0%A6%93%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%80-%E0%A6%B2%E0%A7%80%E0%A6%97-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%8F%E0%A6%A8%E0%A6%AA%E0%A6%BF,-%E0%A6%B0%E0%A6%A3%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0-%C2%A0%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%A8-%E0%A6%8F%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE
|
10/28/2023
|
Dainik amader bangla
|
Neutral
|
172
|
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন (বয়কটসহ)
|
প্রাণ ফিরে পেয়েছে জামায়াতে ইসলামী
অস্বস্তিতে বছর শুরু হলেও স্বস্তিতে পার
|
নিষিদ্ধের মধ্যেই পুনরুত্থান। অনেকটা যুদ্ধের মাঠে ফিরে পাওয়া প্রাণ। রাজনৈতিক দৃশ্যপটে নতুন মাত্রা। পহেলা আগস্ট তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার দল হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করে। এর ঠিক তিনদিন পর ৫ আগস্ট দেশে ঘটে যায় ছাত্র-জনতার বিপ্লব। অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার দলটির নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। বিগত ১৫ বছরে শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি, নেতাকর্মীদের নিপীড়ন-নির্যাতন-মামলায় চাপে থাকা দলটি হয়তো ভাবেনি এভাবে প্রকাশ্যে রাজনীতিতে ফিরতে পারবে। বছরের পর বছর নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখা হলেও অভ্যুত্থানের পর বাধাহীন ও রাজনৈতিক প্রাণ ফিরে পেয়েছে জামায়াত-এমন মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
Advertisement
এদিকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাধাহীন সাংগঠনিক তৎপরতা চালাচ্ছে জামায়াতের নীতিনির্ধারকরা। সভা-সমাবেশসহ জনগণের কাছে দলটির ইতিবাচক বার্তাও পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। নেতাকর্মীদের মধ্যে ফিরেছে স্বস্তি। চলছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি। অথচ ৫ মাস আগেও প্রেক্ষাপট ছিল সম্পূর্ণ উলটো। অনেকটা আত্মগোপনেই সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালাতে হতো দলটির নেতাদের। ছিল নানা ভয় ও আতঙ্ক। অনেক বছর পর ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে প্রকাশ্যে আসে জামায়াতের রাজনীতি।
জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা এটাকে জামায়াতের পুনরুত্থান বলব না। বেআইনিভাবে আমাদের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম, সাংগঠনিক তৎপরতা, দলীয় কাজ, ছোটখাটো সভা-সমাবেশ, বাড়িঘর, অফিস, সবই পতিত স্বৈরাচার নিষিদ্ধ করে রেখেছিল। আমাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল বারবার। কিন্তু আমরা ছিলাম সব সময়ই। যতটা অত্যাচার, নির্যাতন উপেক্ষা করে আমরা পেরেছি মাঠ পর্যায়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম, সংগঠন সম্প্রসারণ, আমাদের কর্মীবাহিনী, জনশক্তি নেতাকর্মীদের চরিত্র গঠন, দাওয়াতি কাজ, বিগত ১৫ বছর বৃদ্ধি করার চেষ্টা করেছি। এখন ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তিত অবস্থায় এখনো তো সেই স্বৈরশাসক নেই। সব দলই অবাধে সভা-সমাবেশ, রাজনৈতিক কর্মসূচি, জনগণের কাছে তার মেসেজ পৌঁছে দেওয়ার স্বাভাবিক একটা পরিবেশ পেয়েছি। জনগণের কাছে আমরা অবাধে যেতে পারছি, মানুষ আমাদের কথা শুনতে পাচ্ছে। আমাদের এতদিনের তৈরি করা জনশক্তি, কর্মী মাঠে ময়দানে কার্যক্রম করছে। কাজ আমাদের সবসময়ই ছিল, এখন হয়তো পরিবেশ বাধাহীন হওয়ার কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রমটা সবার কাছে দৃশ্যমান হয়েছে।’
এদিকে অস্বস্তির মধ্য দিয়ে বছর শুরু হলেও স্বস্তিতে বছর পার করছে জামায়াত। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে আওয়ামী সরকার। তখন সরকার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে মিছিল-মিটিং করেছে জামায়াত। বছরের প্রথমদিকে দলটির একাধিক শীর্ষনেতা কারাবরণ করেন। তবে নির্বাচনের শেষে আবার সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে মনোযোগ দেয় দলটির নেতাকর্মীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন তৎকালীন সরকার বিরোধী অন্য দলগুলোর মতো সমর্থন জানায় জামায়াত। এতে গতি পায় আন্দোলন। প্রেক্ষাপটে ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তৎকালীন সরকার। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয় এবং ওইদিনই শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের দিন ৫ আগস্টেই দৃশ্যপটে আসে জামায়াত। সেদিন দুপুরে আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বৈঠকে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানও অংশ নেন। ওই দিন সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিভিন্ন দলের বৈঠকেও অংশ নেন জামায়াতের আমির। রাজধানীর মগবাজারে ১৪ বছর ধরে বন্ধ থাকা দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ৫ আগস্ট রাতেই খোলেন শফিকুর রহমানসহ শীর্ষ নেতারা। পরে তারা পুরানা পল্টনে মহানগর কার্যালয়েও যান। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরদিন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের অবস্থান তুলে ধরা হয়। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিতে সারা দেশে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সতর্কবার্তাও দেন জামায়াতের আমির। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী নিরাপত্তার বলয় করেও প্রশংসা কুড়িয়েছে দলটির নেতাকর্মীরা।
৮ আগস্ট বঙ্গভবনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেয় জামায়াত। ১২ আগস্ট রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে জামায়াতের আমিরসহ প্রতিনিধিদল। পরবর্তী সময়ে বেশ কয়েকবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে দলটির শীর্ষ নেতাদের। ২৮ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে সরকার। গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গেও দলটির তৎপরতা লক্ষণীয়। বিভিন্ন সময়ে ঢাকাস্থ দূতাবাসগুলোয় কিংবা জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কূটনীতিকদের বৈঠকও হয়। বিদেশিদের আমন্ত্রণে বেশ কয়েকটি দেশও ভ্রমণ করেন জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্ব। জাতিসংঘের প্রতিনিধিদলের সঙ্গেও বৈঠক করেন তারা। এদিকে গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সভা-সমাবেশ ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে তৎপর জামায়াত নেতারা। দেশের বিভিন্ন জেলায় বড় সমাবেশও করতে দেখে গেছে। বিজয় দিবসে রাজধানীতে সমাবেশ ও বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি করে দলটির নেতাকর্মীরা। এতে জামায়াতের আমিরও অংশ নেন।
এদিকে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জোট গঠনের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। পাঁচ আগস্ট-পরবর্তী পরিস্থিতিতে ভেদাভেদ ভুলে বেশ কয়েকটি ইসলামী দলের সঙ্গে মতবিনিময়ও করেছেন জামায়াতের শীর্ষ নেতারা। ইসলামী দলের বাইরেও কয়েকটি দল ও জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে জামায়াত নেতাদের অংশ নিতে দেখা গেছে।
চলছে সাংগঠনিক তৎপরতা : দলীয় সূত্র জানায়, গণ-অভ্যুত্থানের এক মাস পর ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশন হয়। দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, সিলেট, রংপুর ও চট্টগ্রাম মহানগরীসহ এ পর্যন্ত প্রায় ৬০টি জেলা সফর করেন। এই সময়ে সারা দেশে ২০২৫-২৬ কার্যকালের জন্য জামায়াতের মহানগরী ও জেলাগুলোতে ইমারত নির্বাচন শেষ করে। জুলাই-আগস্টে হতাহত কিংবা তাদের পরিবারের পাশেও দাঁড়ায় জামায়াত। দলটির ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে এই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্বদ্যিালয়ে প্রকাশ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতেও দেখা যায়।
আগামী নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিরপেক্ষ হওয়াটাকেই চ্যালেঞ্জ মনে করি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শুরু থেকেই অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তাকে ডিস্টার্ব করার জন্য, একটা সুষ্ঠু নির্বাচনে সরকারের যে অভিযাত্রা সেটাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দেশি-বিদেশি অনেক চক্র একটার পর একটা পরিস্থিতি তৈরি করছে। পালটা ক্যু, জুডিশিয়াল ক্যু, আনসার-কাণ্ড, সিভিল সোসাইটি ও সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেনের অরাজকতা তৈরি করা। বিভিন্ন দাবি নিয়ে প্রশাসন ও সরকারকে বেকায়দার ফেলা ও হিন্দু সম্প্রদায়কে উসকে দিয়ে দেশের বাইরে একটা নতুন পরিস্থিতি তৈরি করা-এগুলোর কারণে সরকারের তো রোডম্যাপ, সংস্কার, নির্বাচনি দিনক্ষণ ঘোষণা বিলম্বিত হলো। এখন সামনের দিনগুলোতে নির্বাচনের যে আইডিয়া তার (অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান) সে পর্যন্ত পৌঁছানোর ক্ষেত্রে এসব বাধা, চ্যালেঞ্জগুলো কতটা মোকাবিলা করতে পারবেন? জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন কতটা অবাধ, নিরপেক্ষ করতে পারবেন এটাই বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন কমিশনসহ সিভিল প্রশাসন, পুলিশ, জুডিশিয়ারি এসব সংস্কার দ্রুততম সময়ের মধ্যে করে, অন্তত একটা নির্বাচন দিতে যতটুকু সংস্কার লাগে এগুলোই মনে হয় চ্যালেঞ্জ। আমরা এখনো আশাবাদী, সরকারের প্রতি আস্থা রাখি এবং আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। যাতে তারা আগামী নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করতে পারে।’
তিনশ আসনে প্রার্থী : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩০০ আসনেই প্রার্থী নির্ধারণের কাজ করছে দলটি। অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিলে রাষ্ট্রীয় সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের রোডম্যাপের তাগিদও দিচ্ছেন নেতারা। তিনশ আসনে জামায়াতের প্রার্থী প্রসঙ্গে সেক্রেটারি জেনারেল গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী চূড়ান্ত না, প্রার্থী প্রস্তুত করার প্রক্রিয়া চলমান। নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসবে আমাদের এই প্রক্রিয়া ততটা পরিণত রূপলাভ করবে। আমরা চূড়ান্ত করিনি, কিন্তু প্রার্থী আমাদের আছে। যাচাই-বাছাই ও জরিপ করছি, এ প্রক্রিয়াটা চলছে।’
জোট গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনা তো আছেই। আমাদের ইসলামিক দলগুলোর মধ্যে জোট হতে পারে। আবার অন্যান্য রাজনৈতিক দলের যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে মাঠে ছিল, দেশ ও জাতির স্বার্থে তাদের সঙ্গেও ঐক্যের পরিবেশ হলে আমরা সেখানে ঐক্যবদ্ধ হতে রাজি। আমরা ঐক্যের প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী। জাতীয় ঐক্য এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতেই কেবল বিশেষ করে আগস্টের চেতনা ধারণ করে এটা করা সম্ভব। যারাই ঐক্য করতে আগ্রহী হবে তাদের সঙ্গে ঐক্য করতে আমাদের দ্বিধা নেই।’
আলোচনায় অন্যান্য ইসলামী দল, জোট গঠনের চেষ্টা : পটপরিবর্তনের পর আলোচনায় আসে অন্য ইসলামিক দলগুলোও। যাদের লক্ষ্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এজন্য দলগুলো নির্বাচনি জোট গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে। যদিও ইসলামী দলগুলোর মধ্যে আদর্শগত অমিল থাকায় সেই জোট গঠনে সফল হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান সংশ্লিষ্ট দলগুলো।
এদিকে ফ্যাসিবাদ সরকারবিরোধী আন্দোলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি ইসলামিক দলও অংশ নেন। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের নানা প্রলোভন, অত্যাচার-নিপীড়নের মধ্যেও এসব দল গেল দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় সাধারণ জনগণসহ বিএনপি ও জামায়াতের কাছে এসব দলের কদর বেড়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি দল বিভিন্ন জোটের সঙ্গে মিলে বিএনপির ডাকা যুগপৎ আন্দোলনেও সরব ছিল। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জোটে ভেড়াতে এসব দল ফের আলোচনায় উঠে আসছে। কেউ কেউ এও মনে করেন, ইসলামিক দলগুলোকে জোটে ভেড়াতে সক্ষম হলে ভোটের মাঠের সমীকরণ অনেকটা সহজ হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তথ্যমতে, বছরের শুরুতে নানা অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে দলটির নেতাকর্মীদের। নির্বাচন বয়কটসহ সরকার পতনের দাবিতে রাজধানীতে বেশ কয়েকটি বড় সমাবেশও করেছে দলটি। এসব সমাবেশ থেকে সরকার পতনের ডাক দেওয়া হয়।
আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি তো সারা বছরই থাকে। তারপরও আমরা নতুন করে প্রার্থী সিলেকশনের কাজ করছি। আশা করি, সেটা দ্রুত করে ফেলব। সারা দেশে জেলা কমিটিগুলো পুনর্গঠন হলে আমাদের নতুন নেতৃত্ব আসবে। তারপর নতুন কর্মসূচির দিকে যাব। এখন যেহেতু আন্দোলন-সংগ্রামের কর্মসূচি নেই, সেজন্য শুধু জনমত গঠন করা, মানুষের সামনে দলের বার্তা পৌঁছে দেওয়া। আমাদের নেতাকর্মীরা যাতে ঐক্যবদ্ধ থাকে। সেজন্য জনমত গঠন করাই আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’
জোট গঠনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা আগে থেকেই আমাদের একটা সিদ্ধান্ত আছে। আমরা এবার এককভাবে নির্বাচন করব না। আমরা সব ইসলামী সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবেই নির্বাচন যাতে করা যায় সেজন্য চেষ্টা চালাব। বিশেষ করে আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাব। যাতে কমপক্ষে অভিন্ন প্রার্থী প্রতি আসনে রাখা যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘এবারও ৩০০ আসনে প্রার্থী আছে। তারপরেও যেহেতু অন্যান্য ইসলামী দলের সঙ্গে আমরা নির্বাচনি জোটের চিন্তা আছে, সেক্ষেত্রে যে যে আসনে ভালো অবস্থায় থাকবে সেখানে আমরা তাকে ছাড় দেব।’
জামায়াতের সঙ্গে জোট গ
|
https://www.jugantor.com/jamaat/896445
|
12/29/2024
|
Jugantor
|
Govt critique
|
173
|
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন (বয়কটসহ)
|
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের
|
ঢাকা: আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দিন। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিকাল চারটায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে তিনি এ ঘোষণা দেন।
সমাবেশে শেখ নাসির উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলন দেশের মেহনতী ভূমিহীন, কৃষক, শ্রমিক ও ছাত্র-জনতার অধিকার ও দাবী আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামে সচেষ্ট একটি সংগঠন। রাষ্ট্র পরিচালনার বর্তমান আইন-কানুন ও সংবিধান কাঠামোতে দেশের মেহনতী ভূমিহীন, কৃষক, শ্রমিক ও ছাত্র-জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। তাই, এর সংস্কার প্রয়োজন। এমনকি আমরা বার বার দাবি জানিয়ে আসলেও জাতীয় সংসদে ভূমিহীনদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করণের কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। উল্টো ভূমিদস্যু, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, লুটেরা প্রভাবশালীরা নানা দলের মনোনয়নে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘সাধারণ মানুষ ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার সুযোগ হারিয়েছেন। এ অবস্থায় জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোন মানে হয় না। বিরোধী দলবিহীন আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। তাই, আমরা বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের পক্ষ থেকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কটে দেশের মেহনতী ভূমিহীন কৃষক, শ্রমিক ও ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
সমাবেশে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের সহ সভাপতি আব্দুস সাত্তার, মিজানুর রহমান আকন্দ, সহ সাধারণ সম্পাদক প্রীতম দাস, হায়দার আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম রিংকু।
এর আগে সকালে বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের কার্যালয়ে সংগঠনের নতুন গঠিত কমিটির পরিচিতি ও সাংগঠনিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের প্রধান উপদেষ্টা হাসনাত কাইয়ুমসহ গোটা দেশ থেকে আসা ভূমিহীন আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
|
https://chalamannewyork.com/%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%B6-%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC-%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%B8%E0%A6%A6-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC/
|
12/12/2023
|
Chalaman neywork
|
Govt critique
|
174
|
পেনশন সংস্কার বিল
|
সার্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে সরকারের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য
|
"সর্বজনীন পেনশন স্কিম 'প্রত্যয়' নিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য ও ব্যাখ্যা দিয়েছে সরকার। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইনে ৬০ বছর বয়স থেকে পেনশন পাওয়ার কথা বলা আছে। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অবসরে যান ৬৫ বছর বয়সে। এ জন্য আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন করবে সরকার।
gnewsদৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
মঙ্গলবার (২ জুলাই) ‘প্রত্যয় সম্পর্কে কিছু বিষয়ে অধিকতর স্পষ্টিকরণ’ শীর্ষক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল সোমবার (১ জুলাই) থেকে ‘প্রত্যয়’ যাত্রা শুরু করেছে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে একটি টেকসই পেনশন ব্যবস্থায় আনার জন্যই এই কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। প্রত্যয় স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত ও তার অঙ্গসংগঠনের প্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের জন্য প্রযোজ্য। ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত যেসব শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরিরত, তারা আগের মতোই পেনশন–সুবিধা পাবেন। কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদনের পর নিজ বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে একই পদে বা উচ্চতর কোনো পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হলে তিনি সার্ভিস প্রোটেকশন ও পে প্রোটেকশন প্রাপ্ত হন বলে এটিকে নতুন নিয়োগ হিসেবে গণ্য করা হয় না। সে ক্ষেত্রে তাদের বিদ্যমান পেনশন সুবিধার আওতায় থাকার সুযোগ থাকবে। তাদের অর্জিত ছুটি প্রাপ্যতার ভিত্তিতে দেওয়া হয় বলে ছুটি জমা থাকা সাপেক্ষে তা বহাল থাকবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলামের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আনফান্ডেড ডিফাইন্ড বেনিফিট পদ্ধতির পেনশন ব্যবস্থায় সরকারের আর্থিক সংশ্লেষ ক্রমাগত বাড়ছে। এটি দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই ব্যবস্থা নয়। অন্যদিকে ফান্ডেড কন্ট্রিবিউটরি পেনশন ব্যবস্থায় কর্মীদের চাঁদা এবং বিনিয়োগের মুনাফার ভিত্তিতে একটি তহবিল গঠিত হবে। ফলে এটি দীর্ঘ মেয়াদে একটি টেকসই পেনশন ব্যবস্থা। নতুন পেনশন ব্যবস্থায় ধীরে ধীরে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে টেকসই সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর মধ্যে আনা সম্ভব হবে।
"
|
https://www.ittefaq.com.bd/692250/%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A8-%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A6%B6%E0%A6%A8-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%AE-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%B8%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%86%E0%A6%A8%E0%A7%81%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%A0%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%95
|
7/2/2024
|
Daily Ittefaq
|
Govt leaning
|
175
|
পেনশন সংস্কার বিল
|
সার্বজনীন পেনশনে নতুন স্কিম, কী লাভ, কী ক্ষতি?
|
সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় নতুন স্কিম আনলো সরকার। এর ফলে দেশের চারশোর বেশি স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ কর্মীদের বাধ্যতামূলকভাবে এই কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত হতে হবে।
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ বলছে, এর ফলে এ সকল প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবসরের পর মাসিক ভাতা পাবেন।
নতুন এই পরিবর্তন আনতে কর্তৃপক্ষ প্রত্যয় নামে নতুন একটি স্কিম যুক্ত করেছে সাত মাস আগে দেশে প্রথমবারের মতো চালু হওয়া সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায়।
পাশাপাশি, আগে প্রভিডেন্ট ফান্ডে সংস্থার প্রদানকৃত অর্থ কর্মচারীর 'কন্ট্রিবিউশন' এর চেয়ে কম হলেও প্রত্যয় স্কিমে প্রতিষ্ঠানকে কর্মীর সমপরিমাণ টাকা জমা দিতে হবে এমন শর্ত থাকায় পেনশনার অধিক লাভবান হবেন।
তবে এই স্কিমে বর্তমান ব্যবস্থার মতো অবসরের পর এককালীন অর্থ পাওয়া যাবে না এবং সরকারি কর্মকর্তাদের তুলনায় বৈষম্যের শিকার হবেন এমন যুক্তি দেখিয়ে এর বিরোধিতা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
|
https://www.bbc.com/bengali/articles/c51eqxgey0qo
|
3/21/2024
|
BBC Bangla
|
Neutral
|
176
|
পেনশন সংস্কার বিল
|
স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি কর্মচারীদের পেনশনে কেমন পরিবর্তন আসবে?
|
বাংলাদেশের চলতি অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাধ্যতামূলকভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় নিয়ে আসার ঘোষণা দেয়ার পর এনিয়ে নানা আলোচনা হচ্ছে।
বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থার সাথে এর পার্থক্য কতটা এবং তাতে নতুন কর্মকর্তা-কর্মচাীদের সুবিধা কোন হেরফের হবে কী না তা নিয়েও চলছে নানা বিশ্লেষণ।
চলতি বছরের পহেলা জুলাই থেকে স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন সংস্থার নতুন কর্মকর্তা কর্মচারীদের এ স্কিমে নিয়ে আসার পাশাপাশি ২০২৫ সালের পহেলা জুলাই থেকে অন্য সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগ প্রাপ্তদের এ স্কিমে নিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
এর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এবং অন্যান্য কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা নতুন পেনশন স্কিমকে বৈষম্যমূলক আখ্যায়িত করে প্রতিবাদ করেছেন। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা এর বিরুদ্ধে কর্মবিরতি সহ নানা কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মনে করছেন, প্রস্তাবিত স্কিম চালু হলে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে অবসরগ্রহণকারী ব্যক্তিদের অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধা অনেক কমে যাবে।
|
https://www.bbc.com/bengali/articles/cj55p92y6lpo
|
6/15/2024
|
BBC Bangla
|
Neutral
|
177
|
পেনশন সংস্কার বিল
|
রাষ্ট্রায়ত্ত–স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা আর সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য আসছে দুটি পেনশন কর্মসূচি
|
প্রত্যয় চালু হবে আগামী ১ জুলাই; আর সেবক চালু হবে ২০২৫ সালের ১ জুলাই। ১০ মাসে চার পেনশন কর্মসূচির গ্রাহক তিন লাখ ছাড়িয়েছে। আসছে আরও দুটি সর্বজনীন পেনশন স্কিম বা কর্মসূচি। একটি সরকারি কর্মচারীদের জন্য, আপাতত যেটির নাম রাখা হয়েছে ‘সেবক’। আরেকটি কর্মসূচি রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত বা সমজাতীয় সংস্থাগুলোর জন্য। এর নাম ‘প্রত্যয়’। প্রত্যয় চালু করার যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ। আর সেবক চালুর কাজ শুরু হয়নি এখনো। এটি চালু হবে ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে।
আগামী ১ জুলাই থেকে চালু হতে যাওয়া ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচিতে বাধ্যতামূলকভাবে যুক্ত হবেন রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত বা সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সব রাষ্ট্রমালিকানাধীন ও সরকারি ব্যাংক, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সব কমিশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা–কর্মচারী প্রত্যয়ের আওতাভুক্ত হবেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ৬ জুন বাজেট বক্তব্যে সরকারি চাকরিতে নতুন নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির আওতাভুক্ত করার ঘোষণা দেন। বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘পেনশন সুবিধা পান এমন সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের আমরা সর্বজনীন পেনশন–ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসব। স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের ইতিমধ্যে এ ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করা হয়েছে। শিগগির অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের জন্যও আমরা এ ব্যবস্থা ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে চালু করব।’
প্রগতি, সমতা, প্রবাস ও সুরক্ষা—এই চার কর্মসূচি নিয়ে সর্বজনীন পেনশন চালু হয় গত বছরের ১৭ আগস্ট। ১৩ জুন পর্যন্ত এসব কর্মসূচির আওতায় নিবন্ধিত গ্রাহকের সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়েছে।
পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাংশের শিক্ষকেরা বৈষম্যের কথা বলে প্রত্যয় কর্মসূচি চালুর বিরোধিতা করে আসছিলেন। এখন মনে হয়, সেই বিরোধিতা আর করবেন না তাঁরা। কারণ, ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্যও সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি বাধ্যতামূলক হচ্ছে।’
তবে প্রত্যয় বাধ্যতামূলক করার জন্য স্বশাসিত বা সমজাতীয় সংস্থার বর্তমান কর্মীরা যে প্রদেয় ভবিষ্য তহবিল (সিপিএফ) সুবিধা পাচ্ছেন, আইন সংশোধন করে তা বাতিল করতে হবে। সে কাজে হাত দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।
পেনশন কর্তৃপক্ষ বলছে, বিদ্যমান ব্যবস্থায় খুব কমসংখ্যক স্বশাসিত বা সমজাতীয় সংস্থায় পেনশন কর্মসূচি চালু আছে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই সিপিএফ ব্যবস্থা প্রযোজ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি সংস্থার ব্যতিক্রম উদাহরণ ছাড়া এ ব্যবস্থায় চাকরি শেষে পেনশন পান না কেউ, পান এককালীন আনুতোষিক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে তুলনা করতে আমরা যাচ্ছি না। আমরা সুবিধাই পাই সামান্য, তা–ও আবার কর্তন করা হচ্ছে। আমরা অবসরে যাই ৬৫ বছর বয়সে, আর সরকারি কর্মচারীরা যান ৫৯-৬০ বছর বয়সে। আমাদের জন্য প্রত্যয় বাধ্যতামূলক করা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের পরিপন্থী। এ ব্যবস্থা চালু করা হলে আমাদের সর্বাত্মক আন্দোলনে যেতেই হবে।’
প্রত্যয় যাঁদের জন্য প্রযোজ্য
অর্থ বিভাগের মতে, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান অর্থ—৫০ শতাংশের বেশি সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত কোনো ব্যবসায় উদ্যোগ, কোম্পানি, ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান অথবা শিল্প-বাণিজ্য–সম্পর্কিত বা অনুরূপ কোনো প্রতিষ্ঠান। আর স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হচ্ছে আইনের মাধ্যমে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রয়েছে কর্তৃপক্ষ, করপোরেশন, কমিশন, সংস্থা, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ইনস্টিটিউশন, কাউন্সিল, একাডেমি, ট্রাস্ট, বোর্ড, ফাউন্ডেশন ইত্যাদি।
প্রত্যয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য কর্মচারীদের মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা—এই দুইয়ের মধ্যে যেটা কম, তা তাঁদের বেতন থেকে কাটা হবে এবং সমপরিমাণ অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা দেবে। এরপর উভয় অর্থ জমা হবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের কাছে। যাঁদের ন্যূনতম ১০ বছর চাকরি আছে, তাঁরা আগ্রহী হলে প্রত্যয় কর্মসূচির আওতায় আসতে পারবেন। আবার ১০ বছর চাকরি থাকা বিদ্যমান চাকরিজীবীরা বিদ্যমান ব্যবস্থায়ও থেকে যেতে পারবেন।
প্রত্যয় চালু হলেও বিদ্যমান কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে না। বিদ্যমান সিপিএফ ব্যবস্থায় কর্মচারী মূল বেতনের ১০ শতাংশ এবং প্রতিষ্ঠান মূল বেতনের ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ দেয়। প্রত্যয় কর্মসূচিতে প্রতিষ্ঠান দেবে মূল বেতনের সমান অর্থাৎ ১০ শতাংশ। যদি কোনো কর্মচারী ৩০ বছর চাঁদা দেন, তাহলে অবসরের পর অর্থাৎ ৬০ বছর বয়স থেকে ওই কর্মচারী মাসে ৬২ হাজার ৩৩০ টাকা করে পেনশন পাবেন।
যেসব সুবিধার কথা বলা হচ্ছে
পেনশন কর্তৃপক্ষ বলছে, ৩০ বছর ধরে মাসিক ২ হাজার ৫০০ টাকা হারে চাঁদা দিলে একজন কর্মচারীর নিজ বেতন থেকে চাঁদা জমা হবে ৯ লাখ টাকা; আর সংশ্লিষ্ট সংস্থা জমা করবে আরও ৯ লাখ টাকা। ওই কর্মচারী যদি ৭৫ বছর বয়সে মারা যান, তাহলে ১৫ বছরে পেনশন পাবেন ১ কোটি ১২ লাখ ১৯ হাজার ৪০০ টাকা, যা সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর নিজ জমার ১২ দশমিক ৪৭ গুণ। পেনশনের সুবিধা আজীবন মিলবে বলে এ অঙ্ক আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, সর্বজনীন পেনশন যদি সর্বজনীন হয়, তাহলে কোনো কথা নেই; কিন্তু দেখতে হবে যে সত্যিই তা সর্বজনীন হচ্ছে কি না। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা কিন্তু বলছেন তাঁদের বিদ্যমান সুবিধা কর্তন করা হচ্ছে। এটা উচিত নয়।
|
https://www.prothomalo.com/business/economics/gifb8wdv4n
|
6/20/2024
|
Prothom Alo
|
Neutral
|
178
|
পেনশন সংস্কার বিল
|
প্রত্যয়’ স্কিম নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিল পেনশন কর্তৃপক্ষ
|
গতকাল ১ জুলাই থেকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের 'প্রত্যয়' স্কিম চালু হয়েছে। তবে এই স্কিম নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা ও সমালোচনা তৈরি হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে প্রত্যয় স্কিম নিয়ে কিছু ব্যাখ্যা দিয়েছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পেনশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে একটি টেকসই পেনশন ব্যবস্থায় আনতে অন্যান্যদের পাশাপাশি স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত ও তার অঙ্গসংগঠনের প্রতিষ্ঠানের জন্য 'প্রত্যয়' স্কিম প্রবর্তন করা হয়েছে
প্রত্যয় স্কিম নিয়ে যেসব বিষয় স্পষ্ট করেছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ
১. এ বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত যেসব শিক্ষক/কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরিরত আছেন, তারা আগের মতো সব পেনশন সুবিধা পাবেন।
২. বর্তমানে সরকারি পেনশনে আনফান্ডেট ডিফাইন্ড বেনিফিট সিস্টেমের পেনশন ব্যবস্থা প্রচলিত আছে। ফলে, পেনশনের যাবতীয় ব্যয় প্রয়োজন অনুযায়ী প্রদত্ত বাজেট বরাদ্দ থেকে মেটানো হয়। তবে ১ জুলাই থেকে ফান্ডেড ডিফাইন্ড কনট্রিবিউটরি সিস্টেমের পেনশন ব্যবস্থা চালু হবে, তাই বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বেতন থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণে মাসিক জমার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রত্যয় স্কিমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর পাওয়া মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৫ (পাঁচ) হাজার টাকা যা কম হয় তা কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বেতন থেকে কাটবে এবং সমপরিমাণ অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা প্রদান করবে। তারপর উভয় অর্থ ওই কর্মকর্তা/কর্মচারীর কর্পাস অ্যাকাউন্টে জমা হবে।
৩. আনফান্ডেট ডিফাইন্ড বেনিফিট সিস্টেমের পেনশন ব্যবস্থায় সরকারের আর্থিক সংশ্লেষ ক্রমাগত বৃদ্ধি পায় যা দীর্ঘমেয়াদে কোনক্রমেই টেকসই ব্যবস্থা নয়। অন্যদিকে ফান্ডেড কনট্রিবিউটরি পেনশন সিস্টেমে প্রাপ্ত কন্ট্রিবিউশন ও বিনিয়োগ মুনাফার ভিত্তিতে একটি ফান্ড গঠিত হবে। তাই এটি দীর্ঘমেয়াদে একটি টেকসই পেনশন ব্যবস্থা। উল্লেখ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও ২০০৪ সাল থেকে ফান্ডেড কন্ট্রিবিউটর পেনশন ব্যবস্থা চালু আছে।
৪. নতুন পেনশন ব্যবস্থাপনা প্রবর্তনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে সব টেকসই সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর মধ্যে আনা সম্ভব হবে। এতে ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ইনক্লুসিভ ডেভলপমেন্ট নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
৫. কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদনের পর নিজ বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে একই পদে বা উচ্চতর কোনো পদে নিয়োগ পেলে তিনি সার্ভিস প্রটেকশন ও পে প্রটেকশন প্রাপ্ত হন, তাই এটিকে নতুন নিয়োগ হিসেবে গণ্য করা হয় না। সেক্ষেত্রে তার বিদ্যমান পেনশন সুবিধার আওতায় থাকার সুযোগ থাকবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও কর্মচারী, যারা ২০২৪ সালের ১ জুলাই ও তার পরবর্তী সময়ে নতুন নিয়োগ পাবেন কেবলমাত্র তারা প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হবেন।
৬. সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইনে ৬০ বছর বয়স থেকে পেনশন প্রাপ্তির উল্লেখ থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ৬৫ বছর থেকে অবসরে যাবেন। তাই ৬৫ বছর থেকে আজীবন পেনশন প্রাপ্ত হবেন। এক্ষেত্রে সরকার আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন করবে।
৭. লাম্পগ্রান্ট ও পিআরএল অর্জিত ছুটি প্রাপ্যতার ভিত্তিতে প্রদান করা হয়, তাই ছুটি জমা থাকা সাপেক্ষে তা বহাল থাকবে।
৮. কন্ট্রিবিউটরি পেনশন সিস্টেমে অংশগ্রহণকারীর সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এককালীন নয় বরং মাসিক পেনশনের যুক্তিসংগত পরিমাণ নির্ধারণ করাই অগ্রগণ্য, তাই এক্ষেত্রে আনুতোষিকের ব্যবস্থা রাখা হয়নি বরং বিদ্যমান মাসিক পেনশনের কয়েকগুণ বেশি মাসিক পেনশন প্রদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রত্যয় স্কিমে মাসিক পাঁচ হাজার টাকা বেতন থেকে কাটা হলেও একই পরিমাণ অর্থ প্রতিষ্ঠান জমা দিলে ৩০ বছর পর একজন পেনশনার প্রতি মাসে ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬০ টাকা হারে আজীবন পেনশন পাবেন। তার নিজ আয়ের মোট জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ১৮ লাখ টাকা এবং তিনি যদি ১৫ বছর ধরে পেনশন পান সেক্ষেত্রে তার মোট প্রাপ্তি হবে ২ কোটি ২৪ লক্ষ ৩৮ হাজার ৮০০ টাকা, যা তার জমার প্রায় ১২ দশমিক ৫ গুণ। পেনশনার পেনশনে যাওয়ার পর ৩০ বছর জীবিত থাকলে তার জমার প্রায় ২৫ গুণ অর্থ পেনশন পাবেন।
৯. বিদ্যমান ব্যবস্থায় পেনশনার আজীবন পেনশন পান। তার অবর্তমানে পেশনারের স্পাউজ ও প্রতিবন্ধী সন্তান আজীবন পেনশন পান। নতুন পেনশন ব্যবস্থায়ও পেনশনার আজীবন পেনশন পাবেন। পেনশনারের অবর্তমানে তার স্পাউজ বা নমিনি পেনশনারের পেনশন শুরুর তারিখ থেকে ১৫ বছর হিসাবে যে সময় অবশিষ্ট থাকবে সে পর্যন্ত পেনশন পাবেন। যেমন- একজন পেনশনার অবসরে যাওয়ার পর পেনশন ভোগরত অবস্থায় পাঁচ বছর পেনশন পেয়ে তারপর মারা গেলেন। এক্ষেত্রে তার স্পাউজ বা নমিনি আরও ১০ বছর পেনশন পাবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে ৪০৩টি স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান আছে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২০টির মতো প্রতিষ্ঠানে পেনশন ব্যবস্থা চালু আছে। অবশিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো কন্ট্রিবিউটার প্রভিডেন্ট ফান্ডের (সিপিএফ) আওতাধীন। সিপিএফ সুবিধার আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মচারীরা এককালীন আনুতোষিক প্রাপ্ত হয়ে থাকেন, কোনো পেনশন পান না।
এছাড়া সরকারি, স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ছাড়া দেশের বিপুল সংখ্যক জনসাধারণ একটি সুগঠিত পেনশনের আওতা বহির্ভূত থাকায় সরকার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিমের মাধ্যমে একটি সুগঠিত পেনশন কাঠামো গড়ে তুলতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রবর্তন করেছে। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ এর ১৪ (২) ধারা অনুযায়ী, দেশের সকল মানুষের জন্য পেনশন স্কিম প্রবর্তনের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।
পেনশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে ২০২৪ সালের ১ জুলাই বা তার পরবর্তীতে যোগ দেওয়া সকল কর্মচারী বাধ্যতামূলকভাবে প্রত্যয় স্কিমের আওতাভুক্ত হবেন। অর্থমন্ত্রী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, ২০২৫ সালের ১ জুলাই ২০২৫ বা তার পরবর্তীতে যোগ দেওয়া সরকারি কর্মচারীরাও সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আসবেন।
|
https://bangla.thedailystar.net/economy/news-594451
|
9/3/2024
|
The Daily Star
|
Neutral
|
179
|
সুপ্রিম কোর্ট ৫৬% কোটা পুনর্বহাল
|
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে
|
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে। গতকাল বুধবার আন্দোলনকারীরা ঢাকার শাহবাগ মোড় দেড় ঘণ্টার মতো অবরোধ করে রাখেন।
একই দাবিতে এ দিন আরও ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও অবরোধ করেছেন। এর মধ্যে ময়মনসিংহে রেললাইনে ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার মোড় সড়ক অবরোধ করেন। বেলা তিনটা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে এ কর্মসূচি শুরু হয়। আজ বৃহস্পতিবার সরকারি চাকরিতে কোটার পরিপত্র বাতিল–সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উচ্চ আদালতে শুনানির জন্য দিন ধার্য আছে। কোটা বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজও শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি রয়েছে। তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জমায়েত হবেন। জনপ্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আদালতের আদেশ কী হয়, সেটা দেখে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
যেভাবে কোটা এল
সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি নতুন নয়। স্বাধীনতার পর নির্বাহী আদেশে সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি চালু করা হয়। ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত ২০ শতাংশ পদ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ করা হতো। বাকি পদ কোটায় নিয়োগ হতো। ১৯৭৬ সালে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ ৪০ শতাংশে বাড়ানো হয়। পরে মেধায় নিয়োগের হার আরও কিছু বাড়ানো হয়।
২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা (পরে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনি) কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, ১০ শতাংশ জেলা কোটা এবং ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা। এ ছাড়া ১ শতাংশ পদ প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের দিয়ে পূরণের নিয়ম চালু হয়। ওই বছর কোটা সংস্কার করে ১০ শতাংশ করার দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনে নেমেছিলেন। আন্দোলনের মুখে একপর্যায়ে সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে পুরো কোটাব্যবস্থাই বাতিল করে। ওই বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রিট করেন। ৫ জুন এই রিটের রায়ে পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এর পর থেকে আবার আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’–এর ব্যানারে ১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।
আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে আরও রয়েছে পরবর্তী সময়ে সরকার কোটাব্যবস্থা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইলে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রেখে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া; সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা; চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করা; কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।
শাহবাগ অবরোধ করে বিক্ষোভ
দাবি আদায়ে গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। এই কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত রাজধানীর সাত সরকারি কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’–এর ব্যানারে বের হওয়া মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দোয়েল চত্বর ও সুপ্রিম কোর্টের সামনে দিয়ে শাহবাগে এসে থামে বিকেল পৌনে চারটার দিকে। তাঁরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন। শাহবাগ মোড়ে আগে থেকেই বিপুলসংখ্যক পুলিশের সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বিকেল ৫টা ১২ মিনিট পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টা তাঁরা শাহবাগ মোড়ের সড়কে অবস্থান করেন।
শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে দাবির পক্ষে চাকরিতে কোটাবিরোধী নানা স্লোগান দেন।
স্লোগানের ফাঁকে প্রতিবাদী গানও পরিবেশন করা হয়, পাশাপাশি চলে বক্তব্যও। আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র নাহিদ ইসলাম ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সারজিস আলম বক্তব্য দেন। গতকাল বিক্ষোভে অংশ নিয়ে একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান, একজন ছাত্রী ও একজন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আন্দোলনে সংহতি জানিয়েও বক্তব্য দেন।
বিকেল ৫টা ১২ মিনিটে শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছেড়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। রাস্তা ছাড়ার আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আগামীকাল (আজ) কোটা বাতিলের পরিপত্র বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের যে শুনানি রয়েছে, তার রায় যেন শিক্ষার্থীদের পক্ষে আসে। তাঁরা বেলা ১১টায় আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে জমায়েত হবেন। এ সময় নাহিদের পাশে থাকা আন্দোলনের আরেক নেতা সারজিস আলম বলেন, আপিলের শুনানি চলা পর্যন্ত তাঁরা অপেক্ষা করবেন।
সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ
প্রথম আলোর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল, মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বেলা সোয়া তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর বিকেল পাঁচটার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন আন্দোলনকারীরা।
প্রথম আলোর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা পৌনে একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট এলাকায় অবরোধ শুরু হয়। চলে বেলা দেড়টা পর্যন্ত। এ সময় এ সড়কে দীর্ঘ যানজট দেখা দেয়। চাকরিতে মেধাভিত্তিক নিয়োগ বহাল রাখার দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়’–এর ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
বরিশাল থেকে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গতকাল বেলা সোয়া ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক ধরে অবরোধ শুরু করেন। এই কর্মসূচির কারণে অনেক যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহনে আটকে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ
প্রথম আলোর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সরকারি চাকরির নিয়োগে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা গতকাল দুই দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল জব্বার মোড়ে রেললাইনে ট্রেন অবরোধ করে অবস্থান নেন। ওই সময় এক ঘণ্টা ট্রেন অবরোধ করে রাখেন তাঁরা।
দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে সমবেত হন তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কে আর মার্কেট হয়ে মুক্তমঞ্চে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে মুক্তমঞ্চের সামনে একটি প্রতিবাদ সভা করেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদ সভা শেষে সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল জব্বার মোড় পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি আবদুল জব্বার মোড়ে পৌঁছালে ওই সময় ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেন আটকে রেখে মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। বেলা ১টা ২০ মিনিট থেকে ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত এক ঘণ্টা রেললাইন অবরোধ করে রাখার পর ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
আন্দোলন চলাকালে ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী মাশশারাত মালিহা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ, চাকরিতে নিয়োগ ও অন্য সব প্রতিযোগিতার জায়গায় আমরা মেধার শতভাগ মূল্যায়ন চাই।’
|
https://www.prothomalo.com/bangladesh/xy5ooexy1c
|
7/3/2024
|
Prothom Alo
|
Neutral
|
180
|
সুপ্রিম কোর্ট ৫৬% কোটা পুনর্বহাল
|
হাইকোর্টের রায়ে সরকারি চাকরিতে আবার ফিরল মুক্তিযোদ্ধা কোটা
|
বাংলাদেশে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করার রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
সরকারি নিয়োগের দুই শ্রেণিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল, সেটি অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছে উচ্চ আদালত।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ সাইফুজ্জামান বিবিসি বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। তবে, ওইবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাপক কোটা বিরোধী আন্দোলন হয়।
তার পরিপ্রেক্ষিতে নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেড পর্যন্ত চাকরির ক্ষেত্রে কোটা সুবিধা পুরোপুরি বাতিল করে দেয় সরকার।
|
https://www.bbc.com/bengali/articles/cqvvjjn28pqo
|
6/5/2025
|
BBC Bangla
|
Neutral
|
181
|
সুপ্রিম কোর্ট ৫৬% কোটা পুনর্বহাল
|
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলন: সামান্য কিছু কথা
|
“আজ আমি সারা নিশি থাকব জেগে,
ঘরের আলো সব আঁধার করে।
তৈরি রাখব আতর গোলাপ
এদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে।
ওরা আসবে চুপি চুপি যাঁরা দেশটাকে – “
প্রথমেই পুলিশ মিলিটারির গুলিতে যে দেড় শতাধিক আন্দোলনকারী ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে, ছাত্র আন্দোলনকে সামনে রেখে দুই ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি – বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলামে – হেফাজতে ইসলাম জোট ও আওয়ামী লীগের ভয়ানক যুদ্ধে যাদের মৃত্যু হয়েছে এবং যেসমস্ত সাধারণ মানুষের দুপক্ষের যুদ্ধের মধ্যে পড়ে মৃত্যু হয়েছে তাদের প্রতি আমাদের গভীর শোক জানাচ্ছি।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আন্দোলন বললাম আরও বেশি করে এই জন্যে যে বাংলাদেশ জঙ্গী ছাত্র আন্দোলনের জন্যে প্রসিদ্ধ। ভাষা আন্দোলন (১৯৫২) থেকে স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তি যুদ্ধ (১৯৬৯ – ‘৭১) থেকে স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলন (১৯৯০) থেকে শাহবাগ আন্দোলন (২০১৩) থেকে বর্তমান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন (২০২৪) – প্রতিটিতেই বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলির ছাত্ররা ছিলেন পুরোভাগে। তারা অত্যন্ত স্পর্শ কাতর। আর বাংলাদেশে ছাত্র সমাজ যে মর্যাদা পান ওখানে গিয়ে নিজের চোখে দেখা এবং সেটা সারা বিশ্বে বিরল। তাই বর্তমান আন্তর্জাতিক – জাতীয় রাজনৈতিক – অর্থনৈতিক টালমাটালে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের মধ্যে থেকেই আলোড়নটি ঘটল।
বাহ্যিকভাবে এটি কর্মক্ষেত্রে ৫৬% কোটার বিরুদ্ধে। ১৯৭২ সালে চালু হওয়া এই সংরক্ষণ নীতিতে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চাকরি ক্ষেত্রে ৩০% সংরক্ষণ ছিল মুক্তিযোদ্ধা, তাঁদের পরিবার ও বংশধর দের জন্য। ১০% সংরক্ষণ ছিল মহিলাদের জন্য, ১০% ছিল পশ্চাদপদ জেলাগুলির জন্য, ৫% জনজাতিদের এবং ১% প্রতিবন্ধীদের জন্য।
এর বিরুদ্ধে ২০১৩ ও ২০১৮ তে শক্তিশালী আন্দোলন হয়। হাসিনা সরকার ২০১৮ তে সংরক্ষণ তুলে নিয়েও হাই কোর্টের নির্দেশে সংরক্ষণ পুনর্বহাল করে। যাইহোক, এতদিন শাসক দল নানা কায়দায় এই ক্ষোভটি সামলে আসতে পারলেও সাম্প্রতিক বিফল চিন সফর থেকে ফিরেই বিরোধীদের সমর্থনে ছাত্রদের সরকারবিরোধী জঙ্গী আন্দোলন ও দেশজোড়া অবরোধ দেখে মেজাজ হারিয়ে শেখ হাসিনার একটি উক্তি আন্দোলনটিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যায়। আন্দোলনের অন্যতম শ্লোগান হয়ে ওঠে “চাইতে গেলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার।” শেষে গুলি চালিয়ে, কার্ফু জারি করে, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, মিলিটারি নামিয়ে, হিংসা দিয়ে দমন করতে হয়।
১০ জুলাই থেকে বিএনপি র ছাত্র সংগঠন ছাত্র দলের নেতৃত্বে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্র বিক্ষোভ শুরু হয়। এদের এবং জামায়েতের ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবির, আনসারুল্লা বাংলা টিম প্রমুখের সঙ্গে শাসক আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লীগের সংঘর্ষ বেধে যায়। দেশজুড়ে হিংসাত্মক ঘটনা, শাসক দলের সমর্থকদের আক্রমণ, সরকারি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ইত্যাদি চলতে থাকে। নরসিংদী-তে জেল ভেঙ্গে কয়েদিদের সাথে জেহাদীদের ছিনিয়ে নেওয়া হয়। বিপরীতে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন চলে। দেশকে সম্পূর্ণ স্তব্ধ করে দিয়ে, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রেখে, আন্দোলনকারীদের হত্যা ও গ্রেফতার করা হয়। ফাঁকা রাস্তায় ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া গাড়িকে টহল দিতে দেখা যায়। একদিকে যখন বিরোধীদের ব্যারিকেড ভাঙ্গা ও গ্রেফতারি চলতে থাকে, পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের একাংশের সাথে সমঝোতার আলোচনা শুরু হয়।
তীব্রতা কমলেও আন্দোলন এখনও চলছে, সুপ্রিম কোর্টকে দিয়ে সমগ্র কোটা ৫৬% থেকে ৪৯% কমিয়ে ৭% করে দিলেও বাংলাদেশ এখনও ফুটছে। নতুন ব্যবস্থায় মুক্তি যোদ্ধাদের কোটা ৩০% থেকে কমে ৫% হয়েছে, মহিলা ও পশ্চাদপদ জেলার সংরক্ষণ উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং জনজাতিদের কোটা ৫% এর থেকে ১% এরও কম হয়েছে এবং এটির মধ্যেই প্রতিবন্ধী ও রূপান্তরকামীদেরও ধরা হয়েছে। থমথমে বাংলাদেশ হয়তো ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে কিন্তু রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজ জীবনে থেকে যাওয়া প্রবল অস্থিরতা আগামী দিনে কোন ইস্যুতে আবার বিস্ফোরণ ঘটাবে না এমনটা বলার কোন জায়গা নেই। এর সঙ্গে সঙ্গে ভারতের মোদীর মত বাংলাদেশে হাসিনার ভবিষ্যৎও অনিশ্চয়তাপূর্ণ হয়ে উঠল।
এই আন্দোলনতটি ঘটার বহুমাত্রিক দিক আছে। সময়াভাবে সংক্ষেপে কয়েকটিমাত্র দিক ছুঁয়ে যাওয়া হয়েছে এখানে:
(১) সমাজের আর্থিক সংকট এবং যুবসমাজের কর্ম সংস্থানের অভাব বাংলাদেশ কে গ্রাস করেছে। ভারতের মতই ঢাকা- চট্টগ্রাম মহানগরী কেন্দ্রিক কিছু অতি ধনী পারিবারিক পুঁজিবাদী ব্যবসায়ী – দালাল (Crony Capitalist) বাংলাদেশের মূল ক্ষমতাধারী, সব সম্পদ ও বিদেশী সাহায্য লুটেপুটে নিচ্ছে এবং পাশ্চাত্যে, আরব দেশগুলিতে, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে বিপুল বিত্ত ও সম্পদের এক বড় অংশ পাচার করে চলেছে। ফলে সমাজে ভারতের মত আর্থিক বৈষম্য প্রকট এবং দেশ সংকটে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই প্রভাবশালী ক্রনি দের প্রশ্রয় দিচ্ছেন। আর এদের অনুগত মাফিয়া – অপরাধীদেরও দলে স্থান দিয়েছেন যাদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ নাজেহাল।
২) ২০ বছর প্রধানমন্ত্রী এবং টানা চারবার ক্ষমতায় থেকে হাসিনা ও তার আওয়ামী লীগের সমাজের প্রতি অবহেলা, বিচ্ছিন্নতা ও ঔদ্ধত্য বেড়ে গেছে। বিপরীতে বহু বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে বিএনপি ক্ষমতায় আসার জন্যে মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং দেশব্যাপী তীব্র সরকার বিরোধিতাকে কাজে লাগাচ্ছে।
৩) আন্তর্জাতিক ভূ রাজনৈতিক কৌশলের অঙ্গ হিসেবে সমালোচনা সহ পাশ্চাত্য হাসিনাকে ঘুরপথে সমর্থন করছে। তিন দিক ঘিরে থাকা ভারত হাসিনাকে প্রথম থেকে সমর্থন করে আসছে। চিন ঘুরপথে বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটকে সমর্থন করছে। পাকিস্তান ও আরব দেশগুলি সরাসরি বা প্রচ্ছন্নভাবে বিরোধীদের সমর্থন করছে। তাই সরকার বিরোধীদের এত ভারত বিদ্বেষ। কেন্দ্রে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি আসায় আরও ভারত বিরোধিতা বেড়েছে। চিন ও পাকিস্তান তাতে যতটা পারে ইন্ধন যোগাচ্ছে।
৪) নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদীগুলি শুকিয়ে আসায় এবং গঙ্গা, তিস্তা, মনু, মুহুরি, খোয়াই, গোমতী, ধরলা, দুধকুমার ও কুশিয়ারা নদীর জল বিবাদকে নিয়ে ভারতকে দায়ী ও হাসিনাকে ব্যর্থ বলার প্রচার তুঙ্গে। এর সঙ্গে ভারত থেকে কম ফলনের জন্য পিঁয়াজ রপ্তানি বন্ধকে কেন্দ্র করে ভারত বিদ্বেষ বাড়ানো হয়েছে।
৫) ধর্ম নির্দিষ্ট ভাবে ইসলাম ধর্ম। এটি একটি প্রধান বিষয়। বাংলাদেশে ফরাজি, সালাফী, ওয়াহাবী সুন্নী ইসলামের আধিক্য। এরা কট্টর এবং এদের ভুবনে অন্য ধর্ম তো বটেই ইসলামের উদারপন্থাগুলিরও স্থান নেই। তাই সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান এবং জনজাতি, বাউল – ফকির, আহমদিয়া, সুফি প্রমুখরা আক্রান্ত ও অত্যাচারিত। আগেই দেশকে ইসলামী রাষ্ট্র করে ফেলা হয়েছে। তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’-য় যেরকম আছে একদম শিশু বয়েস থেকে গরীব ঘর থেকে নিয়ে গিয়ে মৌলবাদী করে তোলা হয়। পরের পর্ব জেহাদী তৈরি করা। এর জন্যে আরবের অর্থের অভাব নেই। এই অগণ্য মৌলবাদী ও জেহাদী জনসংখ্যা অন্ধ বিএনপি – জামায়েতে – হেফাজতে সমর্থক এবং উদারপন্থা, হিন্দু, আওয়ামী লীগ ও ভারত বিদ্বেষী।
৬) দেশভাগ ও স্বাধীনতার সময় রক্ত বন্যার মধ্যে পাঞ্জাব থেকে শিখ ও হিন্দু পাঞ্জাবিরা ভারতের পাঞ্জাবে এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাবে মুসলমান পাঞ্জাবিরা চলে যান। ফলে বর্তমান ভারতের ও পাকিস্তানের পাঞ্জাবে সাম্প্রদায়িকতা প্রধান সমস্যা নয়।
বিপরীতে বাংলায় রক্তবন্যার মধ্যে বিপুল দেশান্তরণের মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি মুসলমানরা পশ্চিমবঙ্গে থেকে যান এবং পূর্ব পাকিস্তান ও পরবর্তীতে বাংলাদেশে হিন্দুদের একটি বড় অংশ মূলত গরীব কৃষক দলিত সম্প্রদায়ের হিন্দু বাঙালিরা থেকে যান। তাই বর্তমান বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে ধর্মীয় মৌলবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতা একটি প্রধান বিষয়।
৭) এর উপর মুসলিম লীগের বড় জমিদার ও বড় ব্যবসায়ী নেতৃত্ব দাঙ্গা করার জন্য এবং অন্যান্য দৈহিক পরিশ্রমের কাজের জন্যে বিহার, উত্তর প্রদেশ প্রভৃতি জায়গা থেকে যে পশ্চিমী মুসলমান দের অবিভক্ত ব্রিটিশ বাংলায় নিয়ে এসেছিল তারা ও তাদের বংশধররা ঐতিহ্যগত ভাবে বাংলা ও বাঙ্গালী বিদ্বেষী। তারা ৪৬ সহ বিভিন্ন দাঙ্গায়, ভাষা আন্দোলনে এবং মুক্তিযুদ্ধে মুসলিম লীগ ও পাকিস্তানের সঙ্গে ছিল। এদের একাংশ রাজাকার, আল বদর, আল সাম ইত্যাদি। বর্তমানেও এরা চরম ভারত বিদ্বেষী, পাকিস্তান সমর্থক এবং বিরোধী জোটের সমর্থনে।
৮) ভারত ও পশ্চিমবঙ্গের মত বাংলাদেশেও কোন প্রগতিশীল গণ আন্দোলনের অনুপস্থিতি যা কয়েক দশক আগেও শহীদ জননী জাহানারা ইমামের (১৯২৯ – ১৯৯৪) নেতৃত্বে পরিচালিত ছিল। ‘ ঘাতক – দালাল নির্মূল কমিটি ‘ খুবই সক্রিয় ছিল একসময়। দুই দেশেই প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, কমিউনিস্ট ও সমাজবাদী পার্টি গুলি শত বিভক্ত এবং খুবই দূর্বল ও প্রান্তিক হয়ে পড়েছে।
৯) গণ ক্ষোভের বিরাট কারণ। দেশ জুড়ে ভয়ানক দুর্নীতি। কোটার ক্ষেত্রেও মুক্তিযুদ্ধের ৩০% কোটা থেকে সামান্যই মুক্তিযুদ্ধের পরিবার রা সুবিধা পেতো। বেশিটা চড়া দামে বিক্রি হয়ে যেত। নকল মুক্তি যোদ্ধা সাজিয়ে ক্রনি দের লোকজনও আকছার ঢুকতো। …….
১০) কোভিড অতিমারী পরবর্তী বাংলাদেশের অর্থনীতি আন্তর্জাতিক ঋণ পরিশোধ এবং বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুর চাপে ধ্বস্ত। তার উপর প্রধান অর্থকরী বস্ত্র শিল্প (Ready made garments বা RMG) চিন, ভিয়েতনাম, তুরস্ক দের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন।
“সব কটা জানালা, খুলে দাওনা
আমি গাইবো বিজয়েরই গান –
ওরা আসবে চুপি চুপি
যাঁরা এই দেশটাকে ভালবেসে
দিয়ে গেছে প্রাণ।”
|
https://thedoctorsdialogue.com/on-recent-students-movement-of-bangladesh/
|
7/24/2024
|
The doctors dialogue
|
Govt critique
|
182
|
সুপ্রিম কোর্ট ৫৬% কোটা পুনর্বহাল
|
সরকারি চাকরিতে কোটা ৭ শতাংশ
|
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে এবং ৭ শতাংশ কোটার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ২০১৮ সালে ৫৬ শতাংশ কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায় বাতিল করে গতকাল রবিবার এ রায় দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নের্তৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
সরকারি চাকরিতে কোটা ৭ শতাংশরায়ে বলা হয়েছে, যদিও কোটা নির্ধারণের বিষয়টি রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী বিষয়। তার পরও সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদের এখতিয়ারবলে, সার্বিক ও যৌক্তিক বিবেচনায়, ন্যায়বিচারের স্বার্থে সংবিধানের ১৯, ২৭, ২৮(৪), ২৯(১) ও ২৯(৩) অনুচ্ছেদে বর্ণিত সমতার নীতি ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রজাতন্ত্রের কর্মে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অর্থাৎ সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরিতে নিয়োগ পাওয়ার জন্য কোটা প্রথা হিসেবে মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ; মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো।
তবে নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সংশ্লিষ্ট কোটার শূন্য পদে সাধারণ মেধাতালিকা থেকে পূরণ করতে হবে। এই নির্দেশনার আলোকে সরকারের নির্বাহী বিভাগকে অবিলম্বে গেজেট বা প্রজ্ঞাপন জারির নির্দেশ দেওয়া হলো। তবে এই নির্দেশনা ও আদেশ থাকার পরও সরকার প্রয়োজনে আদালত নির্ধারিত কোটা বাতিল, সংশোধন বা সংস্কার করতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে রায়ে।
২০১৮ সালে কোটা পদ্ধতি বাতিল করার আগ পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষণ করা হতো।
এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ছিল ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ কোটা।
এই কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ছয় বছর আগে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন গড়ে তোলেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। সে সময় এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন নুরুল হক নুরসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করতে মন্ত্রিপরিষদসচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে ২০১৮ সালের ২ জুন একটি কমিটি করে সরকার।
সব কাজ শেষে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোনো কোটা না রেখে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের নিয়ম চালু করতে ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ জমা দেয় কমিটি। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ার পর ৩ অক্টোবর তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হলে সেখানে কোটা বাতিলের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। পরদিন ৪ অক্টোবর কোটা পদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করেন জনপ্রশাসন সচিব।
পরিপত্রে বলা হয়, নবম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণি) এবং দশম থেকে ১৩তম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হলো। এখন থেকে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে।
২০২১ সালে কোটা পদ্ধতি বাতিলের এই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন। রিটে প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট ওই বছর ৭ ডিসেম্বর রুল জারি করেন। সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত (২০১৩ সালের) উপেক্ষা করে কোটা পদ্ধতি বাতিল করা পরিপত্র কেন স্বেচ্ছাচারী ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। মন্ত্রিপরিষদসচিব, জনপ্রশাসনসচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যানসহ পাঁচ বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানির পর গত ৫ মে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন উচ্চ আদালত। এই রায়ের পর ফের কোটা সংস্কারের আন্দোলনে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে প্রথম কয়েক দিন আন্দোলনকারীরা রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এদিকে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে সরকার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে। কিন্তু চেম্বার আদালত হাইকোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপ না করে আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। এতে আন্দোলনকারীরা আরো সংক্ষুব্ধ হয়ে তারা অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। গত ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি শুনানির জন্য ওঠে। শুনানির পর সর্বোচ্চ আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ‘নো অর্ডার’ দিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলেন। রাষ্ট্রপক্ষের এই লিভ টু আপিল করার অপেক্ষার মধ্যে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ৯ জুলাই আবেদন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। সে আবেদনে শুনানির পর গত ১০ জুলাই কোটা পদ্ধতি সংক্রান্ত বিষয়বস্তুর ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দেন সর্বোচ্চ আদালত। সব পক্ষকে এই স্থিতাবস্থা মেনে চলতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এই স্থিতাবস্থা আদেশের ব্যাখ্যায় আদালত বলেন, ২০১৮ সালে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে সরকার যে পরিপত্র জারি করেছিল, সেই পরিপত্রের ওপর স্থিতাবস্থা। অর্থাৎ হাইকোর্টের রায়ের আগে পরিপত্রটির যে কার্যকারিতা ছিল সেই কার্যকারিতা থাকবে। অর্থাৎ সরকার চাইলে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা ছাড়া নিয়োগ দিতে পারবে। আদালত ৭ আগস্ট পরবর্তী শুনানির তারিখ রেখে এই সময়ের মধ্যে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেন শিক্ষার্থী দুই আবেদনকারীকে।
এই আদেশের পর আন্দোলনকারীরা সরকারি চাকরির সব ধরনের কোটা বাতিল চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার পাশাপাশি সরকারকে কোটা সংস্কারের আলটিমেটাম দেন। তখন সরকারের পক্ষ থেকে আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল আশ্বস্ত করে আন্দোলনকারীদের ধৈর্য ধরতে বলেছিলেন। তাঁরা আরো বলেছিলেন, আদালতে বিচারাধীন বিষয়ে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সরকার চাইলেই কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না। তাঁদের এমন বক্তব্যে আন্দোলনকারীরা কঠোর অবস্থানে যান। তত দিনে আন্দোলন ঢাকাসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষাঙ্গন থেকে অবরোধের খবর আসতে থাকে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ জুলাই বাংলা ব্লকেড (সর্বাত্মক অবরোধ) কর্মসূচির ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। সেদিন এই কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আন্দোলনকারীসহ ছয়জনের মৃত্যুর খবর জানা যায়। এর প্রতিক্রিয়ায় পরদিন টোটাল শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর পর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘাতের সঙ্গে মৃত্যুও বাড়তে থাকে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে গত ১৪ জুলাই হাইকোর্টের রায় প্রকাশ পায়। ১৬ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের রায় বাতিল চেয়ে লিভ টু আপিল করে। এদিকে বাড়তে থাকে সংঘাত ও প্রাণহানি। স্থবির হয়ে পড়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জনজীবন। সরকারি স্থাপনায় হামলা-লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। এ অবস্থায় গত ১৮ জুলাই সরকারের আইনমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ঘোষণা দেন। আর অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দেন লিভ টু আপিলের শুনানি এগিয়ে আনার আবেদন করতে। ওই দিনই আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে আদালত রবিবার সকাল ১০টায় লিভ টু আপিলের শুনানির সময় দেন। এর মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির মধ্যে সরকার কারফিউ ঘোষণা করে সেনাবাহিনী মাঠে নামায় এবং সোমবার পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। গতকাল সাধারণ ছুটি ও কারফিউয়ের মধ্যে লিভ টু আপিলের শুনানির পর রায় দেন সর্বোচ্চ আদালত।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। এ ছাড়া কোটা এবং কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায়, আদালতের এখতিয়ার নিয়ে মতামত তুলে ধরেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, জেড আই খান পান্না, জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুবউদ্দিন খোকন, আহসানুল করিম, তানিয়া আমীর, সারা হোসেন ও আইনজীবী তানজীব উল আলম।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ৫ আগস্ট প্রথম কোটা পদ্ধতি চালু করা হয়। পরবর্তী সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করে সরকার। ২০১৩ সালে আপিল বিভাগ যখন ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত দেন, তখন কোটা পদ্ধতি ছিল। ২০১৮ সালে সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কোটা পদ্ধতিটিই বাতিল করে দেয়। অর্থাৎ সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত হচ্ছে কোটা থাকবে না। হাইকোর্ট এখন যখন কোটা সংরক্ষণের বিষয়ে রায় দিলেন, তখন তো কোটা পদ্ধতিই নেই এবং আপিল বিভাগের সর্বশেষ (২০২২ সালের রায় অনুসারে) সিদ্ধান্ত অনুসারে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারেন না। এমনকি নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আদালত কোনো পরামর্শও দিতে পারেন না, যদি না সে সিদ্ধান্ত নাগরিকের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন করে, সংবিধানকে লঙ্ঘন করে। ফলে হাইকোর্টের রায়টি (গত ৫ মে কোটা পুনর্বহালের রায়) বাতিল করা হোক।
আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যে সমর্থন জানিয়ে বলেন, হাইকোর্ট রায়ে বলার চেষ্টা করেছেন যে মুক্তিযোদ্ধারা অনগ্রসর অংশ। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটা বরাদ্দ করা হয়েছে বিশেষ মর্যাদায়, অনগ্রসর হিসেবে নয়। মুক্তিযোদ্ধারা কখনোই অনগ্রর হতে পারেন না। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান এবং সবচেয়ে অগ্রগামী অংশ। তা ছাড়া সংবিধানের কোথাও মুক্তিযোদ্ধাদের অনগ্রসর হিসেবে বর্ণনা করা হয়নি, বরং বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি কোটা বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল চাচ্ছি। পাশাপাশি কোটার যৌক্তিক সংস্কার চাচ্ছি। সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে ন্যায়বিচারের স্বার্থে সর্বোচ্চ আদালত সে আদেশ দিতে পারেন।
রিটকারী পক্ষের আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী শুনানিতে বলেন, ১৯৭৫ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা সুবিধা দেওয়া হলেও পঁচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২১ বছর এই কোটার কোনো বাস্তবায়ন ছিল না। মানছি কোটা পদ্ধতি রাখা না রাখা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়, কিন্তু ২০১৮ সালে সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রে কোটা বাতিল করে আর সব শ্রেণির চাকরিতে কোটা বহাল রাখল। এটা হতে পারে না। সরকারের এ রকম নীতিগত সিদ্ধান্ত কতটুকু যৌক্তিক? ২০১৮ সালে কোটা বাতিলের ক্ষেত্রে ন্যূনতম কারণ তো থাকা দরকার ছিল।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ শুনানিতে বলেন, কোটা পদ্ধতি নিয়ে হাইকোর্ট তাঁর রায়ে সরকারের নীতিনির্ধারণী বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছেন, কিন্তু এই হস্তক্ষেপের বিষয়ে রায়ে কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। ফলে রায়টি বাতিল করা হোক।
আইনজীবী আহসানুল করিম তাঁর মতামত তুলে ধরে শুনানিতে বলেন, আমাদের সংবিধান যাঁরা প্রণয়ন করেছেন, তাঁরা কখনোই মুক্তিযোদ্ধাদের অনগ্রসর অংশ হিসেবে বিবেচনা করেননি। সে জন্য তাঁদের অনগ্রসর অংশ হিসেবে বিবেচনা করার সুযোগ নেই। কোটা ও মেধার মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে মেধাই প্রাধান্য পাবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনির কোটা সুবিধা দেওয়া নিয়ে আইনজীবী তানিয়া আমীর বলেন, যাদের জন্মই হয়নি, তারা কিভাবে অনগ্রসর হয়? তা ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কখনোই অনগ্রসর হতে পারেন না। যদি তা না হয়, তাহলে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান বা নাতি-নাতনি কিভাবে অনগ্রসর হয়? তা ছাড়া যদি মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকে, তাহলে তা কত দিন থাকবে? তা ছাড়া যিনি রিট করেছেন, তাঁদের এই রিট করার এখতিয়ার আছে কি না।
আপিলের অনুমতি না দিয়ে (লিভ টু আপিল গ্রহণ না করে) হাইকোর্টের রায়ের ওপর চূড়ান্ত শুনানি করা যায় কি না সে প্রশ্নে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তানজীব-উল আলম শুনানিতে বলেন, ‘আমি মনে করি, লিভ টু আপিল গ্রহণ না করেই হাইকোর্টের রায় নিয়ে আপিল বিভাগে শুনানি হতে পারে। এমনকি হাইকোর্টের রায় বাতিলও করতে পারে। তা ছাড়া কোটা নিয়ে হাইকোর্ট যে বিষয়ে রুল জারি করেছিলেন, তার বাইরে গিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর নীতিনির্ধারণী বিষয়ে সরকারকে কোনো পরামর্শ দিতে পারেন না হাইকোর্ট। সুতরাং রায়টি বাতিল করা উচিত।’
আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও এ এম মাহবুবউদ্দিন খোকন অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যে একমত পোষণ করে শুনানিতে তাঁদের মতামত তুলে ধরেন।
|
https://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2024/07/22/1408051
|
7/22/2024
|
Kaler kontho
|
Neutral
|
183
|
কোটা আন্দোলন: পুলিশ গুলিতে ২০০+ নিহত
|
মেটিকুলাসলি শেখ হাসিনা হত্যার প্লট ছিলো কি কোটা আন্দোলনের আড়ালে ⁉️
|
বিগ্রেডিয়ার সাখাওয়াত হোসেন ১৯ আগস্ট(খুব সম্ভবত ) সামরিক অফিসারদের একটি প্রোগ্রামে আবারও ৭.৬২ বুলেটের বিষয় প্রশ্ন তুলছেন। তিনি বলেছেন, গত বছর জুলাই আন্দোলনে নিহত প্রায় সবাইকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়। এটা ছিল স্নাইপার অ্যাটাক। আহতদের যারা চোখ হারিয়েছে তারাও স্নাইপার অ্যাটাকের শিকার।পুরো জুলাই আন্দোলন জুড়ে ছিল প্রফেশনাল স্নাইপার অ্যাটাক। এটা বাংলাদেশের পুলিশ করেনি। বাংলাদেশের পুলিশের স্নাইপার রাইফেল প্রশিক্ষণ নেই। বিগ্রেডিয়ার সাখাওয়াত আরও ভয়াবহ, বিস্ফোরক তথ্য দেন। তিনি বলেন,"তিনি এবং সাবেক সেনাকর্মকর্তাদের একটা দল হাটতে হাটতে যখন মহাখালীর শাহীন কমপ্লেক্স পর্যন্ত পৌঁছান। তখন তার কাছে সেনা গোয়েন্দা সংস্থা থেকে ফোন আসে, স্যার আপনি স্নাইপারদের টার্গেট এরিয়ায় ঢুকে পড়েছেন, দ্রুত ওই এলাকা ত্যাগ করেন"। একবার চিন্তা করেন, ক্যান্টনমেন্টের পাশে মহাখালী শাহীন কমপ্লেক্স এলাকায় স্নাইপার'রা তখন তাদের পজিশনে ছিল। বিগ্রেডিয়ার সাখাওয়াতসহ অন্যান্য সাবেক সেনাকর্মকর্তাদের আন্দোলন পরিস্থিতি দেখাতে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারা স্নাইপার অ্যাটাকের শিকার হতে পারতেন। সেই সাথে এটাও স্পষ্ট সেনা গোয়েন্দা সংস্থা জানতো ঢাকার কোথায় কোথায় স্নাইপার ব্যবহারকারী জ:ঙ্গিদের অবস্থান ছিল।
গাদ্দাফির বিরুদ্ধে যখন লিবিয়ার রাস্তায় আন্দোলন হচ্ছিল। সেই আন্দোলনের আগে ফ্রান্স বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ৫০০ লিবিয়ার তরুণদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ছিল। ২০০+ তরুণদের স্নাইপার রাইফেল ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে ছিল। সেই সাথে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সামরিক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কর্মকর্তারাও নেমে পড়ে লিবিয়ার রাজপথে সাধারণ মানুষের সাথে।
লিবিয়ার মত কি শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে আরও অনেক আগে থেকে পেশাদার কিলার তৈরি করা হয়েছে?
জুলাই আগস্টে দেশবিদেশী প্রফেশনাল স্নাইপার রাইফেল ব্যবহারকারী'রা ও ছিল ঢাকার রাস্তায়?
শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে স্নাইপার রাইফেল ব্যবহারকারী পেশাদার কিলার'রা ঢাকায় কি ভাবে ঢুকেছে?
কি ভাবে হাজার হাজার স্নাইপার রাইফেল ঢুকে পড়েছে দেশে?
আওয়ামীলীগ সরকারের এত এত গোয়েন্দা সংস্থা, সেনা গোয়েন্দা সংস্থা, এত এত নিরাপত্তা বেস্টুনী ভেঙে কি ভাবে পেশাদার অস্ত্রদারী, কিলার'রা দেশে ঢুকলো?
|
https://m.somewhereinblog.net/mobile/blog/fzzaman/30380255
|
8/27/2025
|
somewhere in blog
|
Govt critique
|
184
|
কোটা আন্দোলন: পুলিশ গুলিতে ২০০+ নিহত
|
কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্রকরে আওয়ামীলীগের গণহত্যার ব্যপারে ফতওয়া
|
বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই মাসের কোটা বিরোধী শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রীদের নির্দেশে, বাংলাদেশের মুছলিম শিশু, কিশোর, যুবক, নারী, বৃদ্ধ বৃদ্ধার উপরঃ “ছাত্রলীগ, পুলিশ, রেব, আর্মি বিডিয়ার, মিলে যে গণহত্যা চালিয়েছে, মেরেছে, মরেছে, তাদের উপর ইছলামিক শরীয়ত উনার ফতওয়া কি? তারা কি আদৌ মুছলিম বলে গন্য হচ্ছে ইছলামিক শরীয়ত অনুসারে? দয়া করে এর উপর আপনার ফতওয়া পেশ করবেন, কোন মুফতিই এদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে নারাজ তাই আপনার শরণাপন্ন হয়েছি।
وَعَلَيْكُمُ ٱلسَّلَامُ وَرَحْمَتُ ٱللّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ
উত্তরঃ বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে, বাংলাদেশ বিষয়ক দেশি বিদেশি বিশ্লেষকদের মতামত, চলমান ঘটনার উপর শত শত ভিডিও, হাজার হাজার ছবি, আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্য মিডিয়ার নিউজ ও আমার বিশ্বস্ত সকল অনুসারীদের থেকে প্রাপ্ত সরাসরি জবানবন্দী দ্বারা যে বিষয়গুলি পাওয়া গেছে তা হলোঃ
১) বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ মেধার ভিত্তিতে চাকুরিপ্রাপ্তির দাবী জানিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করেছিলো, যেখানে তাদের হারাম রাজনৈতিক কোন এজেন্ডা ছিলো না।
২) কথিত আওয়ামী সরকার তাদের শান্তিপূর্ণ সেই দাবীকে কবুল তো করেনাই, উল্টো বাংলাদেশের কথিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ও বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ. আরাফাত সহ অনেক মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী ও তাদের অঙ্গসংঘটন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগকে নিরীহ নিরপরাধ অধিকার আদায়ের সংগ্রামী সকল ছাত্রদের উপর এজিদি হামলার নির্দেশ প্রদান করে।
৩) কথিত সরকারের গুন্ডাবাহিনী যখন নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্রদের আক্রমণ করে তখন ছাত্ররা সম্মিলিতভাবে আওয়ামী হানাদার বাহিনীর হামলার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে তারা পালিয়ে যায় পিছু হটে।
৪) কথিত আওয়ামী সরকার তার গুন্ডাবাহিনী দিয়ে যখন ছাত্রদের দমাতে পারেনাই, তখন এইসব মন্ত্রিরা “দেখা মাত্র গুলি করতে” নির্দেশ দেয় পুলিশকে, ফলশ্রুতিতে আবু সাইদকে দিয়ে তাদের গণহত্যার যাত্রা শুরু হয়।
৫) আন্দোলন তীব্র হয়, পুলিশের গুলিতেও যখন নিরস্ত্র ছাত্রসমাজকে থামানো যাচ্ছেনা তখন মাঠে নামানো হয় বিডিয়ার, কিন্তু এদের গুলিতেও তাজা তাজা মুছলিম, অমুছলিম যুবক, বৃদ্ধ এমনকি শিশুদেরও যখন হত্যা করে কোন ফায়দা হয়নি তখন শেষ ভরসা আর্মিকে নামানো হয়।
৬) বাংলাদেশের মানুষের শেষ আশারস্থল আর্মি ও যখন হুকুমের গোলাম হয়ে নিজ দেশের শিশু, কিশোর, যুবক-যুবতি, বৃদ্ধার বুকে চোখ বন্ধ করে গুলী চালায়, তখন বাংলার আম জনতাও বাধ্য হয়ে ছাত্রদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে।
৭) পরিস্থিতি বেসামাল দেখে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট টানা ৬ দিন ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন সারা বাংলার মোবাইল ব্যবহারকারীরা। ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে দিনে রাতে সমানতালে চলে গণহত্যা। কেবল ছাত্রছাত্রীদেরই নয়, বরং দোকানি, পথচারী, দিনমজুর, এমনকি মানুষের বাসায় ঢুকে পর্যন্ত গুলীবর্ষন করা হয়েছে, ফলে শিশু ও বৃদ্ধ পর্যন্ত হত্যার স্বীকার হয়েছেন। এছাড়াও হেলিকপ্টার দিয়েও গ্রেনেড ছোড়া হয়েছে প্রতিবাদী ছাত্রসমাজের উপর। এমনকি ৯৫% মুছলিমের বাংলাদেশে বেওয়ারিশ হিসেবে জানাযা ছাড়াও করা হয়েছে অসংখ্য দাফন, পুলিশি জুলুম কত কঠিন আকার ধারণ করেছে তা বোঝা যায় অনলাইনে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা জানাযা পড়ানোর কারণে ইমামকে নামাজরত অবস্থায় এরেষ্ট করার দিকে তাকালে।
৮) কথিত সরকারি হিসেবেই ২০০+ মুছলিম, মুমিন, অমুছলিমকে হত্যা করেছে আওয়ামীপন্থীরা, শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রীদের হুকুমে, এই হত্যাযজ্ঞে হাসিনার আনুগত্য প্রকাশে যেনো ত্রুটি না হয় সেকারণে অনেক পুলিশ, রেব, আর্মি, বিজিবিও গণহত্যায় শামিল হয়। যদিও নির্ভরযোগ্য সুত্র বলছে হাজারের উপর বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে, আর হাসপাতালে ২০ হাজারের উপর আহত মুছলিম কাতরাচ্ছেন, কেউবা মৃত্যুর জন্যে প্রহর গুনছেন।
৯) পবিত্র সম্মানিত মুহর্মুল হারাম শরীফের মাসে ইয়াজীদ, ইবন যিয়াদ, শিমার, বাহিনীর কায়িম মাক্বাম হতে কোন ত্রুটি রাখেনি আওয়ামী সরকার ও তাদের পোষা বাহিনীরা।
১০) শেখ হাছিনা ও তার অনুসারী অন্ধ আওয়ামীলীগের কিছু মানুষ ছাড়া এই গণহত্যাকে ভুলক্রমেও কুফর হিসেবে মেনে নিতে রাজি নয়।
১১) সন্তানকে হত্যা করে এখন আবার পিতামাতাকেও হয়রানি করা হচ্ছে যাতে তারা কোন ধরণের মামলা মোকদ্দমায় না যায় শেখ হাসিনা ও আওয়ামীলীগের কোন নেতার উপরে।
১২) ক্ষমতার মসনদে বসে থাকার জন্যে যদি পুরো দেশকেও হুমকির মুখে ফেলতে হয় তাহলে তাই করা হবে, তবুও কেউ হক্বের অধিকারে শান্তিপূর্ণ সংগ্রাম পরিচালিত করতে পারবেনা।
জানার বিষয় হলোঃ সরকার বা শাসনব্যবস্থায় কর্তৃত্ব পেলেই কি নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা যাবে? মোটেও না মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ (فَهَلۡ عَسَیۡتُمۡ اِنۡ تَوَلَّیۡتُمۡ اَنۡ تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَ تُقَطِّعُوۡۤا اَرۡحَامَكُمۡ اُولٰٓئِكَ الَّذِیۡنَ لَعَنَهُمُ اللّٰهُ فَاَصَمَّهُمۡ وَ اَعۡمٰۤی اَبۡصَارَهُمۡ) তোমাদের কাছ থেকে এর চাইতে বেশী কি প্রত্যাশা করা যাবে যে, তোমরা (একবার) যদি (জমিনে) শাসন ক্ষমতায় বসতে পারো তাহলে (মহান আল্লাহ তায়ালা উনার) যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং যাবতীয় আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করে ফেলবে। (মূলত) এরাই হচ্ছে সে সব মানুষ, যাদের ওপর মহান আল্লাহ তা’য়ালা লানত দিয়েছেন, (এছাড়াও, তিনি তাদের) বোবাও করে দিয়েছেন (তাই তারা সত্য কথা বলতে পারে না) এবং তাদের তিনি অন্ধও করে দিয়েছেন (তাই তারা সত্য কি তা দেখতেও পায় না)। (আল কুরআন ৪৭/২২-২৩)
আওয়ামী লিগের দাবী অনুসারে শেখ হাসিনা ৫ ওয়াক্ত নামাজের পাবন্ধি, তাহাজ্জুদ পড়নে ওয়ালা মুছলিমাহ। যেহেতু আ’লা দরজার মুছলিমাহ বলে দাবি করা হচ্ছে সেহেতু আশা করা যায় যে কুরআন ছুন্নাহ (ছ্বহীহ হাদিছ)-এর অনুসারী। তাই ফায়সালা কুরআন ছুন্নাহ তথা শরীয়ত অনুসারেই দেওয়া হলো। আওয়ামীলীগের মধ্যে কুরআন ছুন্নাহর অনুসারী থাকলে তা নির্দ্বিধায় মেনে নেবে ইনশাআল্লাহ।
নিরপরাধ মানুষকে হত্যাকারী, গণহত্যার হুকুমদাতা খুনীদের গডফাদারদের কেবল দুনিয়াই নয়, বরং আখেরাত ও তাদের বরবাদ হয়ে যায়, যেমনঃ মহান আল্লাহ পাক বলেনঃ (وَّ یَقۡتُلُوۡنَ الَّذِیۡنَ یَاۡمُرُوۡنَ بِالۡقِسۡطِ مِنَ النَّاسِ ۙ فَبَشِّرۡهُمۡ بِعَذَابٍ اَلِیۡمٍ اُولٰٓئِكَ الَّذِیۡنَ حَبِطَتۡ اَعۡمَالُهُمۡ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ۫ وَ مَا لَهُمۡ مِّنۡ نّٰصِرِیۡنَ) আর মানুষের মধ্য থেকে যারা ন্যায়-পরায়ণতার নির্দেশ দেয় তাদেরকে (যারা) হত্যা করে, (পেয়ারে হাবীব ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম) আপনি তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিন। এরাই হচ্ছে তারা যাদের সমস্ত (নেক) আমল দুনিয়া ও আখেরাতে বরবাদ হয়ে যাবে এবং (সেদিন) তাদের কোন সাহায্যকারীও থাকবেনা। (আল কুরআন ৩/২১-২২)
মহান আল্লাহ্ তা‘আলা আরো বলেনঃ (وَمَنْ يَّقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيْهَا وَغَضِبَ اللهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيْمًا) ‘‘আর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোন মু’মিনকে হত্যা করে তার শাস্তি হবে জাহান্নাম, তার মধ্যে সে সারাজীবন থাকবে এবং মহান আল্লাহ্ তা‘য়ালা সেই লোকের প্রতি ক্রুদ্ধ হবেন ও তাকে লানত প্রদান করবেন। এছাড়াও তিনি তার জন্য প্রস্ত্তত করে রেখেছেন মর্মন্ধুত শাস্তি’’। (আন নিছা ৪/৯৩)
(مَنۡ قَتَلَ نَفۡسًۢا بِغَیۡرِ نَفۡسٍ اَوۡ فَسَادٍ فِی الۡاَرۡضِ فَكَاَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِیۡعًا ؕ وَ مَنۡ اَحۡیَاهَا فَكَاَنَّمَاۤ اَحۡیَا النَّاسَ جَمِیۡعًا) যে ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে হত্যার বিনিময়ে অথবা ভূপৃষ্ঠে ফাসাদ সৃষ্টির কারণ ছাড়া অন্যায়ভাবে হত্যা করলো সে যেন সকল মানুষকেই হত্যা করলো। আর যে ব্যক্তি কাউকে অবৈধ হত্যাকান্ড থেকে রক্ষা করলো সে যেন সকল মানুষকেই রক্ষা করলো’’। (আল মা’য়িদাহ শরীফ ৫/৩২)
আর এই ধরণের হত্যাকান্ডকে হাদীসের পরিভাষায় সর্ববৃহৎ গুনাহ্ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যেমন আনাস বিন মালিক রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘সর্ববৃহৎ কবীরা গুনাহ্ হচ্ছে চারটি, “১) মহান আল্লাহ্ তা’য়ালা উনার সাথে কাউকে শরীক করা, কোন ব্যক্তিকে অবৈধভাবে হত্যা করা, (মুমিন) মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া এবং মিথ্যা সাক্ষী দেয়া’’। (বুখারী শরীফ ৬৮৭১; মুসলিম শরীফ ৮৮)
তাছাড়া এখন দলিল হিসেবে যা যুক্ত করবো হাদিছ শরীফ থেকে সেই হাদিছ শরীফগুলোতে হত্যাকান্ডের ভয়াবহতা ও ভয়ঙ্করতা আরো সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
মহান আল্লাহ তা’য়ালার নিকট ইচ্ছাকৃত হত্যাকারীর ক্ষমার আশা খুবই ক্ষীণ। কেননা রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম বলেনঃ ‘‘প্রতিটি গুনাহ্ আশা করা যায় যে, মহান আল্লাহ্ তা‘আলা তা ক্ষমা করে দিবেন। তবে দু’টি গুনাহ্ যা আল্লাহ্ তা‘আলা ক্ষমা করবেন না। আর তা হচ্ছে, কোন মানুষ কাফির অবস্থায় মৃত্যু বরণ করলে অথবা ইচ্ছাকৃত কেউ কোন মু’মিনকে হত্যা করলে’’। (নাসাঈ শরীফ ৩৯৮৪; মুছনাদে আহমাদ ১৬৯০৭; হাকিম ৪/৩৫১)
এতো গেলো অন্যকে হত্যার ব্যাপারে, অথচ আপন সন্তান ও যদি কোন মহিলার গর্ভ ধারণের চার মাস পর দরিদ্রতার ভয়ে তার গর্ভপাত করানোরই হুকুম নাই, কেননা কাউকে অবৈধভাবে হত্যা করার শামিল। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ ‘‘জনৈক ব্যক্তি রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলো, ইয়া রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম! কোন পাপটি মহান আল্লাহ্ তা’য়ালার নিকট মহাপাপ বলে বিবেচিত? রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম বললেন, মহান আল্লাহ তা’য়ালার সাথে কাউকে শরীক করা; অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। সে বললোঃ অতঃপর কি? তিনি বললেনঃ নিজ সন্তানকে (গর্ভে থাকা অবস্থায়) হত্যা করা ভবিষ্যতে তোমার সঙ্গে খাবে বলে। (বুখারী শরীফ ৪৪৭৭, ৪৭৬১, ৬০০১, ৬৮১১, ৬৮৬১, ৭৫২০, ৭৫৩২; মুসলিম শরীফ ৮৬) এই হাদিছ শরীফের মূল হুকুম কালামুল্লাহ শরীফে পাওয়া যায়, যেখানে মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি বলেনঃ (وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَوۡلَادَكُمۡ خَشۡیَۃَ اِمۡلَاقٍ ؕ نَحۡنُ نَرۡزُقُهُمۡ وَ اِیَّاكُمۡ ؕ اِنَّ قَتۡلَهُمۡ كَانَ خِطۡاً كَبِیۡرًا) দরিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে (ভ্রুনেই) হত্যা করো না। (ভুলে যেওনা) তোমাদের ও তাদের রিযিকদাতা (কেবল) আমিই, (একারণে দরিদ্রতার ভয়ে) তাদের হত্যা করা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। (ছুরাহ আল ইসরা ১৭/৩১ ও আল আন’আম ৬/১৫১) এখন আপন পিতামাতা ভ্রুনেই যেখানে সন্তানকে হত্যার অধিকার পাচ্ছেনা, সেখানে জলজ্যান্ত নিরপরাধ মানুষকে হত্যার কোন সুযোগই নাই, না এর আছে কোন ক্ষমার সুযোগ।
এই ব্যপারে হাদিছ শরীফে এসেছেন, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘হত্যাকৃত ব্যক্তি হত্যাকারীকে সঙ্গে নিয়ে কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তা‘য়ালার সামনে উপস্থিত হবে। হত্যাকৃত ব্যক্তির মাথা তার হাতেই থাকবে। শিরাগুলো থেকে তখন রক্ত পড়বে। সে মহান আল্লাহ তা‘আলাকে উদ্দেশ্য করে বলবেঃ হে আমার প্রভু! এ ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছে। এমনকি সে হত্যাকারীকে আরশের অতি নিকটেই নিয়ে যাবে। শ্রোতারা আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিআল্লাহু আনহুকে উক্ত হত্যাকারীর তাওবা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উপরোক্ত সূরাহ নিসা’র আয়াত শরীফটি তিলাওয়াত করে বললেনঃ উক্ত আয়াত রহিত হয়নি। পরিবর্তনও হয়নি। অতএব তার তাওবা কোন কাজেই আসবে না’’। (তিরমিযী শরীফ ৩০২৯; ইব্নু মাজাহ্ শরীফ ২৬৭০; নাসায়ী শরীফ ৪৮৬৬)
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘মু’মিন ব্যক্তি সর্বদা ধর্মীয় স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা ভোগ করবে যতক্ষণ না সে কোন অবৈধ রক্তপাত করবে’’। (বুখারী শরীফ ৬৮৬২)
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে আরো বর্ণিত তিনি বলেন রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘এমন ঝামেলা যা থেকে বাঁচার কোন উপায় নেই তা হচ্ছে অবৈধভাবে কারোর রক্তপাত করা (অর্থাৎ কাউকে হত্যা করা বিনা অপরাধে)’’। (বুখারী শরীফ ৬৮৬৩)
আব্দুল্লাহ ইবনে মাস্ঊদ রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘কিয়ামতের দিন মানবাধিকার সম্পর্কিত সর্বপ্রথম হিসেব হবে রক্তের’’। (বুখারী শরীফ ৬৫৩৩, ৬৮৬৪; মুসলিম শরীফ ১৬৭৮; ইব্নু মাজাহ্ শরীফ ২৬৬৪, ২৬৬৬)
আবূ সা’ঈদ খুদরী রদ্বিআল্লাহু আনহু ও আবূ হুরায়রাহ রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত উনারা বলেনঃ রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘যদি আসমান ও জমিনের সকলে (মাখলুক) মিলেও কোন মু’মিন হত্যায় অংশ গ্রহণ করে তবুও মহান আল্লাহ তা‘আলা তাদের সকলকে মুখ থুবড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন’’। (তিরমিযী শরীফ ১৩৯৮)
জারীর বিন ‘আব্দুল্লাহ্ আল-বাজালী, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ও আবূ বাক্রাহ রদ্বিআল্লাহু আনহুমাদের থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, “রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘আমার দুনিয়া থেকে পর্দা তথা বিছাল শরীফের পর তোমরা কাফির হয়ে যেও না। আর তোমরা একে অন্যকে হত্যা করো না’’। (বুখারী শরীফ ১২১, ১৭৩৯, ৪৪০৫, ৬১৬৬, ৬৭৮৫, ৬৮৬৮, ৬৮৬৯, ৭০৮০; মুসলিম শরীফ ৬৫, ৬৬, ১৬৭৯)
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘মহান আল্লাহ তা‘য়ালার নিকট একজন মুসলিমকে হত্যা করার চেয়ে পুরো দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাওয়া অধিকতর সহজ’’। (তিরমিযী শরীফ ১৩৯৫; নাসাঈ শরীফ ৩৯৮৭; ইব্নু মাজাহ শরীফ ২৬৬৮)
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে আরো বর্ণিত রয়েছে, তিনি বলেন, রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘যে ব্যক্তি চুক্তিবদ্ধ কোন কাফিরকে হত্যা করলো সে জান্নাতের সুগন্ধও পাবে না; অথচ জান্নাতের সুঘ্রাণ চল্লিশ বছরের রাস্তার দূরত্ব থেকেও পাওয়া যায়’’। (বুখারী শরীফ ৩১৬৬, ৬৯১৪; ইব্নু মাজাহ্ শরীফ ২৬৮৬)
আবদুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লামকে কাবা ঘর তাওয়াফ করতে দেখলাম এবং তিনি বলছিলেনঃ কত উত্তম আপনি হে কাবা! আকর্ষণীয় আপনার খুশবু, কত উচ্চ মর্যাদা আপনার (হে কাবা)! কত মহান সম্মানের অধিকারী আপনি। সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ!, মহান আল্লাহ তায়ালা উনার নিকট মুমিন ব্যক্তির জান-মাল ও ইজ্জতের মর্যাদা আপনার চেয়ে অনেক বেশী। আমরা মুমিন ব্যক্তি সম্পর্কে সুধারণাই পোষণ করি। (তিরমিযী ২০৩২, ইব্নু হিববান ৫৭৬৩, ইবনে মাজাহ শরীফ ৩৯৩২)
অতএব ছাত্র আন্দোলনের পুরো ঘটনা পর্যালোচনা করে শরীয়ত অনুসারে যে রায় পাওয়া যায়, তা হলোঃ “শেখ হাসিনা ও তার বাহিনীর যারা এই হত্যাযজ্ঞে জড়িত, যারা মনেপ্রাণে এই হত্যাগুলিকে সমর্থন করে, যায়েজ মনে করে, তারা সবাই মুর্তাদ, এদের বিয়ে বাতিল, স্ত্রীর/স্বামীর সাথে মিলিত হলে জিনা হবে, সন্তান জন্মালে তা হবে জারজ, কেননা তারা কুফুরি করেছে। হাদিছ শরীফে এসেছেনঃ “আব্দুল্লাহ ইবনে মাস্ঊদ রদ্বিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিছে, “রছুলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘‘কোন মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসেকি এবং তাকে হত্যা করা কুফরি’’। (বুখারী শরীফ ৪৮, মুসলিম শরীফ ৬৪) আর আয়াতে পাকে স্পষ্ট বলা হয়েছেঃ (وَمَنْ يَّقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيْهَا وَغَضِبَ اللهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيْمًا) ‘‘আর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোন মু’মিনকে হত্যা করে তার শাস্তি হবে জাহান্নাম, তার মধ্যে সে সারাজীবন থাকবে এবং মহান আল্লাহ্ তা‘য়ালা সেই লোকের প্রতি ক্রুদ্ধ হবেন ও তাকে লানত প্রদান করবেন। এছাড়াও তিনি তার জন্য প্রস্ত্তত করে রেখেছেন মর্মন্ধুত শাস্তি’’। (আন নিছা ৪/৯৩) উক্ত আয়াত শরীফে ৪ শাস্তি হত্যাকারীর ব্যপারে মহান আল্লাহ পাক উল্লেখ করেছেন, যেখানে প্রথমেই যাহান্নামের বাসিন্দাদের অন্তর্ভুক্ত করে দিয়েছেন, এরপর বলেছেন, হত্যাকারী সেই জাহান্নামে সারাজীবন থাকবে, এরপর বলেছেন গজবনাক হবেন এবং ভয়ানক আযাবের ব্যবস্থাও করে রেখেছেন।
এই জামানার স্বৈরাচারীরা মনে করে যে হত্যা কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত, তাওবা করলেই মাফ পেয়ে যাবে অথচ আমরা দেখেছি যে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিআল্লাহু আনহুর মুখনিঃসৃত হাদিছ শরীফে তিনি বলেছেন হত্যাকারীর তাওবা কবুল হয়না, তাহলে বোঝা গেলো যে ইহা কবিরা গুনাহের চেয়েও অনেক উপরের বিষয়। তাছাড়া আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বিদাহ হলেন কবিরা গুনাহ দ্বারা ইনছান কাফের হয়না, আর কবিরাহ গুনাহ ইনছানকে সারাজীবন জাহান্নামে রাখার মতো কারণের অন্তর্ভুক্ত ও নয়। তাহলে উক্ত আয়াত শরীফের জাহির তো জানলাম, বাতিনের ব্যপারে ইমামগণের মত কি? মহান আল্লাহ পাক তিনি তো স্পষ্ট করেই আল কুরআনে বলে দিয়েছেন, হত্যা, গণহত্যাকারী চিরস্থায়ী যাহান্নামী, এর মানে কি? এর মানে হলো যে ব্যক্তি, গোত্র মিলে কোন মুছলিমকে হত্যা করবে তার ক্বলব থেকে কলিমা শরীফ সরাই দেওয়া হবে, অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্বে সে কাফের হয়ে মরবে, কারণ যত বড় গুনাহগার হোক, জররা পরিমাণ ঈমান তার মধ্যে থাকলে সে জাহান্নামে চিরজীবন থাকবেনা, একারণেই আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিআল্লাহু বলেছেন হত্যা, গণহত্যাকারীর তাওবা কবুল হবেনা কারণ তাওবা কবুল হলে সে জাহান্নামে চিরস্থায়ী থাকবেনা, একারণেই প্রথমদিকেই হাদিছ শরীফ উল্লেখ করা হয়েছে যে মুছলিমকে হত্যা করা কুফরি তথা হত্যাকারীর মৃত্যুও হবে কুফরের উপর, এতে সে যত বড় আবিদই হোক না বাহ্যিক দৃষ্টিতে।
উক্ত ফতোয়ার আলোকে বাংলাদেশী মুছলিমরা কি করবেন এইসব হত্যাকারীদের ব্যপারে?
১) হাসিনা ও তার সহযোগী সকল খুনীই চির যাহান্নামী লানতুল্লাহ।
২) যেহেতু এরা চির যাহান্নামী তাই হাসিনা, ও তার যেসকল মন্ত্রী, ও দলের সদস্য, পুলিশ, আর্মি, বিজিবি, রেব, আনসারের মধ্যে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে তাদের সাথে দ্বীনি সকল সম্পর্ক ত্যাগ করতে হবে।
৩) এরা মারা গেলে এদের মুছলিমদের কবরে দাফন করা ও জানাযা পড়া হারাম।
৪) সামাজিকভাবে এদের বয়কট করতে হবে।
৫) কখনো ইসলামিক হুকুমাত বাংলাদেশে কায়েম হলে, এদের যারা বেঁচে থাকবে তাদের কিসাসের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
রইলো, আওয়ামীলীগের যেসকল সদস্য, পুলিশ, আর্মি, বিজিবি, রেব, আনসার বা অন্যান্য দলের (বিএনপি, জামায়াত, জাতীয়পার্টি ইত্যাদি) মারা গেছে তাদের ফায়ছালা কি? তারা কি শহীদ?
মোটেও না, শহীদ কেবল তারা যারা ছাত্র ছিলো, এবং আম জনতা, পথচারী, মৃত্যুর সময় আক্বিদাহ বিশুদ্ধ ছিলো মহান আল্লাহ পাক, রছুলে পাক ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লাম, কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাহ-এর ব্যপারে, কোটা বাতিল ব্যতীত সরকার পতনের কোন মোটিভ নিয়ে রাস্থায় নামে নাই। কিন্তু যারা সরকার দলীয় বা বিরোধী দলের লোক গণতন্ত্র নামক কুফরের চেয়ারে বসে থাকা আওয়ামীলীগকে সরিয়ে নিজেদের বসানোর সুযোগ মনে করে রাস্তায় নেমে মরেছে তারা মূলত জাহেলিয়াতের উপর মৃত্যুবরণ করলো, কেননা আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রসূলুল্লাহ ছ্বল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ যে ব্যক্তি (ইসলামি খিলাফতের) আমীরের আনুগত্য থেকে বেরিয়ে গেল এবং জামায়াত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল সে জাহেলিয়াতের (অবস্থায়) মৃত্যুবরণ করল। আর যে ব্যক্তি (দ্বীনের) লক্ষ্যহীন নের্তৃত্বের পতাকাতলে যুদ্ধ করে দলপ্রীতির জন্য ক্রুদ্ধ হয় অথবা দলের দিকে আহবান করে অথবা দলের সাহায্যার্থে যুদ্ধ করে (মহান আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টির কোন ব্যাপার সেখানে থাকেনা) আর তাতে নিহত হয়, সেও জাহেলিয়াতের উপর মৃত্যুবরণ করে। (মুসলিম শরীফ ১৮৪৮এ, নাসাঈ শরীফ ৪১১৪, মিশকাত শরীফ ৩৬৬৯)।
وَاللهُ أعْلَمُ بِالصَّوَابِ
مُحَمَّد رَجِيبْ خَوَاجَهْ
شَيْخُنَا وَ مُرْشِدِنَا إِمَامُ الطّٰرِيْقَةِ الْرَاج
٢٨/٠١/١٤٤٦
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুনঃ
https://www.rajibkhaja.com/2024/08/awami-genocide.html
Rajib Khaja Official
এডমিন Rajib Khaja Official
আমার লিখা এবং প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বে আইনি।
সমসাময়িক পোষ্ট
রাজিনীতিকে ফরজ বানানেওয়ালা জাহেলদের কুফুরি ফতোয়ার পোস্টমর্টেম
এই হেদায়েতপূর্ণ লিখাটি যারা ১০০% কুরআন সুন্ন
তাকফির কি? তাকফিরের মূলনীতি ও ব্যখ্যা বিশ্লেষণ
কেউ যদি কুরআন, হাদিছ, ও মানতেক দিয়ে কাউকে তাকফির
সম্রাজ্যবাদীদের প্রক্সিওয়ারে ব্যবহৃত জনগণ, ‘জনগণের পক্ষ’ তৈরী হবে কবে?
প্রক্সিওয়্যার শব্দটার সাথে জনগণ পরিচিত নয়। যদিও জ
এসপি বালুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যার মূল দুই আসামি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত, কি বুঝলেন?
চট্টগ্রামের আলোচিতো পুলিশ সুপার এসপি বাবুল আক্
ইসলামী শরিয়তে গনতন্ত্র সম্পূর্ণ হারাম এবং ভ্রান্ত একটি কুফরী মতবাদ
যদিও বাংলাদেশের সংবিধানে লিখা রয়েছে “মহান
৬৫’র যুদ্ধে ব্যর্থতার পর আইয়ূব খানের পুনর্জীবন লাভ, ছয় দফার হাক্বীক্বত ও মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি (১)
ইতিহাস দু’প্রকার, প্রচলিত ইতিহাস ও বাস্তব ইত
Blog Comments
Facebook Comments
প্রয়োজনীয় পোস্ট খুঁজুন
সর্বাধিক পঠিত
বিশুদ্ধ তাওয়াল্লুদ শরীফ দ্বারা পবিত্র মিলাদ শরীফ পাঠের নিয়ম, বাংলা, উর্দু শের সহ
আওলাদে রসূল ও আহলে বাইত (কুরআন সুন্নাহর আলোকে দলিল ভিত্তিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ)
Requiem Of A Third World Military Commander
Quantifying Loyalty And Its Need For National Homogeneity
পবিত্র ‘ঈদে মীলাদুন নবী’ ছ্বল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লাম আসলে কি?
কোন মুছলিমকে “মাজার পূজারী” বলা, কিংবা মুশরিক ট্যাগ দেওয়া কি শরীয়তসম্মত?
শাতিম ছ্বলাফি ইমাম নূর রহমান বনাম মুক্তাদি ছুন্নী উম্মত আশিকে রছুল বিল্লাল হোসেন
ছুন্নীদের মাজারপূজারী বলে যারা তাকফির করে আক্রমণ করে তারা কি মুছলিম থাকে?
তাকফির কি? তাকফিরের মূলনীতি ও ব্যখ্যা বিশ্লেষণ
দল, মত, নির্বিশেষে পাইকারিভাবে কি সকলের ওয়াজ, নসিহত শোনা যাবে? এতে কি কোন সমস্যা আছে?
লিখার শ্রেণীবিভাগ
English Articlesআমেরিকান আগ্রাসনআহলুস সুন্নাহআহলে বাইতউগ্রপন্থী মুশরিকজুমুআর বয়ানবাতিল ফেরকাভারত ও ইসরাঈলরাজারবাগ
|
https://www.rajibkhaja.com/2024/08/awami-genocide.html
|
8/3/2024
|
rajibkhaja
|
Govt critique
|
185
|
কোটা আন্দোলন: পুলিশ গুলিতে ২০০+ নিহত
|
জুলাই আন্দোলন স্নাইপার—শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিবিয়া মডেল
|
ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত হোসেন দাবি করেছেন, জুলাই আন্দোলনে নিহতরা ছিলেন প্রফেশনাল স্নাইপার হামলার শিকার। প্রশ্ন উঠছে—বিদেশি প্রশিক্ষিত কিলাররা কি শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে ঢাকায় এসেছিল?
১৯ আগস্ট (২০২৫) এক সামরিক কর্মকর্তাদের প্রোগ্রামে বাংলাদেশের সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত হোসেন এক বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেছেন, গত বছরের জুলাই আন্দোলনে নিহত প্রায় সবাই মাথায় গুলি খেয়ে মারা গেছেন, আর আহতদের মধ্যে যারা চোখ হারিয়েছেন, তারাও ছিলেন স্নাইপার টার্গেটের শিকার।
সাখাওয়াত হোসেনের ভাষায়— “পুরো জুলাই আন্দোলনজুড়ে প্রফেশনাল স্নাইপার অ্যাটাক হয়েছে। এটা পুলিশের কাজ নয়, বাংলাদেশের পুলিশের স্নাইপার রাইফেল প্রশিক্ষণই নেই।”
শুধু তাই নয়, তিনি আরও এক ভয়াবহ ঘটনা বর্ণনা করেন।
আন্দোলনের সময় মহাখালীর শাহীন কমপ্লেক্সে পৌঁছালে হঠাৎ সেনা গোয়েন্দা সংস্থা থেকে তার ফোনে সতর্কবার্তা আসে।
“স্যার, আপনি স্নাইপারদের টার্গেট এরিয়ায় ঢুকে পড়েছেন, দ্রুত এলাকা ত্যাগ করুন।” অর্থাৎ, সেনা গোয়েন্দারা জানতো ঢাকার কোথায় কোথায় স্নাইপাররা পজিশন নিয়েছিল।
এর মানে, দেশের ভেতরেই ছিল এমন এক অদৃশ্য নেটওয়ার্ক, যারা আন্দোলনের আড়ালে প্রফেশনাল কিলার হিসেবে কাজ করছিল।
বাংলাদেশের ইতিহাসে আন্দোলনে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলি চালনার ঘটনা নতুন নয়।
কিন্তু সাধারণ পুলিশের হাতে যে অস্ত্র থাকে, তা মূলত শটগান, রাইফেল বা রাবার বুলেট লোডেড বন্দুক। পুলিশ সদস্যদের স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার ও টার্গেট শ্যুটিংয়ের প্রশিক্ষণ নেই।
জুলাই আন্দোলনের ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, নিহতদের অধিকাংশই মাথা ও চোখে গুলি খেয়েছেন।
এটি সাধারণত হাই-প্রিসিশন শ্যুটিংয়ের মাধ্যমে করা হয়, যা কেবল প্রশিক্ষিত স্নাইপারের পক্ষেই সম্ভব।
সাখাওয়াত হোসেনের বক্তব্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত রয়েছে—বাংলাদেশের পরিস্থিতি অনেকটা লিবিয়ার ২০১১ সালের গাদ্দাফি বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।
লিবিয়ার আন্দোলনের সময় জানা যায়, ফ্রান্স গোপনে কয়েকশ লিবীয় তরুণকে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়েছিল।
এর মধ্যে প্রায় ২০০+ জনকে স্নাইপার রাইফেল ব্যবহারের স্পেশাল ট্রেনিং দেওয়া হয়।
আন্দোলন শুরু হলে তারা সাধারণ মানুষের ভেতর মিশে গিয়ে রাস্তায় নামেন। গাদ্দাফির পতনে বিদেশি স্নাইপার টিম ও প্রশিক্ষিত তরুণরা বড় ভূমিকা রাখে।
প্রশ্ন হচ্ছে,
বাংলাদেশে কি একই ধরনের পরিকল্পনা আগে থেকেই সাজানো হয়েছিল? বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা কি তরুণদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল?
তারা কি আন্দোলনের সময় সাধারণ মানুষের ভিড়ে মিশে গিয়ে স্নাইপার হিসেবে কাজ করেছে? তাদের লক্ষ্য কি কেবল সরকার উৎখাত নয়, বরং শেখ হাসিনাকে সরাসরি হত্যার ষড়যন্ত্রও ছিল?
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতায় শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ নতুন নয়।
কিন্তু স্নাইপার আক্রমণের প্রসঙ্গ তুললে এটি কেবল রাজনৈতিক আন্দোলনের সীমা ছাড়িয়ে যায়। এটি সরাসরি রাষ্ট্রপ্রধানকে হত্যার ষড়যন্ত্র এবং রাষ্ট্রকে অচল করার পরিকল্পনার ইঙ্গিত দেয়।
যদি সত্যি ঢাকার রাস্তায় বিদেশি স্নাইপাররা সক্রিয় ছিল, তাহলে প্রশ্ন জাগে—
তাদের লক্ষ্যবস্তু কারা ছিল?
সাধারণ মানুষকে হত্যা করে আন্দোলনকে আন্তর্জাতিকভাবে “রাষ্ট্রীয় গণহত্যা” হিসেবে প্রচার করা? নাকি শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে দেশের নেতৃত্ব শূন্য করার পরিকল্পনা?
বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ ও নিরাপত্তা–বেষ্টিত দেশে শত শত বা হাজারো স্নাইপার রাইফেল ঢোকানো সহজ নয়। তবু যদি ঢুকে থাকে, তাহলে সম্ভাব্য পথগুলো কী?
বাংলাদেশে অসংখ্য গোয়েন্দা সংস্থা সক্রিয়—ডিজিএফআই, এনএসআই, র্যাবের গোয়েন্দা ইউনিট, পুলিশ স্পেশাল ব্রাঞ্চ, বর্ডার ইন্টেলিজেন্স ইত্যাদি।
তবু যদি স্নাইপার টিম ঢাকায় অবস্থান করতে পারে, তাহলে তিনটি প্রশ্ন ওঠে—
গোয়েন্দারা কি আগেই জানত, কিন্তু রাজনৈতিক কারণে চুপ থেকেছে? না কি বিদেশি শক্তির চাপ ও চক্রান্তে তাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ করা হয়েছিল? নাকি গোয়েন্দা সংস্থার ভেতর থেকেই কারও সহযোগিতা ছিল?
সাখাওয়াত হোসেনের স্বীকারোক্তি— “গোয়েন্দারা জানতো কোথায় কোথায় স্নাইপাররা আছে” এবং এটা প্রমাণ করে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য ছিল কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি কেন, সেটাই এখন বড় রহস্য।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত অবস্থানে গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গোপসাগরের করিডোর, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, চট্টগ্রাম বন্দর—সবই আন্তর্জাতিক শক্তির নজরে।
ইতিহাস বলে, যেসব দেশে ভূরাজনৈতিক স্বার্থ বড় হয়ে ওঠে, সেখানে রাজনৈতিক আন্দোলনকে অনেক সময় বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা সামরিক রূপ দেয়। লিবিয়ার মত বাংলাদেশেও কি সেই একই ছক কাটা হয়েছে?
আন্দোলনের নামে বিদেশি প্রশিক্ষিত স্নাইপার ব্যবহার, মানুষকে হত্যা করে সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে অচল করা, শেখ হাসিনাকে হত্যা করে ক্ষমতার শূন্যতা তৈরি করা এবং অবশেষে বিদেশি স্বার্থের অনুগত সরকার চাপিয়ে দেয়া
ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত হোসেনের বক্তব্য নিছক বিতর্ক নয়, বরং বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য এক ভয়াবহ সতর্কবার্তা।
জুলাই আন্দোলন যদি সত্যিই বিদেশি স্নাইপার নেটওয়ার্কের অংশ হয়ে থাকে, তবে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব গভীর সংকটে।
শেখ হাসিনা কেবল রাজনৈতিক বিরোধিতার টার্গেট নন, বরং আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতিরও কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন।
|
https://muktibarta71.com/2025/08/27/july-protest-sniper-attack-bangladesh/
|
8/27/2025
|
MuktiBarta
|
Govt leaning
|
186
|
ইন্টারনেট বন্ধ ও কারফিউ
|
ইন্টারনেট বন্ধ, কারফিউতে বিপাকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা
|
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার পাশাপাশি ইন্টারনেট বন্ধ ও চলমান কারফিউ বাংলাদেশের প্রতি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমিয়ে দিয়েছে।
নির্ভরযোগ্য বিনিয়োগের স্থান হিসেবে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ায় তা সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আসাকে প্রভাবিত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দেশে পণ্য উৎপাদনে বৈচিত্র্যকরণ, প্রযুক্তি স্থানান্তরে সক্ষমতা ও ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত অর্থনীতিতে পরিণত করার লক্ষ্য অর্জনে বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন।
২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত অর্থনীতিতে পরিণত হতে দেশকে বার্ষিক জিডিপির এক দশমিক ৬৬ শতাংশের সমপরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ আনতে হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৫৯ বিলিয়ন ডলার।
বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে ও নির্ভরযোগ্য বিনিয়োগের স্থান হতে গেলে দেশের খ্যাতি থাকা জরুরি। সেই দৃষ্টিতে গত এক সপ্তাহে যে ক্ষতি হয়েছে তা মারাত্মক।
ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিক্কি) সভাপতি জাভেদ আখতার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আর্থিক ক্ষতির বাইরেও দেশ যে ভাবমূর্তির সংকটে পড়েছে তা পরিমাপ করা যায় না। কারণ গত কয়েক সপ্তাহে দেশের সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'বিনিয়োগের নির্ভরযোগ্য স্থান হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান এখন প্রশ্নবিদ্ধ। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—স্থিতিশীল জাতি ও স্থিতিশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সুনাম ফেরাতে কাজ করা ও পরিস্থিতি যাই হোক না কেন আর্থিক সুফল বয়ে আনা। দেশে থাকা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি ব্যবসা সহজ করাও গুরুত্বপূর্ণ।'
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার জেরে ইন্টারনেট বন্ধ করার পর তিনি এমন মন্তব্য করলেন। এই সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৬১ জন নিহত ও বেশ কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। সেসময় সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
ফিক্কির সভাপতি আরও বলেন, 'সব কিছু বন্ধ করে দেওয়ায় গত সাত দিনে দেশের অর্থনীতিতে ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতির আশঙ্কা আছে।'
তার মতে, পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভোগ্যপণ্য শিল্প গত সপ্তাহে ১০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে।
'সস্তা শ্রমের মতো ইতিবাচক দিক থাকা সত্ত্বেও দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্ভাব্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মনে আশঙ্কা তৈরি করবে।'
সাম্প্রতিক সংঘাত রপ্তানিমুখী শিল্প, ই-কমার্স, ফ্রিল্যান্সিং, রাইড-শেয়ারিং, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ও সামাজিকমাধ্যমে আর্থিক কার্যক্রমের ওপর নির্ভরশীল অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
'যদিও সীমিত অনলাইন সংযোগের মাধ্যমে দেশে আর্থিক কার্যক্রম ধীরে ধীরে শুরু হচ্ছে, তবে পুরো কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। অর্থনৈতিক কার্যক্রমের বড়জোর ৫০ শতাংশ শুরু করতে পেরেছি,' যোগ করেন তিনি।
তিনি মনে করেন, শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর পুরোপুরি কাজ শুরু করতে ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল সংযোগ প্রয়োজন।
এছাড়াও, সবকিছু বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা বন্দর থেকে পণ্য খালাস ও সেখানে আটকে থাকা পণ্যের ক্ষতি পোষানোর বিড়ম্বনায় পড়েছেন।
তিনি আরও বলেন, 'অনেক বিনিয়োগকারী বর্তমানে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন। কারণ তারা ব্যবসায়িক কার্যক্রম আবার শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পণ্য খালাস, পরিচালনা ও ব্যবসা আবার শুরু করতে খরচ বাড়ছে।'
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগ তিন দশমিক আট বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। এটি এর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ছয় শতাংশ কম।
জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেটরো) কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউজি আন্দো ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাংলাদেশ ইন্টারনেট সংযোগ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'কারফিউ শিথিল ও ইন্টারনেট সংযোগ শুরুর পর বাংলাদেশে জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলো আবার কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।'
কারণ জাপানের প্রায় ২০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান দূরে থেকে কাজ করে বলে জানান তিনি। এছাড়াও, জাপানের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তার কারণে তাদের কর্মীদের সরিয়ে নিয়েছে।
আন্দোর মতে, এই মুহূর্তে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য দুটি প্রধান বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। সবচেয়ে মৌলিক বিষয় হলো নিরাপত্তা। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, বিধিনিষেধ ছাড়াই ইন্টারনেট সুবিধা দিতে হবে।
'দেশের সাম্প্রতিক অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগকারী ও ক্রেতারা আমাদের সঙ্গে ব্যবসা করা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় তাদের উদ্বেগ আরও বেড়েছে।'
পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের (পলিসি এক্সচেঞ্জ) চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত সপ্তাহের ঘটনায় অর্থনৈতিক প্রভাব ভয়াবহ হতে পারে। গত সপ্তাহে যা ঘটেছে তার সম্ভাব্য পুনরাবৃত্তি ও নিজেদের বিনিয়োগ নিয়ে কয়েকজন বিদেশি বিনিয়োগকারী উদ্বিগ্ন।'
তিনি মনে করেন, বিনিয়োগকারীরা উদ্বিগ্ন ছিলেন কারণ তারা ইন্টারনেট না থাকায় বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। আজকের দুনিয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ অপরিহার্য।
এম মাসরুর রিয়াজ আরও বলেন, 'রপ্তানি খাতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ওভারটাইম খরচের কারণে লোকসান ও খরচ বেড়ে যাওয়া আশঙ্কা করছেন। কেননা, শ্রমিকদের গত ছয় দিনের উৎপাদন ক্ষতি পূরণ করতে হবে।'
তাদের এখন সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পণ্য সরবরাহ করতে উড়োজাহাজ ভাড়া করতে হবে। এটি খুবই ব্যয়বহুল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বন্দর থেকে সময় মতো পণ্য খালাস করতে না পারায় বাড়তি খরচের পাশাপাশি জরিমানাও গুনতে হচ্ছে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সস্তা শ্রমের মতো ইতিবাচক দিক থাকা সত্ত্বেও দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্ভাব্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মনে আশঙ্কা তৈরি করবে।'
তিনি আরও বলেন, 'সাম্প্রতিক ঘটনা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এ দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে। ইতোমধ্যে তারা গ্যাস সংকটের পাশাপাশি ব্যবসার মুনাফা নিজ দেশে নেওয়ার সমস্যায় ভুগছেন।'
'বিদেশি বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে কমবে না' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'তবে বিদ্যমান বিদেশি বিনিয়োগকারীরা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এ দেশে তাদের ব্যবসার প্রসার বন্ধ রাখতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।'
বাংলাদেশ মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীরেরও একই মত।
তিনি বলেন, 'দেশের সাম্প্রতিক অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগকারী ও ক্রেতারা আমাদের সঙ্গে ব্যবসা করা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় তাদের উদ্বেগ আরও বেড়েছে।'
ইন্টারনেট সংযোগ চালুর পরও ধীর গতির কারণে যোগাযোগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ধীর গতির কারণে বর্তমানে ইনভয়েস ও ছবি পাঠানো যাচ্ছে না।
'এ ধরনের ঘটনা বাংলাদেশের ব্যবসাবান্ধব ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। বিদেশি বিনিয়োগকারী ও ক্রেতারা আমাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে ক্রমেই সতর্ক হয়ে উঠছেন,' বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
|
https://bangla.thedailystar.net/business/news-600846
|
7/29/2024
|
The Daily Star
|
Govt critique
|
187
|
ইন্টারনেট বন্ধ ও কারফিউ
|
কোটা আন্দোলন ঘিরে এ পর্যন্ত যা যা ঘটেছে
|
কোটা আন্দোলন ঘিরে এ পর্যন্ত যা যা ঘটেছে:
কোটা আন্দোলন ঘিরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে শুক্রবার মধ্যরাতে বাংলাদেশে যে কারফিউ জারি করা হয়েছে, তা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে দুপুর ১০টা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত শিথিল থাকবে। এই সময়ে সেনা মোতায়েন থাকবে।
বুধবার ও বৃহস্পতিবার সকল অফিস, আদালত, ব্যাংক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম খোলা থাকবে। তবে কারফিউর কারণে নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে।
কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের রায় বাতিল করে রোববার আপিল বিভাগ যে আদেশ দিয়েছে, তার আলোকে মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশের সরকার।
প্রজ্ঞাপনকে চূড়ান্ত সমাধান হিসাবে না মেনে সারা দেশে কারফিউ প্রত্যাহার, ইন্টারনেট সংযোগ চালু, বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া ও সারা দেশের সমন্বয়ক ও আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় এ পর্যন্ত বাংলাদেশ অন্তত দেড়শ মানুষ নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ।
টানা পাঁচদিন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে বাংলাদেশে ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার রাতে আবার সীমিত আকারে চালু হয়েছে।
সংঘাত ও সহিংসতার কারণে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত দুইদিনের অভিযানে সহস্রাধিক মানুষ গ্রেফতার হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে, যাদের মধ্যে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী রয়েছে।
সোমবার ঢাকার নাখালপাড়া থেকে মহাখালির দিকে রেললাইনের ওপর জড়ো হয়েছে একদল মানুষ। অন্যদিকে অবস্থান নিয়ে রয়েছে সেনা ও পুলিশের সদস্যরা
ছবির ক্যাপশান,সোমবার ঢাকার নাখালপাড়া থেকে মহাখালির দিকে রেললাইনের ওপর জড়ো হয়েছে একদল মানুষ। অন্যদিকে অবস্থান নিয়ে রয়েছে সেনা ও পুলিশের সদস্যরা
কোটা সংস্কারের দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে তীব্র আন্দোলন শুরু হয়, যা এক পর্যায়ে সংঘাতে রূপ নেয়। গুরুত্বপূর্ণ ভবনে আগুন দেয়া হয়, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ অনেক এলাকা কার্যত রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। নরসিংদী কারাগারে হামলা চালিয়ে আটশো বেশি বন্দী পালিয়ে যায়।
সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ও সকল সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ হয়ে যায়। সব ধরনের যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সংঘর্ষে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হলে শুক্রবার রাত থেকে কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েন করা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত থেকে সারা দেশে ইন্টারনেট সংযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
কারফিউর মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়ে সরকার জনগণকে চরম বিপদ ও দুর্ভোগের মধ্যে নিক্ষেপ করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ দাবি করেছে, কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করে বিএনপি-জামায়াত সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করায় ৫৭ জন বাংলাদেশিকে দীর্ঘ মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে সেখানকার একটি আদালত। বাংলাদেশে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশে বিক্ষোভ হয়েছে।
|
https://www.bbc.com/bengali/live/c0dmk0jykz7t
|
7/23/2024
|
BBC Bangla
|
Neutral
|
188
|
ইন্টারনেট বন্ধ ও কারফিউ
|
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ইন্টারনেট বন্ধের পর যা যা ঘটেছিল
|
জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে বাংলাদেশে দফায় দফায় ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে গত বছরের ১৮ই জুলাই প্রথম দফায় সারা দেশে ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়, যার ফলে বহির্বিশ্বের সঙ্গে দেশটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
সপ্তাহখানেকের মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ফিরতে শুরু করলেও বন্ধ রাখা হয় সামাজিক সব যোগাযোগ মাধ্যম। দশ দিন বন্ধ থাকার পর চালু হয় মোবাইল ইন্টারনেট।
কিন্তু ততদিনে এমন অনেক ঘটনা ঘটে যায়, যা পরবর্তীতে শেখ হাসিনার সরকারের পতনকে তরান্বিত করে।
ইন্টারনেট বন্ধের এই ঘটনাটি এমন একটি সময় ঘটে, যখন আন্দোলন দমনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ব্যাপক বলপ্রয়োগ শুরু করে।
আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও গুলির ঘটনায় বাড়তে থাকে হতাহতের সংখ্যা। আইনশৃঙ্খলা বহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদেরও হামলার জন্য দায়ী করা হয়।
|
https://www.bbc.com/bengali/articles/cqle3210n9ko
|
7/27/2025
|
BBC Bangla
|
Govt critique
|
189
|
ইন্টারনেট বন্ধ ও কারফিউ
|
ইন্টারনেট বন্ধের মধ্যে যা যা হলো
|
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ সহিংসতা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ১৬ জুলাই থেকে মোবাইলে ফোরজি ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) রাত থেকে বন্ধ হয়ে যায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা।
১৯ জুলাই দিনগত রাত ১২টা থেকে সারাদেশে কারফিউ জারি করে সরকার। বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গত রবি, সোম ও মঙ্গলবার (২১, ২২, ২৩ জুলাই) সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ধীরে ধীরে কারফিউ শিথিলের সময়সীমা বাড়ানো হয়। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাত থেকে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু হয়েছে। আজ বুধবার থেকে অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা, শেয়ারবাজার ও কলকারখানায় কাজ শুরু হয়েছে।
ইন্টারনেট সেবা বন্ধ
কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতা ও গুজব ছড়িয়ে পড়লে ১৬ জুলাই থেকে দেশজুড়ে মোবাইল ইন্টারনেটের ফোরজি সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর মহাখালীতে খাজা টাওয়ারের ডাটা সেন্টারে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের অপটিক্যাল ফাইবারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে দেশজুড়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায়। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, সন্ত্রাসীদের অগ্নিসংযোগের কারণে ডেটা সেন্টার পুড়ে যাওয়া এবং আইএসপিএবির তার পুড়ে যাওয়ার কারণে সারা দেশে ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত। মেরামত করতে সময় লাগবে।
|
https://www.jagonews24.com/national/news/956740
|
7/24/2024
|
Jago News
|
Govt leaning
|
190
|
সরকারি চাকরিতে কোটা কমিয়ে ৫%
|
সরকারি চাকরি: মেধায় নিয়োগ ৯৩ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৫
|
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
মঙ্গলবার দুপুর কারফিউ শিথিল থাকার সময়ে এ প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে অনুযায়ী মেধাভিত্তিক ৯৩ ভাগ, মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ ভাগ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ১ ভাগ এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ ভাগ কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে শূন্যপদসমূহ সাধারণ মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হবে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলতি মাসের শুরুর দিন থেকে রাজপথে নামেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। কোটা বাতিলে সরকারের প্রজ্ঞাপনের বিপরীতে হাইকোর্টের একটি রায়ের প্রেক্ষিতে আপিলের শুনানি সামনে রেখে নতুন করে আন্দোলন দানা বাঁধে। এক পর্যায়ে গোটা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্বাভাবিক চলাচল, রাজধানীর সঙ্গে আন্তঃজেলার সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। বিঘ্নিত হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ছন্দপতন ঘটে নাগরিক জীবনে। আতঙ্ক আর উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে।
গত ৪ জুলাই চেম্বার আদালত কোটা বাতিলে হাইকোর্টের দেওয়া ৫ জুনের রায় বহাল রাখার আদেশ দেন। এরপরই শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আরও তীব্র হয়ে ওঠে। সারাদেশ অবরোধের ঘোষণা দিয়ে তারা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি দেন। এরপরই মূলত অকার্যকর হয়ে পড়ে সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা ও নাগরিক জীবনের স্বাভাবিক কার্যক্রম। এরপর ১০ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়েও ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেন। শুনানির জন্য ৭ আগস্ট নতুন দিনও ধার্য করেন। কিন্তু উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আন্দোলন শুরুর তিন সপ্তাহ পর গত ২১ জুলাই হাইকোর্টের রায় বাতিল করে দেন।
কিন্তু এরই মধ্যে ঝরে পড়ে অসংখ্য প্রাণ। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রাজধানীর কাজলায় পুলিশের গুলিতে ঢাকা টাইমসের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হাসান মেহেদীসহ একাধিক সাংবাদিকও প্রাণ হারিয়েছেন।
১৯৭২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর প্রথম কোটা পদ্ধতির প্রবর্তন হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালের পর দীর্ঘ ২১ বছর তা আর বাস্তবায়ন হয়নি। মূলত সংবিধানের মূলনীতির আলোকে এই সুযোগটা নিয়েছিল বিভিন্ন সময়ের সরকার। সংবিধান কোটা পদ্ধতিকে সরকারের নীতিনির্ধারণী বিষয় হিসেবে যেকোনো সময় তা কমানো-বাড়ানো বা রাখা না রাখার এখতিয়ার সরকারকে দিয়েছে। সর্বশেষ ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিসিএসসহ সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এরমধ্যে ৩০ শতাংশ ছিল মুক্তিযোদ্ধা কোটা। বাকি ১০ শতাংশ নারী কোটা, ১০ শতাংশ জেলা, ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এবং এক শতাংশ কোটা ছিল প্রতিবন্ধীদের। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রমও ছিল। কোনো কোনো চাকরিতে প্রায় ৯০ শতাংশেরও বেশি ছিল কোটায় সংরক্ষিত।
২০১৮ সালের শুরুর দিকে সব ধরনের সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেসময় শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল কোটা ৫৬ শতাংশ না হয়ে ১০ শতাংশ করা হোক। তাদের দাবির মুখে ওই বছরই সরকারি চাকরিতে পুরো কোটা পদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই সময় দুটি প্রজ্ঞাপনে ভিন্ন ভিন্ন আদেশ জারি করা হয়। বছরের শুরুর দিকে ৪ এপ্রিল ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদ) চাকরির ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বাতিল করার ঘোষণা আসে। পরে ১০ অক্টোবর পৃথক প্রজ্ঞাপনে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির পদে চাকরির ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে কোটা রাখার আদেশ জারি করা হয়। এ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হলে পরের বছর ৩০ জুন পূর্বের প্রজ্ঞাপনের অধিকতর ব্যাখ্যা দেয় সরকার। ওই প্রজ্ঞাপনে সরকার জানায়, চাকরিতে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে চাকরির ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান মুক্তিযোদ্ধা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, এতিম, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও আনসার-গ্রাম প্রতিরক্ষা কোটায় সম্ভাব্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে অপূর্ণ পদে জেলার প্রাপ্যতা অনুযায়ী মেধা তালিকার শীর্ষ থেকে শূন্য পদ পূরণ করা হবে। এক্ষেত্রে কোনো পদ সংরক্ষণ বা খালি রাখা যাবে না। এরও দুই বছর পর ২০২১ সালে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কয়েকজন শিক্ষার্থী সরকারের ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। তারা মূলত সরকারের জারি করা প্রথম প্রজ্ঞাপনটি চ্যালেঞ্জ করেন। এ নিয়ে তখন হাইকোর্ট একটি রুল জারি করলেও তখন বিষয়টি আর বেশিদূর গড়ায়নি। কিন্তু গত জুনে বিষয়টি পুনরায় শুনানির জন্য হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ওঠে। ৫ জুন হাইকোর্ট সরকারি ওই পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। ফলে পূর্বের কোটা পদ্ধতি পুনরায় বহাল হয়। রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করে।
আপিল শুনানি শেষে গত ৪ জুলাই আপিল বিভাগ নট টুডে বলে আদেশ দেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়। ফলে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে। এ অবস্থায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী পৃথক আবেদন করেন। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ১০ জুলাই স্থিতাবস্থা জারির সঙ্গে শুনানির দিন ধার্য করেন। একইসঙ্গে লিভ টু আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করতে বলেন আদালত। এর প্রেক্ষিতে ১৬ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষ এবং ১৮ জুলাই দুই শিক্ষার্থীর পক্ষে আপিল আদালতে আবেদন করা হয়। চেম্বার আদালত এই আবেদনের জন্য নতুন দিন ধার্য করেন। এরপর ২১ জুলাই (রবিবার) দেশের সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে নির্বাহী আদেশে জারি করা সরকারি ছুটির মধ্যেই আদালত বসেন এবং চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন।
সরকারি প্রজ্ঞাপন বাতিলের হাইকোর্টের রায় অসঙ্গতিপূর্ণ এবং এখতিয়াবহির্ভূত বলে উঠে আসে রায়ের পর্যবেক্ষণে। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন জানান, ‘আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না হওয়ায় হাইকোর্টের রায় বাতিলের আবেদন করা হয়েছিল।’
শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নিজেও হাইকোর্টের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। কোটার পক্ষের রিটকারী আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরীকে উদ্দেশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এরকম একটা নীতিনির্ধারণী বিষয়ে হাইকোর্ট রায় দিতে পারেন কি না’। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘২০১৮ সালে কোটা বাতিল হওয়ার পর এ নিয়ে কোনো কথা ছিল না। ২০২১ সালে রুল হওয়ার সময়ও এ নিয়ে কথা হয়নি। একটা রায় হাইকোর্ট দিয়েছেন। আজকে বিশেষ অবস্থায় আমরা কোর্টে বসেছি।’
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, কোটা নির্ধারণ সরকারের নীতিনির্ধারণী তবু সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদের এখতিয়ারবলে এবং সার্বিক ও যৌক্তিক বিবেচনায় সম্পূর্ণ ন্যায়বিচারের স্বার্থে সংবিধানের ১৯, ২৭, ২৮(৪), ২৯(১) ও ২৯(৩) অনুচ্ছেদে থাকা সমতার নীতি ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রজাতন্ত্রের কর্মে প্রতিনিধিত্ব লাভ নিশ্চিতের প্রতি লক্ষ্য রেখে কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরির ক্ষেত্রেও কোটার বিষয়টি রায়ে উঠে এসেছে। রায়ে বলা হয়, কোটাপ্রথা হিসেবে মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ; মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধা ও বীরঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ; ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গে প্রতিনিধির জন্য ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো। তবে নির্ধারিত কোটার বিপরীতে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সংশ্লিষ্ট কোটার শূন্যপদে সাধারণ মেধাতালিকা থেকে পূরণ করা হবে। রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন জানিয়েছেন, সব ধরনের চাকরিতে আদালতের এই রায় কার্যকর হবে।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের রায়ে আরও বলা হয়েছে, এই নির্দেশনা ও আদেশ সত্ত্বেও সরকার প্রয়োজন সাপেক্ষে ও সার্বিক বিবেচনায় নির্ধারিত কোটা বাতিল, সংশোধন বা সংস্কার করতে পারবে।
মঙ্গলবার জনপ্রশাসন, আইন, তথ্য ও শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আনিসুল হক জানান, এই রায়ে পূর্বের সমস্ত কিছু বাতিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কোটা নির্ধারণের বিষয়টি সম্পূর্ণ সরকারের পলিসি মেটার। এটার এখতিয়ার সরকারের। আদালত অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে একটা রায় দিয়েছেন। সরকার চাইলে যেকোনো সময় এটা (কোটা) বাতিল করা, বাড়ানো বা কমানোর প্রয়োজন মনে করলে তা করতে পারবে’। এর ফলে সরকারের পূর্বের প্রজ্ঞাপনও বাতিল হয়ে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘একইসঙ্গে হাইকোর্টের রায় সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়েছে।’
সোমবার আপিল আদালতের শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, হাইকোর্টে রিটের পক্ষের আইনজীবি মনসুরুল হক চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, তানিয়া আমীর, তানজিব উল আলম, এ এফ হাসান আরিফ, সারা হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ইউনুছ আলী আকন্দ এবং ঢাবির দুই শিক্ষার্থীর আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
বিচারপতিদের আসন গ্রহণের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও তানিয়া রব কিছু বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘তারা আনুষ্ঠানিক আবেদন করতে পারেনি।’ তখন আদালত বলেন, ‘বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ পাবেন।’ এ ছাড়া তানজিব উল আলম জ্যৈষ্ঠ আইনজীবীদের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করলে আদালত বলেন, ‘জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের কয়েকজনের বক্তব্য শুনব’।
ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত শুনানি চলে। পরে সোয়া ১টার দিকে আদালতে আসবেন জানিয়ে এজলাস ত্যাগ করেন বিচাপতিরা। এরপর দুপুর দেড়টায় রায় ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। আদালতের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন- বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো. আব জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি কাশেফা হোসেন।
(ঢাকাটাইমস/২৪জুলাই/এসআইএস/এফএ)
google news
ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে
Google News
ফিডটি ফলো করুন
মন্তব্য করুন
শীর্ষ খবরসর্বশেষজনপ্রিয়
|
https://www.dhakatimes24.com/2024/07/24/360086
|
7/24/2024
|
Dhaka Times
|
Neutral
|
191
|
সরকারি চাকরিতে কোটা কমিয়ে ৫%
|
সরকারি চাকরিতে মেধায় নিয়োগ ৯৩%: আপিল বিভাগ
|
সরকারি চাকরিতে মেধার ভিত্তিতে ৯৩% নিয়োগ, মুক্তিযোদ্ধার কোটা ৩০% থেকে কমিয়ে ৫% করতে বলেছেন সর্বোচ্চ আদালত৷ তবে নির্বাহী বিভাগ চাইলে এই কোটার হারে পরিবর্তন আনতে পারবে৷
|
https://www.dw.com/bn/%E0%A6%B8%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF-%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%8B%E0%A6%97-%E0%A7%AF%E0%A7%A9-%E0%A6%86%E0%A6%AA%E0%A6%BF%E0%A6%B2-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%97/a-69723286
|
7/21/2024
|
DW
|
Neutral
|
192
|
সরকারি চাকরিতে কোটা কমিয়ে ৫%
|
বাংলাদেশে যেভাবে কোটা ব্যবস্থার পরিবর্তন হয়েছে
|
সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে কোটা বাতিল করে কেবল ‘অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ বরাদ্দ’ রেখে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবি জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
২০১৮ সালে কোটা বাতিলের পরিপত্র জারির আগ পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা, জেলা, নারী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধী– এই পাঁচ ক্যাটাগরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল।
তবে স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে চালু হওয়া প্রথম কোটা ব্যবস্থায় এই পরিমাণ ছিল আরও বেশি।
কোটা কী?
কোটা বলতে কোনো কিছুর নির্দিষ্ট একটি অংশকে বোঝায় যা সাধারণত একটি গোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ থাকে।
মূলত সমাজের পিছিয়ে পড়া বা অনগ্রসর মানুষগুলোকে মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করতে পড়াশোনা, চাকরিসহ নানা ক্ষেত্রে কোটার ব্যবস্থা থাকে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই কোটা পদ্ধতি চালু আছে।
ব্রিটিশ শাসনামলে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ভারতীয়দের জন্য কোটা ব্যবস্থা চালু ছিল।
পরবর্তী সময়ে পিছিয়ে পড়া মুসলিম জনগোষ্ঠীর জন্যও কোটা বরাদ্দ করা হয়।
দেশভাগের পর পাকিস্তান আমলেও প্রদেশভিত্তিক কোটা বরাদ্দ ছিল।
“কোটা দেয়া হয় যাতে পশ্চাৎপদ বা পিছিয়ে পড়া মানুষগুলো সমাজের যে কাজকর্ম হচ্ছে সেখানে অংশ নিতে পারে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান।
১৯৭২ সাল থেকেই কোটা ব্যবস্থার শুরু
বাংলাদেশে ১৯৭২ সাল থেকেই চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা, জেলা ও নারী কোটা ছিল।
সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন কর্পোরেশন ও দপ্তরে নিয়োগ এবং কোটা বণ্টনের বিষয়ে ১৯৭২ সালের পাঁচই সেপ্টেম্বর তৎকালীন সরকার একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে।
এতে এসব প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণির চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ মেধা এবং বাকি ৮০ শতাংশ জেলা কোটা রাখা হয়। এই ৮০ শতাংশ জেলা কোটার মধ্য থেকেই ৩০ শতাংশ কোটা মুক্তিযোদ্ধা এবং ১০ শতাংশ কোটা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের জন্য বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
অর্থাৎ কোটার বড় একটি অংশই বরাদ্দ করা হয় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য।
“সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধাদের বেশিরভাগই ছিল– কৃষক, শ্রমিক, মজুর, তাঁতি। এরা কিন্তু সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ ছিল। সেই কারণেই যখন দেশ স্বাধীন হলো তখন মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করার চিন্তা থেকেই বলা হলো যে তারা কোটা পেতে পারে এবং সেই কোটা ব্যবহার করে তাদের পরিবারের উন্নতি হতে পারে। সে কারণেই মুক্তিযোদ্ধা কোটা আসছে,” বলেন সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান।
|
https://www.bbc.com/bengali/articles/cmm2ze73enqo
|
7/21/2024
|
BBC Bangla
|
Neutral
|
193
|
সরকারি চাকরিতে কোটা কমিয়ে ৫%
|
৭ শতাংশ কোটা পদ্ধতিতেও আসছে সংস্কার
|
কোটা সংস্কার আন্দোলন বদলে দিয়েছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। তুমুল ছাত্র আন্দোলনের মুখে টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসক শেখ হাসিনাকে হারাতে হয়েছে ক্ষমতার মসনদ। ছাত্র-জনতার তোপের মুখে শেষ সময়ে সরকারি চাকরিতে ৭ শতাংশ কোটা ব্যবস্থা চালু করতে বাধ্য হয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তবে সেই পদ্ধতিতেও সায় দেননি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এখনো তারা কোটার যৌক্তিক সংস্কারের পথেই হাঁটছেন।
হাসিনা সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। যদিও নতুন সরকার পুরোদমে এখনো সরকারি চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি। তবে সামনে ৪৭তম বিসিএসসহ বিভিন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ঘিরে আবারও আলোচনায় আসছে কোটা বণ্টন পদ্ধতি। আওয়ামী লীগ সরকারের রেখে যাওয়া ৭ শতাংশ কোটার বিধানই বহাল থাকবে নাকি তাতে পরিবর্তন আসবে; তা নিয়ে ভেতরে ভেতরে চলছে আলোচনা।
বিজ্ঞাপন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা চান কোটার যৌক্তিক সংস্কার। সেক্ষেত্রে ৭ শতাংশের জায়গায় আরও কিছু বাড়ানোর পক্ষে তারা। পাশাপাশি নারী কোটা এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্যও কোটা রাখার পক্ষে সমন্বয়করা। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৫ শতাংশ থাকবে নাকি তা আরও কমবে—তা নিয়েও রয়েছে আলোচনা।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, বিষয়টি নিয়ে এক দফা কিছুটা আলোচনা হয়েছে। তবে সেটা খুবই প্রাথমিক। যদি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অর্থাৎ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বিষয়টি নিয়ে কোনো প্রস্তাব দেন, তা সরকার বিবেচনা করবে এবং দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
সরকারি চাকরিতে কোটা বণ্টন: ২০১৮ থেকে ২০২৪
২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। ওই বছর ঢাকাসহ সারাদেশে শিক্ষার্থীরা বৈষম্য নিরসনের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। সেসময়ও তারা কোটার যৌক্তিক সংস্কার দাবি করেন। তবে সেই পথে না হেঁটে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা পুরোপুরি তুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন। রাগ বা ক্ষোভের বশে তিনি ওই ঘোষণা দিয়েছিলেন বলে পরে স্বীকারও করেন।
তবে ঘোষণা অনুযায়ী—২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
২০১৯ সালের ৩০ জুলাই তৎকালীন সরকার জানায়, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো কোটা আর বহাল নেই। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে (১৪তম থেকে ২০তম পর্যন্ত) কোটা বহাল রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কোটার প্রার্থী না পাওয়া গেলে সাধারণ প্রার্থীর মেধাতালিকা থেকে তা পূরণ করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি কোটার বিষয়ে আগের (২০১৮ সালের) জারি করা পরিপত্র স্পষ্ট করা হয়। পাশাপাশি মন্ত্রিসভার বৈঠকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সরকারি চাকরিতে অষ্টম বা তার ওপরের পদেও সরাসরি নিয়োগে কোটা বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন হয়।
|
https://www.jagonews24.com/education/news/978061
|
10/29/2024
|
Jago News
|
Neutral
|
194
|
দেশব্যাপী ‘মার্চ অন ঢাকা’ ডাকা
|
ভয়ংকর সারা দেশ, নিহত শতাধিক'
|
বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম, ‘ভয়ংকর সারা দেশ, নিহত শতাধিক’। খবরে বলা হচ্ছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে গতকাল দেশের ১৯ জেলায় অন্তত শতাধিক প্রাণহানি হয়েছে। আহতের সংখ্যা হাজারের বেশি।
হতাহতের তালিকায় আন্দোলনকারী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ রয়েছেন।
সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে সিরাজগঞ্জে। এ জেলায় ১৩ পুলিশ সদস্যসহ ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সকাল থেকে অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় সংঘর্ষ, গোলাগুলি, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চলতে থাকে।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতাসহ ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর বাইরে লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নরসিংদী, সিলেট, কিশোরগঞ্জে, বগুড়া, মাগুরা, মুন্সীগঞ্জ, পাবনা, রংপুর, ভোলা, কুমিল্লা, শেরপুর, জয়পুরহাট, হবিগঞ্জ, কক্সবাজার ও বরিশালে হতাহতের খবর প্রকাশ করেছে।
নিহতদের বেশিরভাগ গুলিবিদ্ধ ছিলেন বলে হাসপাতালের বরাতে জানিয়েছে বণিক বার্তা।
|
https://www.bbc.com/bengali/articles/czvxxz4dxyzo
|
8/5/2024
|
BBC Bangla
|
Govt critique
|
195
|
দেশব্যাপী ‘মার্চ অন ঢাকা’ ডাকা
|
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচির প্রতি সংহতি প্রকাশ
|
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচির প্রতি সংহতি প্রকাশ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৫ আগস্টের সারাদেশে অনুষ্ঠিতব্য আগামিকাল ৫ আগস্ট সোমবারের গণমিছিল প্রত্যাহার করা হয়েছে। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দলের আমীর মুফতী সৈয়দ রেজাউল করীম পীল সাহেব চরমোনাইর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব শেখ ফজলে বারী মাসউদ, কেএম আতিকুর রহমান, আহমদ আবদুল কাইয়ুম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মুফতী সৈয়দ এসহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের, মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিন, মাওলানা নুরুল ইসলাম আলআমিন, মাওলানা দেরাওয়ার হোসাইন সাকী, জিএম রুহুল আমিন, হাফেজ মাওলানা নূরুল করীম আকরাম, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, আলহাজ আব্দুল আউয়াল মজুমদার।
জুলুম নির্যাতন হত্যাকান্ড চালিয়ে সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী হামলায় অগনিত প্রাণের মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোল বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ।
আজ রোববার এক বিবৃতিতে মহাসচিব বলেন, আওয়ামী সরকারের অপরিণামদর্শি সিদ্ধান্তের কারণে আজও প্রায় একশোর মতো মানুষ নিহতের ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ প্রধান যদি আজকে আন্দোলনকারীদের প্রতিহতের ঘোষণা না দিতেন তাহলে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটতো না। কাজেই সরকার আজকের হত্যাকান্ডসহ অতীতের সকল হত্যাকান্ডের দায় নিয়ে ক্ষমতা থেকে সরে না দাড়ালে লাশের পর লাশ পরতেই থাকবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতার নেশায় মদমত্ত হয়ে হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে। তিনি অবিলম্বে এ হত্যাকান্ডের দায় নিয়ে পদত্যাগ করে জনগণকে নিষ্কৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান।
ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ বলেন, দেশ অগ্নিগর্ভে নিপতিত।
সর্বত্র মজলুম মানুষের আহাজারি। সন্তানহারা মায়ের আর্ত্মনাদ, বোনহারা মা-ভাইয়ের আহাজারি, আহত হয়ে হাসপাতালে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে কাতরানো আকাশ-বাতাস ভারী করে তুলেছে। তিনি বলেন, পৃথিবীর সবচে ক্ষমতাধর শাসকগোষ্ঠীও জুলুম, হত্যা ও নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়ে টিকেনি, শেখ হাসিনার সরকারও টিকবে না। কাজেই সময় থাকতে পদত্যাগ করুন, জনগণকে মুক্তি দিন। - প্রেস বিজ্ঞপ্তি
|
https://greenwatchbd.com/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BF/56104
|
8/4/2024
|
Green Watch BD
|
Govt critique
|
196
|
দেশব্যাপী ‘মার্চ অন ঢাকা’ ডাকা
|
কোটা সংস্কার যেভাবে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনে পরিণত হলো
|
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের কোটা সংস্কারের জন্য যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সরকারের দমন-নিপীড়নের মুখে তা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে পরিণত হয়। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তিন সপ্তাহের মধ্যে বিক্ষোভ দমনে সরকারের সহিংস ভূমিকার কারণে কয়েকশ নিরস্ত্র নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন হাজারো ছাত্র-জনতা। এক মাসের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। অবসান ঘটে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের।
এক নজরে ২০১৮ থেকে ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ঘটনাবলী
মার্চ ২০১৮
কোটাভিত্তিক পদ কমানো, শূন্য পদে মেধাভিত্তিক নিয়োগ ও সরকারি চাকরিতে সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা নির্ধারণের দাবিতে রাস্তায় নামে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সরকারি চাকরির নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনিদের জন্য, ১০ শতাংশ নারীদের জন্য, ১০ শতাংশ পিছিয়ে থাকা জেলার মানুষদের জন্য, পাঁচ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের জন্য এবং এক শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য রাখা ছিল।
শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের বিক্ষোভ উপেক্ষা করে ২১ মার্চ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটাব্যবস্থা বহালই থাকবে বলে ঘোষণা দেন।
ছবি: স্টার
এপ্রিল ২০১৮
প্রতিবাদের অংশ হিসেবে সারাদেশে কয়েক হাজার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে, মিছিল বের করে এবং মহাসড়ক অবরোধ করতে শুরু করে।
এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষে অন্তত ৭৫ জন আহত হয়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় রাজধানীর শাহবাগ মোড় ও এর আশেপাশের এলাকা।
১১ এপ্রিল শেখ হাসিনা কোটাব্যবস্থা সম্পূর্ণ বাতিলের ঘোষণা দেন।
জুন-জুলাই ২০১৮
ওই বছরের ৩০ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর সহিংস হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করে।
৩ অক্টোবর ২০১৮
আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভা সরকারি চাকরিতে নবম থেকে ১৩তম গ্রেডে (যেসব পদ আগে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরি বলে পরিচিত ছিল) নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে আরও বলা হয়, সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা বিবেচনা করার ক্ষমতা সরকারের রয়েছে।
ছবি: স্টার
৫ জুন ২০২৪
কোটা সংস্কারের দাবিতে এবার আন্দোলন শুরু হয় গত ৫ জুন। মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, হাইকোর্ট সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (নবম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে। ঢাকায় শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হয় এবং শহীদ মিনারে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
২-৬ জুলাই ২০২৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন'র ব্যানারে সংগঠিত হয় এবং সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালের সরকারি বিজ্ঞপ্তি পুনঃবহালের দাবিতে টিএসসি এলাকায় একটি বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
পরের কয়েকদিন দেশের অন্যান্য অংশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাস ও এর আশপাশে মিছিল-সমাবেশ করে।
গত ৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ৫ জুন হাইকোর্টের রায় বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। পরদিন ৬ জুলাই শিক্ষার্থীরা 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচির ডাক দেয়।
৭ জুলাই ২০২৪
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কর্মসূচির কারণে ঢাকা শহর স্থবির হয়ে যায়। এদিন ছয়টির বেশি ব্যস্ত সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এ বিক্ষোভকে 'অযৌক্তিক' উল্লেখ করে বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
৮ জুলাই ২০২৪
অবরোধ ও বিক্ষোভ জোরালো হতে থাকে। এতে করে ঢাকাবাসী ও অন্যান্য জেলার সঙ্গে ঢাকায় যাতায়াতে মারাত্মক অসুবিধা হয়। বিক্ষোভকারীরা একটি নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে সব অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়ার এক দফা দাবি জানান।
১০ জুলাই ২০২৪
সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগে (নবম থেকে ১৩তম গ্রেড) কোটার বিষয়ে পক্ষগুলোকে চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
এই রায় সত্ত্বেও সরকার একটি ডেডিকেটেড কমিশন এবং পরবর্তী আইন প্রণয়নের মাধ্যমে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের প্রতিশ্রুতি না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
১১ জুলাই ২০২৪
এদিন হাইকোর্ট জানান, সরকার চাইলে কোটা পদ্ধতির পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করতে পারবে। কোটা পূরণ না হলে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে পারবে। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেছেন, কোটা পদ্ধতি সংস্কারে সংসদে আইন প্রণয়ন না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সতর্কবার্তা দেয়, মন্ত্রীরা আন্দোলন থেকে সরে আসার আহ্বান জানালেও তা উপেক্ষা করে আন্দোলনকারীরা 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচি পালন করে। কয়েকটি স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়।
ছবি: স্টার
১২ জুলাই ২০২৪
ঢাকার বাইরে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে এবং কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবি জানিয়ে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। এদিন সাবেক আইনমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আন্দোলন চলতে থাকলে সরকার ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।
ছবি: স্টার
১৩ জুলাই ২০২৪
১৩ জুলাই রাজশাহীতে রেলপথ অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, 'মামলা দিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।'
১৪ জুলাই ২০২৪
সব গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে গণপদযাত্রা করে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেন আন্দোলনকারীরা। সেদিন সন্ধ্যায় একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বিতর্কিত মন্তব্য করেন, মন্তব্যে তিনি আন্দোলনকারীদের 'রাজাকার'র সঙ্গে তুলনা করেন। এই মন্তব্যের পর রাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শুরু হয়। বিভিন্ন ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন 'তুমি কে, আমি কে, রাজাকার রাজাকার; কে বলেছে, কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার'।
ছবি: স্টার
১৫ জুলাই ২০২৪
আওয়ামী লীগের নেতারা শিক্ষার্থীদের স্লোগানে 'রাজাকার' শব্দ ব্যবহারের নিন্দা জানান। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের 'রাজাকার' স্লোগানের জবাব ছাত্রলীগই দেবে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দুপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যারা 'আমি রাজাকার' স্লোগান দিচ্ছেন, তাদের শেষ দেখিয়ে ছাড়বেন বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।
সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনে ছাত্রলীগ ও অন্যান্য ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে হামলা চালায়। তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতরে ও বাইরে আহত বিক্ষোভকারীদের ওপরও হামলা চালায়। সেদিন উভয়পক্ষের তিন শতাধিক মানুষ আহত হয়।
ছবি: স্টার
১৬ জুলাই ২০২৪
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অন্তত ছয়জন নিহত হয়। সব বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের হল খালি করতে বলা হয়েছে। সরকার ছয়টি জেলায় বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) মোতায়েন করে।
সেদিন শিক্ষার্থীরা ঢাবি ও রাবির অধিকাংশ হলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের কক্ষ ভাঙচুর করে।
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরস্ত্র শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।
ছবি: স্টার
১৭ জুলাই ২০২৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আগের দিন নিহতদের 'গায়েবানা জানাজা' চলাকালে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। শিক্ষার্থীরা পরদিন থেকে সারাদেশে 'কমপ্লিট শাটডাউন' কর্মসূচি ঘোষণা করে; হাসপাতাল ও জরুরি পরিষেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেয়।
এদিন আন্দোলনকারীরা স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে যোগদানের আহ্বান জানায় এবং সাধারণ নাগরিকদেরও সমর্থন জানিয়ে পাশে থাকার আহ্বান জানায়।
এদিন শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে ভাষণে বিক্ষোভকারীদের বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানান এবং হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্তের ঘোষণা দেন। অনুপ্রবেশকারীরা যাতে আন্দোলনকারীদের মধ্যে আশ্রয় নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য তিনি শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
১৮ জুলাই ২০২৪
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিসহ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশ ও ছাত্রলীগের লোকজন শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। ১৯টি জেলায় সংঘর্ষের ফলে সহিংসতায় কমপক্ষে ২৯ জন নিহত হয়। অনির্দিষ্টকালের জন্য মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করা হয়।
বিকেল থেকে সারাদেশে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আন্দোলনকারীরা বিটিভি ভবন, সেতু ভবন ও অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বনানী টোল প্লাজায় সন্ধ্যায় আগুনের ঘটনা ঘটে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আন্দোলনকারীদের দমনে শক্তি প্রয়োগ করে।
রাত ৯টার দিকে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) ও ক্যারিয়ারগুলোকে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। দেশে সম্পূর্ণ ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট শুরু হয়। ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ সরকারি কর্মকর্তারা মহাখালীর একটি ডেটা সেন্টারে আগুন লাগার ফলে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে বলে দাবি করেন।
১৯ জুলাই ২০২৪
এদিন দিনব্যাপী সহিংসতায় কমপক্ষে ৬৬ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন কয়েকশ মানুষ। জুমার নামাজের পর সারাদেশে, বিশেষ করে ঢাকার বাড্ডা, রামপুরা, উত্তরা, যাত্রাবাড়ী ও মোহাম্মদপুরে সংঘর্ষ তীব্র হয়। নরসিংদীর কারাগার, মেট্রোরেল স্টেশন, বিআরটিএ অফিসসহ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা নয় দফা দাবি ঘোষণা করেন। যার মধ্যে ছিল শেখ হাসিনাকে ক্ষমা চাইতে হবে, কয়েকজন মন্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের পদত্যাগ করতে হবে, হামলায় জড়িত ছাত্রলীগ ও পুলিশ সদস্যদের শাস্তি দিতে হবে, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও আন্দোলনকারীদের আইনি সুরক্ষা দিতে হবে।
এদিন মধ্যরাত থেকে সরকার দেশব্যাপী কারফিউ ঘোষণা করে এবং সেনা মোতায়েন করে।
ছবি: স্টার
২০ জুলাই ২০২৪
কারফিউয়ের প্রথম দিনে অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ বাড়ানো হয় এবং দুই দিনের সাধারণ সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়।
এদিন তিনজন সমন্বয়ক আট দফা দাবি নিয়ে তিনজন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন, যা পূর্বঘোষিত নয় দফা দাবি থেকে মূল পয়েন্টে ভিন্ন।
গভীর রাতে সবুজবাগের একটি বাসা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে সাদা পোশাকে কয়েকজন জোর করে তুলে নিয়ে যায়।
২১ জুলাই ২০২৪
পূর্বাচলের একটি ওভারব্রিজের নিচে জ্ঞান ফেরে নাহিদ ইসলামের। তিনি অভিযোগ করেন, তাকে চোখ বেঁধে একটি অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং জ্ঞান হারানোর আগ পর্যন্ত নির্যাতন করা হয়েছিল। বাম উরু ও কাঁধে গুরুতর জখম, সারা শরীরে মারধরের চিহ্ন নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।
এদিন সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে রায় দেন সর্বোচ্চ আদালত। রায়ে কোটাপ্রথা হিসেবে মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ; মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য পাঁচ শতাংশ; ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর এক শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য এক শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।
এদিন কারফিউর মধ্যে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ, ইইউ, যুক্তরাজ্য সহিংসতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করায় তিন বাহিনীর প্রধান শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন।
২২ জুলাই ২০২৪
টানা তিন দিন পুলিশি অভিযানে সহিংসতার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক হাজার ৪২৭ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রায় ২০ হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে বিভিন্ন থানায় প্রায় ৫০টি মামলা দায়ের করা হয়। ষড়যন্ত্র ও সহিংসতার সন্দেহে বিএনপি ও জামায়াত জোটের কয়েকশ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২৩ জুলাই ২০২৪
সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থায় ৯৩ শতাংশ নিয়োগ মেধার ভিত্তিতে করার ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। তবে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়করা তা প্রত্যাখ্যান করে। তারা বিক্ষোভে নিহত ও আহতের বিচার দাবি করে।
এদিন কারফিউর মধ্যেও বিরোধী নেতা ও বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গ্রেপ্তার অভিযান চলমান ছিল। কিছু কিছু এলাকায় এদিন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সচল হয়। তবে বন্ধ ছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।
২৪ জুলাই ২০২৪
কোটা আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও রিফাত রশিদকে পাঁচ দিন পর পাওয়া যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা জানান, অজ্ঞাত কয়েকজন তাদের চোখ বেঁধে তুলে নিয়েছিল এবং বিক্ষোভ শেষ করার ঘোষণা দেওয়ার জন্য নির্যাতন করেছিল।
ছবি: স্টার
২৫ জুলাই ২০২৪
সেনা মোতায়েনের পর শেখ হাসিনা প্রথম জনসমক্ষে আসেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শন করেন। তিনি অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর প্রতিরোধ করার জন্য জনগণকে আহ্বান জানান। আহত-নিহতদের খোঁজ না নিয়ে মেট্রোরেল পরিদর্শন করায় আন্দোলনকারী ও সাধারণ জনগণ আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এদিন জাতীয় পার্টির নেতা আন্দালিব রহমান পার্থ এবং ব্যবসায়ী ডেভিড হাসনাতসহ কয়েক ডজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তখনো বন্ধ ছিল। জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা আন্দোলনকারীদের ওপর অভিযান বন্ধের আহ্বান জানায়।
ছবি: স্টার
২৬ জুলাই ২০২৪
পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) হাসপাতাল থেকে তিন সমন্বয়কে তুলে নেয়। এদিন জাতীয় ঐক্য ও সরকার পতনের আহ্বান জানায় বিএনপি। শেখ হাসিনা এদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। আবু সাঈদ হত্যার বিষয়ে পুলিশের এফআইআরে মৃত্যুর কারণ হিসেবে পুলিশের গুলি নয়, বরং বিক্ষোভকারীদের ইটপাটকেলের কথা উল্লেখ করা হয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধরতে এলাকায় এলাকায় 'ব্লক রেইড' পরিচালনা শুরু হয়। ডিবি আরও দুই সমন্বয়ককে তুলে নেয় এবং সমন্বয়কদের 'নিরাপত্তা হেফাজতে' নেওয়া হয়েছে বলে জানায়।
এদিন ১৪টি বিদেশি মিশন সরকারের প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বান জানায়। ১৭ বছর বয়সী হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজকে ভাঙচুরের মামলায় দড়ি দিয়ে বেঁধে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এদিন শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্তদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে যান। দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করতে এমন সহিংসতা চালানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দেশব্যাপী পুলিশের অভিযান চলমান ছিল। শুধু ঢাকাতেই ২০০টিরও বেশি মামলায় দুই লাখ ১৩ হাজারের বেশি মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মোবাইল ইন্টারনেট সচল হলেও বন্ধ ছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) তৎকালীন প্রধান হারুন-অর-রশিদের সঙ্গে ছয় সমন্বয়কের এক টেবিলে বসে খাওয়ার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ডিবি হেফাজতে থাকা অবস্থাতেই একটি ভিডিও ও লিখিত বিবৃতিতে আন্দোলন শেষ করার ঘোষণা দেন ছয় সমন্বয়ক।
তবে বাইরে থাকা অন্য সংগঠকরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। হেফাজতে থাকা ছয়জনকে বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। এদিন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আন্দোলনে ১৪৭ জনের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
ছয় সমন্বয়কারীকে আটক ও হয়রানির প্রতিবাদে আবারও রাস্তায় নামে শিক্ষার্থীরা। পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেলের মুখে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এদিন সরকার জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেয়।
এদিন অবিলম্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজত থেকে মুক্তি ও আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালাতেও আদালতের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা। শুনানিতে ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে তাদেরকে খাওয়ানোর ছবি প্রকাশ করাকে জাতির সঙ্গে 'মশকরা' বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।
|
https://bangla.thedailystar.net/news/bangladesh/quota-protest/news-606171
|
8/16/2024
|
The Daily Star
|
Govt critique
|
197
|
দেশব্যাপী ‘মার্চ অন ঢাকা’ ডাকা
|
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি সোমবার
|
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এক জরুরি সিদ্ধান্তে আমাদের “মার্চ টু ঢাকা” কর্মসূচি আগমী মঙ্গলবার থেকে পরিবর্তন করে আগামীকাল সোমবার করা হলো। অর্থাৎ আগামীকালই সারা দেশের ছাত্র-জনতাকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আজ অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে খুন করেছে সরকার। চূড়ান্ত জবাব দেওয়ার সময় এসে গেছে। বিশেষ করে আশপাশের জেলাগুলো থেকে সবাই ঢাকায় আসবেন। যাঁরা পারবেন, আজই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে যান। ঢাকায় এসে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা রাজপথগুলোতে অবস্থান নিন।’
আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, ‘এই ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের চূড়ান্ত স্বাক্ষর রাখার সময় এসে গেছে। ইতিহাসের অংশ হতে ঢাকায় আসুন সকলে। যে যেভাবে পারেন, কালকের মধ্যে ঢাকায় চলে আসুন। ছাত্র-জনতা এক নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটাব।’
|
https://www.prothomalo.com/bangladesh/njgv43p084
|
8/4/2024
|
Prothom Alo
|
Govt critique
|
198
|
১৯৯৬ একতরফা নির্বাচন
|
ভোটারবিহীন এবং একতরফা নির্বাচনের রেকর্ড গড়েছিল বিএনপিই
|
ঢাকা: এ দেশের ইতিহাসে ভোটারবিহীন এবং একতরফা নির্বাচনের রেকর্ড গড়েছিল বিএনপি, এ মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবনে আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন।
নির্বাচন কমিশন সরকারের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে, বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনায় কারও উপর নির্ভরশীল নয়, সরকারের হাতিয়ার হচ্ছে একমাত্র দেশের জনগণ। বিএনপি যখন জনগণের ভোটের অধিকার, নির্বাচন ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশন নিয়ে কথা বলে তখন হাসি পায়। স্মৃতিতে ভাসে তাদের আমলের সময়ে সৃষ্ট রেকর্ডের কথা।
তিনি বলেন, এদেশের ইতিহাসে ভোটারবিহীন এবং একতরফা নির্বাচনের রেকর্ড গড়েছিল বিএনপিই। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং মাগুরা মার্কা উপনির্বাচনের মধ্য দিয়ে বিএনপি অনিয়মের রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল।
ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের এসব বিষয় স্মরণ করে দিয়ে বলেন, দেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় সবচেয়ে আজ্ঞাবহ ও বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন ছিল আজিজ কমিশন। যার প্রমাণ ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে প্রহসনের নির্বাচন তারা করতে চেয়েছিলো।
নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, নিজস্ব ক্ষমতা এবং আইন প্রয়োগের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান তাদের দায়িত্ব উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব কমিশনকে সহযোগিতা করা। বিএনপি এ পর্যন্ত পদে পদে বাধা প্রদান ছাড়া একটি শক্তিশালী নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কোনো সহযোগিতাই করেনি উল্টো তারা নির্বাচনে জয়ের নিশ্চয়তা চায়। কমিশন যদি বিএনপিকে জয়ের নিশ্চয়তা দেয় তবেই তাদের ভাষায় কমিশন নিরপেক্ষ।
|
https://www.banglanews24.com/politics/news/bd/841747.details
|
2/17/2021
|
Bangla News24
|
Govt leaning
|
199
|
১৯৯৬ একতরফা নির্বাচন
|
বিএনপির ‘একতরফা’ নির্বাচনের দিন আজ
|
আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির ‘একতরফা’ নির্বাচনের দিন। ১৯৯৬ সালের এ দিনে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় সংসদের নির্বাচন অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল বর্জন করেছিল। নির্বাচনে মাত্র ২১ শতাংশ ভোট পড়েছিল। এ ‘একতরফা’ নির্বাচনের ২৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
বেলা ২টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী। সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কৃষক লীগ বিক্ষোভ মিছিল করবে। বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। সকালে রাজধানীর মুক্তাঙ্গনে বিক্ষোভ মিছিল করবে জাতীয় শ্রমিক লীগ। এতে প্রধান বক্তা হিসাবে থাকবেন কেএম আজম খসরু। ধানমন্ডি রাসেল স্কয়ারে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া রাজধানীসহ সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল করবে আওয়ামী লীগসহ দলের সহযোগী সংগঠনগুলো।
|
https://www.jugantor.com/tp-second-edition/393500
|
2/15/2021
|
Jugantor
|
Neutral
|
200
|
১৯৯৬ একতরফা নির্বাচন
|
আওয়ামী লীগ যেভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করেছিল
|
১৯৯৬ সালের জানুয়ারি মাস। তৎকালীন বিএনপি সরকার যখন একপেশে সাধারণ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, বিরোধীদল আওয়ামী লীগ তখন রাস্তায় তুমুল আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে। হরতাল, অবরোধ, হামলা এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দেশ তখন বিপর্যস্ত।
১৯৯৪ সালে মাগুরা জেলায় একটি উপনির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ এনে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে।
নানা কর্মসূচী পালনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে আওয়ামী লীগ। আন্দোলন শুরুর নয় মাসের মধ্যেই জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা। তাদের মতো পদত্যাগের রাস্তা বেছে নেয় জামায়াতে ইসলামী, এবং জাতীয় পার্টির এমপিরাও পদত্যাগ করেন।
১৯৯৫ সালের পুরো বছরজুড়ে হরতাল এবং অবরোধসহ নানা রাজনৈতিক কর্মসূচী দেয় আওয়ামী লীগ।
১৯৯৬ সালের ১৫ই ফ্রেব্রুয়ারি একতরফা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসতে থাকে, বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনের তীব্রতাও বাড়তে থাকে।
|
https://www.bbc.com/bengali/articles/cjkx42rel3xo
|
1/14/2023
|
BBC Bangla
|
Neutral
|
Subsets and Splits
No community queries yet
The top public SQL queries from the community will appear here once available.